বেলজিয়াম

পশ্চিম ইউরোপের যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র

বেলজিয়াম ( ওলন্দাজ: België বেল্‌য়া, ফরাসি: Belgique ব্যল্‌ঝ়িক্‌, জার্মান: Belgien বেল্‌গিয়েন্‌) উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের একটি দেশ। এটি ইউরোপের ক্ষুদ্রতম ও সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলির একটি। এটি একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। বেলজিয়াম ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।

রাজতন্ত্রী বেলজিয়াম
Koninkrijk België (ওলন্দাজ)
Royaume de Belgique (ফরাসি)
Königreich Belgien (জার্মান)
বেলজিয়ামের জাতীয় পতাকা
পতাকা
বেলজিয়ামের কোট অফ আর্মস্‌
কোট অফ আর্মস্‌
নীতিবাক্য: ওলন্দাজ: Eendracht maakt macht;
ফরাসি: L'union fait la force;
জার্মান: Einigkeit macht stark
(বাংলায়: "একতাই বল")
জাতীয় সঙ্গীত: বেলজিয়াম়: "La Brabançonne"
(অনুবাদ: ব্রাবান্তের সঙ্গীত)
বেলজিয়ামের অবস্থান
রাজধানী
ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি
ব্রাসেল্‌স
সরকারি ভাষাওলন্দাজ, ফরাসি, জার্মান
সরকারসংবিধানিক রাজতন্ত্র
• রাজা
ফিলিপ
• প্রধানমন্ত্রী
সোফি উইলমেস[১]
স্বাধীনতা 
• ঘোষিত
৪ অক্টোবর ১৮৩০
• স্বীকৃতি
১৯ এপ্রিল ১৮৩৯
• পানি (%)
৬.৪
জনসংখ্যা
• ২০০৯ আনুমানিক
১০,৪১৪,৩৩৬[২] (৭৮তম)
• ২০০১ আদমশুমারি
১০,২৯৬,৩৫০
জিডিপি (পিপিপি)২০০৮ আনুমানিক
• মোট
$৩৯০.২ বিলিয়ন (৩০তম)
• মাথাপিছু
$৩৭,৫০০ (২৭তম)
মানব উন্নয়ন সূচক (2014)বৃদ্ধি 0.890[৩]
অতি উচ্চ · 21st
মুদ্রাইউরো (€) (EUR)
সময় অঞ্চলইউটিসি+১ (CET)
• গ্রীষ্মকালীন (ডিএসটি)
ইউটিসি+২ (CEST)
গাড়ী চালনার দিকডান দিক
কলিং কোড+৩২
ইন্টারনেট টিএলডি.be
1 ১৯৯৯ সালের পুর্বে: বেলজীয় ফ্রাঙ্ক.
2 অন্যান্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশের মতো এদেশে .eu ডোমেইনও ব্যবহৃত হয়

ব্রুসেল শহরটি বেলজিয়ামের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। ইউরোপীয় কমিশন, ন্যাটো এবং বিশ্ব শুল্ক সংস্থার সদর দপ্তর ব্রাসেল্‌স-এ অবস্থিত। এছাড়া ইউরোপীয় পার্লমেন্টের নতুন ভবন এখানে অবস্থিত। ইউরোপীয় পার্লমেন্টের আদি ভবন ফ্রান্সের স্ট্রাসবুর্গে অবস্থিত। বেলজিয়াম ইউরো জোন-এ অবস্থিত এবং এর মুদ্রা ইউরো। ইউরো প্রবর্তনের পূর্বে বেলজিয়ামের মূদ্রার নাম ছিল বেলজিয়াম ফ্রাঁ ।

এটি ইউরোপের সর্বাধিক নগরায়িত দেশ; এখানকার ৯৭% লোক শহরে বাস করে। নেদারল্যান্ডসলুক্সেমবুর্গের সাথে মিলে বেলজিয়াম নিচু দেশগুলি গঠন করেছে।
ফ্রান্স এবং উত্তর ইউরোপের সমভূমির মধ্যস্থলে অবস্থিত। এর উত্তরে উত্তর সাগর। ইউরোপের একটি ভৌগোলিক সঙ্গমস্থলে অবস্থিত হওয়ায় দেশটি মধ্যযুগ থেকেই একটি প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র। উত্তর সাগরের মাধ্যমে দেশটি বাকী বিশ্বের সাথে বাণিজ্য চালায়। বেলজিয়ামের অবস্থান সামরিক কৌশলগত দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। এই অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বহু যুদ্ধ হয়েছে। ১৮৩০ সালে বেলজিয়াম স্বাধীনতা লাভ করে।

ইতিহাস সম্পাদনা

দেশটির নাম বেল্গায়ে নামের এক কেল্টীয় জাতির নাম থেকে এসেছে। এই জাতিটি এখানকার আদি অধিবাসী ছিল; খ্রিস্টপূর্ব ৫৭ অব্দে জুলিয়াস সিজার এলাকাটি দখল করে নেন।

ভাষা সম্পাদনা

ভাষার জন্য বেলজিয়ানরা যুদ্ধ-বিগ্রহে পর্যন্ত লিপ্ত হয়েছে। প্রধান ভাষা দুটি যথাঃ ফ্লেমিশ এবং ফরাসী। তৃতীয় প্রচলিত ভাষা জার্মান। কেবল ব্রুসেল শহরে ফ্লেমিশ এবং ফরাসি উভয় ভাষাই সরকারীভাবে ব্যবহৃত হয়। ফ্ল্যান্ডার্স এলাকায় অবিমিশ্রভাবে ফ্লেমিশ ভাষা প্রচলিত ; ওয়ালোনিয়া এলাকায় প্রচলিত ফরাসি ভাষা। তবে দূতাবাসের শহর ব্রুসেলে ইংরেজি ব্যাপকভাবে প্রচলিত।

বেলজিয়ামে দুইটি সরকারি ভাষা প্রচলিত: ওলন্দাজ এবং ফরাসি। বেলজিয়ামের প্রায় ৫৭% লোক ওলন্দাজ ভাষার একটি উপভাষা ফ্লেমিশে কথা বলে। ফরাসি ভাষা প্রায় ৩৩% লোকের মাতৃভাষা এবং ফরাসিভাষীরা মূলত দেশের দক্ষিণাংশে ওয়ালুন অঞ্চলের বাস করে। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেল্‌স একটি দ্বিভাষিক এলাকা। এছাড়া পূর্বের অয়পেন-মালমেডি-সাংক্ত ভিট প্রদেশগুলিতে প্রায় দেড় লক্ষ জার্মান ভাষাভাষী বাস করে। বেলজিয়ামের সংখ্যালঘু ভাষাগুলির মধ্যে আরবী, তুর্কি, কাবিলে, স্পেনীয়, পর্তুগিজ এবং লেৎসেবুর্গেশ ভাষা অন্যতম।

রাজনীতি সম্পাদনা

বেলজিয়ামের রাজনীতি একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক সাংবিধানিক রাজতন্ত্র কাঠামোয় সংঘটিত হয়। রাজা বা রাণী হলেন রাষ্ট্রের প্রধান। সরকারপ্রধান হলেন প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা সরকারের উপর ন্যস্ত। আইন প্রণয়নের ক্ষমতা সরকার এবং দ্বিকাক্ষিক আইনসভা উভয়ের উপর ন্যস্ত।

 
ব্রাসেলস, বেলজিয়ামের রাজধানী এবং বৃহত্তম মেট্রোপলিটন এলাকা

প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ সম্পাদনা

বেলজিয়াম প্রশাসনিক ভাবে তিনটি অঞ্চলে বিভক্ত যথা ফ্ল্যান্ডার্স, ওয়ালোনিয়া এবং ব্রাসেলস ক্যাপিটাল সিটি। ফ্ল্যান্ডার্স অঞ্চলটি ব্রাসেলসের উত্তর ও পশ্চিমে অবস্থিত; এখানে বেশির ভাগ লোক ওলন্দাজ (ফ্লেমিশ) ভাষায় কথা বলে এবং এরা ফ্লেমিং নামে পরিচিত। ওয়ালোনিয়া ব্রাসেলসের পূর্বে ও দক্ষিণে অবস্থিত এবং এখানকার বেশির ভাগ লোক ফরাসি ভাষায় কথা বলে। এরা ওয়ালোন নামে পরিচিত। ব্রাসেলস ক্যাপিটাল সিটি অঞ্চলে উভয় জাতের লোকের বাস। প্রতিটি অঞ্চলই প্রায় স্বায়ত্তশাসিত; কিন্তু ফ্লেমিং ও ওয়ালোনদের মধ্যে এখনও তীব্র দ্বন্দ্ব বিদ্যমান। ফ্ল্যান্ডার্স এলাকা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে আগ্রহী।

ভূগোল সম্পাদনা

বেলজিয়ামকে তিনটি প্রধান ভৌগোলিক অঞ্চলে ভাগ করা যায়: উত্তর-পশ্চিমের উপকূলীয় সমভূমি, মধ্যভাগের মালভূমি এবং দক্ষিণ-পূর্বের আর্দেন পর্বতমালা।

অর্থনীতি সম্পাদনা

জনসংখ্যা সম্পাদনা

সংস্কৃতি সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. https://www.politico.eu/article/sophie-wilmes-belgium-coronavirus-response-accidental-prime-minister/
  2. "সিআইএ পৃথিবীর ফেক্টবুক: বেলজিয়াম"। ১০ জুলাই ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০০৯ 
  3. "Human Development Report 2015" (পিডিএফ)। United Nations। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

সরকারী
সাধারণ তথ্য

  উইকিমিডিয়া অ্যাটলাসে বেলজিয়াম

পর্যটন
Other