লাহোর

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী

লাহোর (/ləˈhɔːr/; পাঞ্জাবি: لہور; উচ্চারিত: [lɔ̀ːɾᵊ]; উর্দু: لاہور‎‎; উচ্চারিত: [lɑːˈɦɔːɾ]) হল পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী এবং করাচির পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। সেই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের ২৬তম বৃহত্তম শহর। লাহোর হচ্ছে পাকিস্তানের অন্যতম ধনী শহর যার আনুমানিক জিডিপি (পিপিপি) ২০১৯ সালের হিসাবে ৮৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার । এটি বৃহত্তর পাঞ্জাব অঞ্চলের বৃহত্তম শহর এবং ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং এটি পাকিস্তানের সবচেয়ে সামাজিকভাবে উদার প্রগতিশীল এবং মহাজাগতিক শহরগুলির মধ্যে একটি।

লাহোর
لہور
لاہور
অতিমহানগরী
Badshahi Mosque front picture.jpg
Lahore Fort view from Baradari.jpgWazir Khan Mosque by Moiz.jpg
Minar e Pakistan night image.jpgNaulakha Pavilion in Lahore Fort (cropped).jpg
Beautiful pavilion of Faiz Baksh terrace.jpgLahore Museum, Lahore.jpg
লাহোরের অফিসিয়াল লোগো
Emblem
ডাকনাম: প্রাচ্যের প্যারিস, পাকিস্তানের হৃদয়[১], পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক রাজধানী[২], মুঘলদের উদ্যান ও দাতা আলি হুজভিরির শহর (দাতা কি নগরি)[৩].
পাকিস্তানের পাঞ্জাবের মধ্যে লাহোর (লাল রঙে) এবং (ইনসেটে) পাঞ্জাবের মধ্যে অবস্থান
পাকিস্তানের পাঞ্জাবের মধ্যে লাহোর (লাল রঙে) এবং (ইনসেটে) পাঞ্জাবের মধ্যে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ৩১°৩২′৫৯″ উত্তর ৭৪°২০′৩৭″ পূর্ব / ৩১.৫৪৯৭২° উত্তর ৭৪.৩৪৩৬১° পূর্ব / 31.54972; 74.34361
দেশ পাকিস্তান
প্রদেশপাঞ্জাব
সিটি জেলা সরকার১১ সেপ্টেম্বর ২০০৮
সিটি কাউন্সিললাহোর
শহর
সরকার
 • ধরনসিটি জেলা
 • জেলা প্রশাসকক্যাপ্টেন (আর) মুহাম্মদ উসমান ইউনিস
 • জেলা সমন্বয় অফিসারক্যাপ্টেন (আর) মুহাম্মদ উসমান ইউনিস
 • রাজধানী শহর পুলিশ প্রধানক্যাপ্টেন (আর) আমিন ভেনাস
আয়তন[৪]
 • মোট১৭২ বর্গকিমি (৬৮৪ বর্গমাইল)
উচ্চতা২১৭ মিটার (৭১২ ফুট)
জনসংখ্যা (২০০৯)
 • মোট১,০০,০০,০০০
 লাহোর শহর এবং লাহোর সেনানিবাসের জনসংখ্যা সংযুক্ত
এলাকা কোড0423
ওয়েবসাইটhttp://www.lahore.gov.pk
লাহোর সেনানিবাস আইননুযায়ী মিলিটারি-শাসিত পত্তনি থেকে আলাদা

স্যার গঙ্গা রামকে 'আধুনিক লাহোরের জনক' হিসেবে বিবেচনা করা হয়। লাহোরের উৎস প্রাচীনত্বে পৌঁছেছে। শহরটি তার ইতিহাসের পুরো সময় জুড়ে অসংখ্য সাম্রাজ্য দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে মধ্যযুগীয় যুগে হিন্দু শাহী, গজনবী, ঘুরি এবং দিল্লি সালতানাত। ১৬ শতকের শেষ থেকে ১৮ শতকের শুরুর দিকে মুঘল সাম্রাজ্যের অধীনে লাহোর তার জাঁকজমকের উচ্চতায় পৌঁছেছিল এবং বহু বছর ধরে এর রাজধানী শহর হিসাবে কাজ করেছিল। শহরটি ১৭৩৯ সালে আফশারি শাসক নাদের শাহের বাহিনী দ্বারা দখল করা হয়েছিল, তারপরে আফগান এবং শিখদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় এটি ক্ষয়ের সময় পড়েছিল। লাহোর অবশেষে ১৯ শতকের গোড়ার দিকে শিখ সাম্রাজ্যের রাজধানী হয়ে ওঠে এবং এর কিছু হারানো মহিমা ফিরে পায়। লাহোর তখন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সাথে যুক্ত হয় এবং ব্রিটিশ পাঞ্জাবের রাজধানী করা হয়। লাহোর ছিল ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের স্বাধীনতা আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু, এই শহরটি ছিল ভারতের স্বাধীনতার ঘোষণা এবং পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানোর প্রস্তাবের স্থান। এটি পাকিস্তানের স্বাধীনতার পূর্বে দেশভাগের সময় সবচেয়ে খারাপ কিছু দাঙ্গার সম্মুখীন হয়েছিল। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান আন্দোলন এবং পরবর্তীকালে ভারত বিভাগের সাফল্যের পর, লাহোরকে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী ঘোষণা করা হয়।

লাহোর পাকিস্তানের উপর একটি শক্তিশালী সাংস্কৃতিক প্রভাব বিস্তার করে। এটি একটি ইউনেস্কো সাহিত্যের শহর এবং পাকিস্তানের প্রকাশনা শিল্পের প্রধান কেন্দ্র; লাহোর পাকিস্তানের সাহিত্য দৃশ্যের প্রধান কেন্দ্র হিসাবে রয়ে গেছে। এছাড়াও শহরটি পাকিস্তানের শিক্ষার একটি প্রধান কেন্দ্র,[33] এই শহরে অবস্থিত পাকিস্তানের কিছু নেতৃস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। বহু বছর ধরে, লাহোর ছিল পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্প, ললিউডের আবাসস্থল, যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বেশিরভাগ চিত্রগ্রহণ করাচিতে স্থানান্তরিত হয়েছে। লাহোর হল কাওয়ালি সঙ্গীতের একটি প্রধান কেন্দ্র। এছাড়াও এই শহরটি পাকিস্তানের বেশিরভাগ পর্যটন শিল্পের আয়োজক, [35][36] ওয়ার্ল্ড সিটি, বিখ্যাত বাদশাহী মসজিদ এবং ওয়াজির খান মসজিদের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি শিখ ও সুফি মাজার সহ প্রধান আকর্ষণগুলির সাথে। লাহোরে লাহোর ফোর্ট এবং শালিমার উদ্যানও রয়েছে, যে দুটিই ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত ।.[৫]

ইতিহাসসম্পাদনা

লাহোর শহরটি দক্ষিণ এশিয়ামধ্য এশিয়াকে সংযুক্তকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথের উপর অবস্থিত। ফলে দীর্ঘ ইতিহাস জুড়ে বহু রাজ্য ও রাজবংশের রাজধানী হিসেবে শহরটি ব্যবহৃত হয়েছে। হিন্দু পুরাণমতে, রামের সন্তান লাভা বা লোহ এই শহরের পত্তন করেন। ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে চীনা পুরোহিত চুয়ান জাং ভারতে তীর্থযাত্রায় যাওয়ার পথে লাহোর দিয়ে যান এবং তিনি এখানকার বিবরণ দিয়ে গেছেন। ১১শ শতকে মুসলিম গজনভিরা ব্রাহ্মণদের হাত থেকে শহরটির নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেন। তাঁরা ১১৫২ সালে এখানে তাদের রাজধানী স্থাপন করেন। দ্বাদশ শতকের শেষ দিকে উত্তরের ঘুরি সুলতানরা শহরটি দখল করেন[৬] এবং ত্রয়োদশ শতকের শুরুতেই শহরটিতে ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম শাসকের অভিষেক অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়। এরপর পরে কয়েক শতাব্দী যাবৎ মঙ্গোল হানাদারেরা লাহোরের উপর উপর্যুপরি আক্রমণ চালায়, কিন্তু লাহোর তা সত্ত্বেও টিকে থাকে এবং ১৫২৪ সালে এটিকে ভারতের মুঘল সাম্রাজ্যের রাজধানী বানানো হয়। মুঘলদের পতনের পর ১৭৬৭ সালে লাহোর একটি শিখ রাজ্যের রাজধানীতে পরিণত হয়। শিখরা পরবর্তীকালে ব্রিটিশদের কাছে পরাজিত হলে ১৮৪৯ সাল থেকে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের স্বাধীনতা লাভের আগ পর্যন্ত এটি ব্রিটিশ ভারতের একটি শহর ছিল।

ভূগোলসম্পাদনা

লাহোর ৩১°১৫′ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ৩১°৪৫′ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৭৪°০১′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ থেকে ৭৪°৩৯′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। লাহোর উত্তর ও পশ্চিমে শেখুপুরা জেলা, পূর্বে ওয়াগাহ এবং দক্ষিণে কাসুর জেলা দ্বারা বেষ্টিত। রাভি নদী লাহোরের উত্তর দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। লাহোর শহর মোট আয়তন ৪০৪ বর্গকিলোমিটার (১৫৬ বর্গ মাইল)।

জনসংখ্যাসম্পাদনা

২০১৭ সালের আদমশুমারীর ফলাফল অনুযায়ী লাহোরের মোট জনসংখ্যা ১১,১২৬,২৮৫ জন, যা ১৯৯৯ সালের পর থেকে বার্ষিক ৪.০৭% হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। লিঙ্গ অনুপাত অনুসারে শহরের মোট জনসংখ্যার ৫২.৩৫% পুরুষ, এবং ৪৭.৬৪% মহিলা এবং হিজড়া জনগোষ্ঠী জনসংখ্যার মাত্র ০.০১%। লাহোর একটি যুবক শহরে পরিণত হয়েছে, যার ৪০% এর বেশি বাসিন্দার বয়স ১৫ বছরের কম। শহরের গড় আয়ু ৬০ বছরেরও কম।[৭]

লাহোর মুসলিম সংখ্যাগুরু শহর এখানকার জনসংখ্যার ৯৭% মুসলমান এবং সংখ্যালঘু জনসংখ্যার মধ্যে ২% খ্রিস্টান এবং শিখ ও হিন্দু মিলিত জনসংখ্যা ১% ।[৮] এখানে একটি ছোট কিন্তু দীর্ঘকালীন জরাস্ট্রুবাদ সম্প্রদায়ও রয়েছে। অধিকন্তু, লাহোরে শিখ ধর্মের কয়েকটি পবিত্র স্থান রয়েছে এবং এটি একটি প্রধান শিখ তীর্থস্থান।[৯][১০]

১৯৯৮ সালের আদম শুমারি অনুসারে লাহোরের ৯৯% জনসংখ্যা ছিল মুসলমান, যা ১৯৪১ সালের ৬০% এর চেয়ে একটু বেশি ছিল। অন্যান্য ধর্মের মধ্যে খ্রিস্টান (মোট জনসংখ্যার ৫.৮০%, যদিও তারা পল্লী জনসংখ্যার প্রায় ৯.০%) এবং কিছু সংখ্যক আহমদিয়া, বাহ, হিন্দু, পার্সী এবং শিখ ছিল। লাহোরের প্রথম গির্জাটি ১৬শ শতাব্দীর শেষদিকে সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে নির্মিত হয়েছিল, যা ১৬৩২ সালে শাহ জাহান সমান করে দিয়েছিল।[১১]

শিল্পসম্পাদনা

লাহোর শহরে তেমন কলকারখানা না থাকলেও এটি চারপাশে অবস্থিত ঘন শিল্প-অধ্যুষিত অঞ্চলগুলির একটি বিতরণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে থাকে। এখানে টেক্সটাইল, ধাতব দ্রব্য, রাসায়নিক দ্রব্য, যন্ত্রপাতি, কাঁচের দ্রব্য এবং চামড়া ও রাবারের দ্রব্যের শিল্পকারখানা আছে।

ঐতিহাসিক পার্ক এবং বাগানসম্পাদনা

  1. শালিমার উদ্যান, লাহোর
  2. বাগ-ই-জিন্নাহ
  3. ইকবাল পার্ক (পূর্বে মিন্টো পার্ক)
  4. জিলানি পার্ক (পূর্বে হিসাবে রেসকোর্স পার্ক পরিচিত)
  5. গুলশান-ই-ইকবাল পার্ক

মসজিদসম্পাদনা

  1. বাদশাহী মসজিদ
  2. ওয়াজির খান মসজিদ

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসম্পাদনা

লাহোর শহর পাকিস্তানের শিক্ষা ও সংস্কৃতির অন্যতম কেন্দ্র। এখানে ১৮৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। শহরে একটি পারমাণবিক শক্তি গবেষণা কেন্দ্রও রয়েছে।

ঐতিহ্যসম্পাদনা

 
লাহোরে খোলা আকাশের নিচে একটি খাবারের দোকান

লাহোরে স্থাপত্যকলার দিক থেকে উল্লেখযোগ্য বেশ কিছু ভবন আছে। এগুলির অনেকগুলি মুঘল আমলে নির্মিত হয়েছিল;ঐ আমলে শহরটির ব্যাপক প্রসিদ্ধি ঘটে। এদের মধ্যে আছে সম্রাট জাহাঙ্গীরের প্রাসাদ ও সমাধি, লাহোর দুর্গ, এবং ওয়াজির খান মসজিদ, যেখানে অন্তর্লিখিত মৃৎশিল্পের উৎকৃষ্ট নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়। শহরের অন্যান্য ঐতিহাসিক ভবন ও সৌধের মধ্যে আছে শালিমার বাগান, লাহোর জাদুঘর, এবং সোনালী ও মুক্তার মসজিদসমূহ।

স্থিরচিত্রসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "About Lahore - The Heart of Pakistan"। ২ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  2. "Pakistan's Cultural Capital"। ২৮ মার্চ ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  3. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৩ জুলাই ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৬ 
  4. "Punjab Portal"। Government of Punjab। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-১১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. Planet, Lonely। "Lahore, Pakistan – Lonely Planet"Lonely Planet। ২০ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০১৬ 
  6. "History of Lahore City"। ১৪ মার্চ ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০০৯ 
  7. "Lahore Population 2018"। ১৮ অক্টোবর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১৮ 
  8. "Largest Christian Community of Pakistan resides in Lahore District"। christiansinpakistan.com। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  9. "Sikh pilgrims from India arrive in Lahore"Dawn। Pakistan। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  10. "Lahore – SikhiWikhi, free Sikh encyclopedia"। sikhiwikhi.org। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  11. Chaudhry, Nazir Ahmad (২০০০)। Lahore। Sang-e-Meel Publications। আইএসবিএন 969351047X 


  1. https://www.citypopulation.de/Pakistan-100T.html