কলম্বিয়া জাতীয় ফুটবল দল

জাতীয় ফুটবল দল

কলম্বিয়া জাতীয় ফুটবল দল (স্পেনীয়: Selección de fútbol de Colombia, ইংরেজি: Colombia national football team) হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফুটবলে কলম্বিয়ার প্রতিনিধিত্বকারী পুরুষদের জাতীয় দল, যার সকল কার্যক্রম কলম্বিয়ার ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা কলম্বীয় ফুটবল ফেডারেশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই দলটি ১৯৩৬ সাল হতে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার এবং একই বছর হতে তাদের আঞ্চলিক সংস্থা কনমেবলের সদস্য হিসেবে রয়েছে। ১৯২৬ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি তারিখে, কলম্বিয়া প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করেছে; কলম্বিয়ার বারাংকিলায় অনুষ্ঠিত উক্ত ম্যাচে কলম্বিয়া কোস্টা রিকাকে ৪–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করেছে।

কলম্বিয়া
দলের লোগো
ডাকনামলস কাফেতেরোস (কফি উৎপাদক)
লা ত্রিকলর (ত্রিরঙ)
অ্যাসোসিয়েশনকলম্বীয় ফুটবল ফেডারেশন
কনফেডারেশনকনমেবল (দক্ষিণ আমেরিকা)
প্রধান কোচকার্লোশ কায়রোশ
অধিনায়করাদেমাল ফ্যালকাও
সর্বাধিক ম্যাচকার্লোস বালদেরামা (১১১)
শীর্ষ গোলদাতারাদেমাল ফ্যালকাও (৩৬)
মাঠএস্তাদিও মেত্রোপলিতানো
ফিফা কোডCOL
ওয়েবসাইটfcf.com.co
প্রথম জার্সি
দ্বিতীয় জার্সি
ফিফা র‌্যাঙ্কিং
বর্তমান ১৪ বৃদ্ধি ১ (২১ ডিসেম্বর ২০২৩)[১]
সর্বোচ্চ(জুলাই–আগস্ট ২০১৩, সেপ্টেম্বর ২০১৪ – মার্চ ২০১৫, জুন–আগস্ট ২০১৬)
সর্বনিম্ন৫৪ (জুন ২০১১)
এলো র‌্যাঙ্কিং
বর্তমানবৃদ্ধি ৩ (১২ জানুয়ারি ২০২৪)[২]
সর্বোচ্চ(জুন ২০১৬)
সর্বনিম্ন৯৯ (মার্চ ১৯৫৭)
প্রথম আন্তর্জাতিক খেলা
 কলম্বিয়া ৪–০ কোস্টা রিকা 
(বারাংকিলা, কলম্বিয়া; ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯২৬)
বৃহত্তম জয়
 বাহরাইন ০–৬ কলম্বিয়া 
(রিফা, বাহরাইন; ২৬ মার্চ ২০১৫)
বৃহত্তম পরাজয়
 ব্রাজিল ৯–০ কলম্বিয়া 
(লিমা, পেরু; ২৪ মার্চ ১৯৫৭)[৩]
বিশ্বকাপ
অংশগ্রহণ৬ (১৯৬২-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যকোয়ার্টার-ফাইনাল (২০১৪)
কোপা আমেরিকা
অংশগ্রহণ২৪ (১৯৪৫-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যচ্যাম্পিয়ন (২০০১)
কনকাকাফ গোল্ড কাপ
অংশগ্রহণ৩ (২০০০-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যরানার-আপ (২০০০)
মধ্য আমেরিকান এবং ক্যারিবীয় গেমস
অংশগ্রহণ২ (১৯৩৮-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যচ্যাম্পিয়ন (১৯৪৬)
বলিভারীয় গেমস
অংশগ্রহণ৯ (১৯৩৮-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যচ্যাম্পিয়ন (১৯৫১)
কনফেডারেশন্স কাপ
অংশগ্রহণ১ (২০০৩-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যচতুর্থ স্থান (২০০৩)

৪৬,৬৯২ ধারণক্ষমতাবিশিষ্ট এস্তাদিও মেত্রোপলিতানো রবের্তো মেলেন্দেসে লা ত্রিকলর নামে পরিচিত এই দলটি তাদের সকল হোম ম্যাচ আয়োজন করে থাকে। এই দলের প্রধান কার্যালয় কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতায় অবস্থিত। বর্তমানে এই দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন কার্লোশ কায়রোশ এবং অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন গালাতাসারায়ের আক্রমণভাগের খেলোয়াড় রাদেমাল ফ্যালকাও

কলম্বিয়া এপর্যন্ত ৬ বার ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে সেরা সাফল্য হচ্ছে ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছানো, যেখানে তারা ব্রাজিলের কাছে ২–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে। অন্যদিকে, কোপা আমেরিকা কলম্বিয়া এপর্যন্ত ২২ বার অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে সেরা সাফল্য হচ্ছে ২০০১ কোপা আমেরিকার শিরোপা জয়লাভ করা, যেখানে তারা মেক্সিকোকে কাছে ১–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে।

রাদেমাল ফ্যালকাও, হামেস রদ্রিগেজ, কার্লোস বাকা, কার্লোস বালদেরামা এবং দাভিদ ওসপিনার মতো খেলোয়াড়গণ কলম্বিয়ার জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন।

ইতিহাস সম্পাদনা

কলম্বিয়া তাদের ফুটবল ইতিহাসে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। সাবেক মধ্যমাঠের খেলোয়াড় মার্কোস কোল বিশ্বকাপের ইতিহাসে একমাত্র অলিম্পিক গোল করে কীর্তিগাঁথা রচনা করেছেন। ১৯৬২ সালের ফিফা বিশ্বকাপে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে তিনি এ গোলটি করেন, যাতে সোভিয়েত দল ৪–০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা স্বত্ত্বেও খেলাটি ৪–৪ গোলে ড্র হয়। লক্ষণীয় যে, সোভিয়েত দলে লেভ ইয়াসিনের ন্যায় সর্বকালের সেরা গোলরক্ষকদের একজন এই খেলায় অংশ নিয়েছিলেন।

১৯৯০-এর দশকে কলম্বিয়া ফিফা বিশ্বকাপে তাদের শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছিল। ১৯৯৩ সালে প্রবল প্রতিপক্ষ আর্জেন্টিনার বিপক্ষে তারা ৫–০ গোলের বিরাট ব্যবধানে জয় পায়।[৪][৫] ১৯৯৫ সালে ওয়েম্বলিতে অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গোলরক্ষক রেনে ইগুইতা তার স্করপিয়ন কিকের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের আক্রমণ ব্যর্থ করেছিলেন। ২০০১ সালের কোপা আমেরিকা প্রতিযোগিতায় অস্কার করদোবা প্রথম ও একমাত্র গোলরক্ষক হিসেবে কোন গোল হজম করেননি। কলম্বিয়ার অন্যান্য তারকা খেলোয়াড়ের মধ্যে রয়েছেন কার্লোস বালদেরামাফাউস্তিনো আস্প্রিয়া। এ সময়কালে কলম্বিয়া দল ১৯৯০, ১৯৯৪১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। তবে, কেবলমাত্র ১৯৯০ বিশ্বকাপেই তারা দ্বিতীয় রাউন্ডে পৌঁছতে পেরেছিল।

র‌্যাঙ্কিং সম্পাদনা

ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে, ২০১৩ সালের জুলাই মাসে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে কলম্বিয়া তাদের ইতিহাসে সর্বপ্রথম সর্বোচ্চ অবস্থান (৩য়) অর্জন করে এবং ২০১১ সালের জুন মাসে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে তারা ৫৪তম স্থান অধিকার করে, যা তাদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে, বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে কলম্বিয়ার সর্বোচ্চ অবস্থান হচ্ছে ৩য় (যা তারা ২০১৬ সালে অর্জন করেছিল) এবং সর্বনিম্ন অবস্থান হচ্ছে ৯৯। নিম্নে বর্তমানে ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং এবং বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে অবস্থান উল্লেখ করা হলো:

ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং
২১ ডিসেম্বর ২০২৩ অনুযায়ী ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং[১]
অবস্থান পরিবর্তন দল পয়েন্ট
১২     মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৬৬৫.২৭
১৩     মরক্কো ১৬৬১.৬৯
১৪     কলম্বিয়া ১৬৫৫.২৯
১৫     মেক্সিকো ১৬৫২.৭
১৬     জার্মানি ১৬৩১.২২
বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং
১২ জানুয়ারি ২০২৪ অনুযায়ী বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং[২]
অবস্থান পরিবর্তন দল পয়েন্ট
    উরুগুয়ে ২০০৭
    বেলজিয়াম ১৯৯০
    কলম্বিয়া ১৯৮৪
১০     নেদারল্যান্ডস ১৯৭০
১১     ক্রোয়েশিয়া ১৯৫২

প্রতিযোগিতামূলক তথ্য সম্পাদনা

ফিফা বিশ্বকাপ সম্পাদনা

ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
সাল পর্ব অবস্থান ম্যাচ জয় ড্র হার স্বগো বিগো ম্যাচ জয় ড্র হার স্বগো বিগো
  ১৯৩০ ফিফার সদস্য নয় ফিফার সদস্য নয়
  ১৯৩৪
  ১৯৩৮ প্রত্যাখ্যান প্রত্যাখ্যান
  ১৯৫০ অংশগ্রহণ করেনি অংশগ্রহণ করেনি
  ১৯৫৪ নিষিদ্ধ
  ১৯৫৮ উত্তীর্ণ হয়নি
  ১৯৬২ গ্রুপ পর্ব ১৪তম ১১
  ১৯৬৬ উত্তীর্ণ হয়নি ১০
  ১৯৭০ ১২
  ১৯৭৪
  ১৯৭৮
  ১৯৮২
  ১৯৮৬ ১০
  ১৯৯০ ১৬ দলের পর্ব ১৪তম
  ১৯৯৪ গ্রুপ পর্ব ১৯তম ১৩
  ১৯৯৮ ২১তম ১৬ ২৩ ১৫
    ২০০২ উত্তীর্ণ হয়নি ১৮ ২০ ১৫
  ২০০৬ ১৮ ২৪ ১৬
  ২০১০ ১৮ ১৪ ১৮
  ২০১৪ কোয়ার্টার-ফাইনাল ৫ম ১২ ১৬ ২৭ ১৩
  ২০১৮ ১৬ দলের পর্ব ৯ম ১৮ ২১ ১৯
  ২০২২ অনির্ধারিত অনির্ধারিত
মোট কোয়ার্টার-ফাইনাল ৬/২১ ২২ ১০ ৩২ ৩০ ১৩৪ ৫০ ৪০ ৪৪ ১৮০ ১৫৯

অর্জন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "ফিফা/কোকা-কোলা বিশ্ব র‍্যাঙ্কিং"ফিফা। ২১ ডিসেম্বর ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  2. গত এক বছরে এলো রেটিং পরিবর্তন "বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং"eloratings.net। ১২ জানুয়ারি ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০২৪ 
  3. "Brasil 9–0 Colombia :: Copa América 1957 :: Ficha del Partido"ceroacero.es। ২৪ মার্চ ১৯৫৭। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১৪ 
  4. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৬ জুন ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৪ 
  5. "The Two Escobars HD (esp/eng) ESPN 6 of 11"। YouTube। ২০১০-১২-২৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৫-২৫ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা