ফরিদ উদ্দিন আহমেদ

বাংলাদেশি শিক্ষক

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ হচ্ছেন একজন বাংলাদেশি শিক্ষক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য।[১]

ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ম উপাচার্য
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
১৭ আগস্ট ২০১৭
পূর্বসূরীমোঃ আমিনুল হক ভূঁইয়া
ব্যক্তিগত বিবরণ
নাগরিকত্ববাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশি
প্রাক্তন শিক্ষার্থীমোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাবিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক

শিক্ষা এবং কর্মজীবন সম্পাদনা

ফরিদ উদ্দিন মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন।[২] তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীনের দায়িত্ব পালন করেছেন।[২] তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি।[১] ফরিদ উদ্দিন বর্তমানে ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি টিচার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

২০১৭ সালের ২১ অগাস্ট, ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে প্রথম মেয়াদে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০২১ সালে তার প্রথম মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার প্রায় দেড়মাস আগে তাকে দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়।[৩]

বিতর্ক ও সমালোচনা সম্পাদনা

উপাচার্যের দায়িত্ব পালনকালে স্বেচ্ছাচারিতা, একগুঁয়েমি ও বেপরোয়া আচরণ করেছেনসহ বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যায় ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে।[৪] বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের অভ্যন্তরীণ সমস্যায় নজিরবিহীনভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশি অ্যাকশনের ফলে তা শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপাচার্যের একটি অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে, যাতে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিয়ে 'অশালীন মন্তব্য' করেছেন বলে অভিযোগ উঠে।[৪] তার বিরুদ্ধে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নতুন নিয়োগে আঞ্চলিকতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগও উঠে।[৪]

উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন

২০২২ সালে ১৩ জানুয়ারি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমদ লিজার পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয়। এসময় ছাত্রলীগের ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী এসে গোলচত্বর এলাকায় অবস্থান নেয়। তারা ছাত্রীদের হলে ফিরে যাওয়ার জন্য হুমকি দিতে থাকেন। এসময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করে।[৫] এ ঘটনার পরে শিক্ষার্থীরা ফের সংঘঠিত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।[৫] ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে। পুলিশ উপাচার্যকে মুক্ত করতে ভবনের ভেতরে ঢুকতে চাইলে আন্দোলনকারীরা বাধা দেন। তখন পুলিশ শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার পাশাপাশি লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে। এ সময় অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী, ১০ জন পুলিশ সদস্য এবং কয়েকজন শিক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মী আহত হন।[৬] পরে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দেন। পুলিশি হামলা ও ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণার পর থেকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করে।[৬] ১৯ তারিখ পর তার পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।[৪]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "শাবিপ্রবিতে দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য হলেন ফরিদ উদ্দিন আহমেদ"প্রথম আলো। ৩০ জুন ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০২২ 
  2. "Faculty Members List: Department of Economics"। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সংগ্রহের তারিখ ১৯ আগস্ট ২০১৭ 
  3. প্রতিনিধি, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়; ডটকম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর। "শাবিতে আবার উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন"bangla.bdnews24.com। ২০ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০২২ 
  4. "আন্দোলনের পেছনে সাড়ে চার বছরের ক্ষোভ"সমকাল। ২০ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০২২ 
  5. "শাবিপ্রবির উপাচার্য অবরুদ্ধ"unb.com.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০২২ 
  6. "হল ছাড়তে 'না', উপাচার্যের পদত্যাগ চান শিক্ষার্থীরা"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০২২