বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী পুরুষদের জাতীয় দল, যার সকল কার্যক্রম বাংলাদেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই দলটি ১৯৭৬ সাল হতে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার এবং ১৯৭৪ সাল হতে তাদের আঞ্চলিক সংস্থা এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের সদস্য হিসেবে রয়েছে। ১৯৭৩ সালের ২৬শে জুলাই তারিখে, বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করেছে; মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ এবং থাইল্যান্ডের মধ্যকার উক্ত ম্যাচটি ২–২ গোলে ড্র হয়েছে।
ডাকনাম | বাংলার বাঘ লাল-সবুজ | ||
---|---|---|---|
অ্যাসোসিয়েশন | বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন | ||
কনফেডারেশন | এএফসি (এশিয়া) | ||
প্রধান কোচ | হাভিয়ের কাবরেরা | ||
অধিনায়ক | জামাল ভূঁইয়া | ||
সর্বাধিক ম্যাচ | জামাল ভূঁইয়া (২৮৯) | ||
শীর্ষ গোলদাতা | আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু (১৭) | ||
মাঠ | বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম | ||
ফিফা কোড | BAN | ||
ওয়েবসাইট | bff | ||
| |||
ফিফা র্যাঙ্কিং | |||
বর্তমান | ১৮৩ (২১ ডিসেম্বর ২০২৩)[১] | ||
সর্বোচ্চ | ১১০ (এপ্রিল ১৯৯৬) | ||
সর্বনিম্ন | ১৯৭ (ফেব্রুয়ারি–মে ২০১৮) | ||
এলো র্যাঙ্কিং | |||
বর্তমান | ১৯৫ ১১ (১২ জানুয়ারি ২০২৪)[২] | ||
সর্বোচ্চ | ১১০ (সেপ্টেম্বর ১৯৮৬) | ||
সর্বনিম্ন | ১৯৭ (অক্টোবর ২০১৬) | ||
প্রথম আন্তর্জাতিক খেলা | |||
বাংলাদেশ ২–২ থাইল্যান্ড (কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া; ২৬ জুলাই ১৯৭৩) | |||
বৃহত্তম জয় | |||
বাংলাদেশ ৮–০ মালদ্বীপ (ঢাকা, বাংলাদেশ; ২৩ ডিসেম্বর ১৯৮৫) | |||
বৃহত্তম পরাজয় | |||
দক্ষিণ কোরিয়া ৯–০ বাংলাদেশ (ইনছন, দক্ষিণ কোরিয়া; ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭৯) ইরান ৯–০ বাংলাদেশ (করাচী, পাকিস্তান; ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২) | |||
এএফসি এশিয়ান কাপ | |||
অংশগ্রহণ | ১ (১৯৮০-এ প্রথম) | ||
সেরা সাফল্য | গ্রুপ পর্ব (১৯৮০) | ||
এশিয়ান গেমস | |||
অংশগ্রহণ | ৫ (২০০২-এ প্রথম) | ||
সেরা সাফল্য | ১৬ দলের পর্ব (২০১৮) | ||
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ | |||
অংশগ্রহণ | ১১ (১৯৯৫-এ প্রথম) | ||
সেরা সাফল্য | চ্যাম্পিয়ন (২০০৩) |
৩৬,০০০ ধারণক্ষমতাবিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলার বাঘ নামে পরিচিত এই দলটি তাদের সকল হোম ম্যাচ আয়োজন করে থাকে। এই দলের প্রধান কার্যালয় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মতিঝিলের বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের নিকটবর্তী বিএফএফ ভবনে অবস্থিত। বর্তমানে এই দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন হাভিয়ের কাবরেরা এবং অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন কলকাতা মোহামেডানের মধ্যমাঠের খেলোয়াড় জামাল ভূইয়া।
বাংলাদেশ এপর্যন্ত একবারও ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। অন্যদিকে, এএফসি এশিয়ান কাপে বাংলাদেশ এপর্যন্ত মাত্র ১ বার অংশগ্রহণ করেছে, যেখানে তারা শুধুমাত্র গ্রুপ পর্বে অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়াও, এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ এপর্যন্ত ৫ বার অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে সেরা সাফল্য হচ্ছে ২০১৮ এশিয়ান গেমসের ১৬ দলের পর্বে পৌঁছানো, যেখানে তারা উত্তর কোরিয়ার কাছে ৩–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে। বাংলাদেশ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসের অন্যতম সফল দল, যারা এপর্যন্ত ১ বার (২০০৩) জয়লাভ করেছে।
জাহিদ হাসান এমিলি, মামুনুল ইসলাম, কাজী সালাউদ্দিন, জামাল ভূইয়া এবং আশরাফ উদ্দিন আহমেদের মতো খেলোয়াড়গণ বাংলাদেশের জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন।
ইতিহাস
সম্পাদনা২০শ শতাব্দী
সম্পাদনা১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছে থেকে স্বাধীনতা অর্জন করার পর ১৯৭২ সালের ১৫ জুলাই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৩ সালের ২৬শে জুলাই তারিখে, বাংলাদেশ তাদের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে থাইল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছে, উক্ত ম্যাচটি ২–২ গোলে ড্র হয়েছিল। এনায়েতুর রহমান বাংলাদেশের হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক গোল করেছেন এবং দ্বিতীয় গোলটি করেছেন আক্রমণভাগের খেলোয়াড় কাজী সালাউদ্দিন। খেলা সমতায় থাকার পর পেনাল্টি শুট-আউটে গড়িয়েছিল, যেখানে বাংলাদেশ ৫–৬ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল।[৩] ২৬শে জুলাই থেকে ১৪ই আগস্ট পর্যন্ত এশিয়ার বিভিন্ন দলের বিরুদ্ধে ১৩টি প্রীতি ম্যাচে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ, যার তিনটিতে ড্র এবং দশটিতে পরাজিত হয় তারা। এক বছর পর আরও দুইটি প্রীতি ম্যাচে তারা অংশগ্রহণ করে এবং প্রত্যেকটিতেই তারা পরাজিত হয়। ১৯৭৩ সালের ১৩ই আগস্ট তারিখে, বাংলাদেশ দল স্বাগতিক সিঙ্গাপুরকে ১–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে তাদের প্রথম জয় অর্জন করেছিল। গোলটি করেন একেএম নওশেরুজ্জামান।[৪]
১৯৭৮ সালে ভারত এবং মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে দুইটি প্রীতি ম্যাচে পরাজিত হয় বাংলাদেশ। ১৯৭৯ সালের জানুয়ারি মাসে তারা ১৯৮০ এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে অংশগ্রহণ করে। উক্ত আসরের প্রথম দুই খেলায় বাংলাদেশ কাতার এবং আফগানিস্তানের সাথে ড্র করে, তবে কাতারের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় খেলায় ৪–০ ব্যবধানে পরাজিত হয় তারা। অবশ্য আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় খেলায় ৩–২ ব্যবধানে জয়লাভ করে এএফসি এশিয়ান কাপে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। এটিই বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ইতিহাসের দ্বিতীয় জয় ছিল। এএফসি এশিয়ান কাপের প্রস্তুতি হিসেবে চারটি প্রীতি ম্যাচে অংশ নেয় বাংলাদেশ, যার তিনটিতে পরাজয় এবং একটিতে জয়লাভ করে তারা। ১৯৮০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, কুয়েতে অনুষ্ঠিত এএফসি এশিয়ান কাপের গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল পূর্ববর্তী আসরের চ্যাম্পিয়ন ইরান, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া এবং চীন। উক্ত আসরে বাংলাদেশ উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ৩–২, সিরিয়ার বিরুদ্ধে ১–০, ইরানের বিরুদ্ধে ৭–০ এবং চীনের বিরুদ্ধে ৬–০ গোলের বিশাল ব্যাবধানে পরাজিত হয়। এটি বাংলাদেশের একমাত্র কোন বড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ ছিল।
এর প্রায় দেড় বছর কোন ম্যাচ না খেলার পর, ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৪টি ম্যাচ খেলে, যার ৩টিতে পরাজয় ও একটি ম্যাচ ড্র করে বাংলাদেশ। পরবর্তী ৫ প্রীতি ম্যাচের ২টিতে জয় ও ৩টিতে পরাজিত হয় বাংলাদেশ। ১৯৮৪ এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ইরান, সিরিয়া থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইন। উক্ত আসরে বাংলাদেশ ফিলিপাইনের বিরুদ্ধে ৩–২ গোলে জয় করতে সক্ষম হলেও বাকি সব ম্যাচে পরাজিত হওয়ার ফলে মাত্র ২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ৪ নম্বর দল হিসেবে বাছাইপর্ব থেকে বিদায় নেয়। এর কয়েক মাস পর, বাংলাদেশ নেপাল এবং মালদ্বীপের বিরুদ্ধে প্রীতি ম্যাচে অংশগ্রহণ করে, যার দুইটিতেই বাংলাদেশ ৫–০ গোলে জয়লাভ করে। কিন্তু এর দুইদিন পর, নেপালের বিরুদ্ধে অন্য এক ম্যাচে তারা ৪–২ গোলে পরাজিত হয়।
১৯৮৫ সালে, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে অংশগ্রহণ করে। বাছাইপর্বের গ্রুপ ৩বি-এ বাংলাদেশের অবস্থান ছিল, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত, ইন্দোনেশিয়া এবং থাইল্যান্ড। বাছাইপর্বের ৬ ম্যাচে ৪টিতে পরাজয় এবং ২টিতে জয়ের মাধ্যমে মাত্র ৪ পয়েন্ট অর্জন করে বাংলাদেশ, যার ফলে পয়েন্ট টেবিলের সর্বশেষ দল হিসেবে বাংলাদেশ বাছাইপর্ব থেকেই বিদায় নেয়। ১৯৮৮ এএফসি এশিয়ান কাপ ও ১৯৯০ ফিফা বিশ্বকাপে উত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হওয়ার পূর্বে, ১৯৮৫ সালের এপ্রিল হতে ১৯৮৭ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত, বাংলাদেশ ১৩টি ম্যাচে অংশগ্রহণ করে; যার ৪টি জয়, ২টি ড্র এবং ৭টিতে পরাজিত হয় তারা।
পরবর্তীকালে, ১৯৯৪ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশ জাপান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কার সাথে গ্রুপ এফ-এ ছিল। উক্ত আসরে বাংলাদেশের দুইটি জয়ই এসেছিল শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে, তারা প্রথমটিতে ১–০ এবং দ্বিতীয়টিতে ৩–০ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল। তবে অবশিষ্ট ৬টি ম্যাচে পরাজিত হওয়ার ফলে মাত্র ৪ পয়েন্ট নিয়ে উক্ত আসর হতে বিদায় নিয়েছিল বাংলাদেশ। পরবর্তীকালে, ১৯৯৫ দক্ষিণ এশীয় গেমসে রৌপ্য পদক জয়লাভ করেছিল বাংলাদেশ, ফাইনালে তারা ভারতের কাছে ১–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল। অতঃপর ১৯৯৮ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে চাইনিজ তাইপেইয়ের বিরুদ্ধে একমাত্র জয়ের ফলে ৬ ম্যাচে মাত্র ৩ পয়েন্ট নিয়ে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিয়েছিল।
২১শ শতাব্দী
সম্পাদনা২০০১ সালের ১২ই জানুয়ারি তারিখে বাংলাদেশ সর্বপ্রথম এশিয়ার বাইরের কোন দলের সাথে ম্যাচ খেলে; উক্ত ম্যাচটি ছিল ইউরোপের দল বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার বিরুদ্ধে। ২০০০ সাল হতে এপর্যন্ত বাংলাদেশ এএফসি এশিয়ান কাপ এবং ফিফা বিশ্বকাপে উত্তীর্ণ হতে পারেনি, তবে এই সময়ে তারা একবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়লাভ করেছে। ২০০৩ সালের উক্ত আসরে স্বাগতিক বাংলাদেশ ফাইনালের অতিরিক্ত সময় শেষে মালদ্বীপের সাথে ১–১ গোলে ড্র করার পর পেনাল্টি শুট-আউটে ৫–৩ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করেছে। অতঃপর ২০১০ দক্ষিণ এশীয় গেমসে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো স্বর্ণ পদক জয়লাভ করেছিল, ফাইনালে তারা আফগানিস্তানকে ৪–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করেছে।
২০১১ সালে ২৯শে জুন তারিখে, ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে পাকিস্তানকে ৩–০ গোলে পরাজিত করেছে। পরবর্তীকালে বাংলাদেশ একই বছরের ৩রা জুলাই তারিখে লাহোরের লাহোর স্টেডিয়ামে স্বাগতিক পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়, যেখানে তারা গোলশূন্য ড্র করেছে। অতঃপর ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচের প্রথম লেগে বাংলাদেশ লেবাননের ৪–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়, তবে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় লেগে ২–০ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করলেও সামগ্রিকভাবে ৪–২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হওয়ায় ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দ্বিতীয় পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল। অতঃপর একই বছরে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে পাকিস্তানের সাথে এবং নেপাল ও মালদ্বীপের কাছে হারের ফলে বাংলাদেশ সেমি-ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয়। পরের বছর, বাংলাদেশ ৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছিল, যার মধ্যে থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫–০ গোলের বড় ব্যবধানে পরাজয় অন্যতম।
২০১৫ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে স্বাগতিক বাংলাদেশ ফাইনালে উঠেছিল, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল মালয়েশিয়া। উক্ত ম্যাচের প্রথমার্ধে মালয়েশিয়া ২–০ গোলে এগিয়ে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ দুই গোল শোধ করার মাধ্যমে খেলায় ফিরে এসেছিল, তবে ৯২তম মিনিটে ফয়জাত গাজলির করা গোলের মাধ্যমে মালয়েশিয়া ৩–২ গোলের ব্যবধানে ম্যাচ এবং শিরোপা জয়লাভ করেছিল।
২০১৮ বিশ্বকাপ এশিয়া অঞ্চলের বাছাই পর্বে ( বি ) গ্রুপ থেকে বাংলাদেশ ৮টি ম্যাচ খেলে ১ পয়েন্ট অর্জন করেন। ১১ জুন তাজিকিস্তানের সাথে ৩-১ গোলে হেরে গেলেও ফিরতি ম্যাচে ১৬ জুন ২০১৫ মোহাম্মদ জাহিদ হাসান এমিলি গোলে ১-১ গলে ড্র করেন।সবচেয়ে বড় ব্যাবধানে হারেন অস্ট্রেলিয়ার সাথে ৫-০।
বাংলাদেশ গ্রুপে ছিলেন অস্ট্রেলিয়া,জর্ডান,কাজাকিস্তান,তাজিকিস্তান।
২০২২ বিশ্বকাপঃ এশিয়া অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে (ই) গ্রুপে বাংলাদেশের সাথে ছিলেন কাতার,আফগানিস্তান,ভারত,ওমান। প্রতিটা দল নিজেদের মধ্যে ২টি করে ম্যাচ খেলেন। বাংলাদেশ ৮টি ম্যাচে ভারত ও আফগানিস্তানের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে ২ পয়েন্ট অর্জন করেন। ১ম ম্যাচে আফগানিস্তানের সাথে ১-০ গোলে হারলেও ফিরতি ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করেন। ভারতের হোম অফ গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ ১-১ গোলে ড্র করেন, কিন্তু নিজেদের হোম অফ গ্রাউন্ডে ২-০ গোলে হেরে যান।
ভারতের সাথে ২ টি ম্যাচেই শেষ সময়ে গোল খেয়েছেন। ভারতের হোম অফ গ্রাউন্ড ম্যাচে বাংলাদেশ ৮৭ মিনিট পর্যন্ত ১- ০ এগিয়ে ছিলেন, কিন্ত ৮৮ মিনিটে ভারতের আদিল খান গোল দিয়ে সমতা ফেরান। বাংলাদেশের পক্ষে গোল করেন মো: সাদ উদ্দিন।
ফিরতি ম্যাচেও ৭৯ এবং ৯২ মিনিটে গোল খেয়ে ২-০ তে ম্যাচ হারেন বাংলাদেশ। ২২ পয়েন্ট নিয়ে (ই) গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হন কাতার, বাংলাদেশ ২ পয়েন্ট নিয়ে ৫ম স্থান অধিকার করেন।
কোচের তালিকা
সম্পাদনা- শেখ সাহেব আলি (১৯৭২–১৯৭৫)
- আব্দুল রহিম (১৯৭৫)
- আঞ্জম হোসেন (১৯৭৬)
- ভেয়ার্নার বেকেনহোফট (১৯৭৮–১৯৭৯)
- মোহাম্মদ জাকারিয়া পিন্টু (১৯৭৯)
- গফুর বালুচ (১৯৮২)
- গার্ড স্মিট (১৯৮২)
- গোলাম সারওয়ার টিপু (১৯৮৪)
- আলী ইমাম (১৯৮৪)
- কাজী সালাউদ্দিন (১৯৮৫–১৯৮৮)
- আব্দুল হাকিম (১৯৮৬)
- ওয়াজেদ গাজী (১৯৮৭)
- নাসের হেজাজি (১৯৮৯)
- প্রাণ গোবিন্দ কুণ্ড (১৯৮৯)
- শহিদুদ্দিন আহমেদ সেলিম (১৯৯১)
- মোহাম্মদ কায়কোবাদ (১৯৯২)
- অলদ্রিচ সোয়াব (১৯৯৩)
- কাং মান-ইয়াং (১৯৯৪)
- অটো ফিস্টার (১৯৯৫–১৯৯৭)
- আবু ইউসুফ (১৯৯৮)
- সামির শাকির (১৯৯৮–১৯৯৯)
- মার্ক হ্যারিসন (এপ্রিল ২০০০ – অক্টোবর ২০০০)
- হাসানুজ্জামান বাবলু (জুলাই ২০০০ – আগস্ট ২০০০)
- গিয়র্গি কোটান (নভেম্বর ২০০০ – জানুয়ারি ২০০৩)
- গোলাম সারওয়ার টিপু (নভেম্বর ২০০৩ – ডিসেম্বর ২০০৩)
- আন্দ্রেস ক্রিসিয়ানি (আগস্ট ২০০৫ – জুলাই ২০০৭)
- হাসানুজ্জামান বাবলু (ফেব্রুয়ারি ২০০৬ – নভেম্বর ২০০৬)
- সাইদ নাইমুদ্দিন (সেপ্টেম্বর ২০০৭ – মে ২০০৮)
- আবু ইউসুফ (মে ২০০৮ – জুন ২০০৮)
- শফিকুল ইসলাম মানিক (আগস্ট ২০০৮ – ডিসেম্বর ২০০৮)
- দিদো (জানুয়ারি ২০০৯ – নভেম্বর ২০০৯)
- শহিদুর রহমান শান্ত (নভেম্বর ২০০৯ – ডিসেম্বর ২০০৯)
- জোরান দোর্দেভিচ (জানুয়ারি ২০১০ – ফেব্রুয়ারি ২০১০)
- সাইফুল বারী টিটু (ফেব্রুয়ারি ২০১০ – সেপ্টেম্বর ২০১০)
- রবার্ট রুবচিচ (সেপ্টেম্বর ২০১০ – জুন ২০১১)
- নিকোলা ইলিয়েভস্কি (জুন ২০১১ – ডিসেম্বর ২০১১)
- সাইফুল বারী টিটু (সেপ্টেম্বর ২০১২ – ডিসেম্বর ২০১২)
- লডউইক ডি ক্রুইফ (জানুয়ারি ২০১৩ – অক্টোবর ২০১৪)
- সাইফুল বারী টিটু (অক্টোবর ২০১৪ – জানুয়ারি ২০১৫)
- লডউইক ডি ক্রুইফ (জানুয়ারি ২০১৫ – সেপ্টেম্বর ২০১৫)
- ফাবিও লোপেজ (সেপ্টেম্বর ২০১৫ – নভেম্বর ২০১৫)
- মারুফুল হক (নভেম্বর ২০১৫ – জানুয়ারি ২০১৬)
- গন্সালো সানচেস মোরেনো (ফেব্রুয়ারি ২০১৬ – মে ২০১৬)
- লডউইক ডি ক্রুইফ (মে ২০১৬ – জুন ২০১৬)
- টম স্টাইনফেট (জুন ২০১৬ – অক্টোবর ২০১৬)
- অ্যান্ড্রু অড (মে ২০১৭ – এপ্রিল ২০১৮)
- জেমি ডে (মে ২০১৮ – বর্তমান)
- ওস্কার ব্রুসোন (২০২১; অন্তর্বর্তীকালীন)
- মারিও লেমোস (২০২১; অন্তর্বর্তীকালীন)
- হাভিয়ের কাবরেরা (২০২২ – বর্তমান)
খেলোয়াড়
সম্পাদনাবর্তমান খেলোয়াড়
সম্পাদনানিম্নলিখিত ২৩ জন খেলোয়াড়কে ২৫ এবং ২৮ মার্চ ২০২৩ তারিখে সেশেলস-এর বিরুদ্ধে দুটি প্রীতি ম্যাচের জন্য ডাকা হয়েছে৷[৫]
সাম্প্রতিক সময়ে ডাকা হয়েছিল
সম্পাদনানিম্নলিখিত খেলোয়াড়দেরও গত বারো মাসের মধ্যে বাংলাদেশ দলে ডাকা হয়েছে।
র্যাঙ্কিং
সম্পাদনাফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে, ১৯৯৬ সালের এপ্রিল মাসে প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অবস্থান (১১০তম) অর্জন করে এবং ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে তারা ১৯৭তম স্থান অধিকার করে, যা তাদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে, বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অবস্থান হচ্ছে ১৪৭তম (যা তারা ১৯৮৬ সালে অর্জন করেছিল) এবং সর্বনিম্ন অবস্থান হচ্ছে ২০৯। নিম্নে বর্তমানে ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিং এবং বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে অবস্থান উল্লেখ করা হলো:
|
|
প্রতিযোগিতামূলক তথ্য
সম্পাদনাফিফা বিশ্বকাপ
সম্পাদনাফিফা বিশ্বকাপ | বাছাইপর্ব | ||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
সাল | পর্ব | অবস্থান | ম্যাচ | জয় | ড্র | হার | স্বগো | বিগো | ম্যাচ | জয় | ড্র | হার | স্বগো | বিগো | |
১৯৩০ | ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অংশ ছিল | ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অংশ ছিল | |||||||||||||
১৯৩৪ | |||||||||||||||
১৯৩৮ | |||||||||||||||
১৯৫০ | পাকিস্তানের অংশ ছিল | পাকিস্তানের অংশ ছিল | |||||||||||||
১৯৫৪ | |||||||||||||||
১৯৫৮ | |||||||||||||||
১৯৬২ | |||||||||||||||
১৯৬৬ | |||||||||||||||
১৯৭০ | |||||||||||||||
১৯৭৪ | |||||||||||||||
১৯৭৮ | |||||||||||||||
১৯৮২ | |||||||||||||||
১৯৮৬ | উত্তীর্ণ হয়নি | ৬ | ২ | ০ | ৪ | ৫ | ১০ | ||||||||
১৯৯০ | ৬ | ১ | ০ | ৫ | ৪ | ৯ | |||||||||
১৯৯৪ | ৮ | ২ | ০ | ৬ | ৭ | ২৮ | |||||||||
১৯৯৮ | ৬ | ১ | ০ | ৫ | ৪ | ১৪ | |||||||||
২০০২ | ৬ | ১ | ২ | ৩ | ৫ | ১৫ | |||||||||
২০০৬ | ২ | ০ | ০ | ২ | ০ | ৪ | |||||||||
২০১০ | ২ | ০ | ১ | ১ | ১ | ৬ | |||||||||
২০১৪ | ৪ | ২ | ১ | ১ | ৫ | ৪ | |||||||||
২০১৮ | ৮ | ০ | ১ | ৭ | ২ | ৩২ | |||||||||
২০২২ | ১০ | ১ | ৩ | ৬ | ৪ | ১৯ | |||||||||
মোট | ০/২২ | ৫৮ | ৯ | ৮ | ৪১ | ৩৭ | ১৩১ |
অর্জন
সম্পাদনা- রানার-আপ (১): ২০১৫
- কুয়াইদ-এ-আজম আন্তর্জাতিক কাপ[৬]
- রানার-আপ (১): ১৯৮৫
- তৃতীয় স্থান (১): ১৯৮৭
- প্রেসিডেন্ট'স গোল্ড কাপ[৭]
- চ্যাম্পিয়ন (১): ১৯৮৯
- চার দেশীয় আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট[৮]
- চ্যাম্পিয়ন (১): ১৯৯৫
- রানার-আপ (১) : ২০০৫
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "ফিফা/কোকা-কোলা বিশ্ব র্যাঙ্কিং"। ফিফা। ২১ ডিসেম্বর ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০২৩।
- ↑ ক খ গত এক বছরে এলো রেটিং পরিবর্তন "বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং"। eloratings.net। ১২ জানুয়ারি ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০২৪।
- ↑ "Page 19, Daily News, 28 July 1973"। eresources.nlb.gov.sg (Malay ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-২৬।
- ↑ আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের প্রথম গোল। Prothom Alo।
- ↑ Desk, Offside (মার্চ ২৪, ২০২৩)। "২৩ সদস্যে চূড়ান্ত দলে এলিটা; বাদ পড়লেন চারজন!"।
- ↑ "Quaid-E-Azam International Cup (Pakistan)"। Rec.Sport.Soccer Statistics Foundation। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
- ↑ "President's Gold Cup 1989"। Rec.Sport.Soccer Statistics Foundation। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
- ↑ "Burma Tournament 1995"। Rec.Sport.Soccer Statistics Foundation। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- দাপ্তরিক ওয়েবসাইট (ইংরেজি)
- ফিফা-এ বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে (ইংরেজি)
- এএফসি-এ বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল (ইংরেজি)