চীন জাতীয় ফুটবল দল
চীন জাতীয় ফুটবল দল (সরলীকৃত চীনা: 中国国家足球队; প্রথাগত চীনা: 中國國家足球隊; ফিনিন: Zhōngguó guójiā zúqiú duì) হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফুটবলে চীনের প্রতিনিধিত্বকারী পুরুষদের জাতীয় দল, যার সকল কার্যক্রম চীনের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা চীনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই দলটি ১৯৩১ সাল হতে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার এবং ১৯৭৪ সাল হতে তাদের আঞ্চলিক সংস্থা এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের সদস্য হিসেবে রয়েছে। চীনা গৃহযুদ্ধের পর, ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী চীন দ্বারা সংস্কার করা হয়েছিল। ১৯১৩ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি তারিখে, চীন প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করেছে; ফিলিপাইনের ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত উক্ত ম্যাচে চীন ফিলিপাইনের কাছে ২–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে।
![]() | |||
ডাকনাম | লং জি তুই (ড্রাগন) গু জু (জাতীয় দল)[১] | ||
---|---|---|---|
অ্যাসোসিয়েশন | চীনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন | ||
কনফেডারেশন | এএফসি (এশিয়া) | ||
প্রধান কোচ | লি থিয়ে | ||
অধিনায়ক | জেং জি | ||
সর্বাধিক ম্যাচ | লি ওয়েইফেং (১১২) | ||
শীর্ষ গোলদাতা | হাও হাইতং (৪১) | ||
মাঠ | বিভিন্ন | ||
ফিফা কোড | CHN | ||
ওয়েবসাইট | www | ||
| |||
ফিফা র্যাঙ্কিং | |||
বর্তমান | ৭৯ ![]() | ||
সর্বোচ্চ | ৩৭ (ডিসেম্বর ১৯৯৮) | ||
সর্বনিম্ন | ১০৯ (মার্চ ২০১৩) | ||
এলো র্যাঙ্কিং | |||
বর্তমান | ৯৭ ![]() | ||
সর্বোচ্চ | ২৩ (মে ১৯৩৪) | ||
সর্বনিম্ন | ৯২ (অক্টোবর ১৯৯২) | ||
প্রথম আন্তর্জাতিক খেলা | |||
![]() ![]() (ম্যানিলা, ফিলিপাইন; ৪ ফেব্রুয়ারি ১৯১৩)[৪] | |||
বৃহত্তম জয় | |||
![]() ![]() (হো চি মিন সিটি, ভিয়েতনাম; ২৬ জানুয়ারি ২০০০) | |||
বৃহত্তম পরাজয় | |||
![]() ![]() (রেসিফি, ব্রাজিল; ১০ সেপ্টেম্বর ২০১২) | |||
বিশ্বকাপ | |||
অংশগ্রহণ | ১ (২০০২-এ প্রথম) | ||
সেরা সাফল্য | গ্রুপ পর্ব (২০০২) | ||
এএফসি এশিয়ান কাপ | |||
অংশগ্রহণ | ১২ (১৯৭৬-এ প্রথম) | ||
সেরা সাফল্য | রানার-আপ (১৯৮৪, ২০০৪) |
লং জি তুই নামে পরিচিত এই দলটি বেশ কয়েকটি স্টেডিয়ামে তাদের হোম ম্যাচগুলো আয়োজন করে থাকে। এই দলের প্রধান কার্যালয় চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অবস্থিত। বর্তমানে এই দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন লি থিয়ে এবং অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন কুয়াংচৌ এভারগ্রান্ড তাওবাওয়ের মধ্যমাঠের খেলোয়াড় জেং জি।
চীন এপর্যন্ত মাত্র ১ বার ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে, যেখানে তারা শুধুমাত্র গ্রুপ পর্বে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছিল। অন্যদিকে, এএফসি এশিয়ান কাপে চীন এপর্যন্ত ১২ বার অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে সেরা সাফল্য হচ্ছে ১৯৮৪ এবং ২০০৪ এএফসি এশিয়ান কাপের ফাইনালে পৌঁছানো। যদিও আধুনিক ফুটবলে চীনের ততটা ইতিহাস নেই, তবে ২০০৪ এএফসি এশিয়ান কাপ ফাইনালের জন্য আনুমানিক ২৫০ মিলিয়ান দর্শক ছিল, যেখানে চীন তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী জাপানের কাছে ৩–১ গোলে পরাজিত হয়েছিল। এটি উক্ত সময়ে দেশের ইতিহাসে বৃহত্তম একক অনুষ্ঠান ছিল।[৫]
লি ওয়েইফেং, জু বো, লিন কাও, হাও হাইতং এবং জেং জির মতো খেলোয়াড়গণ চীনের জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন।
দ্বন্দ্ব
সম্পাদনাঐতিহ্যগতভাবে, চীনের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে জাপান জাতীয় ফুটবল দল।[৬] ২০০৪ সালের এফসি এশিয়ান কাপের ফাইনালে জাপানের কাছে ৩–১ গোলে পরাজিত হওয়ার পর চীনের ভক্তদের ওয়ার্কার স্টেডিয়ামের উত্তর গেটের কাছে দাঙ্গা শুরু করেছিল।[৭] উক্ত সময় টুর্নামেন্টের বিতর্কিত ওষুধ ও দুর্যোগপূর্ণ জাপানী মনোভাবের কারণে দাঙ্গা ছড়ানোর কথা বলা হয়েছিল।
আরেকটি সুপরিচিত প্রতিদ্বন্দ্বিতা সহযোদ্ধা দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গেও রয়েছে। ১৯৭৮ এবং ২০১০ সালে ৩২ বছরের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে তারা ২৭টি ম্যাচ খেলেছে, যেখানে চীন একটি ম্যাচও (১১ ড্র এবং ১৬ হার) জয়লাভ করতে পারেনি। এই ঘটনাটি বর্ণনা করার জন্য মিডিয়াটি "কোরেফোবিয়া" শব্দটি সংকলন করেছে, কিন্তু ২০১০ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারি তারিখে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে চীন অবসেস জয়লাভ করেছিল। ২০১০ সালের এশিয়ান ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে ৩–০ ব্যবধানে জয়ী হয় এবং শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্টটি জিতে নেয়।
রাজনৈতিক চাপের কারণে হংকংয়ের সাথে চীনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি হয়েছে। হংকং ভক্তরা চীনের জাতীয় সংগীতের সময় নিন্দা প্রকাশ করে।
র্যাঙ্কিং
সম্পাদনাফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে, ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে চীন তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অবস্থান (৩৭তম) অর্জন করে এবং ২০১৩ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে তারা ১০৯তম স্থান অধিকার করে, যা তাদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে, বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে চীনের সর্বোচ্চ অবস্থান হচ্ছে ২৩তম (যা তারা ১৯৩৪ সালে অর্জন করেছিল) এবং সর্বনিম্ন অবস্থান হচ্ছে ৯২। নিম্নে বর্তমানে ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিং এবং বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে অবস্থান উল্লেখ করা হলো:
- ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিং
অবস্থান | পরিবর্তন | দল | পয়েন্ট |
---|---|---|---|
৭৭ | জর্জিয়া | ১৩১২.৪৫ | |
৭৮ | এল সালভাদোর | ১৩০৬.১৪ | |
৭৯ | চীন | ১২৯৯.৪৯ | |
৮০ | গিনি | ১২৯০.০১ | |
৮১ | বুলগেরিয়া | ১২৮৯.৯ |
- বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং
অবস্থান | পরিবর্তন | দল | পয়েন্ট |
---|---|---|---|
৯৫ | ১২ | মার্তিনিক | ১৪৪১ |
৯৬ | ২৬ | ত্রিনিদাদ ও টোবাগো | ১৪৩২ |
৯৭ | ১২ | চীন | ১৪৩১ |
৯৮ | ২ | কুর্দিস্তান অঞ্চল | ১৪২৫ |
৯৯ | ২৫ | বাহরাইন | ১৪২৪ |
প্রতিযোগিতামূলক তথ্য
সম্পাদনাফিফা বিশ্বকাপ
সম্পাদনাফিফা বিশ্বকাপ | বাছাইপর্ব | |||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
সাল | পর্ব | অবস্থান | ম্যাচ | জয় | ড্র | হার | স্বগো | বিগো | ম্যাচ | জয় | ড্র | হার | স্বগো | বিগো | ||
১৯৩০ | অংশগ্রহণ করেনি | প্রত্যাখ্যান | ||||||||||||||
১৯৩৪ | ||||||||||||||||
১৯৩৮ | ||||||||||||||||
১৯৫০ | ||||||||||||||||
১৯৫৪ | ||||||||||||||||
১৯৫৮ | উত্তীর্ণ হয়নি | ৩ | ১ | ১ | ১ | ৪ | ৫ | |||||||||
১৯৬২ | অংশগ্রহণ করেনি | প্রত্যাখ্যান | ||||||||||||||
১৯৬৬ | ||||||||||||||||
১৯৭০ | ||||||||||||||||
১৯৭৪ | ||||||||||||||||
১৯৭৮ | ||||||||||||||||
১৯৮২ | উত্তীর্ণ হয়নি | ১০ | ৬ | ২ | ২ | ১৭ | ৬ | |||||||||
১৯৮৬ | ৬ | ৪ | ১ | ১ | ২৩ | ২ | ||||||||||
১৯৯০ | ১১ | ৭ | ০ | ৪ | ১৮ | ৯ | ||||||||||
১৯৯৪ | ৮ | ৬ | ০ | ২ | ১৮ | ৪ | ||||||||||
১৯৯৮ | ১৪ | ৮ | ৩ | ৩ | ২৪ | ১৬ | ||||||||||
২০০২ | গ্রুপ পর্ব | ৩১তম | ৩ | ০ | ০ | ৩ | ০ | ৯ | ১৪ | ১২ | ১ | ১ | ৩৮ | ৫ | ||
২০০৬ | উত্তীর্ণ হয়নি | ৬ | ৫ | ০ | ১ | ১৪ | ১ | |||||||||
২০১০ | ৮ | ৩ | ৩ | ২ | ১৪ | ৪ | ||||||||||
২০১৪ | ৮ | ৫ | ০ | ৩ | ২৩ | ৯ | ||||||||||
২০১৮ | ১৮ | ৮ | ৫ | ৫ | ৩৫ | ১১ | ||||||||||
২০২২ | অনির্ধারিত | অনির্ধারিত | ||||||||||||||
মোট | গ্রুপ পর্ব | ১/২১ | ৩ | ০ | ০ | ৩ | ০ | ৯ | ১০৬ | ৬৫ | ১৬ | ২৫ | ২১৬ | ৭২ |
অর্জন
সম্পাদনা
মহাদেশীয়সম্পাদনাআঞ্চলিকসম্পাদনা
|
অন্যান্যসম্পাদনা
|
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "China PR: Profile"। FIFA। ২ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ ক খ "ফিফা/কোকা-কোলা বিশ্ব র্যাঙ্কিং"। ফিফা। ২১ ডিসেম্বর ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০২৩।
- ↑ ক খ গত এক বছরে এলো রেটিং পরিবর্তন "বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং"। eloratings.net। ১২ জানুয়ারি ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০২৪।
- ↑ "China matches, ratings and points exchanged"। World Football Elo Ratings: China। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৪।
- ↑ "Asian Cup final smashes viewing records"। The AFC। ১৮ অক্টোবর ২০০৭। ৯ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০১১।
- ↑ Minter, Adam। "Why Chinese Hate Their Men's Soccer Team"। Bloomberg। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০১৩।
- ↑ ESPNSoccernet. 'Hand of Koji' brings Japan third title ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ অক্টোবর ২০১২ তারিখে 8 August 2004
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- দাপ্তরিক ওয়েবসাইট (চীনা)
- ফিফা-এ চীন জাতীয় ফুটবল দল ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে (ইংরেজি)
- এএফসি-এ চীন জাতীয় ফুটবল দল (ইংরেজি)