ইকবাল করিম ভূঁইয়া
জেনারেল (অবঃ) ইকবাল করিম ভূঁইয়া (জন্ম: ২ জুন ১৯৫৭) হলেন বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান।[২] তিনি ২০১২ সালের ২৫ জুন দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ২০১৫ সালের ২৫ জুন অবসর গ্রহণ করেন। সেনাপ্রধান হিসেবে তিনি জেনারেল আবদুল মুবীনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন।
ইকবাল করিম ভূঁইয়া | |
---|---|
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৪তম সেনাপ্রধান | |
কাজের মেয়াদ ২৫ জুন ২০১২ – ২৫ জুন ২০১৫ | |
পূর্বসূরী | আবদুল মুবীন |
উত্তরসূরী | আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | কুমিল্লা, পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) | ২ জুন ১৯৫৭
দাম্পত্য সঙ্গী | তাহমিনা ইয়াসমিন[১] |
সামরিক পরিষেবা | |
আনুগত্য | বাংলাদেশ |
শাখা | বাংলাদেশ সেনাবাহিনী |
কাজের মেয়াদ | ১৯৭৬-২০১৫ (৩৯ বছর) |
পদ | জেনারেল |
ইউনিট | ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট |
কমান্ড | জেনারেল অফিসার কমান্ডিং: ৯ পদাতিক ডিভিশন, সাভার ২৪ পদাতিক ডিভিশন, চট্টগ্রাম জেনারেল স্টাফ প্রধান সেনাপ্রধান |
যুদ্ধ | পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্রোহ বিরোধী অভিযান উপসাগরীয় যুদ্ধ ইউএনএএমসিল |
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
সম্পাদনাইকবাল ১৯৫৭ সালের ২ জুন তারিখে কুমিল্লা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।[৩] তিনি ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির ৩য় স্বল্পমেয়াদী কোর্সে যোগ দেন।
কর্মজীবন
সম্পাদনাইকবাল করিম ভূঁইয়া ১৯৭৬ সালের ১৯শে মার্চ বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৭৬ সালের ৩০শে নভেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কমিশনপ্রাপ্ত হন। দীর্ঘ সামরিক জীবনে ইকবাল বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমীর প্লাটুন কমান্ডার, ১১ পদাতিক ডিভিশনের কর্নেল স্টাফ, ১০৫ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার এবং ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের ডাইরেক্টিং স্টাফ হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
তিনি ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের কমান্ড্যান্ট এবং পদাতিক ও যুদ্ধ কৌশল বিদ্যাপীঠের কমান্ড্যান্ট ছিলেন।
ডিভিশন কমান্ডার হিসেবে তিনি ১৯ পদাতিক ডিভিশন, ২৪ পদাতিক ডিভিশন এবং ৯ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ছিলেন। তিনি সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে চীফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
২০১০ সালের মে মাসে তিনি পদোন্নতি পেয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল হন। জাতিসংঘ মিশনে কমান্ডার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।[৪] তিনি সেনা প্রধান হওয়ার পূর্বে কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল (কিউএমজি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।[৫] তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবিরোধী অভিযান এবং 'অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম'-এ সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। 'অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম'-এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য তিনি লিবারেশন অব কুয়েত মডেল লাভ করেন।
পরবর্তী জীবন
সম্পাদনা২০১৫ সালের ২৫শে জুন তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। সেসময়ে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। সামরিক হাসপাতালের উন্নয়ন, সেনাসদস্যদের পারিবারিক পেনশন বৃদ্ধি, কমান্ডো ও প্যারাকমান্ডো সদস্যদের বিমার আওতায় আনা এবং নতুন বেতন-স্কেল প্রণয়নের ক্ষেত্রেও তিনি প্রশংসিত হন।[৬] ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণহত্যা চলাকালীন সময়ে তিনি এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। ৩১শে জুলাই তিনি তার ফেসবুক প্রোফাইল লাল করে প্রতিবাদ করেন।[৭] এরপর ৪ই আগস্ট অন্য আরো ৪৮জন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে গণহত্যার প্রতিবাদ জানান । এছাড়া সেই সম্মেলন থেকে সশস্ত্র বাহিনীকে ছাউনিতে ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বানও জানান তারা।[৮][৯][১০]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৮ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০১৫।
- ↑ "দৈনিক প্রথম আলো"। ২০১৮-০৭-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-০৩।
- ↑ "Chief of Army Staff"। ২৮ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০১৫।
- ↑ "নতুন সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়া"। banglanews24.com। ২০২৪-১০-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-১৯।
- ↑ bdnews24.com। "সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নিলেন ইকবাল করিম"। সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নিলেন ইকবাল করিম (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-১৯।
- ↑ "বিদায়ী সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়াকে গার্ড অব অনার"। www.kalerkantho.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-১৯।
- ↑ "জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া তার ফেসবুক আইডি লাল করলেন"। মানবজমিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-১৯।
- ↑ প্রতিনিধি, বিশেষ (২০২৪-০৮-০৪)। "সামরিক বাহিনীকে ছাউনিতে ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-১৯।
- ↑ রিপোর্ট, স্টার অনলাইন (২০২৪-০৮-০৪)। "'সশস্ত্র বাহিনীকে ছাত্র-জনতার মুখোমুখি দাঁড় করাবেন না'"। The Daily Star Bangla (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-১৯।
- ↑ "এত হত্যা মেনে নেওয়া যায় না : সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম"। NTV Online (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৪-০৮-০৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-১৯।
পূর্বসূরী জেনারেল আব্দুল মুবীন |
সেনাবাহিনী প্রধান ২৫ জুন ২০১২ - ২৫ জুন ২০১৫ |
উত্তরসূরী জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক |