এ.টি.এম. জাফর আলম
এ.টি.এম. জাফর আলম (৫ মে ১৯৪৭ - ২৫ মার্চ ১৯৭১) ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত ছাত্র নেতা। মুক্তিযুদ্ধে অনন্য সাধারণ অবদানের জন্য ২০১৯ সালে তাকে “স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয়।[১] জাফর আলমের রাজনীতির সূচনা বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত থাকাকালেই। মহেশখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময়েই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম কলেজে অধ্যয়নকালে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাহিত্য সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক (১৯৬৯) ও পরবর্তীতে সভাপতি (১৯৭১) নির্বাচিত হন। ঢাবি ইকবাল হল ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সাহিত্য সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকালে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় ইকবাল হল বার্ষিকী 'কষ্টিপাথর'। তিনি ১৯৭০ সালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম পরিষদের সদস্যও নির্বাচিত হন।
শহীদ এ.টি.এম. জাফর আলম | |
---|---|
জন্ম | ৫ মে ১৯৪৭ রুমখাঁ মাতবর পাড়া, হলদিয়া পালং ইউনিয়ন, উখিয়া, কক্সবাজার জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সী, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ) |
মৃত্যু | ২৫ মার্চ ১৯৭১ |
মৃত্যুর কারণ | পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অপারেশন সার্চলাইট |
সমাধি | অজ্ঞাত, খুঁজে পাওয়া যায় নি |
শিক্ষা | স্নাতক, স্নাতকোত্তর (মৃত্তিকাবিজ্ঞান) ১ম বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | ছাত্র-রাজনীতি সরকারি চাকুুরি (উত্তীর্ণ) |
কর্মজীবন | সদস্য |
প্রতিষ্ঠান | স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম পরিষদ |
পরিচিতির কারণ | রাজনৈতিক |
পুরস্কার | স্বাধীনতা পুরস্কার (২০১৯) |
জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি
সম্পাদনাশহিদ এটিএম জাফর আলম সিএসপি ১৯৪৭ সালের ৫ মে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সীর (বর্তমানঃ বাংলাদেশ) কক্সবাজার জেলাধীন উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমখাঁ পালং গ্রামের মাতব্বর পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।[২] পিতা সৈয়দ হোছাইন ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক ও মাতা আলমাস খাতুন একজন গৃহিণী। আট ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি প্রথম। তাঁর কনিষ্ঠ ভাই মোহাম্মদ শফিউল আলম বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক [১] ও বাংলাদেশের ২১তম মন্ত্রিপরিষদ সচিব [২]। তাঁর আরেক ভাই অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহ আলম জনপ্রতিনিধি হিসেবে স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর একমাত্র ও সর্বকনিষ্ঠ বোন রাবেয়া বেগম। তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ২০১৯ সালে উখিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেন।
শিক্ষাজীবন
সম্পাদনাএ.টি.এম. জাফর আলম মহেশখালী উচ্চ বিদ্যালয় হতে মাধ্যমিক ও চট্টগ্রাম কলেজ হতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। সেখান হতে ১ম বিভাগ পেয়ে সফলতার সাথে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
কর্মজীবন
সম্পাদনাশিক্ষাজীবন সমাপান্তে তিনি তৎকালীন পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস (সিএসপি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ও নোয়াখালীর এসডিও হিসাবে নিয়োগ লাভ করেন।[২] স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার অল্প কিছুকাল পরই সিএসপি কর্মকর্তা হিসাবে সরকারি চাকুরিতে তার যোগদানের কথা ছিলো। [৩]
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনাবাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদানের জন্য ২০১৯ সালে দেশের “সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার”[৪][৫] হিসাবে পরিচিত “স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয় তাকে।[১]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের তালিকা"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১৯।
- ↑ ক খ "কক্সবাজারের কৃতি সন্তান শহীদ এ টি এম জাফর আলম "স্বাধীনতা পদক ২০১৯" এর জন্য মনোনীত"। সন্দেশ২৪ ডটকম অনলাইন। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১৯।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "শহীদ এ টি এম জাফরের নামে কক্সবাজারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান"। কালেরকন্ঠ অনলাইন। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১৯।
- ↑ "স্বাধীনতা পদকের অর্থমূল্য বাড়ছে"। কালেরকন্ঠ অনলাইন। ২ মার্চ ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১৯।
- ↑ "প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতা পদক-২০১৯ হস্তান্তর করেন..."। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৫ মার্চ ২০১৯। ২৪ জুন ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১৯।