নেদারল্যান্ডস

ইউরোপের একটি দেশ

নেদারল্যান্ডস বা নেদারল্যান্ড (ওলন্দাজ: Nederland [ˈneːdərlɑnt] (শুনুন)), অনানুষ্ঠানিকভাবে হল্যান্ড, উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের একটি রাষ্ট্র। দেশটিকে অনেক সময় হল্যান্ড (Holland হলান্ট্‌) নামেও ডাকা হয়, যদিও হল্যান্ড মূলত নেদারল্যান্ডসের একটি ঐতিহাসিক অঙ্গরাজ্যের নাম। ক্যারিবীয় নেদারল্যান্ডসের তিনটি দ্বীপকে নিয়ে এটি নেদারল্যান্ডস রাজ্য (Koninkrijk der Nederlanden কোনিংক্রেইক্‌ ডের্‌ নেড্যর্লান্ডেন্‌) গঠন করেছে।

নেদারল্যান্ডস রাজ্য

Koninkrijk der Nederlanden
কোনিংক্রেইক্‌ ডের্‌ নেড্যর্লান্ডেন্‌
নেদারল্যান্ডসের জাতীয় পতাকা
পতাকা
নেদারল্যান্ডসের জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
জাতীয় সঙ্গীত: উইলহেলমাস ভ্যান নাসোউই
(জাতীয় এবং রাজকীয় সঙ্গীত)
noicon
নেদারল্যান্ডসের অবস্থান
রাজধানী
ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি
আমস্টারডাম
সরকারি ভাষাওলন্দাজ
সরকারসংসদীয় গণতন্ত্র
সাংবিধানিক রাজতন্ত্র
বিয়াট্রিক্স

জ্যান পিটার বলকেনডে

নেলসন ও. ওদুবার

এমিলি ডি জং-এলহেজ
স্বাধীন
• রোমান সম্রাজ্য থেকে স্বাধীন ও হল্যান্ড গঠন

৮৮০সাল

৫ জানুয়ারি ১৪৭৭সাল

২ আগস্ট ১৫৮১সাল

৭ জুলাই ১৮১৫ সাল
আয়তন
• মোট
৪২,৬৭৯ কিমি (১৬,৪৭৮ মা) (১৩৪)
• পানি (%)
১৮.৪১
জনসংখ্যা
• জুলাই ২০০৬ আনুমানিক
১৬,৭৮৫,০৮৮ (৫৮)
মুদ্রাইউরো3 (নেডার্ল্যান্ডস), আরুবান ফ্লোরিন (আরুবা) এবং নেদারল্যান্ডস অ্যান্টিলিয়ান গুল্ডেন (নেদারল্যান্ডস এন্টিলস) (€ ইউরো, AWG এবং ANG)
সময় অঞ্চলইউটিসি+১ and -৪ (সিইটি এবং [[Atlantic Standard Time|এএসটি])
• গ্রীষ্মকালীন (ডিএসটি)
ইউটিসি+২ and -৪ (সিইএসটি এবং এএসটি)
কলিং কোড৩১, +২৯৭, +৫৯৯
ইন্টারনেট টিএলডি.nl, .aw, .an
  1. আরুবাতে পাপিয়ামেন্টো ভাষাও সরকারীস্বীকৃত। ফ্রিজল্যান্ড-এ, ফ্রিসিয়ান ভাষাও একটি সরকারী ভাষা, এবং নিম্ন স্যাক্সন এবং লিমবার্গিশ আনুষ্ঠানিকভাবে আঞ্চলিক ভাষা
  2. হেগ হল নেদারল্যান্ডস সরকারের আসন; ওরাঞ্জেস্টাড হল আরুবা এর রাজধানী; এবং উইলেমস্টাড হল নেদারল্যান্ডস অ্যান্টিলিস এর রাজধানী।
  3. ১৯৯৯ এর আগে (ডি জুরে; ২০০২ ডি ফ্যাক্টো): ডাচ গিল্ডার (ƒ এনএলজি)
  4. এছাড়াও .eu নেদারল্যান্ডসে, অন্যান্য ইইউ সদস্য রাষ্ট্রের সাথে ভাগ করা হয়েছে।
নেদারল্যান্ডসের প্রদেশ এবং অঞ্চলসমূহ

নেদারল্যান্ডস ১২টি প্রদেশ নিয়ে গঠিত। দেশটির সাথে পূর্বে জার্মানি ও দক্ষিণে বেলজিয়ামের স্থলসীমান্ত আছে। দেশটি উত্তর সাগরের উপকূলে অবস্থিত; পশ্চিমে বেলজিয়ামযুক্তরাজ্যের সাথে ও পূর্বে জার্মানির সাথে দেশটির সামুদ্রিক সীমান্ত আছে।[] নেদারল্যান্ডসের রাজধানী শহরের নাম আমস্টারডাম। এছাড়া রটারডাম, হেগ, উট্রেখটআইন্ডহোফেন চারটি বৃহৎ শহর।[]

"নেদারল্যান্ডস" কথাটির আক্ষরিক অর্থ হল "নিম্নভূমি"। এ নামকরণটি যথার্থ, কারণ দেশটির মাত্র ৫০% ভূখণ্ড সমুদ্রসমতলের ১ মিটারের বেশি উচ্চতায় অবস্থিত।[] দেশটির বেশির ভাগ ভূখণ্ডই সমুদ্রসমতলের নিচে অবস্থিত, যা ভূমি পুনর্দখল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয়েছে। দেশটির বর্তমান আয়তনের প্রায় ১৭% সাগরহ্রদ থেকে পুনর্দখল করা হয়েছে, এই অঞ্চলগুলিকে স্থানীয় ওলন্দাজ ভাষায় পোল্ডার বলা হয়। নেদারল্যান্ডসের দক্ষিণ ও পূর্ব অঞ্চলগুলির বেশিরভাগই সমতল ভূমি নিয়ে গঠিত যেগুলিতে খুব স্বল্পসংখ্যক উঁচু পাহাড় পাওয়া যায়। দেশের উত্তর ও পশ্চিমভাগ নিম্নভূমি, যা মূলত রাইন, মোজশেল্ডে নদী তিনটির সম্মিলিত ব-দ্বীপজুইডারজেতে পোল্ডার আছে। উপকূলীয় এলাকাগুলি সম্পূর্ণ সাগরের নিচে এবং এগুলিকে চর ও কৃত্রিম সমুদ্রবাঁধের মাধ্যমে সুরক্ষিত করা হয়েছে।

দেশটির জনসংখ্যা ১ কোটি ৭২.৫ লক্ষ। নেদারল্যান্ডস একটি জনঘনত্ববিশিষ্ট দেশ। এখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪১৫ জনের বাস। বৃহৎ জনসংখ্যাবিশিষ্ট দেশগুলির মধ্যে কেবল বাংলাদেশ, দক্ষিণ কোরিয়াতাইওয়ানের জনঘনত্ব এর চেয়ে বেশি। উচ্চ জনঘনত্বের দেশ হলেও এটির জন্মহার নিম্ন। নেদারল্যান্ডসের সিংহভাগ জনগণ ওলন্দাজ জাতিভুক্তওলন্দাজ একমাত্র সরকারী ভাষা কিন্তু ইংরেজি ব্যাপকভাবে প্রচলিত। খ্রিস্টধর্ম (রোমান ক্যাথলিকপ্রতিবাদী ঘরানা) মূল ধর্ম, তবে ইসলাম বৃহত্তম সংখ্যালঘু ধর্ম।

নেদারল্যান্ডস একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। এর আইনসভাটি একটি দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদীয় ব্যবস্থা। ১৮৪৮ সাল থেকে নেদারল্যান্ডসে সংসদীয় গণতন্ত্র বিদ্যমান; এটি বিশ্বের ৩য় প্রাচীনতম সংসদীয় সরকারব্যবস্থা। নেদারল্যান্ডসের রাজা রাষ্ট্রপ্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান। হেগ শহরে নেদারল্যান্ডসের দ্বিকাক্ষিক আইনসভা, মন্ত্রিসভা ও সর্বোচ্চ আদালত অবস্থিত।[]

নেদারল্যান্ডসে একটি মিশ্র অর্থনীতি, নিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থার অর্থনীতি বিদ্যমান, যার সিংহভাগ আর্থিক সেবা, হালকা ও ভারী শিল্প এবং বাণিজ্যের উপর ভিত্তি করে গঠিত। দেশটির মুদ্রা ইউরোঅর্থনৈতিক স্বাধীনতার সূচক অনুসারে দেশটি ১৭৭টি দেশের মধ্যে ১৭তম স্থান অধিকার করেছে।[] আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব অনুযায়ী এটি বিশ্বের ১৩তম সর্বোচ্চ মাথাপিছু স্থুল আভ্যন্তরীণ উৎপাদনধারী (ক্রয়ক্ষমতা সাম্যের বিচারে) দেশ। ২০১৭ সালে জাতিসংঘের বিশ্ব সুখ প্রতিবেদনে দেশটির বিশ্বের ৬ষ্ঠ সর্বোচ্চ সুখী দেশের মর্যাদা দেওয়া হয়, যা দেশটির জীবনযাত্রার উচ্চমানের প্রতিফলন। [] ২০১৮ সালের ওইসিডি প্রকাশিত উন্নততর জীবন সূচক অনুযায়ী নেদারল্যান্ডস কাজ-জীবন ভারসাম্যের বিচারে বিশ্বের ১ম স্থান অধিকারী রাষ্ট্র।[] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে নেদারল্যান্ডস বিশ্বের ২য় বৃহত্তম কৃষি ও খাদ্যপণ্য রপ্তানিকারক রাষ্ট্র[][] মাটির উর্বরতা, মৃদ্য জলবায়ু এবং অত্যন্ত উন্নত নিবিড় কৃষিপদ্ধতির কারণে এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে। রটারডাম বন্দরটি ইউরোপের বৃহত্তম এবং এশিয়ার বাইরে বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর[১০]

নেদারল্যান্ডস একটি উদার জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র যেখানে সমস্ত নাগরিককে বিনামূল্যে বা অত্যন্ত স্বল্পমূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, সরকারী প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা এবং পরিবহন অবকাঠামো ব্যবহারের সুবিধাসহ আরও বহু ধরনের সামাজিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক বৈষম্যের সাথে সামঞ্জস্য বিধান করে গণনা করা মানব উন্নয়ন সূচকের তালিকায় এটি অস্ট্রেলিয়া সাথে যৌথভাবে ৩য় সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থান করছে। উদারপন্থী দেশটিতে পতিতাবৃত্তি, গর্ভপাত ও [[যন্ত্রণাহীন স্বেচ্ছামৃত্যু]] আইনসম্মত কর্মকাণ্ড। একই সাথে দেশটির ওষুধ ও মাদক নীতিও অনেক উদার। ১৮৭০ সালে দেশটি মৃত্যুদণ্ড বেআইনি ঘোষণা করে এবং ১৯১৭ সালে নারীদের ভোটদানের ক্ষমতা প্রদান করে। ২০০১ সালে বিশ্বের প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে এটি সমকামীদের বিবাহ আইনসিদ্ধ করে।

নেদারল্যান্ডস ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউরোজোন, জি১০, নেটো, ওইসিডি এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্যরাষ্ট্রগুলির একটি। এছাড়া এটি শেঙেন এলাকা ও ত্রিপাক্ষিক বেনেলাক্স ইউনিয়নের অংশ। দেশটিতে রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সংস্থা, আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অপরাধ অনুসরণ সংস্থা, জাতিসংঘ আটক ইউনিট অবস্থিত। "সীমান্তহীন সংবাদ প্রতিবেদক" সংস্থার প্রকাশিত সংবাদপত্র স্বাধীনতা সূচকে দেশটি বিশ্বে ২য় স্থান অধিকার করেছে। [১১]

প্রাচীনকালে নেদারল্যান্ডসে কেল্টীয়জার্মানীয় গোত্রের লোকেরা বাস করত। রোমানরা অঞ্চলটি বিজয় করার পর এখানে শিল্প-বাণিজ্যের বিকাশ ঘটে। খ্রিস্টীয় ৩য় শতকে পুনর্জাগরিত জার্মান গোত্রদের আক্রমণে ও সমুদ্রের করালগ্রাসে রোমানদের শক্তি হ্রাস পায়। শেষ পর্যন্ত ৫ম শতকে এক জার্মানীয় আক্রমণ রোমান শক্তির অবসান ঘটায়। প্রথমে মেরোভিঙ্গীয় ও পরে ৭ম শতকে কারোলিঙ্গীয় রাজবংশ এখানে শাসন করে এবং শেষোক্ত রাজারা দেশটির জনগণকে খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত করেন। ৮১৪ সালে রাজা শার্লমাইন বা মহান চার্লসের মৃত্যুর পরে এটি মধ্যযুগীয় লোথারিঙিয়া রাজ্যের অন্তর্গত হয়। এখানে রাজকীয় গির্জা নামের একটি ধর্মনিরপেক্ষ গির্জার অনুসারী সম্প্রদায় গড়ে ওঠে, যারা পবিত্র রোমান সাম্রাজ্য অধীনস্থ ছিল না। ১২শ শতকের শুরু থকে সমুদ্রবাঁধ বা ডাইক নির্মাণ শুরু হয়ে এবং বড় আকারে সমুদ্র থেকে ভূমি পুনরুদ্ধারকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এসময় ফ্লান্ডার্স অঞ্চলটি বস্ত্রশিল্পের কেন্দ্র হিসেবে বিকাশ লাভ করে। ১৪শ শতকের শেষভাবে বুর্গোইনের ডিউকেরা এবং তার পরে ১৬শ শতকের শুরুতে স্পেনের হাবসবুর্গ রাজবংশ দেশটি শাসন করেন। মৎস্যশিকার ও জাহাজনির্মাণে ওলন্দাজদের জুড়ি ছিল না। ১৭শ শতকে ওলন্দাজ জাতি অসাধারণ সমৃদ্ধি অর্জন করে। ইয়ান ফান আইক, কেম্পিসের টমাস এবং দেসিদেরিউস এরাসমুসের মত বিখ্যাত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের জন্ম হয় এবং ক্যালভিনবাদঅ্যানাবাপ্টিস্টবাদের মত মতবাদগুলি জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৫৮১ সালে ক্যালভিনবাদীদের নেতৃত্বে উত্তরের ৭টি প্রদেশ স্পেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। ১৬৪৮ সালে ত্রিশ বছরের যুদ্ধ শেষে স্পেন ওলন্দাজদের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়। ১৭শ শতকে ওলন্দাজ সভ্যতার স্বর্ণযুগে স্পিনোজার বেনেডিক্ট এবং রনে দেকার্ত বুদ্ধিবৃত্তিক স্বাধীনতা উপভোগ করেনে এবং চিত্রশিল্পী রেমব্রান্টইয়োহানেস ফারমিয়ার তাদের সর্বোৎকৃষ্ট চিত্রকর্মগুলি এসময় সৃষ্টি করেন। ওলন্দাজ পূর্ব ভারত কোম্পানি এশিয়াতে উপনিবেশ স্থাপন করে এবং দেশের জীবনযাত্রার মান উঁচু হতে থাকে। ১৮শ শতকে ওলন্দাজদের সামুদ্রিক শক্তি হ্রাস পায়। ফরাসি বৈপ্লবিক যুদ্ধগুলির সময় ফরাসিরা অঞ্চলটি বিজয় করে। ১৮০৬ সালে নেপোলিয়নের অধীনে এটি হল্যান্ড রাজ্য নামে পরিচিত হয়। ১ম বিশ্বযুদ্ধে এটি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে। ২য় বিশ্বযুদ্ধে নিরপেক্ষতা ঘোষণা করলেও জার্মানি অঞ্চলটি দখল করে। যুদ্ধের পরে ১৯৪৯ সালে দেশটি নেদারল্যান্ডস ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ (বর্তমান ইন্দোনেশিয়া) এবং ১৯৬২ সালে নেদারল্যান্ডস নতুন গিনির (বর্তমান ইরিয়ান জায়া) উপর কর্তৃত্ব হারায়। ১৯৪৯ সালে দেশটি নেটোতে যোগদান করে। ২১শ শতকের শুরুতে এসে দেশটি অভিবাসনজনিত সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে।

বামে ডাচ আর্কিটেকচারের কারাম্বি ঐতিহাসিক পার্ক মিল ও ঘরগুলি দেখুন

রাজনীতি

সম্পাদনা

১৮১৫ সাল থেকে নেদারল্যান্ডসে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র প্রচলিত। ১৮৪৮ সাল থেকে সংসদীয় গণতন্ত্র চালু রয়েছে। ২০১০ সালে ইকোনমিষ্ট পত্রিকা নেদারল্যান্ডসকে দশম শক্তিশালী গনতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ঘোষণা করে। নেদারল্যান্ড্‌সের রাজনীতি একটি সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র এবং একটি বিকেন্দ্রীকৃত ঐক্যমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থার কাঠামোতে পরিচালিত হয়। নেদারল্যান্ডসকে একটি consociational রাষ্ট্র হিসেবে বর্ণনা করা যায়। ওলন্দাজ রাজনীতি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুসমূহের উপর ব্যাপক ঐকমত্যে পৌঁছানোর প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়।

২০০৬ সালের ওলন্দাজ সংসদ নির্বাচনে সোশালিস্ট পার্টি বা Socialistische Partij বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ

সম্পাদনা

নেদারল্যান্ডস বারটি প্রশাসনিক অঞ্চলে বিভক্ত। এদেরকে প্রভিয়েন্স বলা হয়। প্রত্যেকটি প্রভিয়েন্স একজন গর্ভনর দ্বারা শাসিত, যাকে কমিশনার অব দ্য কুইন বা কমিস্যারিস ভ্যান দ্য কোনিগিন বলা হয়। শুধু মাত্র লিমবার্গ প্রভিয়েন্সের প্রধানকে গর্ভনর বলা হয়। প্রতিটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিউনিসিপালিটিসে বিভক্ত। ২০১০ সালের হিসেবে ৪৩০টি প্রভিয়েন্স আছে।

প্রদেশ মূলধন বৃহত্তম শহর মোট এলাকা

(কিমি 2 )

ভূমি এলাকা

(কিমি 2 )

জনসংখ্যা

(2023)

ঘনত্ব

(/কিমি 2 )

ড্রেনথে অ্যাসেন এমেন 2,680 2,633 502,051 191
ফ্লেভোল্যান্ড লেলিস্টাড আলমেরে 2,413 1,412 444,701 315
ফ্রিজল্যান্ড লিউওয়ার্ডেন ৫,৭৪৯ ৩,৩৩৬ 659,551 198
গেলডারল্যান্ড আর্নহেম নিজমেগেন ৫,১৩৬ 4,964 2,133,708 430
গ্রোনিংজেন গ্রোনিংজেন 2,960 ২,৩২৪ 596,075 256
লিম্বুর্গ মাস্ট্রিক্ট 2,210 2,147 1,128,367 526
উত্তর ব্রাবন্ট s-Hertogenbosch আইন্ডহোভেন ৫,০৮২ 4,905 2,626,210 535
উত্তর হল্যান্ড হারলেম আমস্টারডাম 4,092 2,665 2,952,622 1,108
ওভারিজসেল Zwolle এনশেডে ৩,৪২১ 3,319 1,184,333 357
দক্ষিণ হল্যান্ড হেগ রটার্ডাম ৩,৪১৯ 2,700 3,804,906 1,409
উট্রেখ্ট ইউট্রেখ্ট‌ 1,449 1,485 1,387,643 934
জিল্যান্ড মিডেলবার্গ 2,934 1,782 391,124 219
মূল ভূখণ্ড ৪১,৫৪৫ 33,671 17,811,291 529

জনসংখ্যা

সম্পাদনা

২০০৯ সালের সরকারি হিসেবে নেদারল্যান্ডসের জনসংখ্যা ১,৬৪,৯১,৮৫২ জন। নেদারল্যান্ডস ইউরোপের ১১তম বৃহৎ জনসংখ্যা সমৃদ্ধ ও পৃথিবীতে ৬১ তম দেশ। ২০০৮ সালের হিসেবে নেদারল্যান্ডসের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ০.৪৩৬%।

পরিবহন

বিমান পরিবহন

সম্পাদনা

আমস্টারডাম বিমানবন্দর স্কিপহোল , আমস্টারডামের ঠিক দক্ষিণ-পশ্চিমে, নেদারল্যান্ডসের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং যাত্রী সংখ্যায় ইউরোপের তৃতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর । স্কিফোল হল কেএলএমএর প্রধান কেন্দ্র , দেশের পতাকাবাহী এবং বিশ্বের প্রাচীনতম বিমান সংস্থা।  2016 সালে, রয়্যাল শিফোল গ্রুপ বিমানবন্দরগুলি 70 মিলিয়ন যাত্রী পরিচালনা করেছিল।  সমস্ত বিমান ট্র্যাফিক আন্তর্জাতিক এবং শিফোল বিমানবন্দর বিশ্বব্যাপী 300 টিরও বেশি গন্তব্যের সাথে সংযুক্ত, অন্য যেকোনো ইউরোপীয় বিমানবন্দরের চেয়ে বেশি।  264  বিমানবন্দরটি একটি প্রধান মালবাহী হাবও, যা 2020 সালে 1.44 মিলিয়ন টন কার্গো প্রক্রিয়াকরণ করে । নেদারল্যান্ডসের ক্যারিবিয়ান অংশের জন্য বিমান পরিবহন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সমস্ত দ্বীপের নিজস্ব বিমানবন্দর রয়েছে। এর মধ্যে সাবার বিশ্বের সবচেয়ে ছোট রানওয়ে রয়েছে ।

ভারতীয় উপমহাদেশে একমাত্র দিল্লি , মুম্বাই ও বেঙ্গালুরুর সাথে সরাসরি বিমান যোগাযোগ আছে।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Netherlands boundaries in the North Sea"। Ministry of Defence। ১৯ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৪ 
  2. Dutch Wikisource। "Grondwet voor het Koninkrijk der Nederlanden" [Constitution for the Kingdom of the Netherlands] (Dutch ভাষায়)। Chapter 2, Article 32। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০১৩... de hoofdstad Amsterdam ... 
  3. "Netherlands Guide – Interesting facts about the Netherlands"। Eupedia। ১৯ এপ্রিল ১৯৯৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১০ 
  4. Permanent Mission of the Netherlands to the UN। "General Information"। ৫ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৩ 
  5. "Netherlands"। ১০ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ মে ২০১৩ , Index of Economic Freedom. heritage.org.
  6. Helliwell, John; Layard, Richard; Sachs, Jeffrey (২০ মার্চ ২০১৭)। World Happiness Report 2017 (পিডিএফ)United Nations Sustainable Development Solutions Networkআইএসবিএন 978-0-9968513-5-0। ১২ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১৭ 
  7. The Netherlands ranks first in the world for work-life balance ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ জুন ২০১৮ তারিখে, iamsterdam.com, 8 March 2018.
  8. "Netherlands: Agricultural exports top 80 billion Euros"। ২২ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 
  9. (RVO), Netherlands Enterprise Agency। "Agriculture and food"hollandtrade.com। ১ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৬ 
  10. "Port Statistics 2013" (পিডিএফ) (সংবাদ বিজ্ঞপ্তি)। Rotterdam Port Authority। ১ জুন ২০১৪। পৃষ্ঠা 8। ৮ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১৪ 
  11. "2016 World Press Freedom Index - RSF"Rsf.org। ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা