১৯৯২ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের পর দেশ দু’টি দ্বিতীয়বারের মতো এ প্রতিযোগিতা যৌথভাবে আয়োজন করেছে। প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলা মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ আন্তর্জাতিক ক্রীড়া হিসেবে ১৪ দলের অংশগ্রহণে চার শতাধিক স্বীকৃত ক্রিকেটার ও কর্মকর্তা এতে অংশগ্রহণ করেছেন।
পূর্বতন চ্যাম্পিয়ন ও ২০১১ বিশ্বকাপের সহঃ-স্বাগতিক দেশ ভারত চূড়ান্ত খেলায় শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটের ব্যবধানে পরাভূত করে। বি-গ্রুপে অংশগ্রহণকারী দল ভারত বনাম পাকিস্তানের মধ্যকার খেলা ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ পায় যে, মাত্র ১২ মিনিটের মধ্যে ঐ খেলার সমস্ত টিকেট বিক্রি হয়ে যায়।[৪]
শচীন তেন্ডুলকর এ প্রতিযোগিতার জন্য আইসিসি কর্তৃক দূতের মর্যাদা পেয়েছেন। উল্লেখ্য যে, ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপেও তিনি দূত হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন।[৫]
চূড়ান্ত খেলায় নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। খেলায় অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেটে জয়ী হয়ে পঞ্চমবারের মতো শিরোপা লাভ করে।
৩০ এপ্রিল, ২০০৬ তারিখে আইসিসি ২০১১ সালের আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে স্বাগতিক দেশ নির্ধারণ করে। প্রকৃতপক্ষে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ২০১১ সালের আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে প্রতিযোগিতা আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করলে তা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায় যা নির্ধারণে সমঝোতার প্রয়োজন পড়ে। ২০১৯ সালের প্রতিযোগিতা পরবর্তীতে ইংল্যান্ডকে স্বাগতিক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। চারটি এশীয় টেস্টভূক্ত দেশ - বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় যৌথভাবে আয়োজনে ১০-৩ ভোটে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা দলের উপর সন্ত্রাসী আক্রমণের ফলে পাকিস্তান এ মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হয়।
ইতিহাস
দুবাইয়ে অবস্থিত আইসিসি’র সদর দফতরে ১ মার্চের পূর্বদিন ট্রান্স-তাসমান দরপত্র জমা পড়ে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ডের মতে, উন্নততর মাঠ ও অবকাঠামো, অস্ট্রেলীয় ও নিউজিল্যান্ড সরকারের প্রতিযোগিতা চলাকালীন সময়ে ট্যাক্স ও কাস্টম সংক্রান্ত সহায়তা এ দরপত্রের অন্যতম বিবেচ্য বিষয় ছিল।[৬] এ প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ আয়োজনে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে যৌথ আয়োজকের মর্যাদা দেয়া হয়।[৭][৮] এছাড়াও, নিউজিল্যান্ড সরকার জিম্বাবুয়ের রাজনৈতিক আলোচনায় জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের বিষয়েও ২০০৫ সালের সফরে নিশ্চিত করা হয়।
আইসিসি প্রেসিডেন্ট এহসান মানি বলেছিলেন চার-দেশীয় এশীয় দলের জন্য অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন পড়ায় তাদের দরপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভোটের ফলাফলে এশীয় দেশগুলো জয়ী হয়। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) জানায় যে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের ভোটই এ বিষয়ে সহায়তা করে। পাকিস্তানি সংবাদপত্র ডন এক প্রতিবেদনে ২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটে তহবিল সংগ্রহের বিষয়ে এশীয় দেশগুলো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল যা ভোটে প্রভাববিস্তার করে।[৯] কিন্তু, এশীয় দরপত্রের মনিটরিং কমিটির সভাপতি আই.এস. বিন্দ্রা তা অস্বীকার করেন। অতিরিক্ত $৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মুনাফা লাভের প্রস্তাবনাই ভোট সংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
ফলশ্রুতিতে আইসিসি ট্রান্স-ট্রান্সমান দরপত্রের সার্বিক দিক বিবেচনান্তে ২০১৫ সালের পরবর্তী বিশ্বকাপ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়।[১০] এরপূর্বে সর্বশেষ দেশ দুইটি ১৯৯২ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলার আয়োজন করেছিল। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে উভয় দেশের সর্ববৃহৎ ক্রীড়া বিষয় হিসেবে আখ্যায়িত হবে বলে ধারণা করা হয়।[১১]
প্রতিযোগিতার ধরনও ২০১১ সালের ন্যায়। ১৪-দলকে নিয়ে প্রারম্ভিক পর্যায়ে দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রত্যেক গ্রুপে ৭-দল থাকে। সাতটি দল একে-অপরের বিপক্ষে একবার করে খেলবে। প্রত্যেক গ্রুপের শীর্ষ চার দল কোয়ার্টার-ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হবে। এরফলে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিলেও প্রত্যেক দলই কমপক্ষে ছয়টি খেলায় অংশ নিতে পারবে।[১৪]
২৯ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে আইসিসি কর্তৃপক্ষ সুপার ওভার ব্যবস্থা পুণর্বহাল রাখে। নক-আউট পর্যায়ের কোন খেলা টাই হলে এ ব্যবস্থা প্রযোগ করবে। তবে, চূড়ান্ত খেলা যদি টাই হয় তাহলে উভয় দলকে যৌথভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। এ সিদ্ধান্ত ২০১৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে প্রয়োগ ঘটবে।[১৫]
মূল খেলা আয়োজনের দুইদিন পূর্বে ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ তারিখে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ ও অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে পৃথকভাবে ক্রিকেট বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অর্থ পুরস্কার
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল প্রতিযোগিতায় $১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারপুরস্কার প্রদানের ঘোষণা করে। অর্থ পুরস্কারের এ সংখ্যাটি ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। দলের সাফল্যের উপর ভিত্তি করে নিম্নরূপ অর্থ পুরস্কার প্রদান করা হবে:-[১৬]
পর্যায়
অর্থ পুরস্কার (US$)
মোট
বিজয়ী
$৩,৯৭৫,০০০
$৩,৯৭৫,০০০
রানার-আপ
$১,৭৫০,০০০
$১,৭৫০,০০০
সেমি-ফাইনালে পরাজিত দল
$৬০০,০০০
$১,২০০,০০০
কোয়ার্টার-ফাইনালে পরাজিত দল
$৩০০,০০০
$১,২০০,০০০
প্রত্যেক গ্রুপ-পর্বে বিজয়ী
$৪৫,০০০
$১,৮৯০,০০০
গ্রুপ-পর্ব থেকে বিতাড়িত দল
$৩৫,০০০
$২১০,০০০
সর্বমোট
$১০,২২৫,০০০
কোন দল যদি অপরাজিত অবস্থায় গ্রুপ-পর্ব থেকে চ্যাম্পিয়ন হয় তাহলে তারা গ্রুপ-পর্বের $৪৫,০০০ অর্থসহ সর্বমোট $৪,২৪৫,০০০ অর্থ পাবে। অন্যদিকে গ্রুপ-পর্ব থেকে জয়বিহীন অবস্থায় বিদায়ী দল কেবলমাত্র $৩৫,০০০ ডলার পাবে।
বাছাই-পর্ব
লাল রঙে চিহ্নিত দেশগুলো ২০১৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশ নিবে।
আইসিসি’র নিয়ম অনুযায়ী ১০-পূর্ণাঙ্গ সদস্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। ২০১১ সালের বিশ্বকাপের পরপরই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, কেবলমাত্র পূর্ণাঙ্গ সদস্যদের মধ্যেই এ সুযোগ সীমাবদ্ধ থাকবে।[১৭] এরফলে সহযোগী সদস্য দেশগুলো তীব্রভাবে আপত্তি জানায়। বিশেষ করে ২০০৭ ও ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ভাল ফলাফল অর্জনকারী আয়ারল্যান্ড বেশ সোচ্চার হয়। আইসিসি ক্রিকেট কমিটির যোগ্যতা মানদণ্ড বিভাগ এ বিষয়ে তাদের সমর্থন ব্যক্ত করে।[১৮] জুন, ২০১১ সালে আইসিসি তাদের পরিকল্পনা পূর্বাবস্থায় নিয়ে যায় ও ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ১৪-দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানায়। তন্মধ্যে ৪টি সহযোগী অথবা অনুমোদন লাভকারী সদস্য দেশ অংশ নিতে পারবে।[১৯]
সেপ্টেম্বর, ২০১১ সালে আইসিসি প্রধান নির্বাহী কমিটির সভায় নতুন ধরণের যোগ্যতা নির্ধারণী মানদণ্ড প্রণয়ন করা হয়। ২০১১-১৩ আইসিসি বিশ্ব ক্রিকেট লীগ চ্যাম্পিয়নশীপের শীর্ষ দুই দল সরাসরি অংশ নিবে। বাদ-বাকী ছয় দল থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান নির্ধারণে ২০১১ আইসিসি বিশ্ব ক্রিকেট লীগ দ্বিতীয় বিভাগ ও ২০১৩ আইসিসি বিশ্ব ক্রিকেট লীগ তৃতীয় বিভাগ থেকে শীর্ষ দুই দল বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে।[২০][২১]
