চৌদ্দগ্রাম উপজেলা
চৌদ্দগ্রাম বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
চৌদ্দগ্রাম | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°১৩′১২.০০০″ উত্তর ৯১°১৮′০.০০০″ পূর্ব / ২৩.২২০০০০০০° উত্তর ৯১.৩০০০০০০০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | কুমিল্লা জেলা |
প্রতিষ্ঠা | ১৯৮৩ |
আয়তন | |
• মোট | ২৭১.৭৩ বর্গকিমি (১০৪.৯২ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৪,৪৩,৬৪৮ |
• জনঘনত্ব | ১,৬০০/বর্গকিমি (৪,২০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৫৬.৯% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ২০ ১৯ ৩১ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনাচৌদ্দগ্রাম উপজেলার আয়তন ২৭১.৭৩ বর্গ কিলোমিটার। কুমিল্লা জেলার দক্ষিণ-পূর্বাংশে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার অবস্থান। এ উপজেলার উত্তরে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা, দক্ষিণে ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলা ও ফেনী সদর উপজেলা, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা, পশ্চিমে নাঙ্গলকোট উপজেলা ও লাকসাম উপজেলা।
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনাচৌদ্দগ্রাম উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম চৌদ্দগ্রাম থানার আওতাধীন।
- ১নং কাশিনগর
- ২নং উজিরপুর
- ৩নং কালিকাপুর
- ৪নং শ্রীপুর
- ৫নং শুভপুর
- ৬নং ঘোলপাশা
- ৭নং চৌদ্দগ্রাম (চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ফলে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যক্রম বর্তমানে বিলুপ্ত)
- ৮নং মুন্সিরহাট
- ৯নং কনকাপৈত
- ১০নং বাতিসা
- ১১নং চিওড়া
- ১২নং গুণবতী
- ১৩নং জগন্নাথদীঘি
- ১৪নং আলকরা
ইতিহাস
সম্পাদনাআগরতলার মহারাজা রাজা বিরেন্দ্র বিক্রম কিশোর মানিক বাহাদুরের খুবই প্রিয় ছিল এই চৌদ্দগ্রাম এলাকা। এই অঞ্চল থেকে রাজার খাজাঞ্চি খানায় প্রচুর রাজস্ব জমা হতো। উদার রাজা এই অঞ্চলে অনেক জনহিতকর কাজও করেছেন। চৌদ্দগ্রামের বড় বড় জলাশয় ও দিঘীগুলো তার পরিচয় বহন করে। তৎকালীন সময়ে খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য বিভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলগুলোকে পরগণা বলে অভিহিত করা হত। চৌদ্দগ্রামেও একটি পরগণার সদর দপ্তর ছিল। এই পরগণাটি চৌদ্দটি গ্রাম নিয়ে প্রতিষ্ঠিত ছিল বলে এর নামকরণ হয় চৌদ্দগ্রাম। পরবর্তীতে যখন ১৯০৫ সালে থানা প্রতিষ্ঠিত হয় তখন কেন্দ্রের নাম অনুসারে পুরো থানার নামকরণ করা হয় চৌদ্দগ্রাম।
ভাষা ও সংস্কৃতি
সম্পাদনাচৌদ্দগ্রাম উপজেলার ভূ-প্রকৃতি ও ভৌগোলিক অবস্থান এই উপজেলার মানুষেরভাষা ও সংস্কৃতি গঠনে ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বঅঞ্চলে অবস্থিত এই উপজেলাকে ঘিরে রয়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, ঢাকা বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিভাগের অন্যান্য উপজেলাসমূহ। এখানে ভাষার মূল বৈশিষ্ট্য বাংলাদেশের অন্যান্য উপজেলার মতই, তবুও কিছুটা বৈচিত্র্য খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন কথ্য ভাষায় মহাপ্রাণধ্বনি অনেকাংশে অনুপস্থিত, অর্থাৎ ভাষা সহজীকরণের প্রবণতা রয়েছে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আঞ্চলিক ভাষার সাথে সন্নিহিত ঢাকা অঞ্চলের ভাষার, লাকসাম উপজেলার আঞ্চলিক ভাষায় নোয়াখালী এলাকার ভাষার অনেকটাই সাযুজ্য রয়েছে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ভাষা সংস্কৃতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সভ্যতা বহু প্রাচীন। এই এলাকায় প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষ প্রাচীন সভ্যতার বাহক হিসেবে দেদীপ্যমান।
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনাচৌদ্দগ্রাম উপজেলার জনসংখ্যা ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৬শ ৪৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৮ হাজার ১শ ৪৮জন ও মহিলা ২ লাখ ৩৫ হাজার ৫শ জন।
শিক্ষা
সম্পাদনামোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা: ৫৭২, এই উপজেলায় শিক্ষার হার ৮০.৩২%
- প্রাথমিক বিদ্যালয় - ১৬৮
- কিন্ডার গার্টেন - ১০৭
- এনজিও কেন্দ্র (ব্রাক) - ৮৭
- হাই স্কুল - ৫৮
- কলেজ - ১০
- স্কুল এন্ড কলেজ - ৪
- মাদ্রাসা - ৪৮
- স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা - ৪০
- কওমী মাদ্রাসা - ৫০।
অর্থনীতি
সম্পাদনাচৌদ্দগ্রাম উপজেলার অর্থনীতি প্রধানত কৃষি নির্ভর। উপজেলার মধ্যদিয়ে কয়েকটি নদী প্রবাহিত হওয়ার ফলে এর কৃষি জমি সমূহ বেশ উর্বর। এছাড়া এ অঞ্চলের অনেক লোক বিদেশ থাকার ফলে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক আয় এ উপজেলার অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। এটি বৈদেশিক মূদ্রা আয়ের দিক থেকে ২য়। বর্তমানে এখানকার অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সমৃদ্ধ ও সমুন্নত হয়েছে।
নদ-নদী
সম্পাদনাচৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ২টি নদী রয়েছে। নদীগুলো হচ্ছে কাঁকড়ী নদী ও ডাকাতিয়া নদী।
সংবাদপত্র
সম্পাদনাপ্রিন্টিং-
সম্পাদনা- আমাদের প্রত্যাশা (সাপ্তাহিক)
- চৌদ্দগ্রাম সংবাদ (সাপ্তাহিক)
- সাপ্তাহিক চৌদ্দগ্রাম (সাপ্তাহিক)
- জনতার বার্তা (সাপ্তাহিক)
- আলোকিত চৌদ্দগ্রাম (সাপ্তাহিক)
- চৌদ্দগ্রামের আলো (সাপ্তাহিক)
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনা- চাঁন্দকরা উত্তরপাড়া জাকিরার দিঘি
- আমানগণ্ডা শালবন
- গোবিন্দ মাণিক্য দীঘি
- চান্দিশকরা জমিদার বাড়ি
- জগন্নাথ দীঘি
- নোয়াপুর শহীদ স্মৃতি পাঠাগার ও মিলনায়তন
- বেতিয়ারা স্মৃতিসৌধ
- শিবের দীঘি
- চান্দশ্রী মাজার
- ফালগুনকরা রাজাঝির দিঘি
- মরকটা লোহার ব্রিজ
- চন্দ্রপুর নসু পার্ক
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
সম্পাদনা- আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, প্রাক্তন গণপরিষদ সদস্য।
- কাজী জাফর আহমেদ, বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
- কাজী জহিরুল কাইয়ুম, প্রাক্তন সংসদ সদস্য, গণপরিষদ সদস্য এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা।
- ড. কামাল চৌধুরী, সাবেক মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
- ফজলুল হালিম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি।
- মির হোসেন চৌধুরী, প্রাক্তন প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য।
- মুজিবুল হক মুজিব, সংসদ সদস্য, সাবেক রেল মন্ত্রী।
- সামছুদ্দিন আহমেদ, প্রাক্তন সংসদ সদস্য।
- ডাঃ সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, প্রাক্তন সংসদ সদস্য।
- হযরত অলিমান দেওয়ান শাহ্- ইসলাম প্রচারকারী আউলিয়া।
- হাজী আলী আকবর - প্রাক্তন প্রাদেশিক আইনপরিষদ সদস্য।
- আবদুল্লাহ আল মোহসিন চৌধুরী - সাবেক সচিব।
- ইমদাদুল হক মিলন - লেখক
জনপ্রতিনিধি
সম্পাদনাসংসদীয় আসন | জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[১] | সংসদ সদস্য[২][৩][৪][৫][৬] | রাজনৈতিক দল |
---|---|---|---|
২৫৯ কুমিল্লা-১১ | চৌদ্দগ্রাম উপজেলা | মুজিবুল হক মুজিব | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Election Commission Bangladesh - Home page"। www.ecs.org.bd।
- ↑ "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (পিডিএফ)। ecs.gov.bd। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"। বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"। প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "জয় পেলেন যারা"। দৈনিক আমাদের সময়। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"। সমকাল। ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।