লালমাই পাহাড় বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলায় অবস্থিত একটি বিচ্ছিন্ন পর্বতশ্রেণী। প্রায় পঁচিশ লক্ষ বছর আগে প্লাইস্টোসিন যুগে এই পাহাড় গঠিত হয়েছিল বলে অনুমান করা হয়। সে হিসেবে এটি বাংলাদেশের বরেন্দ্রভূমি এবং মধুপুরভাওয়াল গড়ের সমকালীন। লালমাই পাহাড় এর দৈর্ঘ্য ৮ কিলোমিটার এবং এর সবচেয়ে চওড়া অংশ ৪.৮ কিলোমিটার। এটির সর্বোচ্চ উচ্চতা ৪৬ মিটার। পাহাড়টির উত্তর অংশ ময়নামতি পাহাড় এবং দক্ষিণ অংশ লালমাই পাহাড় নামে পরিচিত।

লালমাই পাহাড়

নামকরণ সম্পাদনা

 
লালমাই পাহাড়ের লালমাটি

লালমাই পাহাড়ের মাটি লাল রংয়ের। যার কারণে একে লালমাই পাহাড় বলা হয়।

কুমিল্লার লালমাই পাহাড় নিয়ে একটি গল্প প্রচলিত আছে, রামরাবণ এর মধ্যে যখন যুদ্ধ সংগঠিত হয় সে সময় রামের ছোট ভাই লক্ষণ গুরুতর আহত হলে, বৈদ্যের নির্দেশ অনুযায়ী বৈশল্যকরণী গাছের পাতার রস ক্ষত স্থানে লাগানোর নির্দেশ দেয়। বৈদ্যের মতে, বৈশল্যকরণী পাতার রস লাগালে লক্ষণ ভালো হয়ে যাবে। আর তাই হনুমান বৈশল্যকরণী গাছ নিয়ে আসার জন্য হিমালয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। তবে হনুমান বৈশল্যকরণী গাছ না চিনতে পারায় গাছসহ পুরো হিমালয় পর্বতকেই তুলে নিয়ে আসে। চিকিৎসা শেষ হলে পর্বত টা যথাস্থানে রাখার জন্য হনুমান রওনা দেয়। কিন্তু যাত্রাপথে পর্বত এর কিছু অংশ কুমিল্লার লমলম সাগরে পরে যায়। তখন থেকেই এ স্থানের নাম লালমাই নামেই পরিচিত।

এছাড়া আরো কথিত আছে এক রাজার নাকি দুই কন্যা ছিল। এক কন্যার নাম লালমতি আরেক কন্যার নাম ময়নামতি। তাদের নামানুসারে এই লালমাই ও ময়নামতি পাহাড়ের নামকরণ করা হয়েছে।

অবৈধ মাটি কাটা সম্পাদনা

বর্তমানে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকির অভাবে এ ঐতিহ্য ধ্বংসের পর্যায়ে। অসাধু ভূমিদস্যুরা এ পাহাড়ের মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রয় করছে। এছাড়াও, মাটি কেটে আবাদি জমি বানানো হচ্ছে।[১]

চিত্রশালা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা