রফিকুল ইসলাম (বিজ্ঞানী)
রফিকুল ইসলাম (১৯৩৬ - ৬ই মার্চ, ২০১৮) ছিলেন একজন বাংলাদেশী চিকিৎসক ও চিকিৎসা বিজ্ঞানী। তিনি ডায়রিয়া নিরাময়ের জন্য খাওয়ার স্যালাইন (ওরস্যালাইন) আবিষ্কারের জন্য পরিচিত। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যান্সেট তার আবিষ্কৃত খাবার স্যালাইনকে "চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার" বলে উল্লেখ করেছিল।[১]
রফিকুল ইসলাম | |
---|---|
জন্ম | ১৯৩৬ |
মৃত্যু | ৬ মার্চ ২০১৮ অ্যাপোলো হাসপাতাল, ঢাকা, বাংলাদেশ | (বয়স ৮১–৮২)
মৃত্যুর কারণ | হার্ট অ্যাটাক |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
শিক্ষা | ট্রপিক্যাল মেডিসিন ও হাইজিন |
মাতৃশিক্ষায়তন | ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ |
পরিচিতির কারণ | খাবার স্যালাইন (ওরস্যালাইন) আবিষ্কারক |
সন্তান | ৩ |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | চিকিৎসা |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডাইরিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনারফিকুল ইসলাম ১৯৩৬ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) কুমিল্লার (বর্তমানে নাঙ্গলকোট) রায়কোট উত্তর ইউনিয়ের মালিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৫ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। পরবর্তীতে তিনি ব্রিটেনে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঔষধ এবং স্বাস্থ্যবিধি (ট্রপিক্যাল মেডিসিন ও হাইজিন) বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করেন।[২]
কর্মজীবন
সম্পাদনাএমবিবিএস পাস করার পর তিনি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডাইরিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ-এ যোগদান করেন এবং ২০০০ সালে এই প্রতিষ্ঠান থেকে অবসরে যান। এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকাকালীন তিনি বিভিন্ন ঔষধ নিয়ে গবেষণা করেন। তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হল খাবার স্যালাইন (ওরস্যালাইন)। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শরনার্থী শিবিরগুলোতে কলেরা ছড়িয়ে পড়লে একমাত্র চিকিৎসা হিসেবে শিরায় স্যালাইন (ইন্ট্রাভেনাস) দেওয়া হত। কিন্তু ইন্ট্রাভেনাসের স্বল্পতার কারণে তার আবিষ্কৃত খাবার স্যালাইন দিয়ে এই রোগ থেকে সুস্থতা লাভ সম্ভব হয়েছিল।[৩]
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ডায়রিয়ার চিকিৎসায় স্যালাইনের ব্যবহার নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। এর ফলে, এটি "ঢাকা স্যালাইন" নামেও পরিচিতি লাভ করেছিল। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওরস্যালাইনকে স্বীকৃতি দেয়। এছাড়া বাংলাদেশী বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক এই খাবার স্যালাইনকে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দিতে ভূমিকা রাখে।[৪]
মৃত্যু
সম্পাদনারফিকুল ইসলাম ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। ২০১৮ সালের ৬ই মার্চ তিনি ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।[৫] ৬ই মার্চ মরহুমের গ্রামের বাড়ী মালিপাড়ায় বিশাল জানাজা শেষে পিতামাতার কবরের পাশে চির শায়িত হন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "চলে গেলেন খাওয়ার স্যালাইন আবিষ্কারক রফিকুল ইসলাম"। দ্য ডেইলি স্টার। ৬ মার্চ ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৮।
- ↑ "খাবার স্যালাইনের আবিষ্কারক ডা. রফিকুল ইসলাম আর নেই"। দৈনিক মানবজমিন। ৬ মার্চ ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৮।
- ↑ "খাবার স্যালাইনের আবিষ্কারক ডা. রফিকুল ইসলামের ইন্তেকাল"। দৈনিক যুগান্তর। ৬ মার্চ ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৮।
- ↑ "ওরস্যালাইনের আবিষ্কারক ডা. রফিকুল ইসলাম আর নেই"। বাংলাদেশ প্রেস। ৬ মার্চ ২০১৮। ৯ মার্চ ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৮।
- ↑ "খাবার স্যালাইনের আবিষ্কারক রফিকুর ইসলাম আর নেই"। সময় নিউজ। ৬ মার্চ ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৮।