কুমিল্লা জেলা

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি জেলা

কুমিল্লা জেলা (আদিনাম কমলাঙ্ক এর অপভ্রংশ, যার অর্থ পদ্মফুলের দীঘি) বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল ও মহানগরী। এটি ঢাকা থেকে ৯৬ কিলোমিটার ও চট্টগ্রাম থেকে ১৪৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। খাদি কাপড় ও রসমালাইয়ের জন্য বিখ্যাত। উপজেলার সংখ্যানুসারে কুমিল্লা বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণিভুক্ত একটি জেলা।[]

কুমিল্লা
জেলা
উপরে-বাম থেকে ঘড়ির কাঁটার দিকে: কুমিল্লার স্কাইলাইন, শাহ সুজা মসজিদ, বরুড়া উপজেলার মাঠ, গোমতী নদী, ময়নামতিতে শালবন বৌদ্ধ বিহার
বাংলাদেশে কুমিল্লা জেলার অবস্থান
বাংলাদেশে কুমিল্লা জেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৩°২৭′৩০″ উত্তর ৯১°১১′০″ পূর্ব / ২৩.৪৫৮৩৩° উত্তর ৯১.১৮৩৩৩° পূর্ব / 23.45833; 91.18333 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগচট্টগ্রাম বিভাগ
প্রতিষ্ঠাকাল১৭৯০
বাংলাদেশের জেলা পরিষদকুমিল্লা জেলা
সরকার
 • জেলা প্রশাসকমোঃ শামীম আলম
আয়তন
 • মোট৩,০৮৭.৩৩ বর্গকিমি (১,১৯২.০২ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[]
 • মোট৫৬,০২,৬২৫
 • জনঘনত্ব১,৮০০/বর্গকিমি (৪,৭০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৮১.৫১%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৩৫০০ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
২০ ১৯
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

আয়তন ও অবস্থান

সম্পাদনা

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূ০২´ থেকে ২৪°৪৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°৩৯´ থেকে ৯১°২২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে কুমিল্লা জেলার অবস্থান।[] রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ৯৭ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ১৪৯ কিলোমিটার। কুমিল্লা জেলার মোট আয়তন ৩,০৮৭.৩৩ বর্গ কিলোমিটার (৭,৬২,৮৯৫ একর)। এ জেলার উত্তরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা, মেঘনা নদীনারায়ণগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে ফেনী জেলানোয়াখালী জেলা, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা, পশ্চিমে চাঁদপুর জেলা, মেঘনা নদীমুন্সীগঞ্জ জেলা

জনসংখ্যা

সম্পাদনা

জনশুমারি ২০২২ এর তথ্য অনুযায়ী কুমিল্লা জেলার মোট জনসংখ্যা ৬২,১২,২১৬ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব ১৯৭৪ জন। সাক্ষরতার হার ৮২.০০%।[]

কুমিল্লা জেলায় ধর্মবিশ্বাস-২০১১

  ইসলাম (৯৪.৬২%)
  অন্যান্য ধর্ম (০.১২%)

ধর্মবিশ্বাস অনুসারে কুমিল্লা জেলার মোট জনসংখ্যার ৯৪.৬২% মুসলিম, ৫.২৬% হিন্দু এবং ০.১২% বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মের অনুসারী।[]

ইতিহাস

সম্পাদনা

প্রতিষ্ঠাকাল

সম্পাদনা

কুমিল্লা প্রাচীনকালে সমতট জনপদের অংশ ছিল। ১৭৩৩ সালে বাংলার নবাব সুজাউদ্দিন খান ত্রিপুরা রাজ্য বিজয় করে এর সমতল অংশ সুবাহ বাংলার অন্তর্ভুক্ত করেন। ১৭৬৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ত্রিপুরা দখল করে। ১৭৬৯ সালে রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে কোম্পানী একজন তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করে। তখন ঢাকা প্রদেশের অন্তর্গত ছিল কুমিল্লা। কুমিল্লাকে ১৭৭৬ সালে কালেক্টরের অধীন করা হয়। ১৭৯০ সালে কোম্পানী শাসনামলে ত্রিপুরা নামের জেলার সৃষ্টি হয় করা হয়। তৎকালে বর্তমান কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, শাহবাজপুর, হাতিয়া, ত্রিপুরার কিছু অংশ, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ ও মীরসরাই নিয়ে সমতল অঞ্চল নিয়ে ত্রিপুরা জেলা ও পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে পার্বত্য ত্রিপুরা নামে ভাগ করা হয়, এই জেলার সদর দপ্তর স্থাপিত হয় কুমিল্লায়। ১৮২১ সালে ত্রিপুরা জেলাকে ভাগ করে বর্তমান নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর নিয়ে ভূলুয়া জেলা গঠিত হয়, যা পরবর্তীতে নোয়াখালী নামকরণ করা হয়। ১৯৬০ সালে সদর দপ্তরের নামানুসারে ত্রিপুরা জেলার নামকরণ করা হয় কুমিল্লা এবং তখন থেকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও কালেক্টর পদটির নামকরণ জেলা প্রশাসক করা হয়। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লার দু'টি মহকুমা চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে পৃথক জেলা হিসেবে পুনর্গঠন করা হয়।[]

নামকরণ

সম্পাদনা

বর্তমান কুমিল্লা জেলা চট্টগ্রাম বিভাগের অধীন একটি জেলা। শুরুর দিকে এটি সমতট জনপদের অন্তর্গত হলেও পরবর্তীকালে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের অংশ হয়েছিল। কুমিল্লা নামকরণের অনেকগুলো প্রচলিত মত রয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযাগ্য চৈনিক পরিব্রাজক ওয়াং চোয়াঙ কর্তৃক সমতট রাজ্য পরিভ্রমণের বৃত্তান্ত থেকে। তার বর্ণনায় কিয়া-মল-ঙ্কিয়া নামক যে স্থানের বিবরণ রয়েছে সেটি থেকে কমলাঙ্ক বা কুমিল্লার নামকরণ হয়েছে। এ অঞ্চলে প্রাপ্ত প্রাচীন নিদর্শন‍াদি থেকে জানা যায় খ্রিষ্টীয় পঞ্চম শতাব্দী থেকে ত্রিপুরা গুপ্ত সম্রাটদের অধিকারভুক্ত ছিল।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি

সম্পাদনা

মুক্তিযুদ্ধে কুমিল্লা ২ নং সেক্টর এর অন্তর্গত ছিল। ঢাকা এবং ফরিদপুরের কিছু অংশ, নোয়াখালী ও কুমিল্লা নিয়ে গঠিত হয়েছিল ২নং সেক্টর। এ সেক্টরের নেতৃত্ব দেন- মেজর খালেদ মোশাররফ (১০ এপ্রিল ১৯৭১ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১) এবং মেজর এ.টি.এম. হায়দার (২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২)।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন
  • বধ্যভূমি- সদর উপজেলার সদর রসুলপুর, বুড়িচং উপজেলার কালিকাপুর, লাকসাম উপজেলার বেলতলীতে বধ্যভূমি আছে। (উত্তর, পুইরা পুল-চান্দিনা উচ্চ বিদ্যালয়ের পূর্ব দিকে, চান্দিনা হাসপাতালের উত্তর-পশ্চিম কোণে, দাউদকান্দি থানার দক্ষিণে সাহাপাড়া ব্রীজ)
  • গণকবর - ১২টি (ব্রাহ্মণপাড়ার রেললাইন সংলগ্ন হরিমঙ্গল পুকুর পাড়, চান্দিনার কাশিমপুর শ্মশান ঘাট, মহিচাইল বাড়ই পাড়া ও কংগাই বড়বাড়ি, হোমনা ডিগ্রি কলেজের পাশে, বরুড়ার বটতলীর অদূরে নারায়ণপুর, দেবিদ্বার থানা সদর, পশ্চিমগাঁও, লাকসাম বিড়ি ফ্যাক্টরি ও লাকসাম রেলওয়ে জংশন, নাঙ্গলকোটের পরিকোট ও তেজের বাজার, মনোহরগঞ্জের হাসনাবাদ)
  • স্মৃতিস্তম্ভ - ৪টি।[]
  • মঠ- ২টি

ঐতিহ্য

সম্পাদনা

শিক্ষা-শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতির পাদপীঠ কুমিল্লা প্রাচীন ঐতিহ্য সমৃদ্ধ জেলা হিসেবে এ উপমহাদেশে সুপরিচিত। রসমালাই নামক বিখ্যাত মিষ্টি কুমিল্লায় তৈরি করা হয়। কুমিল্লার রসমলাই সারাদেশে এক নামে পরিচিত। দুধ, ছানা ও চিনির সমন্বয়ে তৈরি হয় এ মিষ্টান্ন যার প্রচলন কুমিল্লাতেই শুরু হয়। অন্যান্য দুগ্ধজাত দ্রব্যাদি প্রস্তুতের জন্যও কুমিল্লা বিখ্যাত। এছাড়াও কুমিল্লার বিখ্যাত খদ্দর (খাদি) শিল্পের জন্য। ১৯২১ সাল থেকে খদ্দর এ অঞ্চলে প্রচলিত। কুমিল্লার খদ্দর শিল্পগত উৎকর্ষে প্রচুর খ্যাতি লাভ করেছিল। এখান থেকে খদ্দর কাপড় কলকাতা ও বোম্বে পাঠানো হত। বাঁশের বাঁশির জন্য কুমিল্লা বিখ্যাত। কুমিল্লার হোমনার শ্রীমদ্দি গ্রাম উপমহাদেশের বাঁশের বাঁশির জন্য সুবিখ্যাত; শ্রীমদ্দি গ্রামের বাঁশিপাড়ার বাঁশি বর্তমানে দেশ-বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে সগৌরবে। এছাড়াও তাঁত শিল্প, কুটির শিল্প, মৃৎশিল্পকারু শিল্প, ময়নামতির শীতল পাটি ইত্যাদি স্ব-স্ব ঐতিহ্যে স্বকীয়তা আজও বজায় রেখেছে।[]

প্রশাসনিক এলাকাসমূহ

সম্পাদনা

কুমিল্লা জেলা ২৭ ওয়ার্ড বিশিষ্ট ১টি সিটি কর্পোরেশন, ১৭টি উপজেলা, ১৮টি থানা, ৮টি পৌরসভা, ১৯২টি ইউনিয়ন, ৩,৬৮৭টি গ্রাম ও ১১টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।

কুমিল্লা জেলায় মোট ১৭টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলো হল:

ক্রম নং উপজেলা আয়তন
(বর্গ কিলোমিটারে)
প্রশাসনিক থানা আওতাধীন এলাকাসমূহ
০১ কুমিল্লা আদর্শ সদর ১৮৮.৩৯ কোতোয়ালী সিটি কর্পোরেশন (১টি): কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন
ইউনিয়ন (৬টি): কালিরবাজার, দুর্গাপুর দক্ষিণ, দুর্গাপুর উত্তর, আমড়াতলী, পাঁচথুবী এবং জগন্নাথপুর
০২ ব্রাহ্মণপাড়া ১২৮.৯০ ব্রাহ্মণপাড়া ইউনিয়ন (৮টি): মাধবপুর, শিদলাই, চান্দলা, শশীদল, দুলালপুর, ব্রাহ্মণপাড়া সদর, সাহেবাবাদ এবং মালাপাড়া
০৩ চান্দিনা ২০১.৯২ চান্দিনা পৌরসভা (১টি): চান্দিনা
ইউনিয়ন (১৩টি): সুহিলপুর, বাতাঘাসী, মাধাইয়া, মহিচাইল, কেরণখাল, বাড়েরা, এতবারপুর, বরকইট, মাইজখার, গল্লাই, দোল্লাই নবাবপুর, বরকরই এবং জোয়াগ
০৪ চৌদ্দগ্রাম ২৬৮.৪৮ চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা (১টি): চৌদ্দগ্রাম
ইউনিয়ন (১৩টি): কাশিনগর, উজিরপুর, কালিকাপুর, শ্রীপুর, শুভপুর, ঘোলপাশা, মুন্সিরহাট, কনকাপৈত, বাতিসা, চিওড়া, গুণবতী, জগন্নাথদীঘি এবং আলকরা
০৫ তিতাস ১০৬.৩৪ তিতাস ইউনিয়ন (৯টি): সাতানী, জগতপুর, বলরামপুর, কড়িকান্দি, কলাকান্দি, ভিটিকান্দি, নারান্দিয়া, জিয়ারকান্দি এবং মজিদপুর
০৬ দাউদকান্দি ২০৮.৬৬ দাউদকান্দি পৌরসভা (১টি): দাউদকান্দি
ইউনিয়ন (১৫টি): দাউদকান্দি উত্তর, সুন্দলপুর, বারপাড়া, গৌরীপুর, জিংলাতলী, ইলিয়টগঞ্জ উত্তর, ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ, মালিগাঁও, মোহাম্মদপুর পশ্চিম, মারুকা, বিটেশ্বর, গোয়ালমারী, পদুয়া, পাঁচগাছিয়া পশ্চিম এবং দৌলতপুর
০৭ দেবিদ্বার ২৩৮.৩৬ দেবিদ্বার পৌরসভা (১টি): দেবিদ্বার
ইউনিয়ন (১৫টি): বড়শালঘর, ইউসুফপুর, রসুলপুর, সুবিল, ফতেহাবাদ, এলাহাবাদ, জাফরগঞ্জ, গুনাইঘর উত্তর, গুনাইঘর দক্ষিণ, রাজামেহার, ভানী, ধামতী, সুলতানপুর, বরকামতা এবং মোহনপুর
০৮ নাঙ্গলকোট ২৩৬.৪৪ নাঙ্গলকোট পৌরসভা (১টি): নাঙ্গলকোট
ইউনিয়ন (১৬টি): বাঙ্গড্ডা, পেড়িয়া, রায়কোট, মৌকরা, মক্রবপুর, আদ্রা দক্ষিণ, জোড্ডা পশ্চিম, ঢালুয়া, দৌলখাঁড়, বক্সগঞ্জ, সাতবাড়িয়া, হেসাখাল, বটতলী, জোড্ডা পূর্ব, রায়কোট দক্ষিণ এবং আদ্রা উত্তর
০৯ বরুড়া ২৪১.৬৫ বরুড়া পৌরসভা (১টি): বরুড়া
ইউনিয়ন (১৫টি): আগানগর, ভবানীপুর, খোশবাস উত্তর, খোশবাস দক্ষিণ, ঝলম, চিতড্ডা, শাকপুর, ভাউকসার, শিলমুড়ি দক্ষিণ, শিলমুড়ি উত্তর, গালিমপুর, আড্ডা, আদ্রা, লক্ষ্মীপুর এবং পয়ালগাছা
১০ বুড়িচং ১৬৩.৭৬ বুড়িচং ইউনিয়ন (৯টি): রাজাপুর, বাকশীমূল, বুড়িচং সদর, ষোলনল, পীরযাত্রাপুর, ময়নামতি, মোকাম, ভারেল্লা এবং ভারেল্লা দক্ষিণ
১১ মনোহরগঞ্জ ১৬৩.৫৯ মনোহরগঞ্জ ইউনিয়ন (১১টি): বাইশগাঁও, সরসপুর, হাসনাবাদ, ঝলম উত্তর, ঝলম দক্ষিণ, মৈশাতুয়া, লক্ষণপুর, খিলা, উত্তর হাওলা, নাথেরপেটুয়া এবং বিপুলাসার
১২ মুরাদনগর ৩৩৯ বাঙ্গরাবাজার ইউনিয়ন (১০টি): শ্রীকাইল, আকুবপুর, আন্দিকোট, পূর্বধইর পূর্ব, পূর্বধইর পশ্চিম, বাঙ্গরা পূর্ব, বাঙ্গরা পশ্চিম, চাপিতলা, রামচন্দ্রপুর উত্তর এবং টনকী
মুরাদনগর ইউনিয়ন (১২টি): কামাল্লা, যাত্রাপুর, রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ, মুরাদনগর সদর, নবীপুর পূর্ব, নবীপুর পশ্চিম, ধামঘর, জাহাপুর, ছালিয়াকান্দি, দারোরা, পাহাড়পুর এবং বাবুটিপাড়া
১৩ মেঘনা ৯৮.৪৭ মেঘনা ইউনিয়ন (৮টি): চন্দনপুর, চালিভাঙ্গা, রাধানগর, মানিকারচর, বড়কান্দা, গোবিন্দপুর, লুটেরচর এবং ভাওরখোলা
১৪ লাকসাম লাকসাম পৌরসভা (১টি): লাকসাম
ইউনিয়ন (৮টি): বাকই, মুদাফফরগঞ্জ, মুদাফফরগঞ্জ দক্ষিণ, কান্দিরপাড়, গোবিন্দপুর, উত্তরদা, আজগরা এবং লাকসাম পূর্ব
১৫ লালমাই লালমাই ইউনিয়ন (৯টি): বাগমারা উত্তর, বাগমারা দক্ষিণ, ভুলইন উত্তর, ভুলইন দক্ষিণ, পেরুল উত্তর, পেরুল দক্ষিণ, বেলঘর উত্তর, বেলঘর দক্ষিণ এবং বাকই উত্তর
১৬ সদর দক্ষিণ সদর দক্ষিণ ইউনিয়ন (৬টি): বিজয়পুর, চৌয়ারা, গলিয়ারা, বারপাড়া, জোড়কানন পশ্চিম এবং জোড়কানন পূর্ব
১৭ হোমনা ১৪২.৭৯ হোমনা পৌরসভা (১টি): হোমনা
ইউনিয়ন (৯টি): মাথাভাঙ্গা, ঘাগুটিয়া, দুলালপুর, চান্দেরচর, আছাদপুর, নিলখী, ভাসানিয়া, ঘারমোড়া এবং জয়পুর

সংসদীয় আসন

সম্পাদনা
সংসদীয় আসন জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[] সংসদ সদস্য[][][][১০][১১] রাজনৈতিক দল
২৪৯ কুমিল্লা-১ মেঘনা উপজেলা এবং দাউদকান্দি উপজেলা শূন্য
২৫০ কুমিল্লা-২ তিতাস উপজেলা এবং হোমনা উপজেলা শূন্য
২৫১ কুমিল্লা-৩ মুরাদনগর উপজেলা শূন্য
২৫২ কুমিল্লা-৪ দেবিদ্বার উপজেলা শূন্য
২৫৩ কুমিল্লা-৫ ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা এবং বুড়িচং উপজেলা শূন্য
২৫৪ কুমিল্লা-৬ কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এবং কুমিল্লা সেনানিবাস শূন্য
২৫৫ কুমিল্লা-৭ চান্দিনা উপজেলা শূন্য
২৫৬ কুমিল্লা-৮ বরুড়া উপজেলা শূন্য
২৫৭ কুমিল্লা-৯ লাকসাম উপজেলা এবং মনোহরগঞ্জ উপজেলা শূন্য
২৫৮ কুমিল্লা-১০ নাঙ্গলকোট উপজেলা, লালমাই উপজেলা এবং কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা শূন্য
২৫৯ কুমিল্লা-১১ চৌদ্দগ্রাম উপজেলা শূন্য

শিক্ষা

সম্পাদনা

কুমিল্লা জেলার সাক্ষরতার হার ৮১.৫১%। এ জেলায় রয়েছে:[]

  • বিশ্ববিদ্যালয় (সরকারি) - ১টি
  • বিশ্ববিদ্যালয় (বেসরকারি) - ৪টি
  • বিশ্ববিদ্যালয় (আর্মি নিয়ন্ত্রিত) - ১টি
  • মেডিকেল কলেজ (সরকারি) - ১টি
  • মেডিকেল কলেজ (বেসরকারি) - ৩টি
  • মেডিকেল কলেজ (আর্মি নিয়ন্ত্রিত) - ১টি
  • কামিল মাদ্রাসা - ১০টি
  • ক্যাডেট কলেজ - ১টি
  • সরকারি পলিটেকনিক - ১টি
  • কলেজ (সরকারি) - ১০টি
  • বাণিজ্যিক কলেজ (সরকারি) - ২টি
  • কলেজ (বেসরকারি) - ৩১টি
  • ফাজিল মাদ্রাসা - ৬৩টি
  • শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ - ১টি
  • পিটিআই - ১টি
  • এইচএসটিটিআই - ১টি
  • মেডিকেল এসিসটেন্ট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (সরকারি) - ১টি
  • মেডিকেল এসিসটেন্ট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বেসরকারি) - ১টি
  • নার্সিং ইনস্টিটিউট (সরকারি)- ১ টি
  • স্কুল এন্ড কলেজ - ৯০টি
  • আলিম মাদ্রাসা - ৭৫টি
  • মাধ্যমিক বিদ্যালয় (সরকারি) - ৯টি
  • মাধ্যমিক বিদ্যালয় (অন্যান্য) - ৫৮০টি
  • দাখিল মাদ্রাসা - ২৩৩টি
  • নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় - ৫৫টি
  • প্রাথমিক বিদ্যালয় - ১৩৩০টি
  • ইবতেদায়ী মাদ্রাসা - ৭১টি
  • পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ( বেসরকারি) - ০৩ টি

যোগাযোগ ব্যবস্থা

সম্পাদনা
আকাশপথ

কুমিল্লা বিমানবন্দর কুমিল্লা জেলায় আকাশপথে যোগাযোগের মাধ্যম ছিল। বর্তমানে এটির রাডার ব্যবস্থা ছাড়া সবকিছু বন্ধ রয়েছে। ১৯৭৬ সালে শেষ যাত্রীবাহী বিমান উড়েছিল কুমিল্লা বিমানবন্দর থেকে। বর্তমান সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কুমিল্লা বিমানবন্দরকে পুনরায় চালু করার।

সড়কপথ

ঢাকা, চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে বিভিন্ন এসি/নন-এসি বাস যাতায়াত করে থাকে। বর্তমানে ঢাকা থেকে এশিয়া এয়ারকন, এশিয়া লাইন, এশিয়া এক্সক্লুসিভ,মিয়ামি এয়ারকন,রয়েল কোচ। চট্টগ্রাম থেকে সৌদিয়া, তিশা প্লাটিনাম, প্রান্তিক পরিবহন। সিলেট থেকে রিয়েল কোচ। কক্সবাজার থেকে এশিয়া এয়ারকন, রয়েল কোচ, মিয়ামি এয়ারকন, সৌদিয়া ইত্যাদি বাসগুলো চলাচল করছে। দেশের প্রধান জাতীয় সড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক কুমিল্লা শহরের উপর দিয়ে গেছে। এছাড়া এ জেলার সাথে সংযুক্ত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর মধ্যে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক, কুমিল্লা-বিবিরবাজার স্থল বন্দর সংযোগ সড়ক, কুমিল্লা-লালমাই-চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর-বেগমগঞ্জ সড়ক, লালমাই-লাকসাম-সোনাইমুড়ি সড়ক উল্লেখযোগ্য।

রেলপথ

ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট সহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রেলযোগেও কুমিল্লা জেলায় যাতায়াত করা যায়। কুমিল্লা রেলস্টেশনলাকসাম রেলস্টেশন এ জেলার প্রধান দুইটি রেলওয়ে স্টেশন। অন্যান্য রেলওয়ে স্টেশনগুলোর মধ্যে রয়েছে নাঙ্গলকোট, গুণবতী, হাসানপুর, নাওটি, সদর রসুলপুর, রাজাপুর, শশীদল, সালদানদী

নদীপথ

কুমিল্লা জেলায় নদীপথেও যোগাযোগ করা যায়। তবে সড়ক ও রেল যোগাযোগ সহজতর হওয়ায় নদীপথে শুধুমাত্র আঞ্চলিক যোগাযোগ হয়ে থাকে। এ জেলার একমাত্র নদীবন্দর দাউদকান্দি বাউশিয়া নদীবন্দর এবং এ জেলায় মোট ৩৪টি ফেরীঘাট রয়েছে।[]

 
গোমতী নদী, কাপ্তান বাজার, কুমিল্লা।

কুমিল্লা জেলার প্রধান নদ-নদীগুলো হলোঃ মেঘনা নদী, গোমতী নদী, পুরনো তিতাস নদী, ডাকাতিয়া নদী, কাঁকড়ি নদী, ছোট ফেনী নদী, আর্সি নদী, বুড়ি নদী, খিরাই নদী, ঘুংঘুর নদী এবং সালদা নদী

অর্থনীতি

সম্পাদনা

কুমিল্লা জেলার অর্থনীতি মূলত কৃষিভিত্তিক। এ অঞ্চলের দারিদ্রতার হার ২০.৬%। এই জেলার অর্থনীতি ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে কৃষির মাধ্যমে। এ জেলার প্রায় ১১.৬% মানুষ ব্যবসার সাথে জড়িত। এখানে ২টি শিল্প নগরী রয়েছে। কুমিল্লায় রয়েছে বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস লিমিটেড এর মূল স্থাপনা এবং গ্যাস ফিল্ড।[১২]

স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

সম্পাদনা

কুমিল্লা জেলায় স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবার জন্য রয়েছে:[]

  • মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল - ১টি
  • জেনারেল হাসপাতাল - ১টি
  • সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল - ১টি
  • পুলিশ হাসপাতাল - ১টি
  • কেন্দ্রীয় কারা হাসপাতাল - ১টি
  • উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র - ২১টি
  • ডায়াবেটিক হাসপাতাল - ২টি
  • চক্ষু হাসপাতাল - ২টি
  • পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্র - ১৩টি
  • টিবি ক্লিনিক - ১টি
  • স্কুল হেলথ ক্লিনিক - ১টি
  • উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র - ৪৮টি
  • ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র - ১২৩টি

দর্শনীয় স্থান

সম্পাদনা
 
চন্ডী মুড়া
 
রাজেশপুর ইকো পার্ক
 
শালবন বৌদ্ধ বিহার

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব

সম্পাদনা

সিনিয়র সচিব,প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "কুমিল্লা জেলা"comilla.gov.bd। ৩ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৯ 
  2. "জেলাগুলোর শ্রেণি হালনাগাদ করেছে সরকার"। বাংলানিউজ২৪। ১৭ আগস্ট ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০২০ 
  3. "কুমিল্লা জেলা - বাংলাপিডিয়া"bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-০৬ 
  4. "কুমিল্লা জেলা"comilla.gov.bd। ২৫ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৯ 
  5. "কুমিল্লা জেলা"comilla.gov.bd। ৩ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৯ 
  6. "Election Commission Bangladesh - Home page"www.ecs.org.bd 
  7. "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (পিডিএফ)ecs.gov.bdবাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯ 
  8. "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  9. "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  10. "জয় পেলেন যারা"দৈনিক আমাদের সময়। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  11. "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"সমকাল। ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  12. "কুমিল্লা জেলা"comilla.gov.bd। ৩ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা