কক্সবাজার জেলা
কক্সবাজার জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। পূর্বে কক্সবাজার জেলা চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৮৪ সালে এরশাদ সরকারের আমলে চট্টগ্রাম জেলাকে ভেঙে কক্সবাজার জেলা প্রতিষ্ঠা করা হয়। উপজেলার সংখ্যানুসারে কক্সবাজার বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা।[১] এটি বাংলাদেশের সর্ব-দক্ষিণের জেলা।
কক্সবাজার | |
---|---|
জেলা | |
উপরে-বাম থেকে ঘড়ির কাঁটার দিকে: ফাসিয়াখালি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, আদিনাথ মন্দিরে মহেশখালী, হিমছড়ির জলপ্রপাত, সূর্যাস্তে টেকনাফ সমুদ্র সৈকত, রামুতে রাংকূট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার | |
![]() বাংলাদেশে কক্সবাজার জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২১°২৬′ উত্তর ৯১°৫৯′ পূর্ব / ২১.৪৩৩° উত্তর ৯১.৯৮৩° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১ মার্চ, ১৯৮৪ |
আসন | ৪ |
আয়তন | |
• মোট | ২,৪৯১.৮৬ বর্গকিমি (৯৬২.১১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০২২) | |
• মোট | ২৮,৮৩,২৬৮ |
• জনঘনত্ব | ১,২০০/বর্গকিমি (৩,০০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৭১.৫৮% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৪৭০০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ২০ ২২ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট ![]() |
আয়তন
সম্পাদনাকক্সবাজার জেলার মোট আয়তন ২৪৯১.৮৬ বর্গ কিলোমিটার।[২]বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে ২০°৩৫´ থেকে ২১°৫৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫০´ থেকে ৯২°২৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে কক্সবাজার জেলার অবস্থান।[২] রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ৪০২ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ১৪৩ কিলোমিটার। এ জেলার উত্তরে চট্টগ্রাম জেলা; পূর্বে বান্দরবান জেলা, নাফ নদী ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণে ও পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত।
জনসংখ্যা
সম্পাদনা২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কক্সবাজার জেলার মোট জনসংখ্যা ২৮,৮৩,২৬৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৪,৩৪,৬২২ জন এবং মহিলা ১৩,৮৮,৫৬৩ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১,১৩৩ জন।
- ইসলাম (৯৪.৫৭%)
- হিন্দু ধর্ম (৩.৮৩%)
- বৌদ্ধ ধর্ম (১.৫%)
- অন্যান্য (০.১%)
ধর্মবিশ্বাস অনুসারে এ জেলার মোট জনসংখ্যার ৯৪.৫৭% মুসলিম, ৩.৮৩% হিন্দু এবং ১.৫০% বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।
ইতিহাস
সম্পাদনাপ্রতিষ্ঠাকাল
সম্পাদনা১৮৫৪ সালে কক্সবাজার থানা গঠিত হয় এবং ঐ বছরই কক্সবাজার, চকরিয়া, মহেশখালী ও টেকনাফ থানার সমন্বয়ে কক্সবাজার মহকুমা গঠিত হয়। পরে টেকনাফ থেকে উখিয়া, মহেশখালী থেকে কুতুবদিয়া এবং কক্সবাজার সদর থেকে রামু থানাকে পৃথক করে এই মহকুমার অধীনে তিনটি নতুন থানা গঠিত হয়। ১৯৫৯ সালে কক্সবাজার জেলাকে টাউন কমিটিতে রূপান্তর করা হয়। ১৯৭২ সালে টাউন কমিটি বিলুপ্ত করে পৌরসভায় রূপান্তর করা হয়। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ কর্মসূচির আওতায় প্রথম পর্যায়ে থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ কক্সবাজার মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয়। সর্বশেষ ২০০২ সালের ২৩ এপ্রিল বৃহত্তর চকরিয়া উপজেলা থেকে পেকুয়া উপজেলাকে পৃথক করা হয়।[২]
নামকরণ
সম্পাদনাকক্সবাজারের প্রাচীন নাম পালংকী। একসময় এটি প্যানোয়া নামে পরিচিত ছিল। প্যানোয়া শব্দটির অর্থ হলুদ ফুল। অতীতে কক্সবাজারের আশপাশের এলাকাগুলো এই হলুদ ফুলে ঝকমক করত। ইংরেজ অফিসার ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স ১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দে এখানে একটি বাজার স্থাপন করেন। কক্স সাহেবের বাজার থেকে কক্সবাজার নামের উৎপত্তি।[৩]
সাধারণ ইতিহাস
সম্পাদনাআরব ব্যবসায়ী ও ধর্ম প্রচারকগণ অষ্টম শতকে চট্টগ্রাম ও আকিব বন্দরে আগমন করেন। এই দুই বন্দরের মধ্যবর্তী হওয়ায় কক্সবাজার এলাকা আরবদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসে। নবম শতাব্দীতে কক্সবাজারসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম হরিকেলার রাজা কান্তিদেব দ্বারা শাসিত হত। ৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে আরাকান রাজা সুলাত ইঙ্গ চন্দ্র চট্টগ্রাম দখল করে নেবার পর থেকে কক্সবাজার আরাকান রাজ্যের অংশ ছিল। ১৬৬৬ সালে মুঘলরা চট্টগ্রাম দখল করে নেয়। মুঘল সেনাপতি বুজুর্গ ওমেদ খান কর্ণফুলি নদীর দক্ষিণের মাঘ কেল্লা দখল করে নেন এবং আরাকানবাসী রামু কেল্লাতে আশ্রয় নেয়, যা কিনা পরে মুঘলরা হঠাৎ আক্রমণ করে দখল করে নেয়। কক্সবাজারে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি চাষীদের মাঝে জমি বিতরণের এক উদারনৈতিক পদক্ষেপ নেয়। এর ফলে চট্টগ্রাম ও আরাকানের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ এই এলাকায় আসতে থাকে। বার্মা রাজ বোধাপায়া (১৭৮২-১৮১৯) ১৭৮৪ সালে আরাকান দখল করে নেন। প্রায় ৩০ হাজার আরাকানী বার্মারাজের হাত থেকে বাঁচার জন্য ১৭৯৯ সালে কক্সবাজারে পালিয়ে যায়। এদের পুনর্বাসন করতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হিরাম কক্সকে নিয়োগ দেয়। প্রতি পরিবারকে ২.৪ একর জমি এবং ছয় মাসের খাদ্যসামগ্রী প্রদান করা হয়েছিল। এ সময় ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স রাখাইন অধ্যুষিত এলাকায় একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করেন। যা কক্স সাহেবের বাজার হিসেবে পরিচিত হয় স্থানীয়দের মাঝে। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় তার অবদানের জন্য কক্স-বাজার নামক একটি বাজার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই কক্স-বাজার থেকেই কক্সবাজার জেলার নামের উৎপত্তি। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষ হবার পূর্বেই ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হিরাম কক্স ১৭৯৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন।[২]
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি
সম্পাদনা১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী চকরিয়ায় ১৩ জন লোককে হত্যা করে এবং বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘর ও দোকানপাট জ্বালিয়ে দেয়। এসময় পাকবাহিনী টেকনাফ ডাকবাংলোতে ক্যাম্প স্থাপন করে এবং রামু, উখিয়া ও টেকনাফ থেকে প্রায় ২৫০জন নিরীহ লোককে ক্যাম্পে নিয়ে হত্যা করে।[২]
- মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন
- স্মৃতিস্তম্ভ ৩টি
- বধ্যভূমি ১টি [২]
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ
সম্পাদনাকক্সবাজার জেলা ৯টি উপজেলা, ৯টি থানা, ৪টি পৌরসভা, ৭১টি ইউনিয়ন, ১৮৮টি মৌজা, ৯৯২টি গ্রাম ও ৪টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।[৩]
কক্সবাজার জেলায় মোট ৯টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলো হল:[৪]
সংসদীয় আসন
সম্পাদনাসংসদীয় আসন | জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[৫] | সংসদ সদস্য | রাজনৈতিক দল |
---|---|---|---|
২৯৪ কক্সবাজার-১ | চকরিয়া উপজেলা এবং পেকুয়া উপজেলা | শূণ্য | |
২৯৫ কক্সবাজার-২ | কুতুবদিয়া উপজেলা এবং মহেশখালী উপজেলা | শূণ্য | |
২৯৬ কক্সবাজার-৩ | কক্সবাজার সদর উপজেলা, ঈদগাঁও উপজেলা এবং রামু উপজেলা | শূণ্য | |
২৯৭ কক্সবাজার-৪ | উখিয়া উপজেলা এবং টেকনাফ উপজেলা | শূণ্য |
শিক্ষা ব্যবস্থা
সম্পাদনাকক্সবাজার জেলার সাক্ষরতার হার ৫৪.৯০%।[২] কক্সবাজার জেলায় "কক্সবাজার বিশ্ববিদ্যালয়" নামে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ৪ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে UGC কর্তৃক সুপারিশ করা হয়েছে। এ জেলায় রয়েছে:
- বিশ্ববিদ্যালয়: ২টি (১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় (সুপারিশকৃত), ১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়)
- মেডিকেল কলেজ: ১টি
- স্নাতকোত্তর কলেজ: ২টি
- কামিল মাদ্রাসা: ৪টি
- ডিগ্রী কলেজ: ১১টি
- ফাজিল মাদ্রাসা: ১২টি
- উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ: ১৯টি
- আলিম মাদ্রাসা: ১৯টি
- কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট: ১টি
- মাধ্যমিক বিদ্যালয়:১৪০টি
- দাখিল মাদ্রাসা: ১০৪টি
- নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়: ৫২টি
- প্রাথমিক বিদ্যালয়: ৭০১টি
উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
সম্পাদনা- স্নাতকোত্তর
- উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতকোত্তর
- কক্সবাজার সরকারি কলেজ
- কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ
- কক্সবাজার সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
- চকরিয়া সরকারি কলেজ
- রামু সরকারি কলেজ
- কুতুবদিয়া সরকারি কলেজ
- বদরখালী কলেজ
- চকরিয়া আবাসিক মহিলা কলেজ
- উচ্চ বিদ্যালয়
- কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
- উখিয়া বহুমুখী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
- কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়
- মাদ্রাসা
ভূ-প্রকৃতি
সম্পাদনাচট্টগ্রাম জেলার মত কক্সবাজার জেলাও পাহাড়, নদী, সমুদ্র, অরণ্য, উপত্যকা প্রভৃতি প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের জন্যে অন্যান্য জেলা থেকে স্বতন্ত্র। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ১১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৩,৩৭৮ মিলিমিটার।[৩] উপকূলবর্তী এলাকা হওয়ায় এ জেলা প্রায়ই সামুদ্রিক ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, হারিকেন, সাইক্লোন ইত্যাদি দ্বারা আক্রান্ত হয়।
নদ-নদী
সম্পাদনাকক্সবাজার জেলায় প্রবাহিত প্রধান প্রধান নদীগুলো হল :
যোগাযোগ ব্যবস্থা
সম্পাদনা- আকাশপথ
কক্সবাজার বিমানবন্দর এ জেলায় আকাশপথে যোগাযোগের মাধ্যম। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শহর থেকে বাংলাদেশ বিমান সহ আরও বিভিন্ন ফ্লাইটে যোগাযোগ করা যায়।
- সড়কপথ
কক্সবাজার জেলার যোগাযোগের প্রধান সড়ক এন-১ বা ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে গ্রীন লাইন, সৌদিয়া, এস আলম, হানিফ এন্টারপ্রাইজসহ অনেক এসি/নন-এসি বাস যাতায়াত করে থাকে। বর্তমানে মার্সা নামের একটি গাড়ী বেশ আলোচিত, চট্টগ্রাম যাতায়াত করার জন্য।
- রেলপথ
১১ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধন এর মাধ্যমে কক্সবাজারের সাথে দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগের দ্বার উন্মোচিত হয়। ১ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ থেকেই এই রেলপথে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল করবে। কক্সবাজার এক্সপ্রেস এর মাধ্যমে রেলপথের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার দুটি আন্তনগর ট্রেন চালু আছে। একটি কক্সবাজার এক্সপ্রেস, অন্যটি পর্যটক এক্সপ্রেস। এছাড়াও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচল করে সৈকত এক্সপ্রেস, প্রবাল এক্সপ্রেস। এড়াও চট্টগ্রাম হতে কক্সবাজার একটি স্পেশালে ট্রেন চলাচল করে।
ভাষা ও সংস্কৃতি
সম্পাদনাকক্সবাজার জেলার মানুষ সাধারণত চাটগাঁইয়া ও বাংলা ভাষায় কথা বলে, তবে কথ্য ভাষায় অনেক ক্ষেত্রে কক্সবাজার কেন্দ্রিক শব্দের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। ঐতিহাসিকভাবে এ অঞ্চলের মানুষের সাথে বর্তমান মায়ানমার (পূর্বে যাকে আরাকান নামে অভিহিত করা হত) এর সাথে ব্যাপক যোগাযোগের সম্পর্ক ছিল যা এখনও সীমিত আকারে হলেও অটুট রয়েছে। এ কারণে আরাকানের ভাষার কিছু কিছু উপাদান কক্সবাজারের কথ্য ভাষায় মিশ্রিত হয়ে গেছে। এ উপজেলায় নৃতাত্ত্বিক রাখাইন জনগোষ্ঠী বসবাস করে। এদের ভাষার প্রভাবও স্থানীয় ভাষায় লক্ষ্য করা যায়।[৬]
সমুদ্র তীরবর্তী শহর হিসেবে কক্সবাজার জেলার সংস্কৃতি মিশ্র প্রকৃতির। পূর্ব হতেই বার্মার সাথে এ অঞ্চলের মানুষের সম্পর্ক থাকায় এবং রাখাইন নামক নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী বসবাস করায় কক্সবাজারে বাঙালী এবং বর্মী সংস্কৃতির এক অভূতপূর্ব সমন্বয় লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে রাখাইন সঙ্গীত এবং নৃত্যকলা এ অঞ্চলতো বটেই বৃহত্তর চট্টগ্রামের মানুষের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত।
এছাড়া চাকমারাও কক্সবাজার জেলায় বহু শতাব্দী ধরে বসবাস করে আসছে তারা মূলত উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলাতে বসবাস করে। কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী চাকমারকূল ও রাজারকূল চাকমাদের স্মৃতি বহন করে। সমুদ্র তীরবর্তী হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষ প্রাচীনকাল হতেই নানান প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং উত্তাল সাগরের সাথে সংগ্রাম করে টিকে রয়েছে বিধায় স্থানীয় সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যম ও উপস্থাপনায় সংগ্রামের সেই চিত্র ফুটে ওঠে, বিশেষ করে জেলে সম্প্রদায়ের প্রাত্যহিক জীবন।[৬]
পর্যটন
সম্পাদনা- সমুদ্র সৈকত
- কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম (১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ) প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত ।
- দ্বীপ
- সেন্টমার্টিন দ্বীপ, বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ
- মহেশখালী দ্বীপ, বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ
- কুতুবদিয়া
- সোনাদিয়া দ্বীপ
- ছেঁড়া দ্বীপ, বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণের স্হান।
- শাহপরীর দ্বীপ
- বনাঞ্চল
- মেধা কচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান
- হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান
- শেখ জামাল ইনানী জাতীয় উদ্যান
- ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক
- ফাসিয়াখালি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য
- টেকনাফ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য
- ধর্মীয়
- অন্যান্য
অর্থনীতি
সম্পাদনাপ্রধান পেশা: কৃষি, মৎস্যজীবি, কৃষি শ্রমিক, মজুর, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী এবং অন্যান্য।
প্রধান শস্য: ধান, আলু, ডাল, পিঁয়াজ, হলুদ, আঁদা, গম, আঁখ, তামাক, রাবার, সবজী, পান, সুপারি।
প্রধান ফল: আম, কাঁঠাল, আনারস, কলা, পেঁপে, নারিকেল, লিচু, পেয়ারা, তাল।
কারখানা ও প্রতিষ্ঠান: চালের কল ৪৭৩টি, লবণের কল ৩৮টি, বরফের কল ৬৪টি, ময়দার কল ১৪৫টি, মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ (শুঁটকি) শিল্প ৩১টি, মৎস্য-খাদ্য কল ১টি, স'মিল, ছাপাখানা ১৮টি।
খনিজ পদার্থ: প্রাকৃতিক গ্যাস, জিরকন, লিমেনাইট, রুটাইল, ম্যাগনেটাইট, মোনাজাইট, লাইমস্টোন, গন্ধক, কক্সবাজারের এর কুতুবদিয়ায় বাংলাদেশের একমাত্র গন্ধক(sulphur) খনি অবস্থিত।
রপ্তানি পণ্য: পান, সুপারি, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, আনারস, চীনাবাদাম, কাঠ, চিংড়ি, শুঁটকি, লবণ, তামাক, সামুদ্রিক মাছ, নারিকেল, রাবার।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
সম্পাদনা1
- লুৎফর রহমান কাজল, সাবেক সাংসদ ও জাতীয় নেতা
- আলমগীর ফরিদ
- এ এইচ সালাহউদ্দিন মাহমুদ
- এ এম এম নাসির উদ্দিন
- এ টি এম নুরুল বশর চৌধুরী
- এ.টি.এম. জাফর আলম
- এথিন রাখাইন
- এনামুল হক মঞ্জু
- ওবায়দুল্লাহ হামযাহ
- ওয়ালিদ এহসানুল করিম
- ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী
- কানিজ ফাতেমা আহমেদ
- খোরশেদ আরা হক
- ছিদ্দিক আহমদ
- জহিরুল ইসলাম
- জাফর আলম (কক্সবাজারের রাজনীতিবিদ)
- জিন্নাত আলী
- তৌহিদুল আলম সবুজ
- দিদারুল আলম চৌধুরী
- নুরুল মোস্তফা
- নুরুল হুদা
- ফজলুল করিম (আইনজীবী)
- ফরিদ আহমদ
- বদিউল আলম (শিক্ষাবিদ)
- মংছেন চীং মংছিন
- মমিনুল হক
- মাহমুদুল করিম চৌধুরী
- মুহম্মদ নূরুল হুদা
- মুহাম্মদ আবদুর রশিদ সিদ্দিকী
- মোমিনুর রশিদ আমিন
- মোস্তাক আহমদ চৌধুরী
- মোহাম্মদ আলি (বিচারক)
- মোহাম্মদ আলী (রাজনীতিবিদ)
- মোহাম্মদ ইব্রাহিম (ফুটবলার)
- মোহাম্মদ ইলিয়াছ
- মোহাম্মদ ইসহাক বিএ
- মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান
- মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন
- মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন (বীর উত্তম)
- মোহাম্মদ মফজলুর রহমান
- মোহাম্মদ শহীদুজ্জামান
- রশিদ উদ্দিন আহমদ
- রিমা সুলতানা রিমু
- রুহুল আলম চৌধুরী
- লুতফর রহমান কাজল
- শফিউল আলম
- শহীদ সাবের
- শামশুদ্দিন আহমদ চৌধুরী
- শাহজাহান চৌধুরী
- শাহীন আক্তার
- শিরিন আক্তার
- শ্যামল কান্তি বিশ্বাস
- সত্যপ্রিয় মহাথের
- সলিমুল্লাহ খান
- সাইমুম সরওয়ার কমল
- সালাহউদ্দিন আহমেদ
- সুলতান যওক নদভী
- সুশান্ত ত্রিপুরা
- হামিদুর রহমান আযাদ
- হামিদুল হক (মেজর জেনারেল)
- হাসান মুরাদ
- হুমায়ুন আহমেদ (ক্রিকেটার)
- হেলালুদ্দীন আহমদ
চিত্রশালা
সম্পাদনা-
ইনানী সমুদ্র সৈকত
-
সূর্যাস্ত
-
মহেশখালী উপজেলায় লবণ চাষের মাঠ
-
সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন
-
কক্সবাজার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল
-
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
-
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
-
সূর্যাস্ত
-
কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ
-
কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ
-
হিমছড়ি
-
হিমছড়ি
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "জেলাগুলোর শ্রেণি হালনাগাদ করেছে সরকার"। বাংলানিউজ২৪। ১৭ আগস্ট ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০২০।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ "কক্সবাজার জেলা - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org।
- ↑ ক খ গ "এক নজরে কক্সবাজার - কক্সবাজার জেলা - কক্সবাজার জেলা"। www.coxsbazar.gov.bd। ১০ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "উপজেলা - কক্সবাজার জেলা - কক্সবাজার জেলা"। www.coxsbazar.gov.bd। ৪ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "Election Commission Bangladesh - Home page"। www.ecs.org.bd।
- ↑ ক খ "ভাষা ও সংস্কৃতি - কক্সবাজার জেলা - কক্সবাজার জেলা"। coxsbazar.gov.bd। ১০ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০১৮।