ইন্দোনেশিয়া জাতীয় ফুটবল দল
ইন্দোনেশিয়া জাতীয় ফুটবল দল (ইন্দোনেশীয়: Tim Nasional Sepak Bola Indonesia) হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ইন্দোনেশিয়ার প্রতিনিধিত্বকারী পুরুষদের জাতীয় দল, যার সকল কার্যক্রম ইন্দোনেশিয়ার ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্দোনেশিয়া ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। ১৯৪৫ সালে স্বাধীনতার ঘোষণার আগে, দলটি ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ জাতীয় ফুটবল দল হিসেবে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে। এই দলটি ১৯৫২ সাল হতে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার এবং ১৯৫৪ সাল হতে তাদের আঞ্চলিক সংস্থা এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের সদস্য হিসেবে রয়েছে। ১৯৩৪ সালের ১৩ই মে তারিখে, ইন্দোনেশিয়া প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করেছে; ফিলিপাইনের ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত উক্ত ম্যাচে ইন্দোনেশিয়া জাপানকে ৭–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করেছে।
ডাকনাম | মেরাহ পুতিহ | |||
---|---|---|---|---|
অ্যাসোসিয়েশন | ইন্দোনেশিয়া ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন | |||
কনফেডারেশন | এএফসি (এশিয়া) | |||
প্রধান কোচ | শিন তায়-ইয়ং | |||
অধিনায়ক | আন্দ্রিতানি আর্ধিয়াসা | |||
সর্বাধিক ম্যাচ | বাম্বাং পামুংকাস (৮৭) | |||
শীর্ষ গোলদাতা | সোয়েতিয়েপ্তো সোয়েন্তোরো (৪৩) | |||
মাঠ | গেলোরা বুং কার্নো স্টেডিয়াম | |||
ফিফা কোড | IDN | |||
ওয়েবসাইট | www | |||
| ||||
ফিফা র্যাঙ্কিং | ||||
বর্তমান | ১৪৬ (২১ ডিসেম্বর ২০২৩)[১] | |||
সর্বোচ্চ | ৭৬ (সেপ্টেম্বর ১৯৯৮) | |||
সর্বনিম্ন | ১৯১ (জুলাই ২০১৬) | |||
এলো র্যাঙ্কিং | ||||
বর্তমান | ১৫৩ ১১ (১২ জানুয়ারি ২০২৪)[২] | |||
সর্বোচ্চ | ৪৪ (মে ১৯৩৪) | |||
সর্বনিম্ন | ১৭৯ (সেপ্টেম্বর ২০২০) | |||
প্রথম আন্তর্জাতিক খেলা | ||||
ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ ৭–১ জাপান (ম্যানিলা, ফিলিপাইন; ১৩ মে ১৯৩৪)[৩][৪] | ||||
বৃহত্তম জয় | ||||
ইন্দোনেশিয়া ১২–০ ফিলিপাইন (জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়া; ২১ সেপ্টেম্বর ১৯৭২) ইন্দোনেশিয়া ১৩–১ ফিলিপাইন (জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়া; ২৩ ডিসেম্বর ২০০২) | ||||
বৃহত্তম পরাজয় | ||||
বাহরাইন ১০–০ ইন্দোনেশিয়া (রিফা, বাহরাইন; ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২) | ||||
বিশ্বকাপ | ||||
অংশগ্রহণ | ১ (১৯৩৮-এ প্রথম) | |||
সেরা সাফল্য | প্রথম পর্ব (১৯৩৮) | |||
এএফসি এশিয়ান কাপ | ||||
অংশগ্রহণ | ৪ (১৯৯৬-এ প্রথম) | |||
সেরা সাফল্য | গ্রুপ পর্ব (১৯৯৬, ২০০০, ২০০৪, ২০০৭) | |||
এএফএফ চ্যাম্পিয়নশিপ | ||||
অংশগ্রহণ | ১২ (১৯৯৬-এ প্রথম) | |||
সেরা সাফল্য | রানার-আপ (২০০০, ২০০২, ২০০৪, ২০১০, ২০১৬) |
৮০,০০০ ধারণক্ষমতাবিশিষ্ট গেলোরা বুং কার্নো স্টেডিয়ামে মেরাহ পুতিহ নামে পরিচিত এই দলটি তাদের সকল হোম ম্যাচ আয়োজন করে থাকে। এই দলের প্রধান কার্যালয় ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় অবস্থিত। বর্তমানে এই দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন শিন তায়-ইয়ং এবং অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন পার্সিয়া জাকার্তার গোলরক্ষক আন্দ্রিতানি আর্ধিয়াসা।
ইন্দোনেশিয়া এপর্যন্ত মাত্র ১ বার ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে, যেখানে তারা শুধুমাত্র প্রথম পর্বে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে, এএফসি এশিয়ান কাপে ইন্দোনেশিয়া এপর্যন্ত ৪ বার অংশগ্রহণ করেছে, যার প্রত্যেকবার তারা শুধুমাত্র গ্রুপ পর্বে অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়াও, এএফএফ চ্যাম্পিয়নশিপে ইন্দোনেশিয়ার সেরা সাফল্য হচ্ছে ৫ বার রানার-আপ হওয়া।
বাম্বাং পামুংকাস, পোনারিও আস্তামান, হেন্দ্রো কার্তিকো, বেতো গন্সালভেস এবং বোয়াজ সলোসার মতো খেলোয়াড়গণ ইন্দোনেশিয়ার জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন।
ইতিহাস
সম্পাদনানেদারল্যান্ডস ইন্ডিজ ভয়েটবল বন্ড (এনআইভিবি) অথবা তার উত্তরাধিকারী নেদারল্যান্ডস ইন্ডিস ভয়েটবল ইউনিই (এনআইভিইউ) দ্বারা ডাচ ইস্ট ইন্ডিজের পক্ষ থেকে প্রথম দিকে ম্যাচ আয়োজন করা হতো। ১৯৪৫ সালে দেশটির স্বাধীনতার আগে যে ম্যাচগুলো আয়োজন করা হয়েছিল তা পিএসএসআই (ইন্দোনেশিয়া ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন) দ্বারা স্বীকৃতি প্রদান করা হয়নি।[৫] ডাচ ইস্ট ইন্ডিজের নথিভুক্ত প্রথম ফুটবল ম্যাচটি ১৯২১ সালের ২৮শ মার্চ সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে আয়োজিত হয়েছিল। বাটাভিয়ায় আয়োজিত এই ম্যাচটি ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ ১–০ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করে। পরবর্তীকালে ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ ১৯২৮ সালের ১লা আগস্ট তারিখে অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে (২–১ ব্যবধানে জয়ী) এবং দুই বছর পর সাংহাইয়ের (৪–৪ গোলে ড্র) মুখোমুখি হয়েছে।[৫]
১৯৩৪ সালে, জাভার একটি দল পূর্ব ফিলিপাইনের ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত ফার্সি গেমসে ডাচ ইস্ট ইন্ডিজকে প্রতিনিধিত্ব করে, যেখানে তাদের প্রথম ম্যাচে ইন্দোনেশিয়া জাপানের কাছে ৭–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়।[৬] পরের দুটি ম্যাচে পরাজয়ে (২–০ গোলে চীনের কাছে এবং ৩–২ গোলে স্বাগতিক দলের কাছে) দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করে জাভা জাতীয় দল টুর্নামেন্ট সমাপ্ত করে। যদিও সেটি পিএসএসআই কর্তৃক স্বীকৃত নয়, তবে এই ম্যাচের মাধ্যমে বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দলের যাত্রা শুরু হয়। [৭]
র্যাঙ্কিং
সম্পাদনাফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে, ১৯৯৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে ইন্দোনেশিয়া তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অবস্থান (৭৬তম) অর্জন করে এবং ২০১৬ সালের জুলাই মাসে প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে তারা ১৯১তম স্থান অধিকার করে, যা তাদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে, বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে ইন্দোনেশিয়ার সর্বোচ্চ অবস্থান হচ্ছে ৪৪তম (যা তারা ১৯৩৪ সালে অর্জন করেছিল) এবং সর্বনিম্ন অবস্থান হচ্ছে ১৭৯। নিম্নে বর্তমানে ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিং এবং বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে অবস্থান উল্লেখ করা হলো:
- ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিং
অবস্থান | পরিবর্তন | দল | পয়েন্ট |
---|---|---|---|
১৪৪ | ইথিওপিয়া | ১০৬৮.৭৯ | |
১৪৫ | বতসোয়ানা | ১০৬৪.৫ | |
১৪৬ | ইন্দোনেশিয়া | ১০৬৪.০১ | |
১৪৭ | সেন্ট কিট্স ও নেভিস | ১০৫৭.০৫ | |
১৪৮ | লেসোথো | ১০৪৭.২৭ |
- বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং
অবস্থান | পরিবর্তন | দল | পয়েন্ট |
---|---|---|---|
১৫১ | ১৭ | লাইবেরিয়া | ১২৬১ |
১৫২ | ৬ | ভারত | ১২৬০ |
১৫৩ | ১১ | ইন্দোনেশিয়া | ১২৫৮ |
১৫৩ | ১৪ | ইসোয়াতিনি | ১২৫৮ |
১৫৫ | ১০ | মাল্টা | ১২৫০ |
প্রতিযোগিতামূলক তথ্য
সম্পাদনাফিফা বিশ্বকাপ
সম্পাদনাফিফা বিশ্বকাপ | বাছাইপর্ব | ||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
সাল | পর্ব | অবস্থান | ম্যাচ | জয় | ড্র | হার | স্বগো | বিগো | ম্যাচ | জয় | ড্র | হার | স্বগো | বিগো | |
ডাচ ইস্ট ইন্ডিজের অংশ হিসেবে | ডাচ ইস্ট ইন্ডিজের অংশ হিসেবে | ||||||||||||||
১৯৩০ | অংশগ্রহণ করেনি | অংশগ্রহণ করেনি | |||||||||||||
১৯৩৪ | |||||||||||||||
১৯৩৮ | প্রথম পর্ব | ১৫তম | ১ | ০ | ০ | ১ | ০ | ৬ | স্বয়ংক্রিয়ভাবে উত্তীর্ণ | ||||||
ইন্দোনেশিয়ার অংশ হিসেবে | ইন্দোনেশিয়ার অংশ হিসেবে | ||||||||||||||
১৯৫০ | প্রত্যাহার | প্রত্যাহার | |||||||||||||
১৯৫৪ | অংশগ্রহণ করেনি | অংশগ্রহণ করেনি | |||||||||||||
১৯৫৮ | প্রত্যাহার | ৩ | ১ | ১ | ১ | ৫ | ৪ | ||||||||
১৯৬২ | প্রত্যাহার | প্রত্যাহার | |||||||||||||
১৯৬৬ | অংশগ্রহণ করেনি | অংশগ্রহণ করেনি | |||||||||||||
১৯৭০ | |||||||||||||||
১৯৭৪ | উত্তীর্ণ হয়নি | ৬ | ১ | ২ | ৩ | ৬ | ১৩ | ||||||||
১৯৭৮ | ৪ | ১ | ১ | ২ | ৭ | ৭ | |||||||||
১৯৮২ | ৮ | ২ | ২ | ৪ | ৫ | ১৪ | |||||||||
১৯৮৬ | ৮ | ৪ | ১ | ৩ | ৯ | ১০ | |||||||||
১৯৯০ | ৬ | ১ | ৩ | ২ | ৫ | ১০ | |||||||||
১৯৯৪ | ৮ | ১ | ০ | ৭ | ৬ | ১৯ | |||||||||
১৯৯৮ | ৬ | ১ | ৪ | ১ | ১১ | ৬ | |||||||||
২০০২ | ৬ | ৪ | ০ | ২ | ১৬ | ৭ | |||||||||
২০০৬ | ৬ | ২ | ১ | ৩ | ৮ | ১২ | |||||||||
২০১০ | ২ | ০ | ০ | ২ | ১ | ১১ | |||||||||
২০১৪ | ৮ | ১ | ১ | ৬ | ৮ | ৩০ | |||||||||
২০১৮ | ফিফা দ্বারা নিষিদ্ধ | ফিফা দ্বারা নিষিদ্ধ | |||||||||||||
২০২২ | অনির্ধারিত | অনির্ধারিত | |||||||||||||
মোট | প্রথম পর্ব | ১/২১ | ১ | ০ | ০ | ১ | ০ | ৬ | ৭৬ | ১৯ | ১৬ | ৪১ | ৯০ | ১৬১ |
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "ফিফা/কোকা-কোলা বিশ্ব র্যাঙ্কিং"। ফিফা। ২১ ডিসেম্বর ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০২৩।
- ↑ ক খ গত এক বছরে এলো রেটিং পরিবর্তন "বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং"। eloratings.net। ১২ জানুয়ারি ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০২৪।
- ↑ "Dutch East Indies International matches"। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০১৫।
- ↑ "Indonesia matches, ratings and points exchanged"। World Football Elo Ratings: Indonesia। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ ক খ Morrison, Neil। "Indonesian International Matches 1921–2001"। RSSSF। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১০।
- ↑ "Sensation at Manila Games – Running Found to be Short"। Straits Times। Singapore। ১৪ মে ১৯৩৪। ২২ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১০।
- ↑ "World Football Elo Ratings: Indonesia"। ELO। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০১০।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- দাপ্তরিক ওয়েবসাইট (ইন্দোনেশীয়)
- ফিফা-এ ইন্দোনেশিয়া জাতীয় ফুটবল দল ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ জুলাই ২০১৮ তারিখে (ইংরেজি)
- এএফসি-এ ইন্দোনেশিয়া জাতীয় ফুটবল দল (ইংরেজি)