১৯৯০ ফিফা বিশ্বকাপ

ফুলবল প্রতিযোগিতা ফিফা বিশ্বকাপের ১৪ তম আসরের

১৯৯০ ফিফা বিশ্বকাপ (ইংরেজি: 1990 FIFA World Cup) ফিফা বিশ্বকাপের ১৪তম আসর। এটি অনুষ্ঠিত হয় ইতালিতে। এটি ছিল ইতালির দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ আয়োজন। ৬টি মহাদেশের ১১৬টি জাতীয় দল প্রতিযোগিতার বাছাইপর্বে অংশগ্রহণ করে। ১৯৯০ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের নিয়মানুসারে প্রতিযোগিতার জন্য ২২টি দলকে বাছাই করা হয়। এই ২২টি দলের সাথে আয়োজক ইতালি এবং ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতার দাপ্তরিক বল ছিল এডিডাসের এত্‌রুস্কো ইউনিকো। ১৯৯৮ ফিফা বিশ্বকাপ হল প্রথম বিশ্বকাপ যা দাপ্তরিকভাবে এইচডিটিভিতে রেকর্ড এবং প্রচার করা হয়। জাপানী সম্প্রচারক এনএইচকে এর সহায়তার এই কাজটি করে ইতালীয় সম্প্রচারক রাদিওতেলেভিজিয়োনে ইতালিয়ানা[]

১৯৯০ ফিফা বিশ্বকাপ
Coppa del Mondo FIFA Italia '90
১৯৯০ ফিফা বিশ্বকাপের অফিসিয়াল লোগো।
বিবরণ
স্বাগতিক দেশইতালি
তারিখ৮ জুন – ৮ জুলাই ১৯৯০ (৩১ দিন)
দল২৪
মাঠ১২ (১২টি আয়োজক শহরে)
চূড়ান্ত অবস্থান
চ্যাম্পিয়ন পশ্চিম জার্মানি (৩য় শিরোপা)
রানার-আপ আর্জেন্টিনা
তৃতীয় স্থান ইতালি
চতুর্থ স্থান ইংল্যান্ড
পরিসংখ্যান
ম্যাচ৫২
গোল সংখ্যা১১৫ (ম্যাচ প্রতি ২.২১টি)
দর্শক সংখ্যা২৫,১৬,৩৪৮ (ম্যাচ প্রতি ৪৮,৩৯১ জন)
শীর্ষ গোলদাতাইতালি সালভাতর শিলাচি (৬ গোল)
সেরা খেলোয়াড়ইতালি সালভাতর শিলাচি

এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয় পশ্চিম জার্মানি, যা ছিল তাদের তৃতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা। প্রতিযোগিতার ফাইনালে তারা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে ১–০ গোলে পরাজিত করে। আয়োজক ইতালি তৃতীয় স্থান নির্ধারণী খেলায় ইংল্যান্ডকে ২–১ গোলে হারিয়ে প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়। এটিই ছিল শেষ প্রতিযোগিতা, যেখানে জার্মান দল বিভক্ত জার্মানির প্রতিনিধিত্ব করে। কেননা, ১৯৯০ সালের পর পূর্ব এবং পশ্চিম জার্মানি এক হয়ে যায়।

১৯৯4 বিশ্বকাপকে ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসের অন্যতম মন্দ বিশ্বকাপ হিসেবে ব্যপকভাবে গণ্য করা হয়।[][][][] এই বিশ্বকাপে প্রতি খেলায় গড় গোলের সংখ্যা মাত্র ২.২১, যা প্রতিযোগিতার ইতিহাসে সবচেয়ে কম গড় গোলের রেকর্ড।[] এছাড়া প্রতিযোগিতায় মোট ১৬টি লাল কার্ড প্রদান করা হয়, এমনকি প্রতিযোগিতার ফাইনালেও প্রথমবারের মত লাল কার্ড দেখানো হয়। এসত্ত্বেও, টেলিভিশনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি প্রেক্ষিত অন্যতম অনুষ্ঠান ছিল এই বিশ্বকাপ। আনুমানিক ২৬.৬৯ বিলিয়ন দর্শক এই প্রতিযোগিতা নিয়মিত প্রত্যক্ষ করেন।[]

১৯৯০ বিশ্বকাপের পর সময় অপচয় এবং অতিরিক্ত রক্ষণাত্মক খেলা নিরূত্‍সাহিত করার জন্য ব্যাক-পাস আইন চালু করা হয়। এছাড়া অধিক আক্রমণাত্মক খেলাকে উত্‍সাহিত করার জন্য একটি খেলায় জয় লাভ করলে দুই পয়েন্টের পরিবর্তে তিন প্রয়েন্ট প্রদানের বিধান চালু করা হয়।

আয়োজক নির্বাচন

সম্পাদনা

১৯৯০ বিশ্বকাপের আয়োজক নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৪ সালের ১৯ মে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে। সেখানেই ফিফার নিবার্হী কমিটি ইতালিকে নির্বাচিত করে। ইতালি পেয়েছিল ১১টি ভোট এবং তাদের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বি সোভিয়েত ইউনিয়ন পেয়েছিল ৫টি ভোট।[] এর মাধ্যমে মেক্সিকোর পর দ্বিতীয় জাতি হিসেবে দ্বিতীয়বারের মত বিশ্বকাপ অয়োজনের সুযোগ পায় ইতালি। এর আগে ১৯৩৪ সালে তারা বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল, যেখানে তারা তাদের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে।

অস্ট্রিয়া, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, গ্রীস, পশ্চিম জার্মানি এবং ইয়োগোস্লাভিয়াও প্রতিযোগিতার আয়োজক হওয়ার জন্য প্রথমিক আবেদন জমা দিয়েছিল।[] এক মাস পর, শুধুমাত্র ইংল্যান্ড এবং গ্রীস, ইতালি এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে তাদের আবেদন বহাল রাখে এবং অন্যেরা আবেদন প্রত্যাহার করে নেয়।[১০] ১৯৮৩ সালের শেষ দিকে চারটি প্রস্তাবই ফিফা কর্তৃক গৃহীত হয়। যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয় ১৯৮৪ সালে।[১১] ১৯৮৪ সালে প্রথম দিকে, ইংল্যান্ড এবং গ্রীসও তাদের প্রস্তাব প্রত্যাহার করে, ফলে বাঁকি থেকে যায় শুধু ইতালি এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন। ১৯৮৪ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃক গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক বয়কট করা হয়, যা বিশ্বকাপ আয়োজক নির্বাচনেও প্রভাব ফেলে এবং ইতালি প্রায় নিশ্চিতভাবেই নির্বাচনে জয় লাভ করে।[][১২]

 
  বিশ্বকাপে অংশগ্রহনকারী দেশ
  বিশ্বকাপে অংশগ্রহনে ব্যর্থ দেশ
  বিশ্বকাপে অংশগ্রহন করেনি এমন দেশ
  ফিফার সদস্য নয় এমন দেশ

১১৬টি দেশ ১৯৯০ বিশ্বকাপে প্রবেশ করে। এর মধ্যে ১১৪টি দেশকে খেলতে হয় বাছাইপর্ব (শেষ পর্যন্ত ১০৩টি দেশ বাছাইপর্বে অংশগ্রহণ করে)। আয়োজক দেশ হিসেবে ইতালি এবং ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা সরাসরি বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার সুযোগ পায়। অবশিষ্ট ২২টি ফাঁকা স্থান বিভিন্ন মহাদেশীয় কনফেডারেশনের জন্য ভাগ করা হয়।

উয়েফার (ইউরোপ) দলগুলোর জন্য ১৩টি, কনমেবলের (দক্ষিণ আমেরিকা) দলগুলোর জন্য ৩টি, সিএএফ (আফ্রিকা) এর দলগুলোর জন্য ২টি, এএফসি (এশিয়া) এর দলগুলোর জন্য ২টি এবং কনকাকাফের (উত্তর ও মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান) দলগুলোর জন্য ২টি স্থান বরাদ্দ ছিল। অবশিষ্ট স্থানগুলো নির্ধারিত হয় কনমেবল এবং ওএফসি (ওসেনিয়া) এর মধ্যে প্লে-অফের মাধ্যমে।

মেক্সিকো এবং চিলি উভয় দলই বাছাইপর্ব টপকাতে ব্যর্থ হয়। তিনটি দেশ প্রথমবারের মত বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়: কোস্টা রিকা, আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্র এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত

দীর্ঘ অনুপস্থিতির পর বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের সুযোগ পায় মিশর, যারা ১৯৩৪ সালের পর প্রথমবারের মত সুযোগ পায়। ১৯৫০ সালের পর প্রথমবারের মত সুযোগ পায় যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৬২ সালের পর প্রথমবারের মত সুযোগ পায় কলম্বিয়া। এছাড়া রোমানিয়াও সুযোগ পায়, যারা সর্বশেষ ১৯৭০ সালে ফাইনাল খেলেছিল।

বিশ্বকাপের মূলপর্বে অংশগ্রহণে ব্যর্থ দলগুলোর মধ্য হাঙ্গেরি, ফ্রান্স, পোল্যান্ড এবং পর্তুগাল উল্লেখযোগ্য। ২০১৪ সাল অনুসারে, সোভিয়েত ইউনিয়ন, মিশর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত এই শেষবারের মত বিশ্বকাপের মূলপর্বে অংশগ্রহণ করে।

মাঠসমূহ

সম্পাদনা

বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য বারোটি শহরের বারোটি স্টেডিয়ামকে নির্বাচিত করা হয়। বারির স্তাদিও সান নিকোলা এবং তুরিনের স্তাদিও দেল্লে আলপি সম্পূর্ণ নতুন স্টেডিয়াম যা বিশ্বকাপের জন্য তৈরি করা হয়।

প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি অনুসারে অন্য দশটি স্টেডিয়ামের ব্যাপক মানোন্নয়ন করা হয়। অধিকাংশ স্টেডিয়ামেই অতিরিক্ত আসন এবং ছাদ যোগ করা হয়। গাঠনিক সীমাবদ্ধতার কারণে, কিছু স্টেডিয়ামের কার্যত পুনঃনির্মাণ করা হয়, আবশ্যিক পরিবর্তন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে।

অধিকাংশ প্রকল্পের ব্যয় তাদের আনুমানিক ব্যয়কে ছাড়িয়ে যায়। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হয় ৫৫০ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি (প্রায় ৯৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। রোমের স্তাদিও অলিম্পিকো ছিল সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্প, যেখানে প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। অপরদিকে উদিনের স্তাদিও ফ্রিউলি, মানোন্নয়নের জন্য সবচেয়ে কম খরচ হয়।

রোম মিলান নেপল্‌স তুরিন
স্তাদিও অলিম্পিকো সান সিরো স্তাদিও সান পাওলো স্তাদিও দেল্লে আলপি
৪১°৫৬′১.৯৯″ উত্তর ১২°২৭′১৭.২৩″ পূর্ব / ৪১.৯৩৩৮৮৬১° উত্তর ১২.৪৫৪৭৮৬১° পূর্ব / 41.9338861; 12.4547861 (স্তাদিও অলিম্পিকো) ৪৫°২৮′৪০.৮৯″ উত্তর ৯°৭′২৭.১৪″ পূর্ব / ৪৫.৪৭৮০২৫০° উত্তর ৯.১২৪২০৫৬° পূর্ব / 45.4780250; 9.1242056 (সান সিরো) ৪০°৪৯′৪০.৬৮″ উত্তর ১৪°১১′৩৪.৮৩″ পূর্ব / ৪০.৮২৭৯৬৬৭° উত্তর ১৪.১৯৩০০৮৩° পূর্ব / 40.8279667; 14.1930083 (স্তাদিও সান পাওলো) ৪৫°০৬′৩৪.৪২″ উত্তর ৭°৩৮′২৮.৫৪″ পূর্ব / ৪৫.১০৯৫৬১১° উত্তর ৭.৬৪১২৬১১° পূর্ব / 45.1095611; 7.6412611 (স্তাদিও দেল্লে আলপি)
ধারণক্ষমতা: ৭২,৬৯৮ ধারণক্ষমতা: ৮৫,৭০০ ধারণক্ষমতা: ৭৪,০০০ ধারণক্ষমতা: ৬৮,০০০
     
বারি ভেরোনা
স্তাদিও সান নিকোলা স্তাদিও মার্ক’আন্তোনিও বেন্তেগোদি
৪১°৫′৫.০৫″ উত্তর ১৬°৫০′২৪.২৬″ পূর্ব / ৪১.০৮৪৭৩৬১° উত্তর ১৬.৮৪০০৭২২° পূর্ব / 41.0847361; 16.8400722 (স্তাদিও সান নিকোলা) ৪৫°২৬′৭.২৮″ উত্তর ১০°৫৮′৭.১৩″ পূর্ব / ৪৫.৪৩৫৩৫৫৬° উত্তর ১০.৯৬৮৬৪৭২° পূর্ব / 45.4353556; 10.9686472 (স্তাদিও মার্ক’আন্তোনিও বেন্তেগোদি)
ধারণক্ষমতা: ৫৬,০০০ ধারণক্ষমতা: ৪২,০০০
 
ফ্লোরেন্স কালিয়ারি
স্তাদিও আর্তেমিও ফ্রাঞ্চি স্তাদিও সান্ত'এলিয়া
৪৩°৪৬′৫০.৯৬″ উত্তর ১১°১৬′৫৬.১৩″ পূর্ব / ৪৩.৭৮০৮২২২° উত্তর ১১.২৮২২৫৮৩° পূর্ব / 43.7808222; 11.2822583 (স্তাদিও আর্তেমিও ফ্রাঞ্চি) ৩৯°১১′৫৭.৮২″ উত্তর ৯°৮′৫.৮৩″ পূর্ব / ৩৯.১৯৯৩৯৪৪° উত্তর ৯.১৩৪৯৫২৮° পূর্ব / 39.1993944; 9.1349528 (স্তাদিও সান্ত’এলিয়া)
ধারণক্ষমতা: ৪১,০০০ ধারণক্ষমতা: ৪০,০০০
   
বোলোনিয়া উদিনে পালেরমো জেনোয়া
স্তাদিও রেনাতো দাল’আরা স্তাদিও ফ্রিউলি স্তাদিও লা ফাভোরিতা স্তাদিও লুইজি ফেরারিস
৪৪°২৯′৩২.৩৩″ উত্তর ১১°১৮′৩৪.৮০″ পূর্ব / ৪৪.৪৯২৩১৩৯° উত্তর ১১.৩০৯৬৬৬৭° পূর্ব / 44.4923139; 11.3096667 (স্তাদিও রেনাতো দাল’আরা) ৪৬°৪′৫৩.৭৭″ উত্তর ১৩°১২′০.৪৯″ পূর্ব / ৪৬.০৮১৬০২৮° উত্তর ১৩.২০০১৩৬১° পূর্ব / 46.0816028; 13.2001361 (স্তাদিও ফ্রিউলি) ৩৮°৯′৯.৯৬″ উত্তর ১৩°২০′৩২.১৯″ পূর্ব / ৩৮.১৫২৭৬৬৭° উত্তর ১৩.৩৪২২৭৫০° পূর্ব / 38.1527667; 13.3422750 (স্তাদিও রেঞ্জো বারবেরা) ৪৪°২৪′৫৯.১৫″ উত্তর ৮°৫৭′৮.৭৪″ পূর্ব / ৪৪.৪১৬৪৩০৬° উত্তর ৮.৯৫২৪২৭৮° পূর্ব / 44.4164306; 8.9524278 (স্তাদিও লুইজি ফেরারিস)
ধারণক্ষমতা: ৩৯,০০০ ধারণক্ষমতা: ৩৮,০০০ ধারণক্ষমতা: ৩৬,০০০ ধারণক্ষমতা: ৩৬,০০০
       


স্কোয়াডসমূহ

সম্পাদনা

১৯৮৬ বিশ্বকাপের মত ১৯৯০ বিশ্বকাপেও প্রতিটি স্কোয়াড ২২ সদস্য বিশিষ্ট ছিল। ইনজুরি আক্রান্ত খেলোয়াড়দের প্রতিস্থাপন করাতেও বৈধতা ছিল। দুইজন গোলরক্ষক: আর্জেন্টিনার আনহেন কমিজ্জো এবং ইংল্যান্ডের ডেভ বিস্যান্টকে ইনজুরির কারণে বদলি করা হয়। তাদের স্থানে বদলি হিসেবে আসেন আর্জেন্টিনার নেরি পুম্পিদো এবং ইংল্যান্ডের ডেভিড সিম্যান

ম্যাচ অফিসিয়াল

সম্পাদনা

৩৪টি দেশের ৪১জন ম্যাচ অফিসিয়ালকে প্রতিযোগিতায় রেফারি এবং সহকারী রেফারি হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। বাঁকা হরফে লেখা অফিসিয়ালরা শুধুমাত্র সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিযোগিতায় রেফারিদের জাসিঃ ছিল কালো রঙের (গ্রুপ সি এর দুইটি খেলায় রেফারিরা লাল রঙের জার্সি পরে মাঠে নামেন। কেননা ঐ দুই খেলায় স্কটল্যান্ড গাঢ় নীল রঙের জার্সি পরে মাঠে নামে)।

আফ্রিকা
এশিয়া
ইউরোপ

উত্তর এবং মধ্য আমেরিকা
ওসেনিয়া
দক্ষিণ আমেরিকা

গ্রুপসমূহ

সম্পাদনা

১৯৮৯ সালের ৭ ডিসেম্বর, সিডিং এর ছয়টি দলের নাম ঘোষণা করে ফিফা।[১৩] এই দলগুলোকে তাদের সিডিং র‍্যাংক অনুযায়ী ছয়টি গ্রুপে স্থাপন করা হয়। (১ম সিড গ্রুপ এ তে, ২য় সিড গ্রুপ বি তে ইত্যাদি)।

প্রাথমিকভাবে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ এবং আনুষঙ্গিকভাবে ১৯৮২ বিশ্বকাপে দলগুলোর পারফরমেন্সের ভিত্তিতে সিড নির্ধারণ করে ফিফা। সিডিং এ আয়োজক ইতালিকে প্রথম স্থানে রাখা হয়, যদিও তারা ১৯৮৬ বিশ্বকাপের শেষ আটে পৌছাতে ব্যর্থ হয়েছিল। এর ফলে ফিফাকে ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়া তিনটি দলের (ব্রাজিল, ইংল্যান্ড অথবা স্পেন) একটিকে বেছে নিতে হয়।

১৯৮২ বিশ্বকাপের পরফরমেন্স সেই সাথে সমগ্র বিশ্বকাপের পারফরমেন্সের ভিত্তিতে ব্রাজিলকে সিডিং এ তৃতীয় স্থানে রাখা হয়। ফিফা সিডিং এ ইংল্যান্ডকে স্পেনের পূর্বে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। স্পেন ১৯৮৬ বিশ্বকাপে পেনাল্টিতে পরাজিত হয়, অন্যদিকে, ইংল্যান্ড পরাজিত হয় ৯০ মিনিটেই; উভয় দলই ১৯৮২ বিশ্বকাপে দ্বিতীয় পর্বে পৌছায়, কিন্ত স্পেন ১৯৭৮ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে, অন্যদিকে ইংল্যান্ড অংশগ্রহণে ব্যর্থ হয়। অবশ্য, পরবর্তীতে ফিফা প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন যে স্পেনকে সিড করা হবে।[১৪]

পাত্র ১ পাত্র ২ পাত্র ৩ পাত্র ৪

  ইতালি (১ম)
  আর্জেন্টিনা (২য়)
  ব্রাজিল (৩য়)
  পশ্চিম জার্মানি (৪র্থ)
  বেলজিয়াম (৫ম)
  ইংল্যান্ড (৬ষ্ঠ)

  অস্ট্রিয়া
  নেদারল্যান্ডস
  স্কটল্যান্ড
  স্পেন
  সোভিয়েত ইউনিয়ন
  যুগোস্লাভিয়া

  কলম্বিয়া
  চেকোস্লোভাকিয়া
  প্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ড
  রোমানিয়া
  সুইডেন
  উরুগুয়ে

  ক্যামেরুন
  কোস্টা রিকা
  মিশর
  দক্ষিণ কোরিয়া
  সংযুক্ত আরব আমিরাত
  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

চূড়ান্ত ড্র

সম্পাদনা

১৯৮৯ সালের ৯ ডিসেম্বর, রোমের পালাজেত্তো দেল্লো স্পোর্তে ড্র অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে গ্রুপ লাইন আপ এবং ম্যাচ অর্ডার নির্ধারিত হয়। এই অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ইতালীয় টেলিভিশন উপস্থাপক পিপ্পো বাউদো। ড্র পরিচালনা করেন ইতালীয় অভিনেত্রী সোফিয়া লরেন এবং অপেরা গায়িকা লুসিয়ানো পাভারোত্তি, তাদের সাথে ছিলেন ফিফার তত্‍কালীন সাধারণ সম্পাদক সেপ ব্লাটার.[১৫]

এই ড্র অনুষ্ঠানটি ফিফার সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী অনুষ্ঠান ছিল। ড্রয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন পেলে, ববি মুর এবং কার্ল-হাইন্ৎস রুমেনিগে। এছাড়া অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতার অফিসিয়াল থিম সঙ্গীত "আন'ইস্তেত ইতালিয়ানা" পরিবেশন করেন এদোয়ার্দো বেন্নাতো এবং হিয়ান্না নান্নিনি[১৬]

 
১৯৯০ বিশ্বকাপের মাসকট চাও

অনুষ্ঠানে বিশ্বকাপের অফিসিয়াল মাসকটও চাও (Ciao) উন্মোচন করা হয়। যা একটি কাঠির আকৃতির মানবমূর্তি, যার মাথা একটি ফুটবল এবং তার গায়ের রং ইতালির জাতীয় পতাকার তিন রঙে।[১৭] মাসকটের নামটি একটি ইতালীয় অভিবাদন, যার অর্থ হ্যালো।

প্রতিযোগিতা পর্যালোচনা

সম্পাদনা

বিশ্বকাপের মূলপর্ব ৮ জুন থেকে শুরু হয় এবং শেষ হয় ৮ জুলাই। প্রতিযোগিতার বিন্যাস ছিল ১৯৮৬ এর প্রতিযোগিতার মতই, যেখানে অংশগ্রহণ করে ২৪টি দল এবং তাদেরকে ছয়টি গ্রুপে ভাগ করা হয়। প্রতিটি গ্রুপ চারটি করে দল নিয়ে গঠিত হয়। প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুই দল এবং ছয়টি গ্রুপ থেকে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী সেরা চারটি দল নকআউট পর্বে খেলার সুযোগ পায়। পুরো প্রতিযোগিতা জুড়ে মোট ৫২টি খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

নেতিবাচক কৌশল

সম্পাদনা

এই প্রতিযোগিতায় গড়ে প্রতি খেলায় সবচেয়ে কম সংখ্যক গোল হয়েছিল। এছড়াও ১৬টি লাল কার্ড দেখানো হয়েছিল, যা সে সময়ের একটি রেকর্ড। নকআউট পর্বে অনেক দলের কৌশল ছিল খেলাটিকে ১২০ মিনিট পর্যন্ত সমতায় রাখা এবং অতঃপর পেনাল্টি-শুটআউটে নিজেদের ভাগ্য পরীক্ষা করা। নকআউট পর্বের চারটি খেলা পেনাল্টি-শুটআউটে নিষ্পত্তি হয়, যা একটি রেকর্ড (পরবর্তীতে ২০০৬ বিশ্বকাপেও এমনটি ঘটে)। অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো মোট খেলার সংখ্যা ছিল আট। এটি ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসে একটি রেকর্ড, যা আজও বহাল আছে।

এধরনের রক্ষণাত্মক কৌশলের প্রধান উদাহরণ হল আয়ারল্যান্ড এবং আর্জেন্টিনা। আয়ারল্যান্ড প্রতিযোগিতায় তাদের পাঁচটি খেলায় মাত্র দুইটি গোল করে। কোয়ার্টার ফাইনালে ইতালির বিপক্ষে পরাজিত হওয়ার পূর্বে, তাদের প্রত্যেকটি খেলা ড্র হয়। প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলায় অংশগ্রহণকারী আর্জেন্টিনা পুরো প্রতিযোগিতার মাত্র পাঁচটি গোল করে (২০১০ সাল অনুসারে, প্রতিযোগিতার ফাইনালে অংশগ্রহণকারী কোন দলের সর্বনিম্ন গোল)। আর্জেন্টিনা প্রথম দল হিসেবে কোয়ার্টার-ফাইনাল এবং সেমি-ফাইনাল উভয় খেলাতেই পেনাল্টি-শুটআউটে জয় লাভ করে প্রতিযোগিতার ফাইনালে পৌছায়। এছাড়া, আর্জেন্টিনাই প্রথম দল যারা ফাইনালে কোন গোল করতে পারেনি এবং তাদের একজন খেলোয়াড়কে ফাইনালে লাল কার্ড দেখানো হয়।

মূলত দলগুলোর এমন রক্ষণাত্মক প্রবনতার কারণেই ১৯৯৪ বিশ্বকাপ থেকে ফিফা ব্যাক-পাস আইন চালু করে। এই আইন চালু করা হয় খেলায় দলগুলোর সময় অপচয়কে কঠিন করার জন্য। এছাড়া, আক্রমণাত্মক খেলাকে উত্‍সাহিত করার জন্য, খেলায় জয় লাভ করলে দুই পয়েন্টের পরিবর্তে তিন পয়েন্ট দেওয়ার বিধানও চালু করা হয়।

ক্যামেরুনের উত্থান

সম্পাদনা

ক্যামেরুন জাতীয় দল প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার-ফাইনাল পর্যন্ত পৌছায়, যদিও সেখানে তারা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পরাজিত হয়। ক্যামেরুনের বিশ্বকাপ মিশন শুরু হয় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে হারানোর মাধ্যমে। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের রানার-আপ সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে পরাজিত হলেও, তারা গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করে। ক্যামেরুনের সাফল্যের পেছনে অবদান ছিল রজের মিল্লার। ৩৮ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় অবসর গ্রহণ করলেও, ক্যামেরুনের রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত অনুরোধে শেষ মূহুর্তে জাতীয় দলে যোগ দেন। তার চার গোল এবং জাঁকালোভাবে গোল উদ্‌যাপন তাকে প্রতিযোগিতার অন্যতম বড় তারকায় পরিণত করে। তারা শেষ আটে পৌছায়, যা কোন আফ্রিকান দলের ক্ষেত্রে বিশ্বকাপে সে সময়কার সবচেয়ে বড় সাফল্য। (পরবর্তীতে সেনেগাল ২০০২ বিশ্বকাপে এবং ঘানা ২০১০ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার-ফাইনাল পর্যন্ত পৌছায়)। বিশ্ব মঞ্চে তাদের এই সফলতা ছিল আফ্রিকান ফুটবলের সবচেয়ে বড় সফলতা এবং এরপর ফিফা পরবর্তী বিশ্বকাপ থেকে আফ্রিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বের জন্য আলাদা স্থানের বরাদ্দ দেয়।

শেষ চারের সকলেই সাবেক চ্যাম্পিয়ন

সম্পাদনা

ক্যামেরুন, কলম্বিয়া এবং কোস্টা রিকার মত দলগুলোর দূর্দান্ত নৈপূন্যের পরও সেমি-ফাইনালের চারটি দল ছিল সাবেক চার চ্যাম্পিয়ন। দলগুলো হল: আর্জেন্টিনা, ইংল্যান্ড, ইতালি এবং পশ্চিম জার্মানি। এই চারটি দলের জয় করা মোট বিশ্বকাপ শিরোপার সংখ্যা আট। এর আগে এমন চার চ্যাম্পিয়নের সেমি-ফাইনাল ঘটেছিল ১৯৭০ বিশ্বকাপে। যে দলগুলো প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন, রানার-আপ এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করে তাদের প্রত্যেকেই পূর্বেকার প্রতিযোগিতায় ফাইনালে পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিল।

গ্রুপ পর্ব

সম্পাদনা
 

খেলা শুরুর সময়গুলো স্থানীয় সময় অনুযায়ী (সিইএসটি/ইউটিসি+২)

গ্রুপ পর্বে ২৪টি দলকে ছয়টি গ্রুপে ভাগ করা হয়। প্রতিটি গ্রুপ গঠিত হয় চারটি দল নিয়ে। প্রতিটি গ্রুপে মোট খেলার সংখ্যা ছিল ছয়টি, যেখানে গ্রুপের প্রত্যেকটি দল পরস্পরের সাথে একটি করে খেলায় মুখোমুখি হয়। খেলায় জয় লাভের জন্য দুই পয়েন্ট, ড্রয়ের জন্য এক পয়েন্ট এবং পরাজয়ের জন্য শূন্য পয়েন্ট প্রদান করা হয়। প্রতিটি গ্রুপের প্রথম দুইটি দল এবং সেই সাথে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী সেরা চারটি দল ১৬ দলের পর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।

যদি দলগুলোর পয়েন্ট সমান হয়, তবে তাদেরকে নিন্মোক্ত পদ্ধতি অনুযায়ী তালিকাভুক্ত করা হয়:

  1. গ্রুপ পর্বের তিনটি খেলায় সর্বাধিক গোল ব্যবধান
  2. গ্রুপ পর্বের তিনটি খেলায় মোট পক্ষে গোল
  3. এরপরও যদি দলগুলোর অবস্থান একই থাকে, তবে দলগুলোকে নিয়ে একটি ক্ষুদ্র গ্রুপ তৈরি করা হয় এবং নিম্নোক্ত পদ্ধতিতে তাদের তালিকাভুক্ত করা হয়:
    1. টাই এ অন্যান্য দলের বিপক্ষে খেলায় অর্জিত সর্বাধিক পয়েন্ট
    2. টাই এ অন্যান্য দলের বিপক্ষে খেলায় অর্জিত সর্বাধিক গোল ব্যবধান
    3. টাই এ অন্যান্য দলের বিপক্ষে খেলায় সর্বাধিক গোলের সংখ্যা
  4. যদি এরপরও দলগুলোর অবস্থান একই থাকে তবে ফিফা কর্তৃক লটারির মাধ্যমে তালিকা নির্ধারণের নিয়ম করা হয়।

গ্রুপ এ

সম্পাদনা
দল খেলা
জয়
ড্র
পরাজয়
স্বগো
বিগো
গোপা
পয়েন্ট
  ইতালি +৪
  চেকোস্লোভাকিয়া +৩
  অস্ট্রিয়া −১
  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র −৬
ইতালি  ১–০  অস্ট্রিয়া
শিলাচি   ৭৮' প্রতিবেদন




ইতালি  ২–০  চেকোস্লোভাকিয়া
শিলাচি   ৯'
ব্যাজিও   ৭৮'
প্রতিবেদন
দর্শক সংখ্যা: ৭৩,৩০৩

গ্রুপ বি

সম্পাদনা
দল খেলা
জয়
ড্র
পরাজয়
স্বগো
বিগো
গোপা
পয়েন্ট
  ক্যামেরুন −২
  রোমানিয়া +১
  আর্জেন্টিনা +১
  সোভিয়েত ইউনিয়ন
আর্জেন্টিনা  ০–১  ক্যামেরুন
প্রতিবেদন ওমাম-বিয়িক   ৬৭'
দর্শক সংখ্যা: ৭৩,৭৮০



ক্যামেরুন  ২–১  রোমানিয়া
মিল্লা   ৭৬'৮৬' প্রতিবেদন বালিন্ত   ৮৮'
দর্শক সংখ্যা: ৩৮,৬৮৭


গ্রুপ সি

সম্পাদনা
দল খেলা
জয়
ড্র
পরাজয়
স্বগো
বিগো
গোপা
পয়েন্ট
  ব্রাজিল +৩
  কোস্টা রিকা +১
  স্কটল্যান্ড −১
  সুইডেন −৩
ব্রাজিল  ২–১  সুইডেন
কারেকা   ৪০'৬৩' প্রতিবেদন ব্রোলিন   ৭৯'


ব্রাজিল  ১–০  কোস্টা রিকা
মিলেখ   ৩৩' প্রতিবেদন


ব্রাজিল  ১–০  স্কটল্যান্ড
মিলেখ   ৮২' প্রতিবেদন

গ্রুপ ডি

সম্পাদনা
দল খেলা
জয়
ড্র
পরাজয়
স্বগো
বিগো
গোপা
পয়েন্ট
  পশ্চিম জার্মানি ১০ +৭
  যুগোস্লাভিয়া +১
  কলম্বিয়া +১
  সংযুক্ত আরব আমিরাত ১১ −৯

পশ্চিম জার্মানি  ৪–১  যুগোস্লাভিয়া
ম্যাথাউস   ২৮'৬৪'
ক্লিন্সমান   ৩৯'
ভোলার   ৭০'
প্রতিবেদন জোজিচ   ৫৫'
দর্শক সংখ্যা: ৭৪,৭৬৫




গ্রুপ ই

সম্পাদনা
দল খেলা
জয়
ড্র
পরাজয়
স্বগো
বিগো
গোপা
পয়েন্ট
  স্পেন +৩
  বেলজিয়াম +৩
  উরুগুয়ে −১
  দক্ষিণ কোরিয়া −৫

উরুগুয়ে  ০–০  স্পেন
প্রতিবেদন


দক্ষিণ কোরিয়া  ১–৩  স্পেন
হোয়াংবো কোয়ান   ৪২' (ফ্রি কিক) প্রতিবেদন মিচেল   ২২'৬১' (ফ্রি কিক)৮১'


দক্ষিণ কোরিয়া  ০–১  উরুগুয়ে
প্রতিবেদন ফোনেস্কা   ৯০'
দর্শক সংখ্যা: ২৯,০৩৯

গ্রুপ এফ

সম্পাদনা
দল খেলা
জয়
ড্র
পরাজয়
স্বগো
বিগো
গোপা
পয়েন্ট
  ইংল্যান্ড +১
  প্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ড
  নেদারল্যান্ডস
  মিশর −১





তৃতীয় স্থান অর্জনকারী দলের তালিকা

সম্পাদনা
গ্রুপ দল খেলা জয় ড্র পরাজয় স্বগো বিগো গোপা পয়েন্ট
বি   আর্জেন্টিনা +১
ডি   কলম্বিয়া +১
এফ   নেদারল্যান্ডস
  উরুগুয়ে −১
  অস্ট্রিয়া −১
সি   স্কটল্যান্ড −১

নকআউট পর্ব

সম্পাদনা

নকআউট পর্বে অংশগ্রহণ করে ১৬টি দল। এই পর্বটি চারটি পর্বের সমন্বয়ে গঠিত: ১৬ দলের পর্ব, কোয়ার্টার-ফাইনাল, সেমি-ফাইনাল এবং ফাইনাল। প্রতিটি পর্বের বিজয়ী দল পরবর্তী পর্বে খেলার সুযোগ পায়। যদি কোন খেলা ৯০ মিনিটের মধ্যে মীমাংসিত না হয় তবে ৩০ মিনিটের অতিরিক্ত সময় প্রদান করা হয় (১৫ মিনিট করে দুইবার), যদি তাতেও মীমাংসা না হয় তবে পেনাল্টি শুটআউটের ব্যবস্থা করা হয়।

 
১৬ দলের পর্বকোয়ার্টার-ফাইনালসেমি-ফাইনালফাইনাল
 
              
 
২৪ জুন – মিলান
 
 
  পশ্চিম জার্মানি
 
১ জুলাই – মিলান
 
  নেদারল্যান্ডস
 
  পশ্চিম জার্মানি
 
২৩ জুন – বারি
 
  চেকোস্লোভাকিয়া
 
  চেকোস্লোভাকিয়া
 
৪ জুলাই – তুরিন
 
  কোস্টা রিকা
 
  পশ্চিম জার্মানি (পেন.)১ (৪)
 
২৬ জুন – বোলোনিয়া
 
  ইংল্যান্ড১ (৩)
 
  ইংল্যান্ড (অ.স.প.)
 
১ জুলাই – নেপল্‌স
 
  বেলজিয়াম
 
  ইংল্যান্ড (অ.স.প.)
 
২৩ জুন – নেপল্‌স
 
  ক্যামেরুন
 
  ক্যামেরুন (অ.স.প.)
 
৮ জুলাই – রোম
 
  কলম্বিয়া
 
  পশ্চিম জার্মানি
 
২৫ জুন – রোম
 
  আর্জেন্টিনা
 
  ইতালি
 
৩০ জুন – রোম
 
  উরুগুয়ে
 
  ইতালি
 
২৫ জুন – জেনোয়া
 
  প্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ড
 
  প্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ড (পেন.)০ (৫)
 
৩ জুলাই – নেপল্‌স
 
  রোমানিয়া০ (৪)
 
  ইতালি (পেন.)১ (৩)
 
২৬ জুন – ভেরোনা
 
  আর্জেন্টিনা১ (৪) তৃতীয় স্থান
 
  স্পেন
 
৩০ জুন – ফ্লোরেন্স৭ জুলাই – বারি
 
  যুগোস্লাভিয়া (অ.স.প.)
 
  যুগোস্লাভিয়া (পেন.)০ (২)  ইতালি
 
২৪ জুন – তুরিন
 
  আর্জেন্টিনা০ (৩)   ইংল্যান্ড
 
  ব্রাজিল
 
 
  আর্জেন্টিনা
 

১৬ দলের পর্ব

সম্পাদনা
ক্যামেরুন  ২–১ (অ.স.প.)  কলম্বিয়া
মিল্লা   ১০৬'১০৯' প্রতিবেদন রেদিন   ১১৫'

চেকোস্লোভাকিয়া  ৪–১  কোস্টা রিকা
স্কুহ্‌রাভি   ১২'৬৩'৮২'
কুবিক   ৭৫' (ফ্রি কিক)
প্রতিবেদন গোঞ্জালেজ   ৫৪'




ইতালি  ২–০  উরুগুয়ে
শিলাচি   ৬৫'
সেরেনা   ৮৩'
প্রতিবেদন


কোয়ার্টার-ফাইনাল

সম্পাদনা



ইংল্যান্ড  ৩–২ (অ.স.প.)  ক্যামেরুন
প্লাট   ২৫'
লিনেকার   ৮৩' (পে.)১০৫' (পে.)
প্রতিবেদন কুন্দে   ৬১' (পে.)
একেকে   ৬৫'

সেমি-ফাইনাল

সম্পাদনা

তৃতীয় স্থান নির্ধারণী

সম্পাদনা
ইতালি  ২–১  ইংল্যান্ড
ব্যাজিও   ৭১'
শিলাচি   ৮৬' (পে.)
প্রতিবেদন প্লাট   ৮১'

ফাইনাল

সম্পাদনা

পুরস্কারসমূহ

সম্পাদনা
গোল্ডেন বুট বিজয়ী গোল্ডেন বল বিজয়ী ফিফা ফেয়ার প্লে শিরোপা
  সালভাতর শিলাচি   সালভাতর শিলাচি   ইংল্যান্ড

অল-স্টার দল

সম্পাদনা
গোলরক্ষক ডিফেন্ডার মিডফিল্ডার ফরোয়ার্ড

গোলদাতা খেলোয়াড়গন

সম্পাদনা

লাল কার্ড প্রাপ্ত খেলোয়াড়গন

সম্পাদনা

ফিফার চূড়ান্ত তালিকা

সম্পাদনা

প্রতিযোগিতার পর, ১৯৯০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী সকল দলকে নিয়ে ফিফা একটি তালিকা প্রকাশ করে। যা প্রতিযোগিতায় দলগুলোর ফলাফল এবং মানের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়।[১৮]

ফাইনাল

  1.   পশ্চিম জার্মানি
  2.   আর্জেন্টিনা

৩য় এবং ৪র্থ স্থান

  1.   ইতালি
  2.   ইংল্যান্ড

কোয়ার্টার-ফাইনালে বিদায় নেয়া দল

  1.   যুগোস্লাভিয়া
  2.   চেকোস্লোভাকিয়া
  3.   ক্যামেরুন
  4.   প্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ড

১৬ দলের পর্বে বিদায় নেয়া দল

  1.   ব্রাজিল
  2.   স্পেন
  3.   বেলজিয়াম
  4.   কোস্টা রিকা
  5.   রোমানিয়া
  6.   কলম্বিয়া
  7.   নেদারল্যান্ডস
  8.   উরুগুয়ে

গ্রুপ পর্বে বিদায় নেয়া দল

  1.   সোভিয়েত ইউনিয়ন
  2.   স্কটল্যান্ড
  3.   অস্ট্রিয়া
  4.   মিশর
  5.   সুইডেন
  6.   দক্ষিণ কোরিয়া
  7.   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
  8.   সংযুক্ত আরব আমিরাত

পরিসংখ্যান

সম্পাদনা
  • সর্বোচ্চ জয়: ইতালি (৬)
  • সর্বোচ্চ পরাজয়: কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, সুইডেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র (৩)
  • প্রথম গোল: ফঁসুয়া ওমাম বিয়িক (ক্যামেরুন বনাম আর্জেন্টিনা; গ্রুপ বি, ৮ জুন)
  • খেলায় দ্রুততম গোল: ৩ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডসাফেত সুশিচ (ইয়োগোস্লাভিয়া বনাম সংযুক্ত আরব আমিরাত; গ্রুপ ডি, ১৯ জুন)
  • একটি খেলায় সবচেয়ে দেরিতে গোল: ১১৯ মিনিটডেভিড প্লাট (ইংল্যান্ড বনাম বেলজিয়াম; ১৬ দলের পর্ব, ১৬ জুন)
  • সর্বোচ্চ জয়: ৫–১ – যুক্তরাষ্ট্র বনাম চেকস্লোভাকিয়া এবং পশ্চিম জার্মানি বনাম সংযুক্ত আরব আমিরাত
  • প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ গোল (দলীয়): পশ্চিম জার্মানি (১৫)
  • প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ গোল (খেলোয়াড়): সালভাতর শিলাচি (ইতালি) (৬)
  • প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে দেরিতে গোল (দলীয়): মিশর এবং কোরিয়া প্রজাতন্ত্র (১)
  • একটি খেলায় সর্বোচ্চ গোল: (যুক্তরাষ্ট্র ১ চেকস্লোভাকিয়া ৫; পশ্চিম জার্মানি ৫ সংযুক্ত আরব আমিরাত ১)
  • একটি খেলায় সর্বোচ্চ গোল (খেলোয়াড়): , মিচেল (স্পেন বনাম কোরিয়া প্রজাতন্ত্র) এবং তোমাশ স্কুহ্‌রাভি (চেকস্লোভাকিয়া বনাম কোস্টা রিকা)
  • সর্বনিম্ন বিপক্ষে গোল: ব্রাজিল, মিশর এবং ইতালি (২)
  • সর্বমোট গোল: ১১৫ (গড়ে প্রতি খেলায় ২.২১ গোল, বিশ্বকাপের ইতিহাসে রেকর্ড সর্বনিম্ন)
  • সর্বোচ্চ ক্লিন শিট: ইতালি (৫)
  • পুরস্কৃত পেনাল্টির সংখ্যা: ১৮ (১৩টি সফল, ৫টি ব্যর্থ)[১৯]
  • একটি খেলায় সর্বোচ্চ হলুদ কার্ড: অস্ট্রিয়া বনাম যুক্তরাষ্ট্র (গ্রুপ এ, ১৯ জুন)
  • প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ হলুদ কার্ড: আর্জেন্টিনা (২২)
  • মোট হলুদ কার্ড: ১৬২[২০]
  • প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ লাল কার্ড: আর্জেন্টিনা (৩)
  • মোট লাল কার্ড: ১৬ (২৪ দলের বিশ্বকাপে রেকর্ড সর্বোচ্চ)
  • সর্বোচ্চ উপস্থিতি: ৭৪,৭৬৫পশ্চিম জার্মানি বনাম ইয়োগোস্লাভিয়া (গ্রুপ ডি, ১০ জুন)
  • সর্বনিম্ন উপস্থিতি: ২৭,৮৩৩ইয়োগোস্লাভিয়া বনাম সংযুক্ত আরব আমিরাত (গ্রুপ ডি, ১৯ জুন)
  • গড় উপস্থিতি: ৪৮,৩৯১ (বিশ্বকাপের ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ)
  • সর্বজ্যেষ্ঠ খেলোয়াড়: পিটার শিলটন (ইংল্যান্ড) (৪০ বছর ২৯২ দিন)
  • সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়: রোনাল্‌দ গোঞ্জালেজ ব্রেনেস (কোস্টা রিকা) (১৯ বছর ৩০৭ দিন)
  • প্রতিযোগিতায় ইতালির ৬ জয়, ১ ড্র এবং ০ পরাজয় ছিল বিশ্বকাপের ইতিহাসে কোন দলের সর্বোচ্চ জয়ের শতকরা হার, যারা বিশ্বকাপ জয়ে ব্যর্থ হয়।
  • বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় দল হিসেবে কোন খেলায় জয় অর্জন ছাড়াই আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্র প্রতিযোগিতার শেষ আটে পৌছায়। (১৯৩৮ বিশ্বকাপে অস্ট্রিয়া প্রতিযোগিতা থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর সুইডেন কোন খেলায় জয় ছাড়াই শেষ আটে পৌছায়)।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "L'Alta Definizione a Torino 1986 – 2006 di Marzio Barbero e Natasha Shpuza" (ইতালীয় ভাষায়)। Crit.rai.it। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০১৩ 
  2. "Italy 1990"বিবিসি স্পোর্ট। ১৭ এপ্রিল ২০০২। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  3. Brewin, John; Williamson, Martin (১০ নভেম্বর ২০০৯)। "World Cup 1990"ইএসপিএন সকারণেট। ২৬ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  4. Glanville, Brian (২০০৫)। The Story of the World Cup। Faber। আইএসবিএন 0-571-22944-1 
  5. Freddi, Cris (২০০৬)। Complete Book of the World Cup। HarperSport। আইএসবিএন 978-0-00-722916-1 
  6. "FIFA World Cup™ Record – Organisation"। ৩ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  7. "World Cup and Te