ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক

বাংলাদেশের একটি সাফারি পার্ক

ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক (যা ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্ক[] নামেও পরিচিত) ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের কক্সবাজারের চকোরিয়া উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত একটি সাফারি পার্ক, যেখানে পশুপাখি মুক্ত অবস্থায় বিচরণ করে।[] এটি বাংলাদেশের প্রথম সাফারি পার্ক। কক্সবাজার জেলা সদর হতে উত্তরে পার্কটির দূরত্ব ৪৫ কি:মি: এবং চকরিয়া সদর হতে দক্ষিণে ১১ কি:মি: এর আয়তন প্রায় ৯০০ হেক্টর। সাফারী পার্ক হলো সরকার ঘোষিত এলাকা যেখানে বণ্যপ্রানীদেরকে তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রতিপালন করা হয়।

ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক
ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, ডুলাহাজারা, কক্সবাজার
মানচিত্র
বাংলাদেশে পার্কটির অবস্থান
অবস্থানঅক্ষাংশঃ ২১°৩৮’৩০” থেকে ২১°৪০’৬০” উত্তর; দ্রাঘিমাংশঃ ৯২°৪৩’০” থেকে ৯২°৬৫’০” পূর্ব।
আয়তন৯০০ হেক্টর
স্থাপিত১৯৯৯
কর্তৃপক্ষবাংলাদেশ বন বিভাগ
 
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক ( ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক নামেও পরিচিত) - এর প্রধান প্রবেশদ্বার। কক্সবাজার

ডুলাহাজারা সাফারি পার্কটি কক্সবাজার জেলা সদর থেকে ৪৫ কিলোমিটার উত্তরে এবং চকরিয়া থানা থেকে ১১ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার জেলা সদরের দক্ষিণ বন বিভাগের ফাসিঁয়াখালি রেঞ্জের ডুলাহাজারা ব্লকে অবস্থিত। ১৯৮২ সালে অবিভক্ত কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলাধীন ডুলাহাজারা ব্লকের ৪২.৫ হেক্টর বনাঞ্চল নিয়ে একটি হরিণ প্রজনন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে ২০০১ সালে উঁচু-নিচু টিলাসমৃদ্ধ চিরসবুজ এ বনাঞ্চলের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও আবাসস্থলের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে এর আয়তন ৯০০ হেক্টর বৃদ্ধি করে দেশের প্রথম সাফারি পার্ক হিসেবে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক কক্সবাজার’-এর যাত্রা শুরু হয়।

ডুলাহাজারা সাফারি পার্ককে কেউ কেউ সাফারি পার্ক বলতে রাজি নন, কারণ এখানে প্রাকৃতিক অবকাঠামোর বদলে অত্যাধুনিক ও কৃত্রিম অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে বেশি।

বাংলাদেশ বন বিভাগের দেয়া তথ্যমতে, এই পার্কটিতে বছরে প্রায় ১,০০,০০০ পর্যটক ভ্রমণ আসেন। পার্কের প্রবেশ মূল্য প্রাপ্ত বয়স্ক ৳৫০ (পঞ্চাশ টাকা), অপ্রাপ্ত বয়স্ক (৫-১৫ বছর) ৳২০ (বিশ টাকা), শিশু ৫ বছরের নীচে ফ্রি, বিদেশী দর্শনার্থী ৫ ডলার, শিক্ষা সফর ছাত্র সংখ্যা- ১-১০০ ৳ ৫০০ (পাঁচশত টাকা), ১০১-২৫০ ৳৮০০ (আটশত টাকা), পিকনিক স্পট প্রতি দলের জন্য ৳ ২০০০ (দুই হাজার টাকা)।

প্রাণীবৈচিত্র্য

সম্পাদনা

ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক মূলত হরিণ প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও এখানে বাঘ, সিংহ, হাতি, ভালুক, গয়াল, কুমির, জলহস্তী, মায়া হরিণ, সম্বর হরিণ, চিত্রা হরিণ, প্যারা হরিণ প্রভৃতি প্রাণীও রয়েছে। এই পার্কে স্বাদুপানির কুমির যেমন আছে, তেমনি আছে লোনা পানির কুমির। এছাড়াও ২০১৭ থেকে এ পার্কে তৈরী করা হয়েছে কৃত্রিম আফ্রিকান সাফারি যেখানে আফ্রিকান প্রাণী হিসেবে রয়েছে জেব্রানু-হরিণ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে বিভিন্ন বেষ্টনীতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির ৮৫টি পাখি, ৬৯টি সরীসৃপ ও ১৫০টি স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে । এছাড়াও পার্কে হরিণ, বানর, বন বিড়াল, মেছোবাঘ, বুনো শূকর, সজারু, বনমোরগ, ফিঙে, ঘুঘু, চিলসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী উন্মুক্ত অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া শীতকালে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কলতানে মুখরিত হয়ে ওঠে পার্কের বিভিন্ন লেক ও জলাশয়।

চিত্রশালা

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. রিদওয়ান আক্রাম. “বনে জঙ্গলে” (প্রিন্ট), ২৫ জানুয়ারি ২০১০ খ্রিস্টাব্দ, পৃ. ৮। মার্চ ১৮, ২০১০ খ্রিস্টাব্দ তারিখে সংগৃহীত।
  2. "লোকালয়ে ঢুকে পড়া হাতি শাবকের ঠাঁই হলো ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে"যায়যায়দিন। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা