ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দল
ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দল (ইংরেজি: England national football team) হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্বকারী পুরুষদের জাতীয় দল, যার সকল কার্যক্রম ইংল্যান্ডের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা দ্য ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই দলটি ১৯০৫ সাল হতে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার এবং ১৯৫৪ সাল হতে তাদের আঞ্চলিক সংস্থা উয়েফার সদস্য হিসেবে রয়েছে। ১৮৭২ সালের ৩০শে নভেম্বর তারিখে, ইংল্যান্ড প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করেছে; স্কটল্যান্ডের পার্টিকে অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডের মধ্যকার উক্ত ম্যাচটি ০–০ গোলে ড্র হয়েছে।
ডাকনাম | দ্য থ্রি লায়ন্স (ত্রিসিংহ) | ||
---|---|---|---|
অ্যাসোসিয়েশন | দ্য ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন | ||
কনফেডারেশন | উয়েফা (ইউরোপ) | ||
প্রধান কোচ | গ্যারেথ সাউথগেট | ||
অধিনায়ক | হ্যারি কেন | ||
সর্বাধিক ম্যাচ | পিটার শিল্টন (১২৫) | ||
শীর্ষ গোলদাতা | হ্যারি কেন (৬২) | ||
মাঠ | ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম | ||
ফিফা কোড | ENG | ||
ওয়েবসাইট | www | ||
| |||
ফিফা র্যাঙ্কিং | |||
বর্তমান | ৩ (২১ ডিসেম্বর ২০২৩)[১] | ||
সর্বোচ্চ | ৩ (আগস্ট ২০১২) | ||
সর্বনিম্ন | ২৭ (ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬) | ||
এলো র্যাঙ্কিং | |||
বর্তমান | ৫ ৩ (১২ জানুয়ারি ২০২৪)[২] | ||
সর্বোচ্চ | ১ (১৮৭২–১৮৭৬, ১৮৯২–১৯১১, ১৯৬৬–১৯৭০, ১৯৮৭–১৯৮৮) | ||
সর্বনিম্ন | ১৭ (জুন ১৯৯৫) | ||
প্রথম আন্তর্জাতিক খেলা | |||
স্কটল্যান্ড ০–০ ইংল্যান্ড (পার্টিক, স্কটল্যান্ড; ৩০ নভেম্বর ১৮৭২) | |||
বৃহত্তম জয় | |||
ইংল্যান্ড ১৩–০ আয়ারল্যান্ড (বেলফাস্ট, আয়ারল্যান্ড; ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৮২) | |||
বৃহত্তম পরাজয় | |||
হাঙ্গেরি ৭–১ ইংল্যান্ড (বুদাপেস্ট, হাঙ্গেরি; ২৩ মে ১৯৫৪) | |||
বিশ্বকাপ | |||
অংশগ্রহণ | ১৫ (১৯৫০-এ প্রথম) | ||
সেরা সাফল্য | চ্যাম্পিয়ন (১৯৬৬) | ||
উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ | |||
অংশগ্রহণ | ১০ (১৯৬৮-এ প্রথম) | ||
সেরা সাফল্য | রানার-আপ: (২০২০) | ||
উয়েফা নেশনস লিগ | |||
অংশগ্রহণ | ২ (২০১৯-এ প্রথম) | ||
সেরা সাফল্য | তৃতীয় স্থান (২০১৯) |
৯০,০০০ ধারণক্ষমতাবিশিষ্ট ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে থ্রি লায়ন্স নামে পরিচিত এই দলটি তাদের সকল হোম ম্যাচ আয়োজন করে থাকে। এই দলের প্রধান কার্যালয় ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে অবস্থিত। বর্তমানে এই দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন গ্যারেথ সাউথগেট এবং অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন টটেনহ্যাম হটস্পারের আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হ্যারি কেন।
ইংল্যান্ড ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসের অন্যতম সফল দল, যারা এপর্যন্ত ১ বার (১৯৬৬) বিশ্বকাপ জয়লাভ করেছে; উক্ত ম্যাচে তারা পশ্চিম জার্মানিকে অতিরিক্ত সময়ে ৪–২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করেছে। অন্যদিকে, উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ইংল্যান্ড এপর্যন্ত ১০ বার অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে সেরা সাফল্য হচ্ছে উয়েফা ইউরো ১৯৬৮ এবং উয়েফা ইউরো ১৯৯৬-এ তৃতীয় স্থান অর্জন করা। এছাড়াও, ২০১৯ উয়েফা নেশনস লিগে ইংল্যান্ড তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে।
পিটার শিল্টন, ওয়েন রুনি, ডেভিড বেকহ্যাম, ববি চার্লটন এবং গ্যারি লিনেকারের মতো খেলোয়াড়গণ ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন।
মাঠ
সম্পাদনাপ্রতিষ্ঠার প্রথম ৫০ বছর ধরে ইংল্যান্ড দেশের বিভিন্ন স্থানে হোম ম্যাচ খেলেছে। প্রথমদিকে তারা ক্রিকেট মাঠ ব্যবহার করত। পরবর্তীতে বিভিন্ন ফুটবল ক্লাবের স্টেডিয়ামে খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯২৪ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ড ওয়েম্বলিতে তাদের প্রথম ম্যাচ খেলে। পরবর্তী ২৭ বছর স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে সকল খেলা ওয়েম্বলিতে অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৫১ সালের মে মাসে আর্জেন্টিনা স্কটল্যান্ডের পর দ্বিতীয় জাতীয় দল হিসেবে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে খেলে। ১৯৬০ সালের মধ্যে ইংল্যান্ডের প্রায় সব খেলাই ওয়েম্বলিতে অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ড ওয়েম্বলি ছাড়া অন্য কোথাও তাদের হোম ম্যাচ খেলেনি।
ওয়েম্বলিতে ইংল্যান্ডের সর্বশেষ খেলা হল জার্মানির বিপক্ষে যা অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০০০ সালের ৭ অক্টোবর তারিখে। উক্ত খেলায় ইংল্যান্ড ১–০ গোলে পরাজিত হয়। এরপর থেকে দলটি ১৪টি ভিন্ন স্টেডিয়ামে তাদের হোম ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে ওল্ড ট্রাফোর্ড সবচেয়ে বেশিবার ব্যবহৃত হয়েছে। ২০০৭ সালে নতুন ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম উদ্বোধন হওয়ার পর ইংল্যান্ড ২০৩৬ সাল পর্যন্ত সেখানেই তাদের হোম ম্যাচ খেলবে বলে দ্য ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে; যার প্রধান কারণ হচ্ছে অর্থনৈতিক সমস্যা। দ্য ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন পুরাতন ওয়েম্বলির মালিক নয় তবে নতুন ওয়েম্বলির মালিক। এটি তৈরি করতে দ্য ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন অনেক অর্থ ধার করেছে। তাই ইংল্যান্ডের খেলা এই স্টেডিয়ামে আয়োজন করে এফএ তার উপার্জন বাড়াতে চায়।
নতুন ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ২০০৭ সালের মার্চ মাসে। এতে ৫৫,৭০০ দর্শকের সামনে ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-২১ দল ইতালির অনূর্ধ্ব-২১ দলের মুখোমুখি হয়। খেলাটি ৩–৩ গোলে ড্র হয়, এতে ইংল্যান্ডের পক্ষে ডেভিড বেন্টলি প্রথম গোল করেন। অবশ্য ইতালীয় স্ট্রাইকার গিয়ামপাওলো পাজ্জিনি ২৯ সেকেন্ডে খেলার প্রথম গোল করেন এবং ৬৮ মিনিটে তিনি ওয়েম্বলির প্রথম হ্যাট্রিক সম্পন্ন করেন।[৩]
র্যাঙ্কিং
সম্পাদনাফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে, ২০১২ সালের আগস্ট মাসে প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে ইংল্যান্ড তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অবস্থান (৩য়) অর্জন করে এবং ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে তারা ২৭তম স্থান অধিকার করে, যা তাদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে, বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ অবস্থান হচ্ছে ১ম (যা তারা ১৮৭২ সালে অর্জন করেছিল) এবং সর্বনিম্ন অবস্থান হচ্ছে ১৭। নিম্নে বর্তমানে ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিং এবং বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে অবস্থান উল্লেখ করা হলো:
- ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিং
অবস্থান | পরিবর্তন | দল | পয়েন্ট |
---|---|---|---|
১ | আর্জেন্টিনা | ১৮৫৫.২ | |
২ | ফ্রান্স | ১৮৪৫.৪৪ | |
৩ | ইংল্যান্ড | ১৮০০.০৫ | |
৪ | বেলজিয়াম | ১৭৯৮.৪৬ | |
৫ | ব্রাজিল | ১৭৮৪.০৯ |
- বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং
অবস্থান | পরিবর্তন | দল | পয়েন্ট |
---|---|---|---|
৩ | ৩ | স্পেন | ২০৩৩ |
৩ | ২ | পর্তুগাল | ২০৩৩ |
৫ | ৩ | ইংল্যান্ড | ২০১৫ |
৬ | ৪ | ব্রাজিল | ২০১২ |
৭ | ৬ | উরুগুয়ে | ২০০৭ |
প্রতিযোগিতামূলক তথ্য
সম্পাদনাফিফা বিশ্বকাপ
সম্পাদনাফিফা বিশ্বকাপ | বাছাইপর্ব | ||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
সাল | পর্ব | অবস্থান | ম্যাচ | জয় | ড্র | হার | স্বগো | বিগো | ম্যাচ | জয় | ড্র | হার | স্বগো | বিগো | |
১৯৩০ | ফিফার সদস্য নয় | ফিফার সদস্য নয় | |||||||||||||
১৯৩৪ | |||||||||||||||
১৯৩৮ | |||||||||||||||
১৯৫০ | গ্রুপ পর্ব | ৮ম | ৩ | ১ | ০ | ২ | ২ | ২ | ৩ | ৩ | ০ | ০ | ১৪ | ৩ | |
১৯৫৪ | কোয়ার্টার-ফাইনাল | ৭ম | ৩ | ১ | ১ | ১ | ৮ | ৮ | ৩ | ৩ | ০ | ০ | ১১ | ৪ | |
১৯৫৮ | গ্রুপ পর্ব | ১১তম | ৪ | ০ | ৩ | ১ | ৪ | ৫ | ৪ | ৩ | ১ | ০ | ১৫ | ৫ | |
১৯৬২ | কোয়ার্টার-ফাইনাল | ৮ম | ৪ | ১ | ১ | ২ | ৫ | ৬ | ৪ | ৩ | ১ | ০ | ১৬ | ২ | |
১৯৬৬ | ফাইনাল | ১ম | ৬ | ৫ | ১ | ০ | ১১ | ৩ | আয়োজক হিসেবে উত্তীর্ণ | ||||||
১৯৭০ | কোয়ার্টার-ফাইনাল | ৮ম | ৪ | ২ | ০ | ২ | ৪ | ৪ | পূর্ববর্তী আসরের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে উত্তীর্ণ | ||||||
১৯৭৪ | উত্তীর্ণ হয়নি | ৪ | ১ | ২ | ১ | ৩ | ৪ | ||||||||
১৯৭৮ | ৬ | ৫ | ০ | ১ | ১৫ | ৪ | |||||||||
১৯৮২ | দ্বিতীয় গ্রুপ পর্ব | ৬ষ্ঠ | ৫ | ৩ | ২ | ০ | ৬ | ১ | ৮ | ৪ | ১ | ৩ | ১৩ | ৮ | |
১৯৮৬ | কোয়ার্টার-ফাইনাল | ৮ম | ৫ | ২ | ১ | ২ | ৭ | ৩ | ৮ | ৪ | ৪ | ০ | ২১ | ২ | |
১৯৯০ | ৩য় স্থান নির্ধারণী | ৪র্থ | ৭ | ৩ | ৩ | ১ | ৮ | ৬ | ৬ | ৩ | ৩ | ০ | ১০ | ০ | |
১৯৯৪ | উত্তীর্ণ হয়নি | ১০ | ৫ | ৩ | ২ | ২৬ | ৯ | ||||||||
১৯৯৮ | ১৬ দলের পর্ব | ৯ম | ৪ | ২ | ১ | ১ | ৭ | ৪ | ৮ | ৬ | ১ | ১ | ১৫ | ২ | |
২০০২ | কোয়ার্টার-ফাইনাল | ৬ষ্ঠ | ৫ | ২ | ২ | ১ | ৬ | ৩ | ৮ | ৫ | ২ | ১ | ১৬ | ৬ | |
২০০৬ | কোয়ার্টার-ফাইনাল | ৭ম | ৫ | ৩ | ২ | ০ | ৬ | ২ | ১০ | ৮ | ১ | ১ | ১৭ | ৫ | |
২০১০ | ১৬ দলের পর্ব | ১৩তম | ৪ | ১ | ২ | ১ | ৩ | ৫ | ১০ | ৯ | ০ | ১ | ৩৪ | ৬ | |
২০১৪ | গ্রুপ পর্ব | ২৬তম | ৩ | ০ | ১ | ২ | ২ | ৪ | ১০ | ৬ | ৪ | ০ | ৩১ | ৪ | |
২০১৮ | ৩য় স্থান নির্ধারণী | ৪র্থ | ৭ | ৩ | ১ | ৩ | ১২ | ৮ | ১০ | ৮ | ২ | ০ | ১৮ | ৩ | |
২০২২ | অনির্ধারিত | অনির্ধারিত | |||||||||||||
মোট | ১টি শিরোপা | ১৫/২১ | ৬৯ | ২৯ | ২১ | ১৯ | ৯১ | ৬৩ | ১১২ | ৭৬ | ২৫ | ১১ | ২৭৫ | ৬৭ |
অর্জন
সম্পাদনা
শিরোপাসম্পাদনা
আঞ্চলিকসম্পাদনা
|
অন্যান্যসম্পাদনাপ্রীতি প্রতিযোগিতাসম্পাদনা
|
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "ফিফা/কোকা-কোলা বিশ্ব র্যাঙ্কিং"। ফিফা। ২১ ডিসেম্বর ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০২৩।
- ↑ ক খ গত এক বছরে এলো রেটিং পরিবর্তন "বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং"। eloratings.net। ১২ জানুয়ারি ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০২৪।
- ↑ "Thriller at Wembley"। www.TheFA.com। ২৪ মার্চ ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মার্চ ২০০৭।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- দাপ্তরিক ওয়েবসাইট (ইংরেজি)
- ফিফা-এ ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দল ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে (ইংরেজি)
- উয়েফা-এ ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দল (ইংরেজি)