ডেভিড বেকহ্যাম

ইংরেজ ফুটবলার

ডেভিড রবার্ট যোসেফ বেকহ্যাম (ইংরেজি David Robert Joseph Beckham) (জন্ম মে ২, ১৯৭৫) একজন ইংরেজ ফুটবলার। তিনি মেজর লিগ সকারের দল লস এঞ্জেলস গ্যলাক্সির বর্তমান অধিনায়ক।[২] এখন তিনি ইতালির সিরি এ লিগের ফুটবল ক্লাব এসি মিলানের কাহে ধারে আছেন। এছাড়া ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের বর্তমান খেলোয়াড় এবং সাবেক অধিনায়ক। তার বিশ্ব পরিচিতির অন্যতম কারণ তার জাদুকরি ফ্রি কিক এবং আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু নিজস্ব জীবন। তিনি মার্কিন গায়িকা ভিকটোরিয়া বেকহ্যামকে বিয়ে করেন এবং বর্তমানে বেভার্লি হিলস্‌, ক্যালিফোর্নিয়াতে বসবাস করেন।

ডেভিড বেকহ্যাম
২০১৪ উইম্বলডন চ্যাম্পিয়নশিপে বেকহ্যাম
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম (1975-05-02) ২ মে ১৯৭৫ (বয়স ৪৮)[১]
জন্ম স্থান Leytonstone, লন্ডন, ইংল্যান্ড
যুব পর্যায়
টটেনহ্যাম
ব্রিমসডাওন রোভার্স
১৯৯১-১৯৯৩ ম্যানচেস্টার
জ্যেষ্ঠ পর্যায়*
বছর দল ম্যাচ (গোল)
১৯৯২-২০০৩ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ২৬৫ (৬২)
১৯৯৪-১৯৯৫প্রেস্টন নর্থ এন্ড(loan) (২)
২০০৪–২০০৭ রিয়াল মাদ্রিদ ১১৬ (১৩)
২০০৭–২০১২ এলএ গ্যালাক্সি ৯৮ (১৮)
২০০৯মিলান (loan) ১৮ (২)
২০১০মিলান (loan) ১১ (০)
২০১৩ পিএসজি ১০ (০)
জাতীয় দল
১৯৯২-১৯৯৩ ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব ১৮ (০)
২০০৭–২০০৮ ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব ২১ (০)
১৯৯৬-২০০৯ ইংল্যান্ড ১১৫ (১৭)
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে

তিনি দুইবার ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড় নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। ২০০৪ সালে তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ বেতন প্রাপ্ত পেশাদার খেলোয়াড়।[৩] এছাড়াও ২০০৩ এবং ২০০৪ সালে তিনি গুগলে খেলাধুলা সম্পর্কিত সর্বাধিক অনুসন্ধানকৃত ব্যক্তিত্ব।[৪]নভেম্বর ১৫, ২০০০ থেকে জুলাই ২, ২০০৬ পর্যন্ত বেকহ্যাম মোট ৫৮টি প্রতিযোগিতামূলক খেলায় ইংল্যান্ড ফুটবল দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপে দলের হতাশাজনক নৈপূণ্যের পর তিনি অধিনায়ক হিসাবে পদত্যাগ করেন। মাঝখানে কিছুদিন দলের বাইরে থাকলেও বর্তমানে তিনি দলের নিয়মিত খেলোয়াড়।[৫]

১৯৯২ সালে ১৭ বছর বয়সে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড হয়ে বেকহ্যামের পেশাদার খেলোয়াড়ি জীবন শুরু হয়। বেকহ্যাম থাকা অবস্থায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছয়বার প্রিমিয়ার লিগ, দুইবার এফএ কাপ এবং ১৯৯৯ সালে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা অর্জন করে। ২০০৩ সালে তিনি পাঁচ বছরের চুক্তিতে রিয়াল মাদ্রিদে যোগদান করেন। রিয়ালের হয়ে বিনা সাফল্যে তিনটি মৌসুম কাটানোর পর শেষ মৌসুমে এসে লা লিগা অর্জন করেন। জানুয়ারি, ২০০৭ সালে জানানো হয় যে, বেকহ্যাম লস এঞ্জেলস গ্যলাক্সির সাথে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য চুক্তি বদ্ধ হয়েছেন।[৬] রিয়ালের হয়ে জুন ১৭, ২০০৭ সালে বেকহ্যাম তার শেষ ম্যাচ খেলেন।

গ্যালাক্সির সাথে জুলাই ১, ২০০৭ শুরু হওয়া চুক্তির ফলে তিনি মেজর লিগ সকার ইতিহাসে সর্বোচ্চ বেতনভোগী খেলোয়াড়। গ্যালাক্সির হয়ে তার অভিষেক ঘটে জুলাই ২১, ২০০৭ সালে চেলসির সাথে এক প্রীতি খেলায়।[৭] দলের হয়ে আগস্ট ১৫, ২০০৭ সালে তিনি প্রথম প্রতিযোগিতামূলক খেলায় অংশ নেন ২০০৭ সুপার লিগার সেমি-ফাইনালে। এই ম্যাচে তিনি নিজে একটি গোল এবং আরেকটি গোলে সহায়তা করেন। লিগের প্রথম খেলায় অংশ নেন আগস্ট ১৮, ২০০৭ সালে নিউইয়র্ক রেড বুলস দলের বিপক্ষে। রেকর্ড সংখ্যক দর্শকের সামনে এই খেলায় বেকহ্যাম দুইটি গোলে সাহায্য করেন।

রেকর্ড সম্পাদনা

বেকহ্যাম ইংল্যান্ডের ইতিহাসে অন্যতম দীর্ঘমেয়াদী অধিনায়ক। তিনি মোট ৫৮টি খেলায় ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।[৮] ২০০৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপে ইকুয়েডরের বিপক্ষে ফ্রি কিকে দেয়া গোলের সুবাদে বেকহ্যাম ফুটবলের দুইটি একচেটিয়া ক্লাবের সদস্য হবার গৌরব অর্জন করেনঃ একমাত্র ইংরেজ এবং যে কোন জাতীয়তায় একুশতম খেলোয়াড় যিনি তিনটি বিশ্বকাপে গোল করেছেন[৯] এবং বিশ্বকাপ ইতিহাসের পঞ্চম খেলোয়াড় যিনি দুইটি ফ্রি কিকে দেয়া গোলের মালিক। বাকি চারজন হলেন পেলে, রিভেলিনো, টিওফিলো, কিউবিলাস এবং বার্নাড।

 

অর্জন সম্পাদনা

ব্যক্তিগত সম্পাদনা

  • ইংরেজি ফুটবল হল অফ ফেম (২০০৮)
  • ইএসপিওয়াই সেরা পুরুষ ফুটবল খেলোয়াড় (২০০৪)
  • বিবিসি সেরা ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব (২০০১)
  • ফিফার বর্ষসেরা খেলোয়াড় (২০০১)-২য় স্থান
  • ফিফার বর্ষসেরা খেলোয়াড় (১৯৯৯)-২য় স্থান
  • ইউরোপের বর্ষসেরা খেলোয়াড় (১৯৯৯)-২য় স্থান
  • উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ সেরা খেলোয়াড় (১৯৯৮-১৯৯৯)
  • পিএফএ সেরা তরুণ খেলোয়াড় (১৯৯৭)

ক্লাব সম্পাদনা

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (১৯৯৩-২০০৩) সম্পাদনা
  • প্রিমিয়ার লিগ - চ্যাম্পিয়ন (৬): 1(১৯৯৫-১৯৯৬,১৯৯৬-১৯৯৭,১৯৯৮-১৯৯৯,১৯৯৯-২০০০,

২০০০-২০০১,২০০২-২০০৩)

রিয়াল মাদ্রিদ (২০০৩–২০০৭) সম্পাদনা
  • লা লিগা (১): ২০০৬-২০০৭
এলএ গ্যালাক্সি (২০০৭ থেকে বর্তমান) সম্পাদনা
  • সুপারলিগা ফাইনাল : ২০০৭

চলচ্চিত্রে উপস্থিতি সম্পাদনা

বেন্ড ইট লাইক বেকহ্যাম (Bend It Like Beckham)

চলচ্চিত্রটিতে ইচ্ছা থাকা স্বত্তেও বেকহ্যাম সময়ের অভাবে অভিনয় করতে পারেননি। বেকহ্যামের মতো দেখতে অ্যান্ডি হারমার তার অংশটুকুতে অভিনয় করেন। এছাড়াও এখানে বেকহ্যামের কিছু ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে।[১০]

দ্য গোল! ট্রাইলোজি (The Goal! Trilogy)

২০০৫ সালে মুক্তি প্রাপ্ত গোল চলচ্চিত্রে অল্প সময়ের জন্য বেকহ্যাম অভিনয় করেন। এই চলচ্চিত্রটিতে বেন্ড ইট লাইক বেকহ্যামে বেকহ্যাম চরিত্রে অভিনয়কারী অ্যান্ডি হারমারও বেকহ্যামের একটি দৃশ্যে অভিনয় করেন।[১১] গোল! ২ (লিভিং দ্য ড্রিম) এ বেকহ্যাম দীর্ঘসময়ের জন্য অভিনয় করেন।[১২] ছবিটির প্রধান চরিত্র রিয়াল মাদ্রিদে যোগদানের পর এই ছবির কাহিনী রচিত হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ এবং বেকহ্যামকে ঘিরে। এছাড়া ২০০৮ সালে মুক্তি পেতে যাওয়া গোল! ৩ তেও বেকহ্যামকে দেখা যাবে।[১৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Hugman, Barry J., সম্পাদক (২০০৩)। The PFA Footballers' Who's Who 2003/2004। Harpenden: Queen Anne Press। পৃষ্ঠা 42। আইএসবিএন 9-781852-916510 
  2. Jones, Grahame (August 16 2007)। "Beckham's first start for Galaxy full of firsts"Los Angeles Times। সংগ্রহের তারিখ 2007-08-16  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  3. http://in.rediff.com/sports/2004/may/04beck.htm
  4. http://www.google.com/press/zeitgeist2004.html
  5. "Beckham recalled to England squad"BBC Sport2007-05-26। সংগ্রহের তারিখ 2007-05-28  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  6. Bandini, Paolo (2007-01-11)। "Beckham confirms LA Galaxy move"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ 2007-05-10  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  7. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১২ জানুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০০৭ 
  8. "Beckham stands down"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৭-১৪  অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  9. "England 1-0 Ecuador", BBC Sport, 25 June 2006. URL accessed on 25 June 2006.
  10. ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে Bend It Like Beckham (ইংরেজি)
  11. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১ মে ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০০৭ 
  12. ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে Goal! 2: Living the Dream... (ইংরেজি)
  13. http://www.imdb.com/name/nm0065743/