হবিগঞ্জ জেলা

বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের একটি জেলা

হবিগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। উপজেলার সংখ্যানুসারে হবিগঞ্জ বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা।[২] ১৯৮৪ সালে হবিগঞ্জকে জেলায় রূপান্তর করা হয়। এর আগে ১৮৭৪ সাল থেকে হবিগঞ্জ মহকুমা সিলেট জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল।

হবিগঞ্জ
জেলা
বাংলাদেশে হবিগঞ্জ জেলার অবস্থান
বাংলাদেশে হবিগঞ্জ জেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৪°২২′৩০″ উত্তর ৯১°২৫′০″ পূর্ব / ২৪.৩৭৫০০° উত্তর ৯১.৪১৬৬৭° পূর্ব / 24.37500; 91.41667 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগসিলেট বিভাগ
আয়তন
 • মোট২,৬৩৬.৫৮ বর্গকিমি (১,০১৭.৯৯ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট১৮,৩০,৫৫৮
 • জনঘনত্ব৬৯০/বর্গকিমি (১,৮০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৪৫%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৩৩০০ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৬০ ৩৬
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

ইতিহাসসম্পাদনা

চাকলাপুঞ্জীসম্পাদনা

প্রাগৈতিহাসিক প্রতিবেদনসমূহ হতে জানা যায় যে, বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার সাথে লালমাই পাহাড় এবং সিলেট, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম এবং মধুপুরের উচ্চতর এলাকাসমূহের সাথে যুক্ত ছিল। চাকলাপুঞ্জী চা বাগানের কাছে চান্দির মাজার নামক এলাকায় বালু নদী নামে পরিচিত একটি নদীর পাড়ে প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তু, যেমন: জীবাশ্ম কাঠ, হস্তনির্মিত যুদ্ধাস্ত্র ইত্যাদি প্রমাণ করে যে, এখানে বহু আগে থেকেই প্রাচীন মানবের বসবাস ছিল।

মুগলদের সাথে বারো ভূইয়াদের যুদ্ধসম্পাদনা

১৫ শতকে সিলেটের জমিদার আনোয়ার খান এবং বানিয়াচংয়ের জমিদার হোসেন খান (বারো ভূইয়াদের দলভূক্ত) এর সাথে যুদ্ধ হয় মুঘল সেনাবাহিনীর, যা বাহরাস্থান-ই-গায়েবী গ্রন্থে উল্লেখ পাওয়া যায়।

পুটিজুরী দুর্গসম্পাদনা

খাজা ওসমান (আফগান রাজা) বাকাই নগর দুর্গ ছেড়ে এসে গিরিপালের কাছে পুটিজুরী নামক দুর্গে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি গড়ে তোলেন একটি দুর্গ। যা প্রতিরক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খাজা ওসমানের ভাই দুর্গ ত্যাগ করলে মুঘল সেনারা সে সুযোগ গ্রহণ করে খাজা ওসমানের সেনাদলকে বর্তমান মৌলভীবাজার জেলার দালাম্বপুর নামক স্থানে পরাজিত করে।

হবিগঞ্জ বাজার–শায়েস্তাগঞ্জ–বাল্লা রেলপথসম্পাদনা

উপনবেশিক বৃটিশ শাসন আমলে তৎকালীন (অবিভক্ত বৃটিশ-ভারতের) আসাম প্রভেন্সির সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহুকুমায় রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বৃটিশ সরকার ১৯২৮ সালে হবিগঞ্জ বাজার-শায়েস্তাগঞ্জ-বাল্লা রেলপথ নির্মাণ করে গড়ে তুলে অবকাঠামো।[৩] ২০০৩ সালে এ লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।[৩]

পৌরসভা অফিস ভবনসম্পাদনা

উপনবেশিক বৃটিশ শাসন আমলে তৎকালীন (অবিভক্ত বৃটিশ-ভারতের) আসাম প্রভেন্সির সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহুকুমায় মিউন্যিসিপ্যাল অফিস বিল্ডিং হবিগঞ্জ ফাউন্ডেশন স্থাপিত ও প্রতিষ্ঠত হয় ১৬ ডিসম্বর ১৯৪০ সালে। (পুরাতন পৌরসভা নামে পরিচিত) এটি হবিগঞ্জ সদর এর পুরাতন জজকোর্ট এলাকায় অবস্থিত।

তেলিয়াপাড়ার যুদ্ধসম্পাদনা

 
তেলিয়াপাড়া স্মৃতিসৌধ

৪ এপ্রিল, ১৯৭১ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের উর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা তেলিয়াপাড়ায় ২য় ইষ্ট বেঙ্গলের সদরদপ্তরে সমবেত হন। চা বাগান পরিবেষ্টিত পাহাড়ী এ অঞ্চলে জেনারেল এম এ জি ওসমানী, লে: কর্ণেল আব্দুর রব, লে: কর্ণেল সালাউদ্দিন মোহাম্মদ রেজা, মেজর কাজী নুরুজ্জামান, মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর নুরুল ইসলাম, মেজর শাফায়াত জামিল, মেজর মইনুল হোসাইন চৌধুরীসহ অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন সেদিন। সেদিনের সভায় চারজন সিনিয়র অফিসারকে যুদ্ধকালীন কর্মক্ষেত্র ভাগ করে দেয়া হয়; সিলেট-বাহ্মণবাড়ীয়া এলাকায় মেজর শফিউল্লা, কুমিল্লা-নোয়াখালী এলাকায় মেজর খালেদ মোশাররফ, চট্টগ্রাম-পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় মেজর জিয়াউর রহমান এবং কুষ্টিয়া-যশোর এলাকায় মেজর আবু ওসমান চৌধুরীকে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এই সভাতেই মুক্তিবাহিনী সাংগঠনিক ভাবে পরিপুষ্ট হয়ে উঠে এবং জেনারেল এম এ জি ওসমানীর নেতৃত্ব গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম বৈঠককে স্মরণ করে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এখানে তেলিয়াপাড়া স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।

অবস্থান ও আয়তনসম্পাদনা

হবিগঞ্জ জেলা ২৩˚৫৭” হতে ২৪˚৪২” উত্তর অক্ষাংশ ও ৯১˚১০” হতে ৯১˚৪০” পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত এবং আয়তনে ২,৬৩৬.৫৮ বর্গ কিলোমিটার।[৪] হবিগঞ্জ জেলার উত্তরে সুনামগঞ্জসিলেট জেলা, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পূর্বে মৌলভীবাজার জেলা এবং পশ্চিমে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকিশোরগঞ্জ জেলা

প্রশাসনিক এলাকাসমূহসম্পাদনা

হবিগঞ্জ জেলা ৯টি উপজেলা, ৯টি থানা, ৬টি পৌরসভা, ৭৮টি ইউনিয়ন, ১২৪১টি মৌজা, ২০৯৩টি গ্রাম ও ৪টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।

উপজেলাসমূহসম্পাদনা

হবিগঞ্জ জেলায় মোট ৯টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলো হল:

ক্রম নং উপজেলা আয়তন[৫]
(বর্গ কিলোমিটারে)
প্রশাসনিক থানা আওতাধীন এলাকাসমূহ
০১ আজমিরীগঞ্জ ২২৩.৯৮ আজমিরীগঞ্জ পৌরসভা (১টি): আজমিরীগঞ্জ
ইউনিয়ন (৫টি): আজমিরীগঞ্জ সদর, বদলপুর, জলসুখা, কাকাইলছেও এবং শিবপাশা
০২ চুনারুঘাট ৪৯৫.৫১ চুনারুঘাট পৌরসভা (১টি): চুনারুঘাট
ইউনিয়ন (১০টি): গাজীপুর, আহম্মদাবাদ, দেওরগাছ, পাইকপাড়া, শানখলা, চুনারুঘাট, উবাহাটা, সাটিয়াজুরী, রাণীগাঁও এবং মিরাশী
০৩ নবীগঞ্জ ৪৩৯.৬১ নবীগঞ্জ পৌরসভা (১টি): নবীগঞ্জ
ইউনিয়ন (১৩টি): বড়ভাকৈর পশ্চিম, বড়ভাকৈর পূর্ব, ইনাতগঞ্জ, দীঘলবাক, আউশকান্দি, কুর্শি, করগাঁও, নবীগঞ্জ সদর, বাউসা, দেবপাড়া, গজনাইপুর, কালিয়ারভাঙ্গা এবং পানিউমদা
০৪ বানিয়াচং ৪৮২.২৬ বানিয়াচং ইউনিয়ন (১৫টি): বানিয়াচং উত্তর পূর্ব, বানিয়াচং উত্তর পশ্চিম, বানিয়াচং দক্ষিণ পূর্ব, বানিয়াচং দক্ষিণ পশ্চিম, দৌলতপুর, কাগাপাশা, বড়ইউড়ি, খাগাউড়া, পুকড়া, সুবিদপুর, মক্রমপুর, সুজাতপুর, মন্দরী, মুরাদপুর এবং পৈলারকান্দি
০৫ বাহুবল ২৫০.৬৫ বাহুবল ইউনিয়ন (৭টি): স্নানঘাট, পুটিজুরী, সাতকাপন, বাহুবল, লামাতাশী, মীরপুর এবং ভাদেশ্বর
০৬ মাধবপুর ২৯৪.২৬ মাধবপুর পৌরসভা (১টি): মাধবপুর
ইউনিয়ন (১১টি): ধর্মঘর, চৌমুহনী, বহরা, আদাঐর, আন্দিউড়া, শাহজাহানপুর, জগদীশপুর, বুল্লা, নোয়াপাড়া, ছাতিয়াইন এবং বাঘাসুরা
০৭ লাখাই ১৯৬.৫৫ লাখাই ইউনিয়ন (৬টি): লাখাই, মোড়াকরি, মুড়িয়াউক, বামৈ, করাব এবং বুল্লা
০৮ শায়েস্তাগঞ্জ ৬৬.৯৩ শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা (১টি): শায়েস্তাগঞ্জ
ইউনিয়ন (৩টি): নুরপুর, শায়েস্তাগঞ্জ এবং ব্রাহ্মণডুরা
০৯ হবিগঞ্জ সদর ১৮৬.৮৪ হবিগঞ্জ সদর পৌরসভা (১টি): হবিগঞ্জ
ইউনিয়ন (৮টি): লুকড়া, রিচি, তেঘরিয়া, পইল, গোপায়া, রাজিউরা, নিজামপুর এবং লস্করপুর

সংসদীয় আসনসম্পাদনা

সংসদীয় আসন জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[৬] সংসদ সদস্য[৭][৮][৯][১০][১১] রাজনৈতিক দল
২৩৯ হবিগঞ্জ-১ বাহুবল উপজেলা এবং নবীগঞ্জ উপজেলা গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
২৪০ হবিগঞ্জ-২ বানিয়াচং উপজেলা এবং আজমিরীগঞ্জ উপজেলা আব্দুল মজিদ খান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
২৪১ হবিগঞ্জ-৩ লাখাই উপজেলা, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা এবং শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা আবু জাহির বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
২৪২ হবিগঞ্জ-৪ চুনারুঘাট উপজেলা এবং মাধবপুর উপজেলা মাহবুব আলী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

জনসংখ্যা ও ধর্মসম্পাদনা

সর্বশেষ আদমশুমারী (২০১১) অনুযায়ী হবিগঞ্জের মোট জনসংখ্যা ২০,৮৯,০০১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১০,২৫,৫৯১ জন ও নারী ১০,৬৩,৪১০। এ জেলায় জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৭৯২ জন। বাংলাদেশে বসবাসরত ২৫,০০০ মণিপুরীর একটি বৃহৎ অংশ হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ এবং গাজীপুর ইউনিয়নে বসবাস করে। এই সংখ্যা ৪,০০০ এর অধিক।

হবিগঞ্জ জেলায় অন্য ধর্মের লোকদের চেয়ে মুসলিমদের সংখ্যা বেশি। হবিগঞ্জ জেলায়:

  • ইসলাম - ৮০.২৩%
  • হিন্দু - ১৮.১২%
  • বৌদ্ধ - ০.০৫%
  • খ্রিস্টান - ০.১৩%
  • অন্যান্য - ০.৪৭%

শিক্ষা ব্যবস্থাসম্পাদনা

 
হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়

হবিগঞ্জ এর সাক্ষরতার গড় হার ৪৫%। এখানে রয়েছে:

  • বিশ্ববিদ্যালয়- ১ টি
  • কলেজ - ৪৯টি (১০টি অনার্স কলেজ, ৬টি সরকারি কলেজ, ৪০টি বেসরকারি কলেজ, 2টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট,একটি মেডিকেল কলেজ),
  • বিদ্যালয় - ১৮৯টি (১৬টি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, ৯৯টি বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ৮৪টি জুনিয়র বিদ্যালয়),
  • প্রাথমিক বিদ্যালয় - ১,৪৪৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৭৩২টি সরকারি, ৭১১টি বেসরকারি),
  • মাদ্রাসা - ৯৬টি
  • অস্থায়ী বিদ্যালয় - ২৬টি।
  • গ্রন্থাগার (১) হবিগঞ্জ পৌর সাধারণ পাঠাগার, হবিগঞ্জ
  • বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্রী রবীন্দ্র চন্দ্র দাস গ্রন্থাগার, মুক্তাহার, নবীগঞ্জ (২)
বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত তারিখ উপাচার্য
হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ১ এপ্রিল ২০১৯ আবদুল বাসেত
মেডিকেল কলেজ স্থাপিত তারিখ অধ্যক্ষ
শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ, হবিগঞ্জ ২০১৭ অধ্যাপক ডা. আবু সুফিয়ান
কলেজ স্থাপিত তারিখ অধ্যক্ষ
বৃন্দাবন সরকারি কলেজ ১৯৩১ অধ্যাপক মোঃ ইলিয়াছ বকত চৌধুরী
হবিগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ ১ নবেম্বর ১৯৮৫ প্রফেসর মোঃ নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া
আলেয়া জাহির কলেজ ২০১১ পার্থ প্রতিম দাশ
KABIR COLLEGIATE ACADEMY ২০০১ জনাম মোহাম্মদ জমাল উদ্দিন
Oxbridge College ২০১৬
শচীন্দ্র কলেজ ১৯৯৮ মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান
শাহজালাল সরকারি কলেজ ১৯৭০ এ এন এম মফিজুল ইসলাম
শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ ১৯৭৩ জনাব মোঃ আজিজুল হাছান চৌধুরী
নবীগঞ্জ সরকারী কলেজ ১৯৮৪ সফর আলী
আলিফ সোবহান চৌধুরী সরকারি কলেজ ১৯৯৩ মাহবুবুর রহমান
বাহুবল কলেজ ২০০৩ মোহাম্মদ আবদুর রব
আজমিরীগঞ্জ সরকারি কলেজ ১৯৯৩ সামসুল আলম
পাহাড়পুর আদর্শ কলেজ ১৯৯৯ রন্টু কুমার দাশ
জনাব আলী সরকারি কলেজ ১৯৭৯ সাফিউজ্জামান খান
সুফিয়া মতিন মহিলা কলেজ ২০০০ ছালামত আলী খান
চুনারুঘাট সরকারি কলেজ ১৯৭৩ অসিত কুমার পাল
লাখাই মুক্তিযুদ্ধা সরকারি ডিগ্রি কলেজ ১৯৯৩ মোঃ জাবেদ আলী
ইনাতগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ ১৯৯৫ ড.সজিদ সেন রায়
Ideal Womens College ২০১৬
নয় মৌজা কলেজ ২০১৭
টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপিত তারিখ প্রাধান শিক্ষক
হবিগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ হাবিবুর রহমান
মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়[১২]
উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপিত তারিখ প্রধান শিক্ষক
হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ১৮৮৩ শফিকুর রহমান
বি. কে. জি. সি. সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ১৯২৩ আমিনা খাতুন
আসেরা উচ্চ বিদ্যালয় ১৯৬৩ মোঃ আতিক উল্লাহ
এএবিসিসি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, আজমিরীগঞ্জ। ১৯৩০ মো: আহসান মোস্তফা
গংগানগর উচ্চ বিদ্যালয় ১৯৯৮ রুপা রাণী বসাক
গাজীপুর হাই স্কুল ১৯৬০ মোঃ রফিক আলী
নূরপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ১৯৮৬ মো:আমীর ফারুক তালুকদার
পইল উচ্চ বিদ্যালয় ১৮৮৫ সুমন চন্দ্র দাশ
মহারত্ন পাড়া এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ২০১২ দিলীপ কুমার রায়
মিরপুর ফয়জুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয় ১৯৬০ মোঃ আরজু মিয়া
মির্জাপুর উচ্চ বিদ্যালয় ১৯৯৮ সেবিকা রায়
মাদ্রাসা

কৃষিসম্পাদনা

 
লালচাঁন্দ চা-বাগান
  • প্রধান ফসলঃ ধান, চা, গম, আলু, পাট, চীনাবাদাম, তাম্বুল এবং তৈল বীজ।
  • চা বাগানঃ ২৪টি চা বাগান; মোট আয়তন ১৫,৭০৩.২৪ হেক্টর।
  • রবার বাগানঃ ৩টি - রুপাইছড়া-বাহুবল রাবার বাগান (১৯৮১); মোট ২,০০০ একর (৮.১ বর্গমাইল) আয়তনের এই বাগানের অর্ধেক হবিগঞ্জ জেলায় ও অবশিষ্ট অংশ পার্শ্ববর্তী মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমংগল উপজেলায় অবস্থিত। শাহজীবাজার-চুনারুঘাট রাবার বাগান (১৯৭৮); মোট আয়তন ২,০০৪ একর (৮.১১ বর্গ কিলোমিটার), সাতগাঁও রবার বাগান (১৯৭১), মোট আয়তন ২০০ একর (০.৮১ বর্গমিটার)।
  • প্রধান ফলঃ আম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, নারকেল, পাতি লেবু, আনারস এবং কালোজাম।
  • মৎস্যচাষ এবং খামারঃ গরুর খামার ১৪৮টি, পোল্ট্রি ৭৩৯টি এবং ফিশারি ৬৩৮টি।

অর্থনীতিসম্পাদনা

 
হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক
শ্রমশক্তি
  • পেশা ভিত্তিক জনগোষ্ঠী - কৃষি ৪২.২৬%, কৃষি শ্রমিক ২০.৫৫%, অকৃষি শ্রমিক ৬.৪৫%, ব্যবসা ৮.২%, চাকরি ৪.৬৯%, শিল্প ১.৮%, মৎসজীবী ২.৭৩%, অন্যান্য ১৩.৪১%।
শিল্প
  • শিল্প-কারখানাঃ টেক্সটাইল মিল, সিরামিক কারখানা, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করন কারখানা, ছাতা কারখানা, আটা কল, চাল কল, আইস ফ্যাক্টরী, সাবান কারখানা, শুকনো মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র, বিস্কুট ফ্যাক্টরী।
  • কুটির শিল্পঃ ওয়েভিং, বাঁশের কাজ, স্বর্ণকার, কর্মকার, কুমার, সেলাই এবং ওয়েল্ডিং।
খনিজ
  • প্রাপ্ত সম্পদঃ প্রাকৃতিক গ্যাস, সিলিকা বালি, খনিজ বালি।
  • গ্যাস ক্ষেত্রঃ ৩টি; রশিদপুর গ্যাস ক্ষেত্র (১৯৬০), বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্র (১৯৯৮) এবং হবিগঞ্জ গ্যাস ক্ষেত্র (১৯৬৩)। এই গ্যাস ক্ষেত্রগুলির আনুমানিক সর্বমোট মজুদ ৫.৫ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফুট।
বাণিজ্য
  • রপ্তানী পণ্যঃ ধান, মাছ, চিংড়ি, ব্যাঙ-এর পা, শুকনো মাছ, চা, পান পাতা, গুড়, রবার, বাঁশ, প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল এবং টেক্সটাইল।

জেলার মাথাপিছু আয় ৩৪৯০ ডলার।

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জের অলিপুরে হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। এই অঞ্চলে বেশ কিছু শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। এদের মধ্যে স্টার সিরামিকস, প্রাণ আর এফ এল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

হাট-বাজার এবং মেলাসম্পাদনা

  • হাট এবং বাজার - ১২৬টি;
  • মেলা - ২৩টি।

যোগাযোগ ব্যবস্থাসম্পাদনা

পথ
  • পাকা রাস্তা - ৩২১ কিলোমিটার;
  • আধা-পাকা - ২০৫ কিলোমিটার এবং
  • কাঁচা রাস্তা - ১,৫৯২ কিলোমিটার;
  • রেলওয়ে - ১৭০ কিলোমিটার।
বাহন
  • ঐতিহ্যবাহী পরিবহনঃ পালকি, গয়না নৌকা এবং গরুর গাড়ী।

এই জেলার মধ্য দিয়ে শায়েস্তাগঞ্জ–হবিগঞ্জ রেলপথ চলে গেছে। এই রেলপথে মোট ৪টি স্টেশন রয়েছে (শায়েস্তাগঞ্জ জংশন বাদে), যথা: হবিগঞ্জ বাজার, হবিগঞ্জ কোর্ট, ধুলিয়াখাল এবং পাইকপাড়া। শায়েস্তাগঞ্জ–বাল্লা রেলপথে মোট ৭টি স্টেশন রয়েছে (শায়েস্তাগঞ্জ জংশন বাদে), যথা: বারকোটা, শাকির মোহাম্মদ, সুতাং বাজার, চুনারুঘাট, আমু রোড, আসামপারা এবং বাল্লা

এছাড়া সড়ক পথে এই জেলার সাথে দেশের অন্যান্য জেলার যোগাযোগ রয়েছে।

রেলপথসম্পাদনা

শায়েস্তাগঞ্জ-হবিগঞ্জ রেলপথ সেকশনে চারটি রেলওয়ে স্টেশন আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৮ সালে।

শায়েস্তাগঞ্জ জংশন

বি.দ্র.: শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন ১৯০৩ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯২৮-২৯ সালে হবিগঞ্জ বাজার-শায়েস্তাগঞ্জ-বাল্লা রেলপথ সংযোগ ফাঁড়ি যোগাযোগ চালু হলে এটি জংশন রেলওয়ে স্টেশনে পরিণত হয়।

শায়েস্তাগঞ্জ-চুনারুঘাট রেলপথ সেকশনে সাতটি রেলওয়ে স্টেশন আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৯ সালে।

চিত্তাকর্ষক স্থানসম্পাদনা

হবিগঞ্জ জেলার অন্যতম কিছু দর্শনীয় স্থান হল:

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "এক নজরে হবিগঞ্জ"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৭ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১৪  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  2. "জেলাগুলোর শ্রেণি হালনাগাদ করেছে সরকার"। বাংলানিউজ২৪। ১৭ আগস্ট ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০২০ 
  3. "হাজার কোটি টাকার সরকারি সম্পদ লুট"mzamin.com। ৩১ অক্টোবর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-২৫ 
  4. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "ভৌগোলিক-পরিচিতি"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৩ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০১৫  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  5. "ইউনিয়ন পরিসংখ্যান সংক্রান্ত জাতীয় তথ্য" (পিডিএফ)web.archive.org। Wayback Machine। Archived from the original on ৮ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০২০ 
  6. "Election Commission Bangladesh - Home page"www.ecs.org.bd 
  7. "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (পিডিএফ)ecs.gov.bdবাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯ 
  8. "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  9. "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  10. "জয় পেলেন যারা"দৈনিক আমাদের সময়। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  11. "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  12. www.habiganj.gov.bd http://www.habiganj.gov.bd/bn/site/view/education_institute?institute_type=3। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৯  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)

বহিঃসংযোগসম্পাদনা