মনোহরগঞ্জ উপজেলা
মনোহরগঞ্জ উপজেলা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা জেলায় অবস্থিত একটি উপজেলা।
মনোহরগঞ্জ | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে মনোহরগঞ্জ উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৯′ উত্তর ৯১°৪′ পূর্ব / ২৩.১৫০° উত্তর ৯১.০৬৭° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | কুমিল্লা জেলা |
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ | ২৫৭ কুমিল্লা-৯ |
সরকার | |
• জাতীয় সংসদ সদস্য | মোঃ তাজুল ইসলাম (বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ) |
• উপজেলা চেয়ারম্যান | মো: আব্দুল মান্নান |
আয়তন | |
• মোট | ১৬৬ বর্গকিমি (৬৪ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ২,৪২,৪৩২ |
• জনঘনত্ব | ১,৫০০/বর্গকিমি (৩,৮০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | % |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৩৬২৩ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ২০ ১৯ ৭৪ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনাআয়তন: ১৬৬.৫০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০৪´ থেকে ২৩°১২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫৯´ থেকে ৯১°০৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। উত্তরে লাকসাম উপজেলা, দক্ষিণে নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলা, সেনবাগ উপজেলা ও সোনাইমুড়ি উপজেলা, লক্ষ্মীপুর জেলা রামগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে নাঙ্গলকোট উপজেলা, পশ্চিমে চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলা।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মনোহরগঞ্জ বাজারের দক্ষিণ পাশে ডাকাতিয়া নদীর কিনারা ঘেষে খোদাই ভিটাতে অবস্থিত।
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনামনোহরগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে ১১টি ইউনিয়ন রয়েছে। ১টি ফাঁড়ি থানা (পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র) উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম মনোহরগঞ্জ থানার আওতাধীন।
ইতিহাস
সম্পাদনাতৎকালীন মেল্লা শহর বর্তমান লাকসামস্থ ঘাগরিয়া খালের পাড়ে অবস্থিত মেল্লারের দিকে খরস্রোতা নদী পথে যেতে ডাকাতিয়া নদী ও ঘাগরিয়া নদীর মোহনায় ব্যবসায়ীদের মনোহরণকারী স্থান হিসেবে মনোহরগঞ্জের নামকরণ হয় মর্মে কথিত আছে। পাট ব্যবসায়ীক কেন্দ্রস্থল মনোহরগঞ্জ পরবর্তীকালে গঞ্জে রূপান্তরিত হয় মর্মে অনেকে মনে করেন। কারো-কারো মতে মনোহর নামে একজন মৃৎশিল্প/কুম্বকার এনে গড়ে তোলে ছিলেন হাড়ি-পাতিলের কারখানা। ব্যবসায়ীরা তার নামকে ঐতিহ্য হিসেবে স্থানের নামকরণ করেন মনোহরগঞ্জ। ঐতিহাসিক সত্যতা যাই হোক না কেন, মনোহরগঞ্জ একটি মনমুগ্ধকর প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ীক স্থান যাহা ০৩ (তিন)টি ইউনিয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত। এই উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম-জলিপুর,পোমগাঁও,মান্দার গাঁও পিয়ারাতলি,ডাবুরিয়া হাট, নাথেরপেটুয়া বাজার।
মুন্সিরহাট বাজার, আতর আলী মার্কেট, মান্দারগাঁও বাজার, হাসনাবাদ বাজার,সরসপুর বাজার ও মড়হ পশ্চিমপাড়া বাজার।
হাট বাজারের মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধঃ- বাজার হলো লক্ষণপুর বাজার,মনোহরগঞ্জ বাজার, নাথেরপেটুয়া বাজার, খিলা বাজার,বিপুলাসার বাজার, হাসনাবাদ বাজার।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিগত ২৬ আগস্ট ২০০৪ তারিখ নিকার এর ৯০তম বৈঠকে ১১টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে মনোহরগঞ্জ উপজেলা নামে একটি নতুন প্রশাসনিক উপজেলা গঠন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। অতঃপর ০৫/০২/২০০৫ তারিখ হতে মনোহরগঞ্জ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি
সম্পাদনা১৯৭১ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর এ উপজেলায় হাসনাবাদ বাজারের উত্তরে চৌমুহনী নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ লড়াইয়ে প্রায় ৭০ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনাজনসংখ্যা মোট :২৪২৪৩২জন; পুরুষ ১১৮৯১৮ জন, মহিলা ১২৩৫১৪ জন। জনসংখার ঘনত্ব: ১৪৬০ জন/বর্গ কি.মি.
শিক্ষা
সম্পাদনাশিক্ষার বিস্তারে এই উপজেলায় ১টি সরকারী কলেজ সহ মোট ৪টি কলেজ,১টি সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহ মোট ২৭ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৬ টি মাদ্রাসা এবং ১০৫ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
অর্থনীতি
সম্পাদনামনোহরগন্জ এর অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর, তবে এখানকার বহু বিশিষ্ট ব্যবসায়ীগণ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সফলতার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করছেন, অনেক শিল্পপতি আছে এই অঞ্চলে। এ উপজেলায় প্রাকৃতিক সম্পদের কোন ক্ষেত্র যেমন- তেল, গ্যাস বা কয়লা খনি পাওয়া যায়নি। এলাকার জনসাধারন কৃষিজাত পণ্য, শস্য উৎপাদন এবং মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে।
নদ-নদী
সম্পাদনামনোহরগঞ্জ উপজেলার উল্লেখযোগ্য নদী হচ্ছে ডাকাতিয়া নদী। উপজেলাটি ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে অবস্থিত। উপজেলার কাছে নদীর একপ্রান্তে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাঁধ নির্মাণ করা আছে। এক সময় এ নদীই ছিল মনোহরগঞ্জ উপজেলায় যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। বর্তমানেও সীমিত আকারে এ নদীর মাধ্যমে একস্থান থেকে অন্যস্থানে মালামাল পার করা হয়। বর্তমানে এই নদীর পানি দ্বারা কৃষিকাজ করা হয়। অধিকন্তু এই নদীতে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। এছাড়া লক্ষণপুর চর ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ আগস্ট ২০২১ তারিখে, যা কিনা ডাকাতিয়া নদীর কোল ঘেঁষে ৩টি খালের সংযোগস্থল। বিশাল জায়গা জুড়ে লক্ষণপুর চর ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ আগস্ট ২০২১ তারিখে কে ঘিরে আছে অনেক ইতিহাস ও ঐতিহ্য।
উল্লেখযোগ্য স্থান ও স্থাপনা
সম্পাদনা- শরীফপুর শাহী মসজিদ।
- শরীফপুর পীর শাহশরীফ (রহঃ) এর মাজার।
- মনোহরগঞ্জ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ
- রাখাল রাজার জমিদার বাড়ি
- দিশাবন্দের ধিকচান্দা মঠ বাড়ীর মঠ,
- তাহেরপুর মিয়া বাড়ি জামে মসজিদ
- মিয়া সাহেবের দরগাহ সংলগ্ন নরহরিপুর দিঘি,
- শরীফপুর মাজার সংলগ্ন নাগেশ্বর দিঘি।
- জলিপুর দিঘী।
- আমতলি কেরামতিয়া ঈদগাঁহ।
- নবীশুরের জামে মসজিদ।
- মড়হ দক্ষিণ পাড়া ঈদগাঁহ ময়দান।
- লক্ষণপুর কালীমন্দির।
- ভাউপুর পাটোয়ারী বাড়ি জামে মসজিদ।
- মনোহরগঞ্জ বাজার
- মনোহরগঞ্জ ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা
- লক্ষণপুর চর
- নাথেরপেটুয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদরাসা
- নাথেরপেটুয়া ডিগ্রী কলেজ
- নাথেরপেটুয়া বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়
- নাথেরপেটয়া বড়দিঘী
বিবিধ
সম্পাদনানির্বাচনী এলাকা: ২৫৭, কুমিল্লা -৯। খানা: ৪১৮২৪ টি, মৌজা: ১৪৫ টি, সরকারি হাসপাতাল: ১ টি, স্বাস্থ্য কেন্দ্র: ৩ টি, ক্লিনিক : ৩ টি, পোষ্ট অফিস : ৩১ টি, হাট-বাজার: ২৪ টি, ব্যাংক :৪ টি, নদী :১ টি (ডাকাতিয়া), পাকা রাস্তা: ১০৮ কি.মি. কাঁচা রাস্তা: ৪২০ কি.মি.
যোগাযোগ ব্যবস্থা
সম্পাদনাসড়ক পথ : পাকা রাস্তা-১০৮ কি.মি., কাঁচা রাস্তা - ৪২০ কি.মি. মোটঃ ৫৪৪ কি.মি.
জনপ্রতিনিধি
সম্পাদনাসংসদীয় আসন | জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[২] | সংসদ সদস্য[৩][৪][৫][৬][৭] | রাজনৈতিক দল |
---|---|---|---|
২৫৭ কুমিল্লা-৯ | লাকসাম উপজেলা এবং মনোহরগঞ্জ উপজেলা | তাজুল ইসলাম | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে মনোহরগঞ্জ উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৫।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Election Commission Bangladesh - Home page"। www.ecs.org.bd।
- ↑ "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (পিডিএফ)। ecs.gov.bd। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"। বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"। প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "জয় পেলেন যারা"। দৈনিক আমাদের সময়। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"। সমকাল। ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।