খন্দকার মোশতাক আহমেদ
খন্দকার মোশতাক আহমেদ (১৯১৯ — ৫ মার্চ ১৯৯৬) বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ থেকে ৬ নভেম্বর ১৯৭৫ পর্যন্ত অঘোষিতভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১]
খন্দকার মোশতাক আহমেদ | |
---|---|
![]() | |
বাংলাদেশের ৫ম রাষ্ট্রপতি | |
কাজের মেয়াদ ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ – ৬ নভেম্বর, ১৯৭৫ | |
পূর্বসূরী | শেখ মুজিবুর রহমান |
উত্তরসূরী | আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | আনু. ১৯১৯ দাউদকান্দি, ত্রিপুরা জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান কুমিল্লা, বাংলাদেশ) |
মৃত্যু | ৫ মার্চ ১৯৯৬ ঢাকা, বাংলাদেশ |
রাজনৈতিক দল | ডেমোক্র্যাটিক লীগ |
অন্যান্য রাজনৈতিক দল | |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
মন্ত্রীসভা |
জন্ম ও প্রাথমিক জীবনসম্পাদনা
খন্দকার মোশতাক আহমেদ ১৯১৮ সালে ত্রিপুরা জেলার (বর্তমানে কুমিল্লা জেলা) দাউদকান্দির দশপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
শিক্ষাসম্পাদনা
খন্দকার মোশতাক আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯৪২ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম মহাসচিব।
রাজনীতিসম্পাদনা
খন্দকার মোশতাক ১৯৪২ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন। তিনি আহমেদ যুক্তফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। কেন্দ্রীয় সরকার ১৯৫৩ সালের আর্টিকেল ৯২-এ ব্যবহার করে যুক্তফ্রন্ট সরকার ভেঙ্গে দিলে ১৯৫৪ সালে তাকে কারাবরণ করতে হয়। ১৯৫৫ সালে তিনি মুক্ত হয়ে আবার সংসদে যুক্তফ্রন্টের চিফ হুইপ হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি করার পর তিনি আবার বন্দি হন। ১৯৬৬ সালে ছয়-দফার সমর্থন করায় তাকে আবার কারাবরণ করতে হয়।[২] দেশের আটটি রাজনৈতিক দল ১৯৬৯ সালে আইয়ুব বিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদ গঠন করলে তাতে খন্দকার মোশতাক আহমেদ পশ্চিম পাকিস্তান অংশের সমন্বয়ক ছিলেন। ১৯৬৯ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে আইয়ুব খানের ডাকা গোল টেবিল বৈঠকে তিনি আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি পাকিস্তান জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন।
মুক্তিযুদ্ধসম্পাদনা
মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকারে তিনি পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন।[৩][৪] দেশ স্বাধীন হবার পর শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারে তিনি বিদ্যুৎ, সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে তাকে বাণিজ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি বাকশালের কার্যকরী কমিটির সদস্য ছিলেন।[৫]
৭৫' এ অবস্থানসম্পাদনা
কিছু সেনা কর্মকর্তাদের দ্বারা শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত হবার পর মোশতাক আহমেদ নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের জাতির সূর্যসন্তান বলে আখ্যা দেন।[৬][৭][৮] এই পদে তিনি মাত্র ৮৩ দিন ছিলেন। রাষ্ট্রপতির দ্বায়িত্ব নেবার পর তিনি ইনডেমিনিটি বিল পাশ করেন। তিনি "জয় বাংলা" স্লোগান পরিবর্তন করে এর স্থলে "বাংলাদেশ জিন্দাবাদ" স্লোগান চালু করেন। এই সময় তিনি "বাংলাদেশ বেতার" এই নাম পরিবর্তন করে রেডিও পাকিস্তানের আদলে "রেডিও বাংলাদেশ" করেন। তার শাসনামলে চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ, মোঃ মনসুর আলী ও এ. এইচ. এম. কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (৩ নভেম্বর) হত্যা করা হয়।
পরিণতিসম্পাদনা
তেসরা নভেম্বরে খালেদ মোশাররফ এর নেতৃত্বে অভ্যুত্থানে খন্দকার মোশতাককে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। ছয়ই নভেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অবশ্য জিয়াউর রহমান ক্ষমতা নেয়ার পর পরের বছর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। এসব কারণে তিনি জাতীয় বেইমান হিসেবে সর্বজন নিন্দিত। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যার পিছনে তিনিও জড়িত ছিলেন।[৯]
৭৫' পরবর্তী অবস্থানসম্পাদনা
১৯৭৬ সালে মোশতাক আহমেদ ডেমোক্র্যাটিক লীগ নামক এক নতুন দল প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছর সামরিক শাসককে অপসারণের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ২টি দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয় এবং আদালত তাকে ৫ বছরের শাস্তি প্রদান করে। জেল থেকে মুক্তিলাভের পর তিনি আবার সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেন।[১০]
মৃত্যুসম্পাদনা
১৯৯৬ সালের ৫ মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ "১৫ অগাস্ট: কী ছিল সেদিনের পত্রিকায়"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২০১৭-০৮-১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৮।
- ↑ "mujib bahini didnt fight liberation war"। newagebd.net। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২০।
- ↑ Correspondent, Senior; bdnews24.com। "PM pays homage to Bangabandhu to mark Mujibnagar Day"। bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২০।
- ↑ "Historic Mujibnagar Day being observed"। Dhaka Tribune। ২০১৪-০৪-১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২০।
- ↑ "অনেক আগে থেকেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্র মোশতাকের"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ২০১৭-০৮-০৯। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৮।
- ↑ Badrul Ahsan, Sayed (৩ অক্টোবর ২০১৩)। "The Dhaka pattern - Indian Express"। The Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০২০।
- ↑ "খন্দকার মোশতাকের উত্থান-পতন"। Bangla Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২০।
- ↑ সালেহ আতহার খান (২০১২)। "আহমদ, খোন্দকার মোশতাক"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ "তিরাশি দিনের শাসনামলে যা যা করেছিলেন খন্দকার মোশতাক"। BBC News বাংলা। ২০২১-০৮-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-১৬।
- ↑ "শোকাবহ আগস্ট ও সংগ্রামের দিনগুলি"। pbd.news। ৩ আগস্ট ২০১৮। ১০ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৮।
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
পূর্বসূরী: শেখ মুজিবুর রহমান |
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আগস্ট ১৫ ১৯৭৫ - নভেম্বর ৬ ১৯৭৫ |
উত্তরসূরী: আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম |
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |