মথুরা উত্তর ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বিখ্যাত শহর। এই শহর আগ্রা থেকে কমবেশি ৫০ কিমি উত্তরে এবং দিল্লী থেকে ১৪৫ কিমি দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত। উত্তরপ্রদেশের মথুরা জেলার প্রশাসনিক কেন্দ্র এই মথুরা। প্রাচীন কালে এই শহর ছিল অন্যতম অর্থনৈতিক কেন্দ্র। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী মথুরার জনসংখ্যা ছিল ৪,৪১,৮৯৪।

মথুরা
মহানগরী
Mathura
কৃষ্ণ মন্দিরের সামনে পুরাতন রাস্তা
Mathura
Mathura
মথুরা
Mathura
Mathura
মথুরা
স্থানাঙ্ক: ২৭°২৯′৩৩″ উত্তর ৭৭°৪০′২৫″ পূর্ব / ২৭.৪৯২৫০° উত্তর ৭৭.৬৭৩৬১° পূর্ব / 27.49250; 77.67361
দেশভারত
রাজ্যউত্তরপ্রদেশ
জেলামথুরা জেলা
আয়তন
 • মোট৩,৭০৯ বর্গকিমি (১,৪৩২ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট৬,০১,৮৯৪
 • জনঘনত্ব১৬০/বর্গকিমি (৪২০/বর্গমাইল)
ভাষা
 • সরকারীহিন্দি, ইংরাজি
সময় অঞ্চলভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০)
পিন২৮১০০১
টেলিফোন কোড০৫৬৫
যানবাহন নিবন্ধনUP-85
ওয়েবসাইটmathura.nic.in

ইতিহাসসম্পাদনা

হিন্দুধর্মের মতানুসারে মথুরা কে কৃষ্ণের জন্মস্থান হিসেবে মনে করা হয় যা কিনা শ্রী কৃষ্ণ জন্মভুমির কেন্দ্রে অবস্থিত। এই শহর হিন্দুরা যে সাতটি শহর কে পবিত্র মনে করে তার অন্যতম।বেদে মথুরার কথা না থাকলেও রামায়ণ-মহাভারত ও পৌরাণিক যুগে যথেষট প্রসিদ্ধি পেয়েছে।মউজপুর, মধুপুরী, মধুবন, মধুরা, মদুরা-যুগে যুগে নাম বদলে হয়েছে মথুরা। বৌদ্ধদের কাছেও মথুরা একটি বিশিষ্ট জনপদ। এখনেই রাজকুমার উপগুপ্ত বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীকালে সম্রাট অশোককে মথুরাতেই বৌদ্ধধর্মে দীক্ষা দেন।[১]

ভারত সরকারের ঐতিহ্য শহর উন্নয়ন এবং অগমেন্টেশন যোজনার অন্তর্গত করা হয়েছে এই মথুরা কে।

মন্দিরসম্পাদনা

১. দ্বারকাধীশ মন্দিরঃ শহরের মাঝে প্রধান মন্দিরটি শেঠ গোকুল দাস ১৮১৪ সালে নির্মাণ করেন। এই মন্দিরে প্রতি বছর জাঁকজমক সহকারে হোলি ও জন্মাষ্টমী উৎসব পালিত হয়। কাছেই দেখবেন কিংবদন্তি ঘেরা বিশ্রামঘাট। কংসকে বধ করার পর শ্রীকৃষ্ণ ও বলরাম এই ঘাটে বিশ্রাম নিয়ে ছিলেন। এখানে নৌকা ভাড়া করে যমুনার ঘাটগুলো ঘুরে দেখা যাই। অনুপম স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত ঘাটগুলোর মধ্যে স্বামীঘাট অ অসিকুণ্ড ঘাট উল্লেখযোগ্য।

২. কেশব দেও মন্দির, মথুরা/শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দিরঃ ভক্তদের বিশ্বাস কাটরা কেশবদেবের এই মন্দিরটি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থানে নির্মিত। বীর সিংহের হাতে গড়া আদি মন্দির অবশ্য ঔরাঙ্গজেব ধ্বংস করে নির্মাণ করেন ঈদগা। সাম্প্রতিক কালে এই মন্দির ও মসজিদকে ঘিরে বির্তকের সৃষ্টি হয়েছে। কাছেই দেখুন ভাগবৎভবন।

৩. কনস্‌কিলা বা কংসের দুর্গঃ যমুনার উত্তরতীরে অত্যাচারী রাজা কংস এই দুর্গ নির্মণ করেছিলেন বলে জনশ্রুতি। দুর্গের অধিকাংশই আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলেও অম্বরের রাজা মানসিংহ কংসের কারাগারটি সংস্কার করান।

মদনমোহন মন্দির ৪. গীতা মন্দিরঃ সাম্প্রতিক কালে নির্মিত এই মন্দিরটি মথুরার সবচেয়ে আকর্ষনীয় মন্দির। মন্দিরের বিভিন্ন থামে খোদিত রয়েছে গীতার ৭০০ শ্লোক। আর ভালো লাগে দেওয়ালগাত্রের পৌরাণিক চিত্রাবলি।

৫. জামা মসজিদঃ আবু-উন-নবি খান ১৬৬১ সালে চারটি বড় মাপের মিনার সহ জামা মসজিদ নির্মণ করেন। কারও কারও মতে এটিই শ্রীকৃষ্ণ প্রকৃত জন্মভূমি।

৬. গভর্নমেন্ট মিউজিয়ামঃ (সোমবার ছাড়া প্রতিদিন খোলা থাকে ১০-৩০মিঃ থেকে ১৬-৩০ মিঃ প্রবেশমূল্য ৩০ টাকা) এখানকার মৌর্জ, শুঙ্গ, কুষাণ ও গুপ্তযুগের অসংখ্য পুরাকীর্তির সংগ্রহ এককথায় বিস্ময়কর। এই অমুল্য পুরাকীর্তিগুলির বয়স ৮০০ খ্রিঃ পুর্ব থেকে ১২ খ্রিস্টব্দের মধ্যে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কুষাণ যুগের শিল্পকর্মগুলি।

এছাড়াও মথু্রায় দেখবেন- বলভদ্র কুণ্ড সরস্বতী কুণ্ড পোট্রা কুণ্ড শিবতাল বৃন্দাবনের পথে পাগলা বাবা মন্দির ভুতেশ্বর মন্দির গোকর্নেশ্বর মন্দির রঙ্গেশ্বর মন্দির পিপ্লেশ্বর মন্দির যমুনা বাগ গুরুগোবিন্দ সিং – এর স্মৃতি বিজড়িত গুরুদোয়ারা জৈন সিদ্ধক্ষেত্র চৌরাশিয়া ( শেষ জৈন কৈবল্যজ্ঞানী শ্রী জম্মুস্বামীর তপস্যাস্থল)।

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. Prasad, Dev (২০১৫)। Krishna: A Journey through the Lands & Legends of Krishna। Jaico Publishing House। পৃষ্ঠা 22। আইএসবিএন 978-81-8495-170-7 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা