কৃষ্ণ

হিন্দুধর্মে পরম পুরুষোত্তম ভগবান

কৃষ্ণ (সংস্কৃত: कृष्ण) বা শ্রীকৃষ্ণ (সংস্কৃত: श्रीकृष्ण) হলেন সনাতন হিন্দুধর্মে পরম পুরুষোত্তম ভগবানপুরাণ অনুযায়ী তিনি বিষ্ণুর অষ্টম অবতার। তাঁকে সর্বোচ্চ ঈশ্বর (পরম সত্ত্বা) উপাধিতে ভূষিত করা হয় এবং তিনি ভগবদ্গীতা-এর প্রবর্তক। ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে তাঁর জন্মোৎসব পালন করা হয়।

কৃষ্ণ
দশাবতার গোষ্ঠীর সদস্য
শ্রীকৃষ্ণের বিগ্রহ
দেবনাগরীकृष्ण
অন্তর্ভুক্তিস্বয়ং ভগবান[১]
আবাস
মন্ত্রॐ नमो भगवते वासुदेवाय
(ওঁ নমঃ ভগবতে বাসুদেবায়)
অস্ত্র
যুদ্ধসমূহকুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ
বাহনগরুড়
গ্রন্থসমূহ
উৎসবকৃষ্ণ জন্মাষ্টমী, দোল, গোবর্ধন পূজা, কার্তিক পূর্ণিমা, শারদ পূর্ণিমা
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম১৮ অথবা ২১ জুলাই, ৩২২৮ খ্রিস্টপূর্ব[২][৩]
মৃত্যু১৮ ফেব্রুয়ারি, ৩১০২ খ্রিস্টপূর্ব[৫][৬]
ভালকা, সৌরাষ্ট্র রাজ্য (বর্তমান ভেরাভাল, গুজরাত, ভারত)[৭]
মাতাপিতা
সহোদর
সঙ্গীরাধা (পরমাপ্রকৃতি), রুক্মিণী, জাম্ববতী, সত্যভামা, কালিন্দী, নাগ্নজিতী, মিত্রবৃন্দা, লক্ষ্মণা, ভদ্ৰ এবং ১৬,০০০ –১৬,১০০ ঐষ্টিক সহধর্মিণী [১০][টীকা ২]
সন্তানপ্রদ্যুম্ন, সাম্ব, ভানু এবং অন্যান্য [৮][টীকা ১]
রাজবংশযদুবংশ - চন্দ্রবংশ

"নারদ বললেন হে বাসুদেব আপনি সৌর,শাক্ত,শৈব, বৈষ্ণব ও গাণপত্য সবার উপাসনার উপাস্য "

                        [মহা.শান্তিপর্ব--৩২৪/৪]

সনাতন ধর্মাবলম্বী, বিশেষত বৈষ্ণবদের কাছে জন্মাষ্টমী গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই উৎসব নানা ভাবে উৎযাপন করা হয়, যেমন - ভগবত পুরাণ অনুযায়ী নৃত্য, নাটক যাকে বলা হয় রাসলীলা বা কৃষ্ণলীলা, মধ্যরাত্রি তে কৃষ্ণের জন্মের মুহূর্তে ধর্মীয় গীত গাওয়া, উপবাস, দহিহান্ডি প্রভৃতি।

অন্যদিকে দহিহান্ডি প্রথায় অনেক উঁচুতে মাখনের হাড়ি রাখা হয় এবং অনেক ছেলে মিলে মানুষের পিরামিড তৈরি করে সেই হাড়ি ভাঙ্গার চেষ্টা করে। তামিলনাড়ুতে এ প্রথা উড়িয়াদি নামে পরিচিত।[১২]

জন্মাষ্টমী বিশেষভাবে পালন করা হয় মথুরা এবং বৃন্দাবনে। তাছাড়া মণিপুর, আসাম, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, এবং ভারতবর্ষের অন্যান্য রাজ্যে যেখানে প্রচুর বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মানুষ থাকেন সেখানে পালন করা হয়।[১৩] এছাড়াও বাংলাদেশের ঢাকা প্রভৃতি জায়গা ও অন্য দেশে জন্মাষ্টমী পালন করা হয়।[১২][১৪]

তিনি ধর্মরাষ্ট্র-প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দানকারী একজন প্রাচীন ভারতীয় রাজপুত্র ও রাজার ভূমিকায় আজ থেকে প্রায় ৫০০০ বৎসর পূর্বে অবতীর্ণ হন। ভিন্ন ধর্মের লোকেরা ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা করে থাকেন।

কৃষ্ণ শব্দের আক্ষরিক অর্থ কালো বা ঘন নীলগৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্রে, কৃষ্ণ শব্দটির আভিধানিক অর্থ সর্বাকর্ষক

ভাগবত পুরাণে কৃষ্ণকে প্রায়শই বংশী-বাদনরত এক কিশোরের রূপে বর্ণনা করা হয়েছে।[১৫] আবার ভগবদ্গীতায়, তিনি এক পথপ্রদর্শক রূপে দন্ডায়মান। সমগ্র মহাভারত কাব্যে, তিনি একজন কূটনীতিজ্ঞ হিসাবে পাণ্ডবপক্ষে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনের রথের সারথিরূপে অবতীর্ণ হয়েছেন।[১৬] দর্শন ও ধর্মতাত্ত্বিক ঐতিহ্যে শ্রীকৃষ্ণ-সংক্রান্ত উপাখ্যানগুলি বহুধা পরিব্যাপ্ত।[১৭] তিনি একাধারে দেবগুণা শিশু, রঙ্গকৌতুকপ্রিয়, আদর্শ প্রেমিক, দিব্য নায়ক ও পরম ঈশ্বর।[১৮] কৃষ্ণ-সংক্রান্ত উপাখ্যানগুলি মূলত লিখিত আছে মহাভারত, হরিবংশ, ভাগবত পুরাণবিষ্ণু পুরাণ গ্রন্থে।

চতুর্থ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকেই বাসুদেব, কৃষ্ণগোপাল প্রভৃতি কৃষ্ণের বিভিন্ন রূপের উপাসনাকারী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অস্তিত্বের কথা জানা যায়। খ্রিষ্টীয় নবম শতাব্দীতে দক্ষিণ ভারতে কৃষ্ণভক্তি আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। উত্তর ভারতে কৃষ্ণধর্ম সম্প্রদায়গুলি সুপ্রতিষ্ঠিত হয় মোটামুটি একাদশ শতাব্দী নাগাদ। দশম শতাব্দী থেকেই ভক্তি আন্দোলনের ক্রমবিস্তারের ফলে কৃষ্ণ শিল্পকলার এক মুখ্য বিষয় হয়ে ওঠেন। ওড়িশায় জগন্নাথ, মহারাষ্ট্রে বিঠোবা, রাজস্থানে শ্রীনাথজি, অন্ধ্রপ্রদেশে ভেঙ্কাটেশ বালাজী প্রভৃতি শ্রীকৃষ্ণের রূপগুলিকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক ভক্তিসংস্কৃতিও বিকাশলাভ করে। তার প্রতি নিষ্ঠাযুক্ত ভক্তি ও তার অপ্রাকৃত লীলা থেকে সহজেই উপলব্ধি করতে পারা যায় যে তিনিই পরমেশ্বর ভগবান স্বয়ং। বর্তমানে কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) সমগ্র পৃথিবীতে শ্রীকৃষ্ণের মহিমা প্রচার এবং কৃষ্ণকেন্দ্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত।

প্রস্তাবিত সময় সম্পাদনা

 
রাজস্থানের উদয়পুরে ১৪ শতকের রাধা কৃষ্ণের দেয়ালচিত্র

কৃষ্ণের জন্ম তিথি প্রতি বছর জন্মাষ্টমী হিসেবে পালিত হয়। [১৯][পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন][ পৃষ্ঠা প্রয়োজন ]

গাই বেকের মতে, "হিন্দুধর্ম এবং ভারতীয় ইতিহাসের অধিকাংশ পণ্ডিত কৃষ্ণের ঐতিহাসিকতা স্বীকার করেন – – তিনি একজন সত্যিকারের মানব বা ঐশ্বরিক পুরুষ ব্যক্তিত্ব ছিলেন যিনি অন্তত ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ভারতভূমে বসবাস করেছিলেন এবং মহাকাব্য ও পুরাণ ইতিহাস চক্রের অন্যান্য বহু ঐতিহাসিক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করেছিলেন।" তবুও, বেক আরও উল্লেখ করেছেন, "সংস্কৃত গ্রন্থে চিত্রিত কৃষ্ণের জীবনের কালানুক্রমিকতাকে ঘিরে বিপুল সংখ্যক দ্বন্দ্ব এবং অসঙ্গতি বিদ্যমান।" [২০]

জৈন ঐতিহ্যের পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, কৃষ্ণ ছিলেন নেমিনাথের কাকাতো ভাই। [২১] জৈন ঐতিহ্য মতে, নেমিনাথের জন্ম খ্রিস্টপূর্ব ৯ম   শতাব্দীর তেইশতম তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথের ৮৪,০০০ বছর পূর্বে হয়েছিল। [২২]

নামকরণ সম্পাদনা

 
দাদা বলরাম (বামে) সুভদ্রার (মধ্যে) জগন্নাথ-রূপী কৃষ্ণ (ডানে); এই রূপেও পূজিত হন কৃষ্ণ

সংস্কৃত কৃষ্ণ শব্দটির শাব্দিক অর্থ কালো, ঘন বা ঘন-নীল।[২৩] শ্রীকৃষ্ণের বিগ্রহগুলোতে তার গায়ের রং সাধারণত কালো এবং ছবিগুলিতে নীল দেখানো হয়ে থাকে।

কৃষ্ণ নামের অর্থ-সংক্রান্ত একাধিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। মহাভারতের উদ্যোগপর্বে (৫।৭১।৪) বলা হয়েছে কৃষ্ণ শব্দটি কৃষ এবং এই দুটি মূল থেকে উৎপন্ন। কৃষ শব্দের অর্থ টেনে আনা বা কর্ষণ করা; সেই সূত্রে শব্দটি ভূ (অর্থাৎ, অস্তিত্ব বা পৃথিবী) শব্দটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। শব্দটিকে নিবৃত্তি শব্দের প্রতিভূ ধরা হয়। মহাভারতের উক্ত শ্লোকটি চৈতন্য চরিতামৃতশ্রীল প্রভুপাদের টীকায় ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে ভূ শব্দটির নিহিত অর্থ আকর্ষণীয় অস্তিত্ব; অর্থাৎ কৃষ্ণ শব্দের অর্থ সকল দিক থেকে আকর্ষণীয় ব্যক্তি[২৪][২৫] ভাগবত পুরাণের আত্মারাম স্তবে কৃষ্ণের গুণাবলি বর্ণিত হয়েছে।[২৬] বল্লভ সম্প্রদায়ের ব্রহ্মসম্ভব মন্ত্রে কৃষ্ণ নামের মূল শব্দগুলিকে বস্তু, আত্মা ও দিব্য কারণের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত পাপের বিনাশশক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত বলে উল্লিখিত হয়েছে।[২৭]

বিষ্ণু সহস্রনামের ৫৭তম নামটি হল কৃষ্ণ, যার অর্থ, আদি শঙ্করের মতে আনন্দের অস্তিত্ব[২৮] কৃষ্ণের একাধিক নাম ও অভিধা রয়েছে। কৃষ্ণের সর্বাধিক প্রচলিত নামদুটি হল গোবিন্দ (গো-অন্বেষক) ও গোপাল (গো-রক্ষাকারী)। এই নামদুটি ব্রজে কৃষ্ণের প্রথম জীবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।[২৯][৩০] কোনো কোনো নামের আঞ্চলিক গুরুত্বও রয়েছে। যেমন, জগন্নাথ নামটি। ওড়িশায় এই নামে একটি বিশেষ বিগ্রহে পূজিত হন কৃষ্ণ।[৩১] জগন্নাথ রূপ ধারনটিও কৃষ্ণের আরেকটি লীলা।

মূর্তিতত্ত্ব সম্পাদনা

 
গোপালক ও গোপী পরিবৃত কৃষ্ণ, স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনে রক্ষিত চিত্র

কৃষ্ণের বিগ্রহ ও ছবিসমূহ সহজেই চেনা যায়। শ্রীকৃষ্ণের অধিকাংশ বিগ্রহেই তার গায়ের রং কালো দেখা যায়; অন্যদিকে ছবিগুলিতে প্রধানত তার গায়ের রং ঘন নীল। তার রেশমি ধুতিটি সাধারণত হলুদ রঙের এবং মাথার মুকুটে একটি ময়ূরপুচ্ছ শোভা পায়। কৃষ্ণের প্রচলিত বিগ্রহগুলোতে সাধারণত তাঁকে বংশীবাদনরত এক বালক বা যুবকের বেশে দেখা যায়।[৩২][৩৩] এই বেশে তার একটি পা অপর পায়ের উপর ঈষৎ বঙ্কিম অবস্থায় থাকে এবং বাঁশিটি তার ঠোঁট পর্যন্ত ওঠানো থাকে। তাঁকে ঘিরে থাকে গোরুর দল; এটি তার দিব্য গোপালক সত্ত্বার প্রতীক। কোনো কোনো চিত্রে তাকে প্রেয়সী রাধা সহ গোপী-পরিবৃত অবস্থাতেও দেখা যায়। রাধা হলেন কৃষ্ণের অন্তরঙ্গা শক্তি।

 
অষ্টসখি সহ রাধা-কৃষ্ণ

কৃষ্ণের অপর একটি পরিচিত চিত্র হল কুরুক্ষেত্র যুদ্ধক্ষেত্রে ভগবদ্গীতায় অর্জুনকে পরমার্থ উপদেশ দেওয়ার ছবি। এই চিত্রে তার যে বিশ্বরূপ দর্শিত হয় তার অনেকগুলি বাহু ও মাথা। এর মধ্যে সুদর্শন চক্র-ধারী বিষ্ণুর একটি ছায়া বিদ্যমান। উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরে ৮০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে অঙ্কিত একটি গুহাচিত্রে অশ্বচালিত রথচালনার চিত্র আছে; সেই চিত্রে একটি চরিত্র রথের চাকা ছুঁড়তে উদ্যত। এই চরিত্রটিকে কৃষ্ণ বলে অভিহিত করা হয়।[৩৪]

 
নৃত্যরত বালকৃষ্ণ ভাস্কর্য; জাতীয় সংগ্রহালয়, নতুন দিল্লি

মন্দিরে পূজিত কৃষ্ণবিগ্রহগুলো প্রধানত দণ্ডায়মান অবস্থার। কোথাও কোথাও কৃষ্ণ একা; আবার কোথাও কোথাও তার অন্যান্য সঙ্গীরাও তার সঙ্গে পূজিত হন।[৩৫] এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাধা, বলরামসুভদ্রা অথবা তার প্রধানা মহিষী রুক্মিণীসত্যভামা

কৃষ্ণ কখনও কখনও তার সহচরী গোপিনী রাধার সঙ্গেও পূজিত হন। মণিপুরী বৈষ্ণবরা একা কৃষ্ণের পূজা করেন না; তাদের আরাধ্য রাধা ও কৃষ্ণের যুগলমূর্তি রাধাকৃষ্ণ[৩৬] রুদ্র[৩৭]নিম্বার্ক সম্প্রদায়,[৩৮] এবং স্বামীনারায়ণের মতেও এই প্রথা বিদ্যমান। গৌড়ীয় বৈষ্ণবরা রাধারমণ রূপে রাধাকৃষ্ণের আরাধনা করে থাকেন ।[৩৯]

কোথাও কোথাও শিশুর মূর্তিতেও পূজিত হন কৃষ্ণ। এই মূর্তিতে তাকে হামাগুড়ি দিতে, অথবা নৃত্যরত অবস্থায়, অথবা মাখন হাতে দেখা যায়।[৪০][৪১] অঞ্চলভেদেও কৃষ্ণের বিভিন্ন প্রকার মূর্তি দেখা যায়। যেমন ওড়িশায় জগন্নাথ, মহারাষ্ট্রে বিঠোবা,[৪২]রাজস্থানে শ্রীনাথজি

ঐতিহাসিকতা ও শাস্ত্রীয় উৎস সম্পাদনা

 
আগাথোক্লিসের মুদ্রায় কৃষ্ণ বাসুদেব, সময়: ১৮০-১৯০ খ্রিস্টপূর্ব

কৃষ্ণের ঐতিহ্য প্রাচীন ভারতের বেশ কয়েকজন স্বাধীন দেবতার সংমিশ্রণ বলে ধারণা করা হয় যা প্রথম দিকের বাসুদেব বলে প্রমাণিত হয়। [৪৩] বাসুদেব ছিলেন বৃষ্ণি গোত্রের একজন বীর-দেবতা এবং বৃষ্ণি বীরগণের অন্তর্গত। বাসুদেবের উপাসনার উল্লেখ খ্রিস্টপূর্ব ৫ম-৬ষ্ঠ শতকের পাণিনির রচনা এবং খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দীর হেলিওডোরাস স্তম্ভের লিপি থেকে প্রমাণিত। [৪৩] মনে করা হয়, কোনো এক সময় বৃষ্ণি উপজাতি যাদব/আভীরদের গোত্রের সাথে মিশে গিয়েছিল এবং আভীরদের বীর-দেবতার নাম ছিল কৃষ্ণ। [৪৩] বাসুদেব এবং কৃষ্ণ একত্রিত হয়ে একক দেবতা হিসেবে মহাভারতে আবির্ভূত হন, এবং মহাভারত এবং ভগবদ্গীতায় বিষ্ণুর সাথে চিহ্নিত হতে শুরু করেন। [৪৩] খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতাব্দীতে, অপর এক জাতি গবাদি পশুর রক্ষক আভীরদের গোপাল-কৃষ্ণের ধর্মও কৃষ্ণ ঐতিহ্যে মিশে গিয়েছিল। [৪৩]

প্রারম্ভিক লিপিকেন্দ্রীক উৎস সম্পাদনা

মুদ্রাচিত্র (খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী) সম্পাদনা

আনুমানিক ১৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, ইন্দো-গ্রীক রাজা আগাথোক্লিসের প্রচলিত মুদ্রায় (আফগানিস্তানের আই-খানউমে আবিষ্কৃত) সম্ভবত কৃষ্ণ দেবতার ছবি রয়েছে যা বর্তমানে ভারতে বৈষ্ণব চিত্রের সাথে সম্পর্কিত বলে ব্যাখ্যা করা হয়। [৪৪] [৪৫] মুদ্রায় প্রদর্শিত দেবতারা সংকর্ষণ - বলরামের গদা এবং লাঙ্গল, বাসুদেব- কৃষ্ণের শঙ্খ এবং সুদর্শন চক্রের বৈশিষ্ট্যযুক্ত। [৪৪] [৪৬]

শিলালিপি সম্পাদনা

 
ভারতের মধ্য প্রদেশ রাজ্যে হেলিওডোরাস স্তম্ভ প্রায় ১২০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে   স্থাপিত। শিলালিপিতে বলা হয়েছে, হেলিওডোরাস একজন ভাগবতেন । শিলালিপিতে মহাভারত" সম্পর্কিত একটি সংস্কৃত শ্লোক ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

হেলিওডোরাস স্তম্ভ ব্রাহ্মী লিপির শিলালিপিসহ একটি প্রস্তর স্তম্ভ। এটি ঔপনিবেশিক যুগের প্রত্নতাত্ত্বিকগণ বেসনগরে ( বিদিশা, মধ্য ভারতের মধ্য প্রদেশ ) আবিষ্কার করেছিলেন। শিলালিপির দেশীয় প্রমাণের ভিত্তিতে, এর নির্মাণকাল ১২৫ থেকে ১০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে স্থির করা হয়েছে । স্তম্ভটি বর্তমানে হেলিওডোরাসের নামে পরিচিত। হেলিওডোরাস ছিলেন একজন ইন্দো-গ্রীক এবং তিনি প্রাদেশিক ভারতীয় রাজা কাশিপুত্র ভগভদ্রের কাছে গ্রীক রাজা অ্যান্টিয়ালসিডাসের দূত হিসেবে কাজ করেছিলেন। [৪৪] [৪৭] হেলিওডোরাস স্তম্ভের শিলালিপি উল্লেখ করে, আদি-দেব " বাসুদেব "(কৃষ্ণ)-এর উদ্দেশ্যে হেলিওডোরাস কর্তৃক ব্যক্তিগত ধর্মীয় উৎসর্গের চিহ্ন এই স্তম্ভ। স্তম্ভেই আছে, এটি ভাগবত হেলিওডোরাস" দ্বারা স্থাপিত গরুড় স্তম্ভ"। উপরন্তু, শিলালিপিতে কৃষ্ণ-সম্পর্কিত  মহাভারতের ১১/৭ অধ্যায়ের শ্লোক রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে, তিনটি গুণ: আত্ম- সংযম ( দমঃ ), উদারতা ( কগঃ বা ত্যাগ ), এবং সচেতনতা ( অপ্রমাদঃ ) হলো অমরত্ব এবং স্বর্গের পথ। [৪৭] [৪৮] [৪৯] হেলিওডোরাস স্তম্ভ স্থানটি ১৯৬০-এর দশকে প্রত্নতাত্ত্বিকদের দ্বারা সম্পূর্ণরূপে খনন করা হয়েছিল। এই খনন প্রচেষ্টাটি একটি গর্ভগৃহ, মণ্ডপ এবং সাতটি অতিরিক্ত স্তম্ভ সহ অনেক বড় প্রাচীন উপবৃত্তাকার মন্দির কমপ্লেক্সের ইটের ভিত্তি আবিষ্কার করেছিল। [৫০] [৫১] হেলিওডোরাস স্তম্ভের শিলালিপি এবং মন্দিরটি প্রাচীন ভারতে কৃষ্ণ-বাসুদেব ভক্তি এবং বৈষ্ণবধর্মের প্রাচীনতম প্রমাণগুলির মধ্যে একটি। [৫২] [৪৪] [৫৩]

 
শিলাতে বলরাম ও কৃষ্ণ। কাছেই খরোষ্ঠী শিলালিপিতে লেখা আছে রাম [কৃষ্ণ] । খ্রিস্টীয় ১ম শতাব্দী। [৫৪]

হেলিওডোরাস শিলালিপি বিচ্ছিন্ন প্রমাণ নয়। রাজস্থানে অবস্থিত হাতিবাড়া ঘোসুন্দি শিলালিপি (আধুনিক গণনানুসারে খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতাব্দীতে স্থাপিত)  সংকর্ষণ এবং বাসুদেবের উল্লেখ করে। এছাড়াও তা উল্লেখ করে যে কাঠামোটি পরম দেবতা নারায়ণের সাথে সংকর্ষণ-বাসুদেবের উপাসনার জন্য নির্মিত হয়েছিল । এই শিলালিপিগুলি কতিপয় প্রাচীনতম-বিখ্যাত সংস্কৃত শিলালিপির মাঝে প্রসিদ্ধ। [৫৫]

 
শিশু কৃষ্ণকে স্নান করাচ্ছেন যশোদা, ভাগবত পুরাণের পশ্চিম ভারতীয় পুঁথিচিত্র

ভারতীয় মহাকাব্য মহাভারতে কৃষ্ণকে বিষ্ণুর অবতাররূপে বর্ণনা করা হয়েছে। এই গ্রন্থই প্রাচীনতম গ্রন্থ যেখানে ব্যক্তি কৃষ্ণের বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়েছে।[৫৬] এই গ্রন্থের অনেক উপাখ্যানের কেন্দ্রীয় চরিত্র হলেন কৃষ্ণ। এর ষষ্ঠ পর্বের (ভীষ্ম পর্ব) আঠারোটি অধ্যায় ভগবদ্গীতা নামে পৃথক ধর্মগ্রন্থের মর্যাদা পেয়ে থাকে। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধক্ষেত্রে যোদ্ধা অর্জুনকে প্রদত্ত কৃষ্ণের উপদেশাবলির সংকলনই হল ভগবদ্গীতা। মহাভারতে কৃষ্ণকে পূর্ণবয়স্ক পুরুষ রূপে দেখানো হলেও, কোথাও কোথাও তার বাল্যলীলারও আভাস দেওয়া হয়েছে। মহাভারতের পরবর্তীকালীন পরিশিষ্ট হরিবংশ গ্রন্থে কৃষ্ণের বাল্য ও কৈশোরের বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।

১৫০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে রচিত পতঞ্জলির মহাভাষ্য গ্রন্থে এই শ্লোকে বলা হয়েছে: "সঙ্কর্ষণের সহচর কৃষ্ণের শক্তি বৃদ্ধি হউক!" অন্য একটি শ্লোকে বলা হয়েছে, "কৃষ্ণ স্বয়ং যেন চতুর্থ" (তিন সহচর সহযোগে কৃষ্ণের কথা বলা হয়েছে, তিন সহচর সম্ভবত সঙ্কর্ষণ, প্রদ্যুম্ন ও অনিরুদ্ধ)। অপর এক শ্লোকে রাম (বলরাম) ও কেশবের (কৃষ্ণ) মন্দিরে যে সকল বাদ্যযন্ত্র বাজানো হয়ে থাকে সেগুলির উল্লেখ রয়েছে। পতঞ্জলির রচনা থেকে বাসুদেবের কংসবধ (কৃষ্ণ-কংসোপাচারম্) উপাখ্যানের নাট্যাভিনয় ও মূকাভিনয়ের বিবরণ পাওয়া যায়।[৫৭]

খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীতে পাঁচজন বৃষ্ণি নায়কের পূজার প্রচলনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এঁরা হলেন বলরাম, কৃষ্ণ, প্রদ্যুম্ন, অনিরুদ্ধশাম্বমথুরার নিকটবর্তী মোরা থেকে পাওয়া একটি শিলালিপিতে মহান সত্রপ রাজুভুলার পুত্রের উল্লেখ এবং এক বৃষ্ণির চিত্র পাওয়া গেছে। ইনি সম্ভবত বাসুদেব এবং পঞ্চযোদ্ধার অন্যতম।[৫৮] ব্রাহ্মী লিপিতে লিখিত এই শিলালিপিটি বর্তমানে মথুরা সংগ্রহালয়ে রক্ষিত আছে।[৫৯][৬০] এছাড়াও সংগ্রহালয়ে একটি রিলিফ রয়েছে যা দেখলে মনে হয় কৃষ্ণের পিতা বসুদেব যমুনার ওপারে একটি ঝুড়িতে শিশু কৃষ্ণকে বহন করে নিয়ে যাচ্ছে , [৬১] এক প্রান্তে একটি সপ্ত-বদন নাগ নদী পার হচ্ছে, একটি মকর কুমির চারপাশে প্রহার করছে এবং অন্য প্রান্তে এক ব্যক্তি আপাতদৃষ্টিতে তার মাথায় একটি ঝুড়ি বহন করে আছেন। [৬১]

বাসুদেবের শিলালিপিটি খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দীতে অ্যাগাথোক্লিস এবং হেলিওডোরাস স্তম্ভের মুদ্রার সাথে উদ্ভুত হয়েছিল, কিন্তু কৃষ্ণের নামটি পরবর্তীকালে লিপিতে দেখা যায়। আফগানিস্তান সীমান্তের কাছাকাছি উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে ১ম শতকের প্রথমার্ধের চিলাস দ্বিতীয় সময়ের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে অনেক বৌদ্ধ মূর্তি সহ দুটি পুরুষ খোদিত আছে। দুটি পুরুষের মধ্যে বড়টি তার দুই হাতে একটি লাঙ্গল এবং গদা ধারণ করে আছে। শিল্পকর্মটিতে খরোষ্টি লিপিতে একটি শিলালিপিও রয়েছে যা পণ্ডিতদের দ্বারা রাম-কৃষ্ণ বা দুই ভাই বলরাম ও কৃষ্ণের একটি প্রাচীন চিত্র হিসাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। [৬২] [৬৩]

মহাভারত, হরিবংশ ও একাধিক পুরাণে কৃষ্ণের জীবনকাহিনী বর্ণিত হয়েছে বা তার উপর আলোকপাত করা হয়েছে। এখানে মনে রাখা আবশ্যক যে মহাভারত ও হরিবংশই (মহাভারতের খিল বা পরিশিষ্ট) কৃষ্ণকে জানার সবচেয়ে প্রাচীন ও নির্ভরযোগ্য মাধ্যম। এর বাইরে ভাগবত পুরাণবিষ্ণু পুরাণ গ্রন্থদ্বয়ে কৃষ্ণের জীবনের বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে এই দুই পুরাণ ঐতিহাসিক প্রামাণ্যতার বিচারে মহাভারত ও হরিবংশের পরে অবস্থিত। [৬৪] [৬৫] [৬৬] মুলত এই দুই পুরাণে বর্ণিত ধর্মতত্ত্বই গৌড়ীয় বৈষ্ণব মতবাদগুলির মূল ভিত্তি। ভাগবত পুরাণ গ্রন্থের প্রায় এক চতুর্থাংশ জুড়ে রয়েছে কৃষ্ণ ও তার ধর্মোপদেশের স্তুতিবাদ।

হিন্দু পুরাণের অধিকাংশই গুপ্ত যুগে (খ্রিস্টীয় ৪-৫ম শতাব্দী) সংকলিত। [৬৭] ভাগবত পুরাণ বারোটি স্কন্ধসহ   ৩৩২ অধ্যায়ে বিভক্ত। ভাগবত পুরাণ সংস্করণভেদে ১৬,০০০ থেকে ১৮,০০০ শ্লোকসমন্বিত হতে পারে। [৬৮] [৬৯] অত্র পুরাণের দশম স্কন্ধে প্রায় ৪,০০০ শ্লোক (~২৫%) রয়েছে যা কৃষ্ণ সম্পর্কিত কিংবদন্তিতে পরিপূর্ণ। দশম স্কন্ধ ভাগবতের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং ব্যাপকভাবে পঠিত অংশ। [৭০] [৭১]

খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে লিখিত যাস্কের নিরুক্ত নামক ব্যুৎপত্তি-অভিধানে অক্রুরের স্যমন্তক মণির একটি উল্লেখ পাওয়া যায়, যার মূল সূত্র কৃষ্ণ-সংক্রান্ত একটি সুপরিচিত পৌরাণিক কাহিনি।[৭২] শতপথ ব্রাহ্মণঐতরেয় আরণ্যক গ্রন্থদ্বয়ে কৃষ্ণকে বৃষ্ণিবংশজ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।[৭৩]

হিন্দুদের আদি ধর্মগ্রন্থ ঋগ্বেদে কৃষ্ণের কোনো উল্লেখ নেই। তবে রামকৃষ্ণ গোপাল ভাণ্ডারকর ঋগ্বেদের একটি শ্লোকে (৮।৯৩।১৩) উল্লিখিত দ্রপ্স...কৃষ্ণ (কালো বিন্দু) কথাটিকে দেবতা কৃষ্ণের উল্লেখ বলে প্রমাণ করতে চেয়েছেন।[৭২][৭৪] কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ কয়েকজন প্রাগৈতিহাসিক দেবতার সঙ্গে কৃষ্ণের মিল খুঁজে পেয়েছেন। ১৯২৭-৩১ সাল নাগাদ ম্যাকে মহেঞ্জোদাড়োতে একটি চিত্রলিপি আবিষ্কার করেছিলেন। এই চিত্রে দুজন ব্যক্তি একটি গাছ ধরে আছে এবং বৃক্ষ দেবতা তাদের দিকে বাহু প্রসারিত করে রেখেছেন। আবিষ্কারক এই চিত্রটিকে কৃষ্ণের যমলার্জুন-লীলার সঙ্গে তুলনা করেছেন।[৭৫][৭৬]

 
কৃষ্ণ পাণ্ডবদের উপদেশ দিচ্ছেন

প্রাচীনকালে যে সময়ে ভগবদ্গীতা রচিত হয়েছিল, তখন কৃষ্ণকে একজন স্বতন্ত্র দেবতার পরিবর্তে বিষ্ণুর অবতার হিসাবে ব্যাপকভাবে দেখা হত, তবুও তিনি অত্যন্ত শক্তিশালী ছিলেন এবং মহাবিশ্বের প্রায় সবকিছুই "একরকমভাবে কৃষ্ণের দেহে বিদ্যমান ছিল। " [৭৭] কৃষ্ণের "কোনও আদি বা অন্ত" ছিল না, তিনি ছিলেন "পূর্ণ" এবং সর্বোত্তম। বিভিন্ন দেবতা যেমন ব্রহ্মা, "ঝড় দেবতা, সূর্য দেবতা, উজ্জ্বল দেবতা", "আলোক দেবতা " প্রমুখ দেবগণের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত কৃষ্ণকেই নির্দেশ করা হতো। [৭৭] কৃষ্ণের দেহে অন্যান্য শক্তিও বিদ্যমান ছিল, যেমন "বিভিন্ন প্রাণীর দল" যার মধ্যে "আকাশীয় সর্প" অন্তর্ভুক্ত। [৭৭] তিনি ছিলেন "মানবতার সার"। [৭৭]

 
কৃষ্ণের জীবনের বিভিন্ন লীলা বৈষ্ণব ঐতিহ্যে পালিত হয়।

খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীর গ্রীক নৃতাত্ত্বিক মেগাস্থিনিস ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের সভায় প্রথম সেলুকাসের একজন দূত। তিনি তার বিখ্যাত গ্রন্থ 'ইন্ডিকাতে' হেরাক্লেসের উল্লেখ করেছেন। 'ইন্ডিকা' গ্রন্থটি কালের বিবর্তনে বর্তমানে হারিয়ে গেছে। তবে পরবর্তী গ্রীক আরিয়ান, ডিওডোরাস এবং স্ট্র্যাবো রচিত গৌণ সাহিত্যে মেগাস্থিনিসের লেখা উদ্ধৃত করা হয়েছিল। [৭০] এই গ্রন্থগুলি অনুসারে, মেগাস্থেনিস উল্লেখ করেছেন, ভারতের সোরসেনোই উপজাতি হেরাক্লেসের উপাসনা করত। তাদের মেথোরা এবং ক্লেইসোবোরা নামে দুটি বড় নগর এবং জোবারেস নামে একটি নাব্য নদী ছিল। কৃষ্ণের জীবন সম্পর্কিত বইয়ের জন্য বিখ্যাত ভারতীয় ধর্মের অধ্যাপক এডউইন ব্রায়ান্টের মতে, "এতে সামান্য সন্দেহ আছে যে সৌরসেনোই শুরসেনদের উল্লেখ করে । সৌরসেনী যদু বংশের একটি শাখা যার অন্তর্গত ছিলেন কৃষ্ণ"। [৭০] ব্রায়ান্ট বলেন, হেরাক্লেস শব্দটি সম্ভবত হরি-কৃষ্ণের গ্রীক ধ্বনিগত সমতুল্য রূপ, যেমন মথুরার 'মেথোরা', কৃষ্ণপুরের 'ক্লেইসোবোরা' এবং যমুনার 'জোবারেস' হলো গ্রীক ধ্বনিগত শব্দ। পরবর্তীতে, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট যখন উত্তর-পশ্চিম ভারতীয় উপমহাদেশে তার অভিযান শুরু করেন, তখন তার সহযোগীরা স্মরণ করেন, পোরাসের সৈন্যগণ হেরাক্লেসের ছবি বহন করেছিল। [৭০]

বৌদ্ধ পালি ধর্মশাস্ত্র এবং ঘট-জাতকে (জাতক নং. ৪৫৪) বাসুদেব এবং বলদেব ভক্তদের বিতর্কিত উল্লেখ রয়েছে। এই গ্রন্থগুলির বহু নিজস্ব বৈশেষ্ট্য রয়েছে এবং তা কৃষ্ণ কিংবদন্তির একটি বিকৃত ও বিভ্রান্তিকর সংস্করণ হতে পারে। [৭০] জৈন ধর্মের গ্রন্থগুলি তীর্থঙ্করদের সম্পর্কে তাদের কিংবদন্তীতে এই গল্পগুলিকে কিছু বিশেষত্ব এবং বিভিন্ন সংস্করণ সহ উল্লেখ করে। প্রাচীন বৌদ্ধ ও জৈন সাহিত্যে কৃষ্ণ-সম্পর্কিত কিংবদন্তির এই অন্তর্ভুক্তি থেকে বোঝা যায় যে কৃষ্ণ ধর্মতত্ত্ব প্রাচীন ভারতের অ-হিন্দু ঐতিহ্য দ্বারা পরিলক্ষিত ধর্মীয় দৃশ্যপটে বিদ্যমান এবং গুরুত্বপূর্ণ ছিল। [৭০] [৭৮]

জীবন সম্পাদনা

নিচে মহাভারত, হরিবংশ, ভাগবত পুরাণবিষ্ণু পুরাণ গ্রন্থের ভিত্তিতে কৃষ্ণের জীবনের একটি বিবরণ দেওয়া হল। এই উপাখ্যানগুলির পটভূমি আধুনিক ভারতের উত্তরপ্রদেশ, বিহার, হরিয়ানা, দিল্লিগুজরাত রাজ্য।

জন্ম সম্পাদনা

 
পিতা বসুদেব যমুনা পেরিয়ে কৃষ্ণকে বৃন্দাবনে নিয়ে যাচ্ছেন; মধ্য অষ্টাদশ শতাব্দীর চিত্রকলা

শাস্ত্রীয় বিবরণ ও জ্যোতিষ গণনার ভিত্তিতে লোকবিশ্বাস অনুযায়ী কৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল ৩২২৮ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ১৮ অথবা ২১ জুলাই বুধবার।[৭৯][৮০][৮১] কৃষ্ণের জন্মদিনটি কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী বা জন্মাষ্টমী নামে পালিত হয়।[২] কৃষ্ণ যাদব-রাজধানী মথুরার রাজপরিবারের সন্তান। তিনি বসুদেবদেবকীর অষ্টম পুত্র। তার পিতামাতা উভয়ের যাদববংশীয়। দেবকীর দাদা কংস [৮২] তাদের পিতা উগ্রসেনকে বন্দী করে সিংহাসনে আরোহণ করেন। একটি দৈববাণীর মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন যে দেবকীর অষ্টম গর্ভের সন্তানের হাতে তার মৃত্যু হবে। এই কথা শুনে তিনি দেবকী ও বসুদেবকে কারারুদ্ধ করেন এবং তাদের প্রথম ছয় পুত্রকে হত্যা করেন। দেবকী তার সপ্তম গর্ভ রোহিণীকে প্রদান করলে, বলরামের জন্ম হয়। এরপরই কৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন।

কৃষ্ণের জীবন বিপন্ন জেনে জন্মরাত্রেই দৈবসহায়তায় কারাগার থেকে নিষ্ক্রান্ত হয়ে বসুদেব তাকে গোকুলে তার পালক মাতাপিতা যশোদা [৮৩]নন্দের কাছে রেখে আসেন। কৃষ্ণ ছাড়া বসুদেবের আরও দুই সন্তানের প্রাণরক্ষা হয়েছিল। প্রথমজন বলরাম (যিনি বসুদেবের প্রথমা স্ত্রী রোহিণীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন) এবং সুভদ্রা (বসুদেব ও রোহিণীর কন্যা, যিনি বলরাম ও কৃষ্ণের অনেক পরে জন্মগ্রহণ করেন)।[৮৪] ভাগবত পুরাণ অনুযায়ী, কোনো প্রকার যৌনসংগম ব্যতিরেকেই কেবলমাত্র "মানসিক যোগের" ফলে কৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল। হিন্দুরা বিশ্বাস করেন, সেযুগে এই ধরনের যোগ সম্ভব ছিল।[২][৮৫][৮৬]

বাল্য ও কৈশোর সম্পাদনা

 
গোবর্ধন গিরি কনিষ্ঠ আঙ্গুলে কৃষ্ণ

নন্দ ছিলেন গোপালক সম্প্রদায়ের প্রধান। তার নিবাস ছিল বৃন্দাবনে। কৃষ্ণের ছেলেবেলার গল্পগুলি থেকে জানা যায়, কীভাবে তিনি একজন রাখাল বালক হয়ে উঠলেন,[৮৭] শৈশবেই কৃষ্ণ এতটাই দুর্ধর্ষ আর অপ্রতিরোধ্য প্রকৃতির ছিলেন যে তিনি তার প্রাণনাশের চেষ্টাগুলিকে চমকপ্রদভাবে বানচাল করে দিতে পারতেন এবং বৃন্দাবনবাসীর জীবনরক্ষা করতেন। কৃষ্ণের প্রাণনাশের জন্য কংস পুতনা সহ অন্যান্য রাক্ষসদের প্রেরণ করলে সকলকে হত্যা করেন কৃষ্ণ।

কৃষ্ণের খোঁজ পাওয়া গেলে কংস পুতনা নামক এক রাক্ষসীকে পাঠান শিশুকৃষ্ণকে হত্যা করতে। মাত্র ৬ মাস বয়সেই পুতনা রাক্ষসীকে হত্যা করেন তিনি যাঁর উচ্চতা ছিল ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ। কালীয় নামে একটি বিরাট সাপ যমুনার জল বিষাক্ত করে রেখেছিল। এই জল পান করে রাখাল ও গরুর মৃত্যু হত প্রায়শই। বালক কৃষ্ণ এই কালীয় [৮৮] নাগকে অপরাধের শাস্তি দেয়।হিন্দু চিত্রকলায় অনেক স্থানেই বহুফণাযুক্ত কালীয় নাগের মাথার উপর নৃত্যরত কৃষ্ণের ছবি দেখা যায়। এধরনের দৈত্যাকৃতির শত্রুদের বিরুদ্ধে তার একক হামলা ও তাদের পরাস্ত করার কৌশলাদি যে কোন চৌকশ মেধাবী সামরিক কর্মকর্তার দুর্ধর্ষতাকে হার মানায়।[৮৯][৯০] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে, প্রথাগত বৈদিক ধর্ম ও তার দেবদেবীর বিরুদ্ধে কৃষ্ণের এই অবস্থান, আধ্যাত্মিক ভক্তি আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হয়ে ওঠে।[৯১]

বৃন্দাবনে গোপীদের নিয়ে কৃষ্ণের লীলাও ভারতীয় সাহিত্যের একটি জনপ্রিয় বিষয়। রাধার সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে গীতগোবিন্দম্ রচয়িতা জয়দেব সহ অসংখ্য কবি প্রণয়মূলক কবিতা রচনা করেছেন। রাধাকৃষ্ণ মূর্তিতে কৃষ্ণের পূজা কৃষ্ণভক্তি আন্দোলনের বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।[৯২]

যৌবরাজ্য সম্পাদনা

 
কৃষ্ণ এবং তার দুই প্রধান মহিষী। (বাঁ দিক থেকে) রুক্মিণী, কৃষ্ণ, সত্যভামা এবং গরুড়।

যৌবনে মথুরায় প্রত্যাবর্তন করে কৃষ্ণ তার মামা কংসের অনুগামীদের দ্বারা সংঘটিত বহু হত্যার ষড়যন্ত্র থেকে আত্মরক্ষা করে কংসকে বধ করেন। তিনি কংসের পিতা উগ্রসেনকে পুনরায় যাদবকুলের রাজা হিসেবে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করেন এবং নিজে সেখানে অন্যতম যুবরাজ হিসেবে অবস্থান করেন।[৯৩] এই সময়ে তার সাথে অর্জুন সহ কুরু রাজ্যের অন্যান্য পাণ্ডব রাজপুত্রদের শখ্যতা গড়ে ওঠে। পরবর্তীকালে তিনি যাদবদের নিয়ে দ্বারকা নগরীতে (অধুনা গুজরাত) চলে আসেন এবং সেখানেই তার রাজত্ব স্থাপন করেন।[৯৪]

যখন যুধিষ্ঠির সিংহাসনে আরোহণ করেন তখন তিনি সমস্ত মহান রাজাদের সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান। যখন তিনি তাদের প্রত্যেককে একে একে সম্মান জ্ঞাপন করতে আরম্ভ করলেন তখন তিনি সর্বপ্রথম কৃষ্ণকে সম্মান জ্ঞাপন করলেন কারণ তিনি কৃষ্ণকেই সমস্ত রাজাদের মধ্যে মহান হিসেবে গণ্য করেছিলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল রাজারাই তাতে সম্মত হলেও কৃষ্ণের আত্মীয় শিশুপাল তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং কৃষ্ণের নিন্দা শুরু করেন। কৃষ্ণ শিশুপালের মায়ের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে তিনি শিশুপালের একশত অপরাধ ক্ষমা করবেন। তাই যখন শিশুপাল একশত অপরাধ অতিক্রম করলেন তখন তিনি তার বিরাট রূপ ধারণ করে সুদর্শন চক্রের দ্বারা শিশুপালকে বধ করলেন। সেইসময় অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রও দিব্যদৃষ্টি লাভ করে কৃষ্ণের সেই রূপ দর্শন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। পুরাণ অনুসারে শিশুপাল এবং দন্তবক্র নামে অপর এক ব্যক্তি পূর্বজন্মে ছিলেন স্বর্গে দেবতা বিষ্ণুর দ্বাররক্ষক জয় ও বিজয়। তারা অভিশপ্ত হয়ে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেন এবং আবার বিষ্ণুর অবতার কৃষ্ণের দ্বারাই স্বর্গে প্রত্যাগমন করেন।[৯৫]

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ ও ভগবদ্গীতা সম্পাদনা

 
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে কৃষ্ণ অর্জুনকে তার বিশ্বরূপ দর্শন করাচ্ছেন।

যখন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে তখন কৃষ্ণ পাণ্ডব এবং কৌরব উভয়পক্ষকেই সুযোগ দেন তার কাছ থেকে সাহায্য হিসেবে দু'টি জিনিসের মধ্যে যেকোন একটি নির্বাচন করতে। তিনি বলেন যে হয় তিনি স্বয়ং থাকবেন অথবা তার নারায়ণী সেনাকে যুদ্ধের জন্য প্রদান করবেন, কিন্তু তিনি নিজে যখন থাকবেন তখন তিনি হাতে অস্ত্র তুলে নেবেন না। পাণ্ডবদের পক্ষে অর্জুন স্বয়ং কৃষ্ণকে গ্রহণ করেন এবং কৌরবদের পক্ষে দুর্যোধন কৃষ্ণের নারায়ণী সেনা গ্রহণ করেন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সময় কৃষ্ণ অর্জুনের রথের সারথির ভূমিকা পালন করেন কারণ তার অস্ত্র ধরার কোন প্রয়োজন ছিল না।

যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হয়ে তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন যখন উপলব্ধি করলেন যে যাঁরা তার প্রতিপক্ষ তারা তার আত্মীয়বর্গ এবং অত্যন্ত প্রিয়জন তখন তিনি যুদ্ধের বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়লেন। তিনি সমস্ত আশা ত্যাগ করে তার ধনুক গাণ্ডীব নামিয়ে রাখলেন। তখন অর্জুনের মোহ দূর করার জন্য কৃষ্ণ অর্জুনকে সেই ধর্মযুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে উপদেশ দেন যা ভগবদ্গীতা নামে খ্যাত।[৯৬]

কৃষ্ণ ছিলেন প্রখর কূটবুদ্ধিসম্পন্ন পুরুষ এবং মহাভারতের যুদ্ধ ও তার পরিণতিতে তার প্রগাঢ় প্রভাব ছিল। তিনি পাণ্ডব এবং কৌরবদের মধ্যে শান্তি স্থাপন করতে যথাসম্ভব উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু দূর্যোধনের কূপ্রচেষ্টায় তার সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে তখন তিনি ক্রূর কূটনীতিকের ভূমিকা গ্রহণ করেন। যুদ্ধকালে পিতৃ-পিতামহের বিরুদ্ধে সঠিক মনোবল নিয়ে যুদ্ধ না করার জন্য তিনি অর্জুনের উপর ক্রুদ্ধ হন। একবার তাকে আঘাত করার অপরাধে কৃষ্ণ একটি রথের চাকাকে চক্রে পরিণত করে ভীষ্মকে আক্রমণ করতে উদ্যত হন। তখন ভীষ্ম সমস্ত অস্ত্র পরিত্যাগ করে কৃষ্ণকে বলেন তাকে হত্যা করতে। কিন্তু এরপর অর্জুন কৃষ্ণের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন এবং পূর্ণ উদ্যম নিয়ে যুদ্ধ করার প্রতিজ্ঞা করেন। কৃষ্ণ যুধিষ্ঠির ও অর্জুনকে নির্দেশ দেন যাতে তারা ভীষ্মের দেওয়া যুদ্ধজয়ের বর ফিরিয়ে দেয়, কারণ ভীষ্ম স্বয়ং সেই যুদ্ধে পাণ্ডবদের প্রতিপক্ষ হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ভীষ্মকে এ কথা জানানো হলে তিনি এ কথার অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝতে পেরে কীভাবে তিনি অস্ত্র পরিত্যাগ করবেন সে উপায় পাণ্ডবদের বলে দেন। তিনি বলেন যে, যদি কোন নারী যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করে তবেই তিনি অস্ত্রত্যাগ করবেন। পরের দিন কৃষ্ণের নির্দেশে শিখণ্ডী, অর্থাৎ যিনি পূর্বজন্মে অম্বা ছিলেন তিনি অর্জুনের সাথে যুদ্ধে যোগদান করেন এবং ভীষ্ম তার অস্ত্রসকল নামিয়ে রাখেন।

এছাড়াও কৃষ্ণ ধৃতরাষ্ট্রের জামাতা জয়দ্রথকে বধ করতে অর্জুনকে সহায়তা করেন। জয়দ্রথের কারণেই অর্জুনের পুত্র অভিমন্যু দ্রোণাচার্যের চক্রব্যূহে প্রবেশ করেও বেরিয়ে আসার উপায় অজ্ঞাত থাকায় কৌরবদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হয়েছিলেন। কৃষ্ণ কৌরবদের সেনাপতি দ্রোণাচার্যের পতনও সম্পন্ন করেছিলেন। তিনি ভীমকে নির্দেশ দিয়েছিলেন অশ্বত্থামা নামক হাতিকে বধ করতে এবং তাৎপর্যপূর্ণভাবে দ্রোণাচার্যের পুত্রের নামও অশ্বত্থামা। এরপর কৃষ্ণের নির্দেশে যুধিষ্ঠির দ্রোণাচার্যকে গিয়ে চতুরতার সাথে বলেন যে অশ্বত্থামা নিহত হয়েছেন এবং তারপর খুব মৃদুস্বরে বলেন যে সেটি একটি হাতি। কিন্তু যেহেতু যুধিষ্ঠির কখনও মিথ্যাচার করতেন না তাই দ্রোণাচার্য তার প্রথম কথাটি শুনেই মানসিক ভাবে অত্যন্ত আহত হন ও অস্ত্র পরিত্যাগ করেন। এরপর কৃষ্ণের নির্দেশে ধৃষ্টদ্যুম্ন দ্রোণের শিরশ্ছেদ করেন।

 
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনের রথচালকের ভূমিকায় কৃষ্ণ

কর্ণের সাথে অর্জুনের যুদ্ধের সময় কর্ণের রথের চাকা মাটিতে বসে যায়। তখন কর্ণ যুদ্ধে বিরত থেকে সেই চাকা মাটি থেকে ওঠানোর চেষ্টা করলে কৃষ্ণ অর্জুনকে স্মরণ করিয়ে দেন যে কৌরবেরা অভিমন্যুকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে যুদ্ধের সমস্ত নিয়ম ভঙ্গ করেছে। তাই তিনি নিরস্ত্র কর্ণকে বধ করে অর্জুনকে সেই হত্যার প্রতিশোধ নিতে আদেশ করেন।

এরপর যুদ্ধের অন্তিম পর্বে কৌরবপ্রধান দুর্যোধন মাতা গান্ধারীর আশীর্বাদ গ্রহণ করতে যান যাতে তার শরীরের যে অঙ্গসমূহের উপর গান্ধারীর দৃষ্টি নিক্ষিপ্ত হবে তাই ইস্পাতকঠিন হয়ে উঠবে। তখন কৃষ্ণ ছলপূর্বক তার ঊরুদ্বয় কলাপাতা দিয়ে আচ্ছাদিত করে দেন। এর ফলে গান্ধারীর দৃষ্টি দুর্যোধনের সমস্ত অঙ্গের উপর পড়লেও ঊরুদ্বয় আবৃত থেকে যায়। এরপর যখন দুর্যোধনের সাথে ভীম গদাযুদ্ধে লিপ্ত হন তখন ভীমের আঘাত দুর্যোধনকে কোনভাবে আহত করতে ব্যর্থ হয়। তখন কৃষ্ণের ইঙ্গিতে ভীম ন্যায় গদাযুদ্ধের নিয়ম লঙ্ঘন করে দুর্যোধনের ঊরুতে আঘাত করেন ও তাকে বধ করেন। এইভাবে কৃষ্ণের অতুলনীয় ও অপ্রতিরোধ্য কৌশলের সাহায্যে পাণ্ডবেরা কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ জয় করে। এছাড়াও কৃষ্ণ অর্জুনের পৌত্র পরীক্ষিতের প্রাণরক্ষা করেন, যাকে অশ্বত্থামা মাতৃগর্ভেই ব্রহ্মাস্ত্র নিক্ষেপ করে আঘাত করেছিলেন। পরবর্তীকালে পরীক্ষিতই পাণ্ডবদের উত্তরাধিকারী হন।

গার্হস্থ্য জীবন সম্পাদনা

 
বালি দ্বীপের শৈল্পিক রূপে কৃষ্ণ
 
মন্দিরের দেওয়ালে খোদাইকৃত রাধাকৃষ্ণের ভাস্কর্য

এক মতে শ্রীকৃষ্ণের ১৬১০৮ জন স্ত্রী ছিলেন । যাদের মধ্যে বৈবাহিকসূত্রে প্রধান স্ত্রী ছিলেন আটজন (অষ্টভার্য) এবং বাকি ১৬১০০ জন ছিলেন নরকাসুরের অন্তঃপুর থেকে উদ্ধার হওয়া ধর্মাবতার কৃষ্ণে সমর্পিত ও তার অধিকারপ্রাপ্ত নারী । কিন্তু এদের প্রত্যেককে দেবী লক্ষ্মীর অবতার হিসেবে মনে করা হয়।[৯৭][৯৮] প্রত্যেকের গর্ভেই শ্রীকৃষ্ণের দশটি পুত্র এবং একটি কন্যার জন্ম হয়েছিল।[৯৯]

রুক্ষ্মিণী হলেন কৃষ্ণের প্রধান পত্নী। তিনি বিদর্ভরাজ ভীষ্মকের কন্যা এবং ভীষ্মকপুত্র রুক্মীর ভগিনী। ইনি কৃষ্ণের সহিত বিবাহ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। শিশুপালের সঙ্গে বিবাহের পূর্বলগ্নে কৃষ্ণ রুক্ষ্মিনীর সম্মতিতে বিবাহ করেন এবং দ্বারকায় আনয়ন করেন। রুক্ষ্মিনী কৃষ্ণের ঔরসে একটি তেজস্বী পুত্রসন্তান লাভ করেন। তার নাম হলো প্রদ্যুম্ন। কৃষ্ণের আরেক মহিষী সত্যভামার গর্ভে কৃষ্ণ যে দশটি পুত্র লাভ করেছিলেন তারা হলেন ভানু, সুভানু, স্বরভানু, প্রভানু, ভানুমান, চন্দ্রভানু, বৃহদ্ভানু, অতিভানু, শ্রীভানু এবং প্রতিভানু।

জাম্ববানের কন্যা জাম্ববতীর গর্ভে কৃষ্ণ যে দশটি পুত্র লাভ করেছিলেন তারা হলেন শাম্ব, সুমিত্র, পুরুজিৎ, শতজিৎ, সহস্রজিৎ, বিজয়, চিত্রকেতু, বসুমান, দ্রাবিড় ও ক্রতু। এই পুত্রেরা কৃষ্ণের অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন।

শ্রীকৃষ্ণ ও নগ্নজিতির সন্তানরা হলেন বীর, চন্দ্র, অশ্বসেন, চিত্রাগু, বেগবান, বৃষ, অম, শঙ্কু এবং কুন্তী (কৃষ্ণের পিসি ও পাণ্ডবদের মাতা কুন্তী নন)।

শ্রুত, কবি, বৃষ, বীর, সুবাহু, ভদ্র, শান্তি, দর্শ, পূর্ণাংশ এবং সোমক হলেন কৃষ্ণ ও কালিন্দির পুত্র।

লক্ষণা নামক মহিষীর গর্ভে শ্রীকৃষ্ণের ঔরসজাত পুত্রেরা হলেন প্রঘোষ, গাত্রবান, সিংহ, বল, প্রবল, উর্ধগ, মহাশক্তি, সাহা, ওজ এবং অপরাজিত।

মিত্রবৃন্দা ও শ্রীকৃষ্ণের মিলনে যে দশ পুত্রের জন্ম হয়, তারা হলেন বৃক, হর্ষ, অনিল, গৃধ্র, বর্ধন, উন্নাদ, মহাংশ, পবন, বহ্নি এবং ক্ষুধী।

ভদ্রার গর্ভজাত শ্রীকৃষ্ণের পুত্রেরা হলেন সংগ্রামজিৎ, বৃহৎসেন, সুর, প্রহরণ, অরিজিৎ, জয়, সুভদ্র, বাম, আয়ুর ও সাত্যক।

প্রভাব সম্পাদনা

বৈষ্ণব ধর্ম সম্পাদনা

 
মণিপুরি শৈলীতে রাসলীলা

কৃষ্ণের পূজা হল বৈষ্ণব ধর্মের একটি অঙ্গ। বৈষ্ণব ধর্ম অনুসারে দেবতা বিষ্ণুকে পরমেশ্বর জ্ঞান করা হয়ে থাকে এবং তার অন্যান্য অবতারসমূহ, তাদের পত্নী এবং তৎসম্বন্ধীয় গুরু ও সাধকদের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। কৃষ্ণকে মূলত বিষ্ণুর পূর্ণাবতার হিসেবে গণ্য করা হয়।[১০০] কিন্তু কৃষ্ণের সাথে বিষ্ণুর প্রকৃত সম্বন্ধ অত্যন্ত জটিল ও বৈচিত্রপূর্ণ হয়ে ওঠে[১০১] যখন কখনও স্বয়ং কৃষ্ণকেই একমাত্র পরমেশ্বর রূপে আরাধনা করা হয়।[১০২] বহু আরাধ্য দেবদেবী ও তাদের অবতারদের মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে কৃষ্ণের অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কৃষ্ণ এবং বিষ্ণুকেই কেন্দ্র করে বৈষ্ণব ধর্মের ঐতিহ্য চলে এসেছে। অনেক ক্ষেত্রে হিন্দুধর্মের যে শাখায় স্বয়ং কৃষ্ণ প্রধান আরাধ্য রূপে বিবেচিত হন সেই শাখাকে "কার্ষ্ণ্য ধর্ম" এবং যে শাখায় কৃষ্ণকে শুধুমাত্র বিষ্ণুর অবতার রূপে চিহ্নিত করা হয় সেই শাখাকে "বৈষ্ণব ধর্ম" আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।[১০৩]

সমস্ত বৈষ্ণব ঐতিহ্য কৃষ্ণকে বিষ্ণুর অষ্টম অবতার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়; অন্যরা কৃষ্ণকে বিষ্ণু হিসেবে চিহ্নিত করে, আবার কৃষ্ণবাদ ঐতিহ্য যেমন গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্ম, [১০৪] [১০৫] একসরণ ধর্ম, মহানাম সম্প্রদায়, নিম্বার্ক সম্প্রদায় এবং বল্লভ সম্প্রদায় কৃষ্ণকে স্বয়ং ভগবান, ভগবানের আদি রূপ বা হিন্দুধর্মের ব্রহ্মের মতোই মনে করে। [১০৬] [১০৭] [১০৮] [১০৯] [১১০] জয়দেবের গীতগোবিন্দ কৃষ্ণকে পরম প্রভু এবং দশাবতারকে তাঁর রূপ বলে মনে করেন। স্বামীনারায়ণ সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা স্বামীনারায়ণ স্বয়ং কৃষ্ণকে ভগবান হিসেবে পূজা করতেন। "বৃহত্তর কৃষ্ণবাদ" বৈষ্ণবধর্মের দ্বিতীয় এবং প্রভাবশালী পর্বের সাথে মিলে যায় যা বৈদিক যুগেরশেষের দিকের বাসুদেব, কৃষ্ণ এবং গোপালের ধর্মকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছিল। [১১১] বর্তমানে ভারতের বাইরেও এই বিশ্বাসের উল্লেখযোগ্য অনুসারী রয়েছে। [১১২]

প্রারম্ভিক ঐতিহ্য

দেবতা কৃষ্ণ-বাসুদেব (" আনকদুন্দুভি বসুদেবের পুত্র কৃষ্ণ ") উপাসনা ঐতিহাসিকভাবে কৃষ্ণধর্ম এবং বৈষ্ণবধর্মের প্রাচীনতম উপাসনাগুলির মধ্যে একটি। [১১৩] [৭২] কৃষ্ণ-বাসুদেব উপাসনাকে প্রাচীনকালের কৃষ্ণ ধর্মের প্রাথমিক ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য ঐতিহ্য বলে মনে করা হয়। [১১৪] এর পরে, বিভিন্ন অনুরূপ ঐতিহ্যের একটি সংমিশ্রণ ছিল। এর মধ্যে রয়েছে প্রাচীন ভাগবতবাদ, গোপালের ধর্ম, "কৃষ্ণ গোবিন্দ" (গো-চারণকারী কৃষ্ণ), বালকৃষ্ণ (শিশু কৃষ্ণ) এবং "কৃষ্ণ গোপীবল্লভ। [১১৫] " (কৃষ্ণ প্রেমিক)। [১১৬] [১১৭] আন্দ্রে কউচারের মতে, হরিবংশ কৃষ্ণের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন চরিত্রের সংশ্লেষণে অবদান রেখেছিল। [১১৮]

মধ্যযুগের প্রথম দিকে, জগন্নাথধর্ম ( ওরফে ওড়িয়া বৈষ্ণবধর্ম) দেবতা জগন্নাথের ধর্ম হিসাবে উদ্ভূত হয়েছিল আক্ষ.''জগতের নাথ বা প্রভু'' ) – জগন্নাথ কৃষ্ণের একটি বিমূর্ত রূপ। [১১৯] জগন্নাথবাদ ছিল কৃষ্ণবাদের আঞ্চলিক মন্দির-কেন্দ্রিক সংস্করণ [১২০] যেখানে জগন্নাথকে প্রধান দেবতা, পুরুষোত্তম এবং পর ব্রহ্ম বলা হয়। তবে জগন্নাথধর্ম অ-সাম্প্রদায়িক সমন্বিত বৈষ্ণব এবং সর্ব-হিন্দু সম্প্রদায় হিসাবেও বিবেচিত হতে পারে। [১২১] বিষ্ণুধর্ম পুরাণ ( আনু. ৪র্থ শতক) অনুসারে, ওড়িয়ায় (ওড়িশা) কৃষ্ণকে পুরুষোত্তম রূপে পূজা করা হয়। [১২২] উড়িষ্যার পুরীর উল্লেখযোগ্য জগন্নাথ মন্দিরটি ৮০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ঐতিহ্যগতভাবে বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। [৭০]

ভক্তি আন্দোলন সম্পাদনা

 
কৃষ্ণ ভক্তি আন্দোলনের একটি প্রধান অংশ ছিলেন। কৃষ্ণভক্তদের মাঝে একজন ছিলেন মীরা (ছবিতে)।

ভক্তি শব্দের অর্থ 'অনুরতি' বা 'নিষ্ঠা'। ভক্তি কোনো একক দেবতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। কৃষ্ণ হিন্দুধর্মের মধ্যে বিশেষ করে বৈষ্ণব কৃষ্ণায়েত সম্প্রদায়ের মধ্যে ভক্তিবাদ ঐতিহ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয় কেন্দ্রবিন্দু। [১০৪] [১২৩] কৃষ্ণভক্তগণ লীলা ধারণায় জোর দেয়। লীলা অর্থ 'ঐশ্বরিক খেলা' যা মহাবিশ্বের কেন্দ্রীয় নীতি। ভগবদ্গীতায় কৃষ্ণ দ্বারা আলোচিত তিন ধরনের যোগের অন্যতম 'ভক্তিযোগের' একটি রূপ হলো 'লীলা'। [১০৫] [১২৪] [১২৫]

ভারতীয় উপমহাদেশ সম্পাদনা

কৃষ্ণভক্তি আন্দোলন দক্ষিণ ভারতে খ্রিস্টাব্দ ৭ম থেকে ৯ম   শতাব্দীতে বিশিষ্ট হয়ে উঠেছিল। প্রাচীনতম সাহিত্যগুলির মধ্যে তামিলনাড়ুর আলবর সাধুদের রচনা অন্তর্ভুক্ত ছিল। [১২৬] আলবরদের কাজের একটি প্রধান সংগ্রহ হল দিব্য প্রবন্ধম্ । আলবর আন্দালের জনপ্রিয় তিরুপ্পাবাই গানের সংকলনে তিনি নিজেকে একজন গোপী রূপে কল্পনা করেছেন। তিরুপ্পবাই এই ধারার প্রাচীনতম রচনাগুলির মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত। [১২৭] [১২৮] [১২৯]

এই আন্দোলনটি ৭ম শতাব্দীতে দক্ষিণ ভারতে উদ্ভূত হয়েছিল, এবং তামিলনাড়ু থেকে কর্ণাটক এবং মহারাষ্ট্র হয়ে উত্তর দিকে ছড়িয়ে পড়ে; ১৫ শতাব্দীর মধ্যে , এই ভক্তি আন্দোলন বাংলা এবং উত্তর ভারতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। [১৩০] প্রাথমিক কৃষ্ণায়েত ভক্তির অগ্রগামীদের মধ্যে নিম্বারকাচার্যের (দ্বাদশ বা ১৩শ শতাব্দী ) নাম উল্লেখযোগ্য।[১৩১] [১৩২] [note ১] বেশিরভাগই বৈষ্ণব সাধক পরবর্তীতে আবির্ভূত হন যেমন বল্লভাচার্য (১৫শ শতাব্দী) এবং চৈতন্য মহাপ্রভু । নিম্বার্ক, বল্লভাচার্য ও চৈতন্য মহাপ্রভু কৃষ্ণ ও রাধাকে পরম আরাধ্য হিসেবে গ্রহণ তাদের নিজস্ব সম্প্রদায় যথা নিম্বার্ক সম্প্রদায়, বল্লভ সম্প্রদায় এবং গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্ম প্রবর্তন করেছিল। উপরন্তু, ১৫শ শতক থেকে, কৃষ্ণধর্ম তান্ত্রিক বৈচিত্র্য, বৈষ্ণব-সহজিয়া, বাঙালি কবি চণ্ডীদাসের রচনার সাথে যুক্ত হয়েছিল। [১৩৪]

দাক্ষিণাত্যে, বিশেষ করে মহারাষ্ট্রে, জ্ঞানেশ্বর, নামদেব, জনাবাই, একনাথ এবং তুকারামের মতো ওয়ারকারি সম্প্রদায়ের সাধক কবিগণ ১৩শ থেকে ১৮শ শতকের মধ্যে কৃষ্ণের স্থানীয় রূপ [৪২] বিঠোবার উপাসনা প্রচার করেছিলেন। [১৮] ওয়ারকারি ঐতিহ্যের পূর্বে, সর্বজ্ঞ চক্রধর প্রতিষ্ঠিত মহানুভব সম্প্রদায়ের উত্থানের কারণে মহারাষ্ট্রে কৃষ্ণ ভক্তি সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। [১৩৫] দেবচন্দ্র মহারাজ এবং তাঁর বিখ্যাত উত্তরসূরি মহামতি প্রাণনাথের কৃষ্ণ-কেন্দ্রিক সমন্বয়বাদী হিন্দু -ইসলামিক শিক্ষার উপর ভিত্তি করে ১৭ শতকে গুজরাটে প্রণমী সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটে। [১৩৬] দক্ষিণ ভারতে, কর্ণাটকের পুরন্দর দাস এবং কনাকদাস উডুপির কৃষ্ণ মূর্তিকে উৎসর্গ করে পদ রচনা করেছিলেন। গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের রূপ গোস্বামী ভক্তি-রসামৃত-সিন্ধু নামে ভক্তির একটি বিস্তৃত সারাংশ সংকলন করেছেন। [১২৩]

দক্ষিণ ভারতে, শ্রীসম্প্রদায়ের আচার্যগণ তাদের বেশিরভাগ রচনায় কৃষ্ণ সম্পর্কে শ্রদ্ধার সাথে লিখেছেন যার মধ্যে রয়েছে আন্ডালের তিরুপ্পাবাই [১৩৭] এবং বেদান্ত দেশিকের গোপালবিংশতি[১৩৮]

তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, এবং কেরালা রাজ্যে অনেক বড় কৃষ্ণ মন্দির রয়েছে। জন্মাষ্টমী দক্ষিণ ভারতে ব্যাপকভাবে উদযাপিত উৎসবগুলির মধ্যে একটি। [১৩৯]

এশিয়ার বাইরে সম্পাদনা

১৯৬৫ সাল নাগাদ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ (তার গুরু ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরের নির্দেশ অনুসারে) পশ্চিমবঙ্গে তার জন্মভূমি থেকে নিউ ইয়র্ক সিটিতে ভ্রমণ করার পর কৃষ্ণ-ভক্তি আন্দোলন ভারতের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে । এক বছর পরে ১৯৬৬ সালে, অনেক অনুসারী অর্জনের পরে, তিনি কৃষ্ণ চেতনা জন্য আন্তর্জাতিক সোসাইটি (ইসকন) গঠন করতে সক্ষম হন, যা হরে কৃষ্ণ আন্দোলন নামে পরিচিত।[১৪০] এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল ইংরেজিতে কৃষ্ণ সম্পর্কে লেখা এবং সাধক চৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষা ছড়িয়ে দিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের মানুষের সাথে গৌড়ীয় বৈষ্ণব দর্শন শেয়ার করা। হরে কৃষ্ণ মহা-মন্ত্রেরজপ হরি-নাম সংকীর্তন নামে সেখানে ব্যাপক পরিচিত লাভ করে ।[১৪১]

মহামন্ত্রটি বিটলস খ্যাত জর্জ হ্যারিসন এবং জন লেননের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল, এবং হ্যারিসন লন্ডনের রাধা কৃষ্ণ মন্দিরের ভক্তদের দ্বারা মন্ত্রটির একটি ১৯৬৯ সালে রেকর্ডিং তৈরি করেছিলেন।[১৪২][১৪৩] " হরে কৃষ্ণ মন্ত্র " শিরোনাম , গানটি যুক্তরাজ্য মিউজিক চার্টে শীর্ষ বিশ-এ পৌঁছেছিল এবং পশ্চিম জার্মানি এবং চেকোস্লোভাকিয়াতেও সফল হয়েছিল। উপনিষদের মন্ত্র এইভাবে ভক্তিবেদান্ত এবং ইসকনের ধারণাগুলিকে পশ্চিমে কৃষ্ণ সম্পর্কে জানতে সাহায্য করেছিল। ইসকন দক্ষিণ আফ্রিকায়সহ পশ্চিমে অনেক কৃষ্ণ মন্দির তৈরি করেছে ।[১৪৪][১৪৫]

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সম্পাদনা

 
কৃষ্ণ " গোবর্ধন " পর্বত উত্তোলন করেছেন , একটি দা নাং , ভিয়েতনাম, প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান থেকে ৭ম শতাব্দীর একটি শিল্পকর্ম

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইতিহাস এবং শিল্পে অনেক জায়গায় কৃষ্ণকে পাওয়া যায়। পাহাড়ি আগ্নেয়গিরির জাভা, ইন্দোনেশিয়ার প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলিতে তার শৈশব বা রাজা এবং অর্জুনের সঙ্গী হিসেবে পরিচিতি পাওয়া যায়। খ্রিস্টীয় ৯ম শতাব্দীর কৃষ্ণের সবচেয়ে বিস্তৃত মন্দির শিল্পগুলি যোগকার্তার কাছে প্রম্বানান হিন্দু মন্দির কমপ্লেক্সে "কৃষ্ণায়ণ পরিত্রাণ" একটি সিরিজে পাওয়া যায়। ১৪ শতকের মধ্যে কৃষ্ণ জাভানিজ সাংস্কৃতিক ও ধর্মতাত্ত্বিক ফ্যাব্রিকের অংশ ছিলেন, যেমনটি ইসলাম, বৌদ্ধ ধর্মের প্রতিস্থাপনের আগে পূর্ব জাভাতে হিন্দু দেবতা রামের সাথে ১৪ শতকের পেনাটারান রিলিফ দ্বারা প্রমাণিত হয়েছিল।

ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়ার মধ্যযুগীয় শিল্পকলায় কৃষ্ণের অস্তিত্ব রয়েছে। প্রাচীনতম টিকে থাকা ভাস্কর্যগুলি ৬ষ্ঠ এবং ৭ম শতাব্দীর এবং এর মধ্যে বৈষ্ণব ধর্মের মূর্তিও রয়েছে। মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট -এর দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় শিল্পকলার কিউরেটর ও পরিচালক জন গাই-এর মতে, দানাং -এ ৬ষ্ঠ/৭ম শতাব্দীর ভিয়েতনামের কৃষ্ণ গোবর্ধন শিল্প, এবং ৭ম শতাব্দীর কম্বোডিয়া আঙ্কোর বোরেয়ের নম দা গুহায়, এই যুগের সবচেয়ে বেশি অনুশীলন লক্ষ্যণীয়।

থাইল্যান্ডে সূর্য ও বিষ্ণুর সাথে কৃষ্ণের মূর্তিও পাওয়া গেছে। উত্তর থাইল্যান্ডের ফেচাবুন অঞ্চলের সি থেপ এবং ক্লাংনাই সাইটে প্রচুর সংখ্যক ভাস্কর্য এবং আইকন পাওয়া গেছে। ফানান এবং ঝেনলা উভয় যুগের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান থেকে এগুলো প্রায় ৭ম ও ৮ম শতাব্দীর।

হিন্দুধর্মের বাইরে সম্পাদনা

 
রাধা-কৃষ্ণ

জৈন ধর্ম

জৈন ধর্মের ঐতিহ্যে ৬৩জন শলাকাপুরুষ বা উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বের তালিকা রয়েছে। এই তালিকাটি চব্বিশজন তীর্থঙ্কর (আধ্যাত্মিক শিক্ষক) এবং নবত্রয়ীকে অন্তর্ভুক্ত করে। এই ত্রয়ী হলেন বাসুদেব কৃষ্ণ, বলদেব বা বলরাম এবং প্রতি-বাসুদেব জরাসন্ধ । জৈন চক্রের প্রতিটি যুগে একজন বাসুদেবের জন্ম হয় যার বড় ভাই বলদেব নামে পরিচিত। ত্রয়ীদের মধ্যে বলদেব অহিংসা নীতিকে সমর্থন করেন। অহিংসা নীতি জৈন ধর্মের একটি কেন্দ্রীয় ধারণা। এখানে খলনায়ক হলেন প্রতি-বাসুদেব যিনি জগৎ ধ্বংস করার চেষ্টা করেন। জগৎকে বাঁচাতে হলে বাসুদেব-কৃষ্ণকে অহিংসা নীতি ত্যাগ করতে হবে এবং প্রতি-বাসুদেবকে বধ করতে হবে। [১৪৬] এই ত্রয়ীর গল্প জিনসেনের হরিবংশ পুরাণে ( মহাভারতের খিল হরিবংশ নয়) এবং হেমচন্দ্রের ত্রিষষ্ঠী-শলাকাপুরুষ-চরিতে পাওয়া যেতে পারে। [১৪৭] [১৪৮]

জৈন ধর্মের পুরাণগুলিতে কৃষ্ণের জীবনের গল্প হিন্দু গ্রন্থগুলির মতো বিশদভাবে তবে ভিন্ন প্রকারে একই সাধারণ রূপরেখা অনুসরণ করে রচিত। মহাভারত, ভাগবত পুরাণ এবং বিষ্ণু পুরাণে পাওয়া সংস্করণগুলির পরিবর্তে জৈন পুরাণগুলি গল্পের চরিত্র হিসাবে জৈন তীর্থঙ্করদের অন্তর্ভুক্ত করে এবং সাধারণত কৃষ্ণের বিতর্কিত সমালোচনা করে। [১৪৯] উদাহরণস্বরূপ, জৈন সংস্করণে কৃষ্ণ যুদ্ধে হেরে যান। তাঁর গোপী এবং তাঁর যাদব বংশ দ্বৈপায়ন নামে এক তপস্বী দ্বারা সৃষ্ট আগুনে মারা যায়। একইভাবে জৈন গ্রন্থে বলা হয়েছে, শিকারী জরার তীর দ্বারা আহত হয়ে মৃত্যুর পরে, কৃষ্ণ জৈন সৃষ্টিতত্ত্বের তৃতীয় নরকে যান, এবং তাঁর ভাই ষষ্ঠ স্বর্গে যান। [১৫০]

বিমলসুরিকে হরিবংশ পুরাণের জৈন সংস্করণের লেখক বলে দায়ী করা হয়, তবে এটি নিশ্চিত করে এমন কোনো পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয় পরবর্তীকালের জৈন পণ্ডিত যেমন ৮ম- শতাব্দীর জিনসেন জৈন ঐতিহ্যে কৃষ্ণ কিংবদন্তির একটি সম্পূর্ণ সংস্করণ লিখেছিলেন এবং বিমলসুরিকে এর কৃতিত্ব দিয়েছিলেন। [১৫১]

কৃষ্ণ কাহিনীর আংশিক এবং পুরানো সংস্করণ অন্যান্য জৈন সাহিত্যে পাওয়া যায়, যেমন স্বেতাম্বর আগম ঐতিহ্যের অন্তগাতা দাসাওতে । [১৫১] অন্যান্য জৈন গ্রন্থে, কৃষ্ণকে বাইশতম তীর্থঙ্কর নেমিনাথের মামাতো ভাই বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জৈন গ্রন্থগুলি বলে যে নেমিনাথ কৃষ্ণকে সমস্ত জ্ঞান শিখিয়েছিলেন যা তিনি পরে ভগবদ্গীতায় অর্জুনকে দিয়েছিলেন। জৈনধর্মের উপর প্রকাশনার জন্য পরিচিত ধর্মের অধ্যাপক জেফরি ডি. লং -এর মতে, কৃষ্ণ এবং নেমিনাথের মধ্যে এই সংযোগটি জৈনদের জন্য একটি আধ্যাত্মিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্য হিসাবে ভগবদ্গীতাকে গ্রহণ, পাঠ এবং উদ্ধৃত করার একটি ঐতিহাসিক কারণ, কৃষ্ণ সম্পর্কিত উৎসব এবং আধ্যাত্মিক কার্যকলাপ হিন্দুদের সাথে মিশে যায়। [১৫২]

বৌদ্ধধর্ম সম্পাদনা

 
খ্রি. ৭৫২ সালে নির্মিত এক মন্দিরে কৃষ্ণের বাঁশি বাজানোর চিত্র । সম্রাট শোমুর আদেশে নির্মিত, টোডাই-জি মন্দির, নারা, জাপানের গ্রেট বুদ্ধ হল

বৌদ্ধধর্মের জাতক কাহিনীতে কৃষ্ণের কাহিনী পাওয়া যায়। [১৫৩] বিধুরপন্ডিত জাতকে মধুরার (সংস্কৃত: মথুরা) উল্লেখ রয়েছে, ঘট জাতক কংস, দেবগব্‌ভ (সংস্কৃত: দেবকী), উপসাগর বা বসুদেব, গোবধন (গোবর্ধন), বলদেব (বলরাম), এবং কানহা বা কেশবের ( কৃষ্ণ, কেশব) উল্লেখ করেছেন। [১৫৪] [১৫৫]

কৃষ্ণ কিংবদন্তির জৈন সংস্করণের মতো, বৌদ্ধ সংস্করণ ঘট জাতক গল্পের একটি সাধারণ রূপরেখা অনুসরণ করে [১৫৬] যা হিন্দু সংস্করণ থেকে ভিন্ন। [১৫৪] [৭০] উদাহরণস্বরূপ, বৌদ্ধ কিংবদন্তির বর্ণনানুসারে, দেবগব্‌ভ (দেবকী) জন্মের পর খুঁটির উপর নির্মিত একটি প্রাসাদে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন, তাই কোনো ভবিষ্যত স্বামী তার কাছে পৌঁছাতে পারেনি। কৃষ্ণের পিতাকে একইভাবে একজন শক্তিশালী রাজা হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে যিনি কোনভাবে দেবগব্‌ভের সাথে মিলিত হন এবং কংস তার সাথে ভগিনী দেবগব্‌ভের বিবাহ প্রদান করেন। প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কৃষ্ণের ভাইবোনেরা কংসের হাতে নিহত হয় না। কিংবদন্তির বৌদ্ধ সংস্করণে, কৃষ্ণের সকল ভাইবোন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠে। [১৫৭]

কৃষ্ণ ও তার ভাইবোনের রাজধানী হয় দ্বারাবতী। জাতক সংস্করণে অর্জুন ও কৃষ্ণের মিথস্ক্রিয়া অনুপস্থিত। জাতকে একটি নতুন কিংবদন্তি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেখানে কৃষ্ণ তার পুত্র মারা গেলে সংযমহীন দুঃখে বিলাপ করেন এবং এক ঘটপণ্ডিত কৃষ্ণকে একটি শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে উন্মাদের মত আচরণ করেন। [১৫৮] জাতক কাহিনীতে, শোক-দুঃখে মুহ্যমান হওয়ার পর তার ভাইবোনদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্কীয় ধ্বংসের বর্ণনাও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই বৌদ্ধ কিংবদন্তীতেও, কৃষ্ণ জরা নামে এক শিকারীর হাতে মারা যান যখন তিনি একটি সীমান্ত নগরে ভ্রমণ করছিলেন। কৃষ্ণকে শূকর মনে করে, জরা একটি বর্শা নিক্ষেপ করে যা মারাত্মকভাবে তার পায়ে বিদ্ধ করে, কৃষ্ণকে প্রচন্ড যন্ত্রণা দেয় এবং তারপরে তার মৃত্যু হয়। [১৫৭]

এই ঘট-জাতক বক্তৃতার শেষে, বৌদ্ধ গ্রন্থটি ঘোষণা করে যে, বৌদ্ধ ঐতিহ্যে বুদ্ধের অন্যতম শ্রদ্ধেয় শিষ্য সারিপুত্ত তার পূর্বজন্মে বুদ্ধের কাছ থেকে তার পূর্বের পুনর্জন্মের দুঃখ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে কৃষ্ণরূপে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। :

তারপর তিনি [বুদ্ধ] সত্য ঘোষণা করলেন এবং সেই জন্মকে চিহ্নিত করে বললেন: "তখন আনন্দ ছিল রোহিনেয়, সারিপুত্ত ছিল বাসুদেব [কৃষ্ণ], বুদ্ধের অনুসারীরা ছিলেন অন্যান্য ব্যক্তি এবং আমি স্বয়ং ছিলাম ঘটপণ্ডিত।"

— জাতক গাথা নং.৪৫৪, অনুবাদক: ডব্লিউ. এইচ. ডি. রোজ [১৫৯]

যদিও বৌদ্ধ জাতক গ্রন্থগুলি কৃষ্ণ-বাসুদেবকে সহ-যোজিত করে এবং তাকে তার পূর্বজন্মে বুদ্ধের শিষ্য করে তোলে, [১৫৯] হিন্দু গ্রন্থগুলি বুদ্ধকে সহ-যোজিত করে যেখানে বুদ্ধকে বিষ্ণুর অবতার বলা হয়। [১৬০] [১৬১] চৈনিক বৌদ্ধধর্ম, তাওবাদ এবং চীনা লোকধর্মে, কৃষ্ণের মূর্তিকে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং নলকুবরের সাথে একত্রিত করা হয়েছে যা দেবতা নেঝার মূর্তিরূপকে প্রভাবিত করে। নেঝা কৃষ্ণের মূর্তিগত বৈশিষ্ট্যগুলি গ্রহণ করেছেন যেখানে তাকে এক ঐশ্বরিক দেব-শিশু এবং যৌবনে একটি নাগ বধ করা অবস্থায় উপস্থাপন করা হয়েছে। [১৬২] [১৬৩]

অন্যান্য সম্পাদনা

 
মা যশোদার সাথে শিশু কৃষ্ণ

চৌবিস অবতারে কৃষ্ণকে "কৃষ্ণ অবতার" হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। চৌবিস অবতার দশম গ্রন্থের একটি রচনা যার লেখক হিসেবে ঐতিহ্যগত এবং ঐতিহাসিকভাবে শিখ গুরু গোবিন্দ সিংকে দায়ী করা হয়েছে। [১৬৪]

শিখ-সৃষ্ট ১৯ শতকের রাধা সোমি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা শিব দয়াল সিং- এর অনুসারীরা কৃষ্ণকে জীবন্ত গুরু এবং ঈশ্বরের (কৃষ্ণ/বিষ্ণু) অবতার বিবেচনা করতেন।[note ২]

বাহাইরা বিশ্বাস করেন, কৃষ্ণ ছিলেন " ঈশ্বরের একজন উদ্ভাসন ", অথবা ভাববাদীদের মধ্যে একজন যারা ধীরে ধীরে পরিপক্ক মানবতার জন্য ক্রমান্বয়ে ঈশ্বরের বাক্য প্রকাশ করেছেন। এভাবে, কৃষ্ণ আব্রাহাম, মূসা, জরাস্টার, বুদ্ধ, মুহাম্মদ, যীশু, বাব এবং বাহাই ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা বাহাউল্লাহর সাথে একটি উচ্চ মর্যাদা ভাগ করে নেন। [১৬৬] [১৬৭]

বিশ শতকের ইসলামী আন্দোলনের আহমদিয়াগণ, কৃষ্ণকে তাদের প্রাচীন নবীদের একজন হিসাবে বিবেচনা করে। [১৬৮] [১৬৯] [১৭০] গোলাম আহমদ বলেছেন, তিনি নিজে কৃষ্ণ, যীশু এবং মুহাম্মদের মতই একজন নবী [১৭১] যিনি পরবর্তীকালের ধর্ম ও নৈতিকতার পুনরুজ্জীবনকারী হিসেবে পৃথিবীতে এসেছেন।

১৯   শতাব্দীর থেকে বেশ কয়েকটি নতুন ধর্মীয় আন্দোলনে কৃষ্ণ উপাসনা বা শ্রদ্ধা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি কখনও কখনও গ্রীক, বৌদ্ধ, বাইবেল এবং এমনকি ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের সাথে গুপ্ত গ্রন্থে সারগ্রাহী সর্বদেবমন্দিরের সদস্য। [১৭২] উদাহরণ স্বরূপ, বহুবর্ষজীবী দর্শন ও গুপ্ত আন্দোলনের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব এডুয়ার্ড শুরে, কৃষ্ণকে এক মহান সূচনা বলে মনে করেন, অন্যদিকে থিওসফিস্টরা কৃষ্ণকে মৈত্রেয়ের ( প্রাচীন জ্ঞানের গুরুদের একজন) অবতার বা বুদ্ধের মতোই মানবতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক শিক্ষক হিসাবে বিবেচনা করেন। [১৭৩] [১৭৪]

কৃষ্ণকে অ্যালিস্টার ক্রাউলি দ্বারা ধর্মীয় নিয়মভুক্ত করা হয়েছিল এবং কৃষ্ণ অর্ডো টেম্পলি ওরিয়েন্টিসের নস্টিক ম্যাসে ইক্লেসিয়া নস্টিকা ক্যাথলিকার একজন সাধু হিসাবে স্বীকৃত। [১৭৫] [১৭৬]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

পাদটীকা সম্পাদনা

  1. Number of Krishna's children varies from one interpretation to another. According to some scriptures like the Bhagavata Purana, Krishna had 10 children from each of his wives (16,008 wives and 160,080 children)[৯]
  2. Radha is seen as Krishna's lover-consort. On the other hand, Rukmini and others are married to him. Krishna had eight chief wives, who were referred to as the Ashtabharya. The regional texts vary in the identity of Krishna's wife (consort), some presenting it as Rukmini, some as Radha, all gopis, and some identifying all to be different aspects or manifestation of Devi Lakshmi.[১০][১১]

উৎস সম্পাদনা

  1. Bryant 2007, পৃ. 114।
  2. Knott, Kim (২০০০)। Hinduism: A Very Short Introduction। Oxford University Press, USA। পৃষ্ঠা 160। আইএসবিএন 0-19-285387-2  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "Knott61" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  3. "আজ শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন, শুভ জন্মাষ্টমী"একাত্তর। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-০৬ 
  4. Raychaudhuri 1972, পৃ. 124
  5. "Information on Lord Krishna Birth and Death Time"। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মার্চ ২০১৫ 
  6. Krishna
  7. Diana L. Eck (২০১২)। India: A Sacred Geography। Harmony। পৃষ্ঠা 380–381। আইএসবিএন 978-0-385-53190-0 , Quote: "Krishna was shot through the foot, hand, and heart by the single arrow of a hunter named Jara. Krishna was reclining there, so they say, and Jara mistook his reddish foot for a deer and released his arrow. There Krishna died."
  8. Naravane, Vishwanath S. (১৯৮৭)। A Companion to Indian Mythology: Hindu, Buddhist & Jaina (ইংরেজি ভাষায়)। Thinker's Library, Technical Publishing House। 
  9. Sinha, Purnendu Narayana (১৯৫০)। A Study of the Bhagavata Purana: Or, Esoteric Hinduism (ইংরেজি ভাষায়)। Library of Alexandria। আইএসবিএন 978-1-4655-2506-2 
  10. John Stratton Hawley, Donna Marie Wulff (১৯৮২)। The Divine Consort: Rādhā and the Goddesses of India। Motilal Banarsidass Publisher। পৃষ্ঠা 12আইএসবিএন 978-0-89581-102-8 
  11. Bryant 2007, পৃ. 443।
  12. M, Amit; al। "Janmashtami 2019 : জন্মাষ্টমী সম্পর্কে সব কিছু জেনে নিন"আদি শিখা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-১৮ 
  13. ভট্টাচার্য, বিভূতিসুন্দর। "বাংলায় জন্মাষ্টমীর ইতিহাস"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-৩০ 
  14. Ritesh (২০১৭-০৮-১৪)। "দেশের গণ্ডী পেরিয়ে বিদেশে কীভাবে পালিত হয় কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী, দেখুন ফটোফিচারে"bengali.oneindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-৩০ 
  15. Knott 2000, পৃ. 56
  16. Knott 2000, p. 36, p. 15
  17. Richard Thompson, Ph. D. (ডিসেম্বর ১৯৯৪)। "Reflections on the Relation Between Religion and Modern Rationalism"। ২০০৮-১০-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৪-১২ 
  18. Mahony, W.K. (১৯৮৭)। "Perspectives on Krsna's Various Personalities"History of Religions। American Oriental Society। 26 (3): 333–335। জেস্টোর 10.2307/599733ডিওআই:10.2307/599733  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "Mahony1987" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  19. Knott 2000
  20. Beck, Guy (২০১২)। Alternative Krishnas: Regional And Vernacular Variations on a Hindu Deity। Suny Press। পৃষ্ঠা 4–5। আইএসবিএন 978-0-7914-8341-1 Beck, Guy (2012).
  21. Sangave 2001
  22. Zimmer 1953
  23. "Monier Williams Sanskrit-English Dictionary p.306"website। Cologne Digital Sanskrit Lexicon project। ২০০৮। ২০০৮-১০-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-১৩ 
  24. Bhaktivedanta Swami, Prabhupada"Chaitanya Charitamrta Madhya-lila Chapter 9 Verse 30"। vedabase.net। ২০০৮-০৩-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৬-১৫ 
  25. Lynne Gibson (২০০২)। Modern World Religions: Hinduism - Pupils Book Foundation (Modern World Religions)। Oxford [England]: Heinemann Educational Publishers। পৃষ্ঠা 7। আইএসবিএন 0-435-33618-5 
  26. Goswami 1998, পৃ. 141
  27. Beck 1993, পৃ. 195
  28. Vishnu sahasranama, Swami Tapasyananda's translation, pg. 51.
  29. Bryant 2007, পৃ. 17
  30. Hiltebeitel, Alf (২০০১)। Rethinking the Mahābhārata: a reader's guide to the education of the dharma king। Chicago: University of Chicago Press। পৃষ্ঠা 251–53, 256, 259। আইএসবিএন 0-226-34054-6 
  31. B.M.Misra। Orissa: Shri Krishna Jagannatha: the Mushali parva from Sarala's MahabharataOxford University Press, USA। আইএসবিএন 0-19-514891-6  in Bryant 2007, পৃ. 139
  32. The Encyclopedia Americana। [s.l.]: Grolier। ১৯৮৮। পৃষ্ঠা 589আইএসবিএন 0-7172-0119-8 
  33. Benton, William (১৯৭৪)। The New [[Encyclopaedia Britannica]]। Encyclopaedia Britannica। পৃষ্ঠা 885। আইএসবিএন 0852292902, 9780852292907 |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য)  ইউআরএল–উইকিসংযোগ দ্বন্দ্ব (সাহায্য)
  34. D. D. Kosambi (1962), Myth and Reality: Studies in the Formation of Indian Culture, New Delhi, CHAPTER I: SOCIAL AND ECONOMIC ASPECTS OF THE BHAGAVAD-GITA, paragraph 1.16
  35. Harle, J. C. (১৯৯৪)। The art and architecture of the Indian Subcontinent। New Haven, Conn: Yale University Press। পৃষ্ঠা 410আইএসবিএন 0-300-06217-6figure 327. Manaku, Radha‭'‭s messenger describing Krishna standing with the cow-girls, from Basohli. 
  36. Datta, Amaresh (১৯৯৪)। Encyclopaedia of Indian Literature। Sahitya Akademi। পৃষ্ঠা 4290।  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  37. The penny cyclopædia [ed. by G. Long]. 1843, p.390 [১]
  38. Ramesh M. Dave, K. K. A. Venkatachari, The Bhakta-bhagawan Relationship: Paramabhakta Parmeshwara Sambandha. Sya. Go Mudgala, Bochasanvasi Shri Aksharpurushottama Sanstha, 1988. p.74
  39. Valpey 2006, পৃ. 52
  40. Hoiberg, Dale (২০০০)। Students' Britannica India। Popular Prakashan। পৃষ্ঠা 251। আইএসবিএন 0852297602, 9780852297605 |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য)  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  41. Satsvarupa dasa Goswami (১৯৯৮)। "The Qualities of Sri Krsna"। GNPress: 152 pages। আইএসবিএন 0911233644 
  42. Vithoba is not only viewed as a form of Krishna. He is also by some considered that of Vishnu, Shiva and Gautama Buddha according to various traditions. See: Kelkar, Ashok R. (২০০১) [1992]। "Sri-Vitthal: Ek Mahasamanvay (Marathi) by R.C. Dhere"Encyclopaedia of Indian literature5Sahitya Akademi। পৃষ্ঠা 4179।  and Mokashi, Digambar Balkrishna (১৯৮৭)। Palkhi: a pilgrimage to Pandharpur - translated from the Marathi book Pālakhī by Philip C. Engblom। Albany: State University of New York Press। পৃষ্ঠা 35। আইএসবিএন 0887064612  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য) উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "vithoba" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  43. Flood 1996
  44. Osmund Bopearachchi (২০১৬)। "Emergence of Viṣṇu and Śiva Images in India: Numismatic and Sculptural Evidence"  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "Bopearachchi" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  45. Audouin, Rémy, and Paul Bernard, "[Trésor de monnaies indiennes et indo-grecques d'Aï Khanoum (Afghanistan). II. Les monnaies indo-grecques.]" Revue numismatique 6, no. 16 (1974), pp. 6–41 (in French).
  46. Nilakanth Purushottam Joshi, Iconography of Balarāma, Abhinav Publications, 1979, p. 22
  47. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; allchin309 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  48. Richard Salomon (১৯৯৮)। Indian Epigraphy: A Guide to the Study of Inscriptions in Sanskrit, Prakrit, and the other Indo-Aryan Languages। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 265–267। আইএসবিএন 978-0-19-535666-3 
  49. Benjamín Preciado-Solís (১৯৮৪)। The Kṛṣṇa Cycle in the Purāṇas: Themes and Motifs in a Heroic Saga। Motilal Banarsidass। পৃষ্ঠা 34। আইএসবিএন 978-0-89581-226-1 
  50. Khare 1967
  51. Irwin 1974
  52. Susan V Mishra ও Himanshu P Ray 2017
  53. Burjor Avari (২০১৬)। India: The Ancient Past: A History of the Indian Subcontinent from C. 7000 BCE to CE 1200। Routledge। পৃষ্ঠা 165–167। আইএসবিএন 978-1-317-23673-3 
  54. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; BRILL নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  55. Richard Salomon (১৯৯৮)। Indian Epigraphy: A Guide to the Study of Inscriptions in Sanskrit, Prakrit, and the Other Indo-Aryan Languages। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 86–87। আইএসবিএন 978-0-19-509984-3 
  56. Wendy Doniger (২০০৮)। "Britannica: Mahabharata"encyclopedia। Encyclopædia Britannica Online। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-১৩ 
  57. Bryant 2007, পৃ. 5
  58. Barnett, Lionel David (১৯২২)। Hindu Gods and Heroes: Studies in the History of the Religion of India। J. Murray। পৃষ্ঠা 93। 
  59. Puri, B.N. (১৯৬৮)। India in the Time of Patanjali। Bhartiya Vidya Bhavan। Page 51: The coins of Raj uvula have been recovered from the Sultanpur District.. the Brahmi inscription on the Mora stone slab, now in the Mathura Museum,
  60. Barnett, Lionel David (১৯২২)। Hindu Gods and Heroes: Studies in the History of the Religion of India। J. Murray। পৃষ্ঠা 92। 
  61. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; KCIA নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  62. Doris Srinivasan (১৯৯৭)। Many Heads, Arms, and Eyes: Origin, Meaning, and Form of Multiplicity in Indian Art। Broll Academic। পৃষ্ঠা 214–215 with footnotes। আইএসবিএন 90-04-10758-4 
  63. Jason Neelis (২০১০)। Early Buddhist Transmission and Trade Networks: Mobility and Exchange Within and Beyond the Northwestern Borderlands of South Asia। Btill Academic। পৃষ্ঠা 271–272। আইএসবিএন 978-90-04-18159-5 
  64. Elkman, S. M.; Gosvami, J. (১৯৮৬)। Jiva Gosvamin's Tattvasandarbha: A Study on the Philosophical and Sectarian Development of the Gaudiya Vaisnava Movement। Motilal Banarsidass। Elkman, S. M.; Gosvami, J. (1986).
  65. Rocher 1986
  66. Gregory Bailey (২০০৩)। The Study of Hinduism। University of South Carolina Press। পৃষ্ঠা 141–142। আইএসবিএন 978-1-57003-449-7 Gregory Bailey (2003).
  67. Flood 1996
  68. Barbara Holdrege (2015), Bhakti and Embodiment, Routledge, আইএসবিএন ৯৭৮-০৪১৫৬৭০৭০৮ISBN 978-0415670708, pp. 109–110
  69. Richard Thompson (2007), The Cosmology of the Bhagavata Purana 'Mysteries of the Sacred Universe, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১৯১৯১ISBN 978-8120819191
  70. Bryant 2007
  71. Matchett 2001
  72. Bryant 2007, পৃ. 4 উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "bryant4" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  73. Sunil Kumar Bhattacharya Krishna-cult in Indian Art. 1996 M.D. Publications Pvt. Ltd. আইএসবিএন ৮১-৭৫৩৩-০০১-৫ p.128: Satha-patha-brahmana and Aitareya-Aranyaka with reference to first chapter.
  74. Sunil Kumar Bhattacharya Krishna-cult in Indian Art. 1996 M.D. Publications Pvt. Ltd. আইএসবিএন ৮১-৭৫৩৩-০০১-৫ p.126: "According to (D.R.Bhadarkar), the word Krishna referred to in the expression 'Krishna-drapsah' in the Rig- Veda, denotes the very same Krishna".
  75. Mackay's report part 1,pp.344-45,Part 2,plate no.90,object no.D.K.10237
  76. Age of Bharata War by G.C. AGARWALA and K.L VERMA page.81
  77. Armstrong, Karen (১৯৯৬)। A History of God: The 4000-year Quest of Judaism, Christianity, and IslamAlfred A. Knopf Inc। পৃষ্ঠা 85–86। আইএসবিএন 978-0-679-42600-4 Armstrong, Karen (1996).
  78. Hemacandra Abhidhânacintâmani, Ed.
  79. See horoscope number 1 in Dr. B.V. Raman (১৯৯১)। Notable Horoscopes। Delhi, India: Motilal Banarsidass। আইএসবিএন 8120809017 
  80. Arun K. Bansal's research published in Outlook India, September 13, 2004. "Krishna (b. July 21, 3228 BC)"। ২৬ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৩ 
  81. N.S. Rajaram takes these dates at face value when he opines that "We have therefore overwhelming evidence showing that Krishna was a historical figure who must have lived within a century on either side of that date, i.e., in the 3200-3000 BC period". (Prof. N. S. Rajaram (সেপ্টেম্বর ৪, ১৯৯৯)। "Search for the Historical Krishna"। www.swordoftruth.com। সেপ্টেম্বর ১৯, ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৬-১৫ 
  82. According to the Bhagavata and Vishnu Puranas, but in some Puranas like Devi-Bhagavata-Purana, her paternal uncle. See the Vishnu-Purana Book V Chapter 1, translated by H. H. Wilson, (1840), the Srimad Bhagavatam, translated by A.C. Bhaktivedanta Swami Prabhupada, (1988) copyright Bhaktivedanta Book Trust
  83. Yashoda and Krishna
  84. Bryant 2007, পৃ. 124–130,224
  85. Bryant 2004, পৃ. 425 (Note. 4)
  86. Bryant 2004, পৃ. 16 (Bh.P. X Ch 2.18)[২]
