আকাশ
আকাশ হল ভূপৃষ্ঠ থেকে বহির্ভাগে অবস্থিত অংশবিশেষ। বায়ুমণ্ডল এবং মহাশূন্যও এর অন্তর্ভুক্ত। এটাকে ভূপৃষ্ঠ আর মহাশূন্যের অন্তর্বর্তী স্থানকেও আকাশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, সেক্ষেত্রে মহাশূন্য এর অংশ নয়।
জ্যোতির্বিদ্যায় আকাশ কে খ-গোলক ও বলা হয়। এটি পৃথিবী কেন্দ্রিক একটি কাল্পনিক গোলক, যেখানে সূর্য, চাঁদ, গ্রহরাজি এবং তারকারাজিকে পরিভ্রমণ করতে দেখা যায়। খ-গোলক সাধারণত নক্ষত্রমণ্ডলে নামের কিছু নির্দিষ্ট ভাগে বিভক্ত।
সাধারণত আকাশ শব্দটি ভূপৃষ্ঠ থেকে একটি দিক (উপরে) নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু এর অর্থ এবং ব্যবহার ভিন্নও হতে পারে। পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠে দাঁড়ানো একজন ব্যক্তি আকাশের একটি আংশিক ভাগই দেখতে সক্ষম, যেটা দেখতে গম্বুজের সদৃশ, এবং রাতের তুলনায় দিনের বেলায় এটাকে সমতল দেখায়। যেমন, আবহাওয়ার ক্ষেত্রে আকাশ বলতে কেবলমাত্র বায়ুমণ্ডলের নিচের দিকের অধিক ঘন অংশ কে বোঝায়।
দিনের আলোয় আলোর বিক্ষেপণের জন্য আকাশ নীল দেখায়।[১] মেঘে ঢাকা না থাকলে দিনের আকাশে সূর্য এবং কখনও কখনও চাঁদও দৃশ্যমান হয়। আর রাতের বেলায় আকাশকে তারায় খচিত একটি কালো গালিচার মত মনে হয়। পাশাপাশি চাঁদের আবর্তনও রাতের বেলার উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এছাড়াও মেঘ, রংধনু, মেরুজ্যোতি, বজ্রপাত প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনা আকাশে পরিলক্ষিত হয়।[২]
আকাশ কেন নীল দেখায়
সম্পাদনাআলোর বিক্ষেপণের কারণে আকাশ নীল দেখায়। কোন কণিকার ওপর আলো পড়লে সেই কণিকা আলোকে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে দেয়, যাকে আলোর বিক্ষেপণ বলে। যে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত কম, সেই আলোর বিক্ষেপণ তত বেশি হয়। আলোর বিক্ষেপণ এর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের চতুর্ঘাতের ব্যস্তানুপাতিক। বেগুনি ও নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম। তাই আকাশে এই আলো দুইটির বিক্ষেপণ বেশি হয়। আবার মানুষের চোখ বেগুনি অপেক্ষা নীল বর্ণের আলোর প্রতি অধিক সংবেদনশীল, তাই আমাদের চোখে আকাশ নীল দেখায়।[৩] পাখি, মৌমাছি ও কুকুর ইত্যাদি প্রাণী অতিবেগুনি রশ্মি দেখতে সক্ষম বলে ওদের কাছে আকাশের রূপ অনেকটাই ভিন্ন।
মেঘের অণু বেশ বড় হয় এবং তাই তা নীল ছাড়া অন্য আলোকেও বিক্ষেপিত করে। যার ফলে মেঘের বর্ণ অনেকটা সাদাটে হয়।
একারণেই সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তকালীন সময় আকাশ লাল দেখায়। এসময় সূর্য দিগন্তরেখার কাছে অবস্থান করে, তখন সূর্যরশ্মিকে বায়ুমণ্ডলের অধিকতর অংশ ভেদ করে আসতে হয়। তখন স্বল্পদৈর্ঘ্য নীল আলো বিক্ষেপিত হয়ে বিভিন্ন দিকে চলে যায়। কিন্তু লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় তা কম বিক্ষেপিত হয়, যার ফলে আকাশ তখন লাল দেখায়।
গ্যালারি
সম্পাদনা-
সূর্যাস্তের পরবর্তী আকাশ
-
উচ্চ মরুভূমিতে গ্রীষ্মকালীন সূর্যাস্ত
-
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বিকেলের গোলাপী আকাশ
-
দুপুরের আকাশ
-
হেমন্তের দুপুরে আকাশের মেঘ
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Why is the sky Blue?"। math.ucr.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-১০।
- ↑ BanglaNews24.com। "মজার বিজ্ঞান: আকাশের রং কেন নীল?"। banglanews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-১০।
- ↑ BanglaNews24.com। "আকাশ নীল দেখায় কেন?"। banglanews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-১০।