লায়লা নূর

বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ

লায়লা নূর (৫ অক্টোবর ১৯৩৪ -৩১ মে ২০১৯) ছিলেন একজন বাংলাদেশি শিক্ষাবিদ, অনুবাদক ও ভাষা সৈনিক।[২] ১৯৫৭ সালে তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের প্রথম মহিলা অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।[৩]

লায়লা নূর
জন্ম(১৯৩৪-১০-০৫)৫ অক্টোবর ১৯৩৪
দাউদকান্দি, কুমিল্লা জেলা, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে বাংলাদেশ)
মৃত্যু৩১ মে ২০১৯(2019-05-31) (বয়স ৮৪) [১]
নাগরিকত্ববাংলাদেশি
মাতৃশিক্ষায়তনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাশিক্ষকতা
প্রতিষ্ঠানকুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ
আন্দোলনবাংলা ভাষা আন্দোলন
পিতা-মাতাআবু নাসের মোহাম্মদ নূর উল্লাহ (পিতা) এবং শামসুন্নাহার মেহেদী (মাতা)

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

লায়লা নূর ১৯৩৪ সালের ৫ অক্টোবর কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার গাজিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আবু নাসের মো. নূর উল্লাহ এবং মাতার নাম শামসুন্নাহার মেহেদী। ৩ বোন এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। আবু নাসের ছিলেন ভারতের বিহার রাজ্যের জামশেদপুরে অবস্থিত টাটা স্টিল কোম্পানির প্রকৌশলী। সেখানেই লায়লা বেড়ে উঠেন। কুমিল্লায় এসে তিনি ১৯৪৮ সালে মাধ্যমিক, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ১৯৫২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক ও ১৯৫৪ সালে বি.এ. এবং ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেন। [৪]

লায়লা নূর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের প্রথম নারী শিক্ষক। সেখানে তিনি একটানা ৩০ বছর শিক্ষকতা করেন। ১৯৫৭ সালে ড. আখতার হামিদ খান ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালে তিনি চাকুরীতে প্রবেশ করেন।

ভাষা আন্দোলনে অংশ গ্রহণ সম্পাদনা

১৯৫২ সালে লায়লা নূর বাংলা ভাষা আন্দোলনে যোগদান করেন। ১৯৫৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি আরো প্রায় ২০ নারীসহ পাকিস্তান পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য তিনি ২১ দিন কারাভোগ করেন।

লেখক সম্পাদনা

ভিক্টোরিয়া কলেজের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ‘দি টিচার’ নামের একটি ম্যাগাজিন বের করতেন। সেখানে ইংরেজিতে লিখতে হতো। পরে বিভিন্ন পত্রিকা ও সাময়িকীতে বাংলায় লিখেছেন। তার বেশি লেখা ছাপা হয়েছে তিতাশ চৌধুরীর সাহিত্য পত্রিকা অলক্তে।[৪] তিনি তিতাশ চৌধুরীর ১১৫টি কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন।

সম্মাননা সম্পাদনা

কুমিল্লার সাহিত্য ও সমাজসেবামূলক সংগঠন বিনয় সাহিত্য সংসদ শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য লায়লা নূরকে ‘বিনয় সম্মাননা পদক-২০১৪’ প্রদান করে। [৫]

মৃত্যু সম্পাদনা

লায়লা নূর ২০১৯ সালের ৩১ মে কুমিল্লার সিডিপ্যাথ হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। [১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "ভাষা সৈনিক অধ্যাপক লায়লা নূর আর নেই"এনটিভি। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১৯ 
  2. ভাষার জন্য কারাভোগ করেছিলেন প্রফেসর লায়লা নূর ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে, এনটিভি অনলাইন, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, বাশার খান
  3. "সাক্ষাৎকার"। ২৬ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৫-২৬ 
  4. "ভাষাকে অবহেলা করা ঠিক নয় : লায়লা নূর"দৈনিক ভোরের কাগজ। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। ১১ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৯ 
  5. "বিনয়-এর ৩৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত"কুমিল্লার বার্তা। কুমিল্লা। ২০১৪-১১-০৮। ২০১৫-০৫-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৫-২৬