  87. Tripurari, Swami, Gopastami ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ জুলাই ২০১১ তারিখে, Sanga ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ ডিসেম্বর ২০০৯ তারিখে, 1999.
  88. "Lord Krishna Stories"। ২৮ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৪ 
  89. Lynne Gibson (১৮৪৪)। Calcutta Review। India: University of Calcutta Dept. of English। পৃষ্ঠা 119। 
  90. Lynne Gibson (১৯৯৯)। Merriam-Webster's Encyclopedia of World Religions। Merriam-Webster। পৃষ্ঠা 503। 
  91. The English Writings of Rabindranath Tagore (ed. Sisir Kumar Das) (১৯৯৬)। A Vision of Indias History। Sahitya Akademi: Sahitya Akademi। পৃষ্ঠা 444। আইএসবিএন 8126000945  line feed character in |লেখক= at position 62 (সাহায্য);
  92. Schweig, G.M. (২০০৫)। Dance of divine love: The Rasa Lila of Krishna from the Bhagavata Purana, India's classic sacred love story.Princeton University Press, Princeton, NJ; Oxford। আইএসবিএন 0691114463 
  93. Bryant 2007, পৃ. 290
  94. Bryant 2007, পৃ. 28–29
  95. "Krishna & Shishupal"। Mantraonnet.com। ২০০৭-০৬-১৯। ২০১১-১০-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-২৩ 
  96. Krishna in the Bhagavad Gita, by Robert N. Minor in Bryant 2007, পৃ. 77–79
  97. B. R. Kishore, Lord Krishna,page 47
  98. Francis Hamilton, Genealogies of the Hindus extracted from Sacred Texts, page 123, 145
  99. Sister Nivedita & Ananda K.Coomaraswamy: Myths and Legends of the Hindus and Bhuddhists, Kolkata, 2001 আইএসবিএন ৮১-৭৫০৫-১৯৭-৩
  100. John Dowson (২০০৩)। Classical Dictionary of Hindu Mythology and Religion, Geography, History and Literature। Kessinger Publishing। পৃষ্ঠা 361। আইএসবিএন 0-7661-7589-8 [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  101. See Beck, Guy, "Introduction" in Beck 2005, পৃ. 1–18
  102. Knott 2000, পৃ. 55
  103. Flood (1996) p. 117
  104. See McDaniel, June, Folk Vaishnavism and Ṭhākur Pañcāyat: Life and status among village Krishna statues in Beck 2005
  105. Kennedy, M. T. (১৯২৫)। The Chaitanya Movement: A Study of the Vaishnavism of Bengal। H. Milford, Oxford university press।  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "Kennedy1925" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  106. K. Klostermaier (১৯৯৭)। The Charles Strong Trust Lectures, 1972–1984। Crotty, Robert B.। Brill Academic Pub। পৃষ্ঠা 109। আইএসবিএন 978-90-04-07863-5 
  107. Indian Philosophy & Culture, Volume 20। Institute of Oriental Philosophy (Vrindāvan, India), Institute of Oriental Philosophy, Vaishnava Research Institute, contributors। The Institute। ১৯৭৫। পৃষ্ঠা 148। 
  108. Delmonico, N., The History Of Indic Monotheism And Modern Chaitanya Vaishnavism in Bryant ও Ekstrand 2004
  109. De, S. K. (১৯৬০)। Bengal's contribution to Sanskrit literature & studies in Bengal Vaisnavism। KL Mukhopadhyaya। 
  110. Bryant 2007
  111. encyclopedia 
  112. Graham M. Schweig (২০০৫)। Dance of Divine Love: The Rڄasa Lڄilڄa of Krishna from the Bhڄagavata Purڄa. na, India's classic sacred love story। Princeton University Press। Front Matter। আইএসবিএন 978-0-691-11446-0 
  113. Hein, Norvin (১৯৮৬)। "A Revolution in Kṛṣṇaism: The Cult of Gopāla": 296–317। জেস্টোর 1062622ডিওআই:10.1086/463051 
  114. Bhattacharya, Gouriswar: Vanamala of Vasudeva-Krsna-Visnu and Sankarsana-Balarama.
  115. "Gopala: Understanding the Essence of Krishna as a Cowherd"Isha Sadhguru (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-০৮-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-৩০ 
  116. Klostermaier, Klaus K. (২০০৫)। A Survey of Hinduism। State University of New York Press; 3 edition। পৃষ্ঠা 203–204। আইএসবিএন 978-0-7914-7081-7 
  117. Basham, A. L. (মে ১৯৬৮)। "Review: Krishna: Myths, Rites, and Attitudes. by Milton Singer; Daniel H. H. Ingalls" (3): 667–670। জেস্টোর 2051211ডিওআই:10.2307/2051211 
  118. Couture, André (২০০৬)। "The emergence of a group of four characters (Vasudeva, Samkarsana, Pradyumna, and Aniruddha) in the Harivamsa: points for consideration": 571–585। ডিওআই:10.1007/s10781-006-9009-x 
  119. [[#CITEREF|]].
  120. Hardy 1987
  121. Miśra 2005
  122. Starza 1993
  123. Klostermaier, K. (১৯৭৪)। "The Bhaktirasamrtasindhubindu of Visvanatha Cakravartin": 96–107। জেস্টোর 599733ডিওআই:10.2307/599733  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "Klostermaier1974" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  124. Theory And Practice of Yoga: Essays in Honour of Gerald James Larson। Brill Academic Publishers। ২০০৫। পৃষ্ঠা 351। আইএসবিএন 978-90-04-14757-7 
  125. Christopher Key Chapple (Editor) and Winthrop Sargeant (Translator), The Bhagavad Gita: Twenty-fifth–Anniversary Edition, State University of New York Press, আইএসবিএন ৯৭৮-১৪৩৮৪২৮৪২০, pp. 302–303, 318
  126. Vaudeville, C. (১৯৬২)। "Evolution of Love-Symbolism in Bhagavatism": 31–40। জেস্টোর 595976ডিওআই:10.2307/595976 
  127. Bowen, Paul (১৯৯৮)। Themes and issues in Hinduism। Cassell। পৃষ্ঠা 64–65আইএসবিএন 978-0-304-33851-1 
  128. Radhakrisnasarma, C. (১৯৭৫)। Landmarks in Telugu Literature: A Short Survey of Telugu Literature। Lakshminarayana Granthamala। 
  129. Sisir Kumar Das (২০০৫)। A History of Indian Literature, 500–1399: From Courtly to the Popular। Sahitya Akademi। পৃষ্ঠা 49। আইএসবিএন 978-81-260-2171-0 
  130. Schomer & McLeod (1987).
  131. Ramnarace 2014
  132. Nimbarka, Encyclopædia Britannica
  133. Hardy 1987, পৃ. 387–392।
  134. Basu 1932
  135. The religious system of the Mahānubhāva sect, by Anne Feldhaus, Manohar publications: Delhi, 1983.
  136. Toffin 2012
  137. "Thiruppavai"Ibiblio। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৫-২৪ 
  138. Desika, Vedanta। "Gopala Vimshati"Ibiblio, Sripedia। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৫-২৩ 
  139. Jaganathan, Maithily (২০০৫)। "Sri Krishna Jayanti"South Indian Hindu festivals and traditions (ইংরেজি ভাষায়) (1st সংস্করণ)। Abhinav Publication। পৃষ্ঠা 104–105। আইএসবিএন 978-81-7017-415-8 
  140. "History of ISKCON"iskcondwarka.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২০ 
  141. "History of ISKCON – Home- আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ International Society for Krishna Consciousness , 79 Swamibag Road , Dhaka" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২০ 
  142. "Sriman George Harrison"The Hare Krishna Movement (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২০ 
  143. "Srila Prabhupada - Conversation With Sriman George Harrison:" (ইংরেজি ভাষায়)। 
  144. "George Harrison's Assistance in Printing Krsna Book"Krishna.org – Real Krishna Consciousness (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৩-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২০ 
  145. "Grateful to Sriman George Harrison - 10 years since his departure."Jaya Sri sri Radha shyamasundar (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২০ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  146. Jaini, P. S. (১৯৯৩), Jaina Puranas: A Puranic Counter Tradition, SUNY Press, আইএসবিএন 978-0-7914-1381-4 Jaini, P. S. (1993), Jaina Puranas: A Puranic Counter Tradition, SUNY Press, ISBN 978-0-7914-1381-4
  147. Upinder Singh 2016
  148. See Jerome H. Bauer "Hero of Wonders, Hero in Deeds: "Vasudeva Krishna in Jaina Cosmohistory" in Beck 2005
  149. Cort, J. E. (১৯৯৩), Wendy Doniger, সম্পাদক, An Overview of the Jaina Puranas, in Purana Perennis, SUNY Press, পৃষ্ঠা 220–233, আইএসবিএন 978-1-4384-0136-2 Cort, J. E. (1993), Wendy Doniger (ed.), An Overview of the Jaina Puranas, in Purana Perennis, SUNY Press, pp. 220–233, ISBN 978-1-4384-0136-2
  150. Helmuth von Glasenapp (১৯৯৯)। Jainism: An Indian Religion of Salvation। Motilal Banarsidass। পৃষ্ঠা 316–318। আইএসবিএন 978-81-208-1376-2 Helmuth von Glasenapp (1999).
  151. Cort, J. E. (১৯৯৩), Wendy Doniger, সম্পাদক, An Overview of the Jaina Puranas, in Purana Perennis, পৃষ্ঠা 191, আইএসবিএন 978-1-4384-0136-2 Cort, J. E. (1993), Wendy Doniger (ed.), An Overview of the Jaina Puranas, in Purana Perennis, p. 191, ISBN 978-1-4384-0136-2
  152. Jeffery D. Long (২০০৯)। Jainism: An Introduction। I.B. Tauris। পৃষ্ঠা 42। আইএসবিএন 978-1-84511-625-5 Jeffery D. Long (2009).
  153. "Andhakavenhu Puttaa"। www.vipassana.info। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুন ২০০৮ "Andhakavenhu Puttaa".
  154. Law, B. C. (১৯৪১)। India as Described in Early Texts of Buddhism and Jainism। Luzac। পৃষ্ঠা 99–101। Law, B. C. (1941).
  155. Jaiswal, S. (১৯৭৪)। "Historical Evolution of the Ram Legend": 89–97। জেস্টোর 3517633ডিওআই:10.2307/3517633 Jaiswal, S. (1974).
  156. G.P. Malalasekera (২০০৩)। Dictionary of Pali Proper Names। Asian Educational Services। পৃষ্ঠা 439। আইএসবিএন 978-81-206-1823-7 G.P. Malalasekera (2003).
  157. H. T. Francis; E. J. Thomas (১৯১৬)। Jataka Tales। Cambridge University Press (Reprinted: 2014)। পৃষ্ঠা 314–324। আইএসবিএন 978-1-107-41851-6 H. T. Francis; E. J. Thomas (1916).
  158. Gunapala Piyasena Malalasekera (২০০৭)। Dictionary of Pāli Proper Names: A-Dh। Motilal Banarsidass। পৃষ্ঠা 825–82। আইএসবিএন 978-81-208-3021-9 Gunapala Piyasena Malalasekera (2007).
  159. E.B. Cowell; WHD Rouse (১৯০১)। The Jātaka: Or, Stories of the Buddha's Former Births। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 57 
  160. Daniel E Bassuk (১৯৮৭)। Incarnation in Hinduism and Christianity: The Myth of the God-Man। Palgrave Macmillan। পৃষ্ঠা 40। আইএসবিএন 978-1-349-08642-9 Daniel E Bassuk (1987).
  161. Edward Geoffrey Parrinder (১৯৯৭)। Avatar and Incarnation: The Divine in Human Form in the World's Religions। Oxford: Oneworld। পৃষ্ঠা 19–24, 35–38, 75–78, 130–133। আইএসবিএন 978-1-85168-130-3 Edward Geoffrey Parrinder (1997).
  162. Shahar, Meir (২০১৫)। Oedipal god : the Chinese Nezha and his Indian originsআইএসবিএন 978-0-8248-4760-9ওসিএলসি 899138008 Shahar, Meir (2015).
  163. Shen, Xuezheng; Li, Jingwen (২০২০-০৩-৩১)। "Devil or God: Image Transformation of Chinese Mythology Character "Nezha"(1927–2019)" (ইংরেজি ভাষায়): 159–200। আইএসএসএন 1738-009Xডিওআই:10.7230/KOSCAS.2020.58.159 Shen, Xuezheng; Li, Jingwen; Zhang, Yunzhuo; Liu, Shanshan; Hong, Jangsun; Lee, Jongyoon (31 March 2020).
  164. "info-sikh.com – Diese Website steht zum Verkauf! – Informationen zum Thema info-sikh."ww1.info-sikh.com "info-sikh.com – Diese Website steht zum Verkauf! – Informationen zum Thema info-sikh".
  165. DuPertuis, Lucy (১৯৮৬)। "How People Recognize Charisma: The Case of Darshan in Radhasoami and Divine Light Mission"। Sociological Analysis। Oxford University Press। 47 (2): 111–124। জেস্টোর 3711456ডিওআই:10.2307/3711456 
  166. A concise encyclopedia of the Bahá'í Faith Smith, Peter (2000).
  167. Esslemont, J. E. (১৯৮০)। Bahá'u'lláh and the New Era (5th সংস্করণ)। Baháʼí Publishing Trust। পৃষ্ঠা 2। আইএসবিএন 978-0-87743-160-2 Esslemont, J. E. (1980).
  168. Siddiq & Ahmad (1995), Enforced Apostasy: Zaheeruddin v. State and the Official Persecution of the Ahmadiyya Community in Pakistan, Law & Inequality, Volume 14, pp. 275–324
  169. Minahan, James (২০১২)। Ethnic groups of South Asia and the Pacific: An Encyclopedia। ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 6–8। আইএসবিএন 978-1-59884-659-1 Minahan, James (2012).
  170. Burhani A. N. (2013), Treating minorities with fatwas: a study of the Ahmadiyya community in Indonesia, Contemporary Islam, Volume 8, Issue 3, pp. 285–301
  171. Cormack, Margaret (২০১৩)। Muslims, and Others in Sacred Space। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 104–105। Cormack, Margaret (2013).
  172. Harvey, D. A. (২০০৩)। "Beyond Enlightenment: Occultism, Politics, and Culture in France from the Old Regime to the Fin-de-Siècle": 665–694। ডিওআই:10.1111/1540-6563.00035 Harvey, D. A. (2003).
  173. Schure, Edouard (১৯৯২)। Great Initiates: A Study of the Secret History of Religions। Garber Communications। আইএসবিএন 978-0-89345-228-5 Schure, Edouard (1992).
  174. See for example: Hanegraaff, Wouter J. (১৯৯৬)। New Age Religion and Western Culture: Esotericism in the Mirror of Secular ThoughtBrill Publishers। পৃষ্ঠা 390। আইএসবিএন 978-90-04-10696-3 Hanegraaff, Wouter J. (1996).
  175. Crowley associated Krishna with Roman god Dionysus and Magickal formulae IAO, AUM and INRI.
  176. Apiryon, Tau; Apiryon (১৯৯৫)। Mystery of Mystery: A Primer of Thelemic Ecclesiastical Gnosticism। Red Flame। আইএসবিএন 978-0-9712376-1-2 Apiryon, Tau; Apiryon (1995).

গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা


উদ্ধৃতি ত্রুটি: "note" নামক গ্রুপের জন্য <ref> ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="note"/> ট্যাগ পাওয়া যায়নি