জি এ মান্নান

বাংলাদেশী নৃত্যশিল্পী ও নৃত্য পরিচালক

গাজী আলিমুদ্দিন মান্নান (১৯৩০ - ১৯৯০; জি এ মান্নান নামে বেশি পরিচিত) ছিলেন একজন বাংলাদেশী নৃত্যশিল্পী ও নৃত্য পরিচালক। তিনি ছিলেন বুলবুল ললিতকলা একাডেমির নৃত্য শিক্ষক এবং নিক্কণ ললিতকলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা। নৃত্যকলায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৮২ সালে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদকে ভূষিত করে।[১]

জি এ মান্নান
জন্ম
গাজী আলিমুদ্দিন মান্নান

১৯৩০
মৃত্যু১ মার্চ ১৯৯০(1990-03-01) (বয়স ৫৯–৬০)
ঢাকা। বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশী
অন্যান্য নামমনীষকুমার
পেশানৃত্যশিল্পী, নৃত্য পরিচালক, নৃত্যশিক্ষক
পরিচিতির কারণনিক্কণ ললিতকলা একাডেমি
পুরস্কারএকুশে পদক

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

মান্নান ১৯৩০ সালে তদানীন্তন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম গাজী আলিমুদ্দিন মান্নান। কুমিল্লার আরেক নৃত্যশিল্পী ও নৃত্য পরিচালক শান্তিবর্ধন তাকে মুম্বই যাওয়ার আহ্বান জানান। মান্নান সেখানে শান্তিবর্ধনের নিকট নৃত্যকলায় দক্ষতা অর্জন করেন এবং শান্তিবর্ধনের লিটল বেলে গ্রুপে সদস্য হন। মুম্বইয়ে তিনি 'মনীষকুমার' নামে পরিচিত ছিলেন।[১]

কর্মজীবন সম্পাদনা

পঞ্চাশের দশকের শেষে মান্নান মুম্বই থেকে ঢাকা ফিরে আসেন এবং ছদ্মনাম ত্যাগ করে আসল নামে আবির্ভূত হন।[১] ১৯৫৮ সালে বুলবুল ললিতকলা একাডেমির (বাফা) নৃত্য শিক্ষক অজিত সান্ন্যাল তার নিজ গ্রাম পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে ফিরে গেলে তার স্থলে মান্নান নতুন শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। বাফায় যোগ দেওয়ার পর পল্লীকবি জসীম উদ্‌দীনের কাব্যগ্রন্থ নকশী কাঁথার মাঠ নৃত্যনাট্য মঞ্চস্থ করেন। এই নৃত্যনাট্যের গ্রন্থনা ও মূল পরিকল্পনায় ছিলেন কেএম মুজতবা, সঙ্গীত পরিচালনা করেন ওস্তাদ খাদেম হোসেন খান, এবং গানে কণ্ঠ দেন বেদারউদ্দিন আহমদনীনা হামিদ। এ নৃত্যনাট্যে মান্নান রূপাই চরিত্রে এবং রাহিজা খানম ঝুনু সাজু চরিত্রে অংশ করেন।[২]

জি এ মান্নানের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়লে তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমি থেকে বের হয়ে ঢাকার শান্তিনগরে নিক্কণ ললিতকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন।[৩] পরবর্তীতে তিনি পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস (পি.আই.এ)-এর পারফর্মিং আর্টস একাডেমিতে নৃত্য পরিচালক পদে যোগদান করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ পারফর্মিং আর্টস একাডেমিতে এবং পরে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে নৃত্য পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।[১] পাশাপাশি তিনি আসিয়া (১৯৬০), নয়ন তারা (১৯৬৭), দি রেইন (১৯৭৬), লাল সবুজের পালা (১৯৮১) চলচ্চিত্রে নৃত্য পরিচালনা করেন।

মৃত্যু সম্পাদনা

মান্নান ১৯৯০ সালের ১ মার্চ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।[১]

সম্মাননা সম্পাদনা

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. হক, আমানুল। "মান্নান, জি এ"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৭ 
  2. "নাচ শিখতে হলে কঠোর পরিশ্রম ও নিয়মিত চর্চা করতে হবে"বাংলাদেশ প্রতিদিন। ৩০ জুন ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৭ 
  3. "Profile of an accomplished dancer"দ্য ডেইলি স্টার। ১ এপ্রিল ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা