বুড়ি নদী
বুড়ি নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ২৬ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৫৪ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক বুড়ি নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী নং ১৪।[১]
বুড়ি নদী | |
দেশ | বাংলাদেশ |
---|---|
অঞ্চল | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলাসমূহ | কুমিল্লা জেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা |
উৎস | গোমতী নদী |
মোহনা | পুরনো তিতাস নদী |
দৈর্ঘ্য | ২৬ কিলোমিটার (১৬ মাইল) |
উৎপত্তি ও প্রবাহ
সম্পাদনাবুড়ি নদীর উৎস হল গোমতী নদী। গোমতী নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর-পূর্ব পার্বত্য অঞ্চল থেকে উৎপন্ন হয়ে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তারপর পর্যায়ক্রমে বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, মুরাদনগর, তিতাস উপজেলা দিয়ে বয়ে সবশেষ দাউদকান্দি উপজেলায় গিয়ে মেঘনা নদীতে পতিত হয়েছে।
মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের গুঞ্জর গ্রামের কাছে গোমতী নদী হতে উৎপন্ন হয়ে উত্তর-পূর্ব দিক বরাবর প্রবাহিত হয় মাধবপুর ইউনিয়ন পর্যন্ত। তারপর উত্তর-পশ্চিম দিক বরাবর প্রবাহ হয়ে নবীনগর উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের নিকট এসে পুরনো তিতাস নদীতে পতিত হয়েছে।
নামকরণ
সম্পাদনাএক সময় বুড়ি নদীর বুক চিরে বহু পণ্যবাহী নৌকা আসা যাওয়া করত। জনশ্রুতি রয়েছে যে কোন এক পূর্ণিমার রাতে এই নদীতে পালতোলা নৌকার মাঝি টলটলে পানিতে চাদের বুড়ির ছবি দেখতে পায় এবং পরদিন অনেক চড়া দামে তাদের পণ্যসামগ্রী হাটে বিক্রি হয়। চাদের বুড়ির দর্শন তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে সহায়ক হয় বলে সেই থেকে নদীর নাম হয় বুড়িনদী।
উপনদী ও শাখানদী
সম্পাদনাবুড়ি নদীর উপনদী হলো সালদা নদী। আর শাখা নদী হলো আর্সি-নালিয়া নদী
বর্তমান অবস্থান
সম্পাদনাবুড়িনদী তীব্র স্রোত সম্পন্ন একটি নদী ছিল। বর্ষাকালীন সময়ে নদীটি কানায় কানায় পূর্ণ থাকত। একসময় বুড়ি নদীতে চলতো জাহাজ ও সওদাগরদের বড় বড় নৌকা।
বর্তমানে বর্ষা মৌসুম ছাড়া নদীটি অদৃশ্যপ্রায়। নদীটির কিছু অংশ খাল, ডোবা, বসতভিটা ও কৃষি জমিতে পরিণত হয়েছে।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী"। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি (প্রথম সংস্করণ)। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ৩০৫। আইএসবিএন 984-70120-0436-4।
- বুড়িনদীর আদি ইতি, এস এম শাহনূর