৯ জুলাই, ২০১৩ তারিখে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টাই খেলার ফলাফলে আয়ারল্যান্ড প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপে নাম লেখায়।[২২] ৪ অক্টোবর, ২০১৩ তারিখে কেনিয়াকে হারিয়ে আফগানিস্তান দ্বিতীয় দল হিসেবে বিশ্বকাপে সুযোগ পায়। ২০১৪ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে পরাজিত করে স্কটল্যান্ড ও পরাজিত দল সংযুক্ত আরব আমিরাত চতুর্থ দল হিসেবে বিশ্বকাপে অংশ নেয়।[২৩]
২০১৫ বিশ্বকাপ সফলভাবে পরিচালনার জন্য প্রতিযোগিতার পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। জন হার্নডেনকে[২৬] প্রধান নির্বাহী, জেমস স্ট্রং[২৭] সভাপতি ও রাল্ফ ওয়াল্টার্সকে[২৮] উপ-সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
ভিসা
পূর্বেই ঘোষণা করা হয়েছে যে, ২০১৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ উপলক্ষে নিউজিল্যান্ডে আগত দর্শকগণ ট্রান্স-তাসমান চুক্তির আওতায় অস্ট্রেলিয়া গমন করতে পারবেন যা অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রেও একইভাবে প্রযোজ্য হবে।[২৯][৩০][৩১]
প্রচারমাধ্যম
প্রতিটি বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় প্রচারমাধ্যম ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল ২০১৫ বিশ্বকাপের সম্প্রচারস্বত্ত্ব ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ইএসপিএন স্টার স্পোর্টস ও স্টার ক্রিকেটের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। স্ট্রংয়ের ভাষ্য মোতাবেক স্থানীয় পরিচালনা কমিটি প্রতিযোগিতাটিকে আরও সমর্থক-বান্ধব ক্রীড়া পরিবেশ নিশ্চিতকরণে ও ক্রিকেট সম্প্রসারণে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মাধ্যমে বিস্তৃত করতে চায়।[৩২]
শচীন তেন্ডুলকরকে ২০১৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য দ্বিতীয়বারের মতো দূত হিসেবে মনোনীত করা হয়। এরপূর্বে ২০১১ সালে তিনি দূতের মর্যাদা পেয়েছিলেন।[৫]
২০০৬ সালে বিশ্বকাপের দরপত্র দাখিলের সময় অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড খেলা বণ্টনে প্রত্যেকেই অর্ধেক পাবে বলে ঘোষণা করে। ৩০ জুলাই, ২০১৩ তারিখে অস্ট্রেলিয়ায় ২৬টি ও নিউজিল্যান্ড ২৩টি খেলা আয়োজনের দায়িত্ব পাবে বলে জানানো হয়। বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা আয়োজনে মেলবোর্ন ও সিডনি আগ্রহ প্রকাশ করে।[৪৩] কিন্তু ৩০ জুলাই তারিখে মেলবোর্নকে ফাইনালের দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়। এছাড়াও, সিডনি ও অকল্যান্ডকে সেমি-ফাইনাল খেলা আয়োজনের দায়িত্ব দেয়া হয়।[৪৪]
আম্পায়ার নির্বাচক পরিষদ ২০জন আম্পায়ারকে বিশ্বকাপ পরিচালনার জন্য মনোনীত করে। তন্মধ্যে - অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড থেকে ৫, এশিয়া থেকে ৫, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ২জন করে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে ১জন আম্পায়ার খেলা পরিচালনা করবেন।[৪৫]
অংশগ্রহণকারী দলগুলো তাদের ৩০-সদস্যের তালিকা প্রকাশ করে। এরপর প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ৭ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে বা এর পূর্বে দলের ১৫-সদস্যের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে।[৪৬]
প্রস্তুতিমূলক খেলা
৮ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৪টি একদিনের আন্তর্জাতিকবিহীন খেলা আয়োজনের ব্যবস্থা নেয়া হয়।[৪৭]
তারিখ ও মাঠ নির্ধারণ করা স্বত্ত্বেও স্বাগতিক দলের যোগ্যতা অর্জনের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। স্বাগতিক দেশ দুটো কোয়ার্টার ফাইনাল খেলায় সুযোগ পেয়েছে; অস্ট্রেলিয়া কোয়ার্টার-ফাইনালে উন্নীত হওয়ায় ২০ মার্চ অ্যাডিলেডে খেলে। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড কোয়ার্টার-ফাইনালে উন্নীত হওয়ায় ২১ মার্চ ওয়েলিংটনে অংশগ্রহণ করে।[৪৮]
আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের পরবর্তী শীর্ষ দল শ্রীলঙ্কা কোয়ার্টার-ফাইনালে প্রবেশ করায় সিডনিতে খেলে। অন্যদিক তৃতীয় সর্বোচ্চ র্যাঙ্কিংধারী ইংল্যান্ড কোয়ার্টার-ফাইনালে খেলার যোগ্যতা লাভ করলে মেলবোর্নে খেলার কথা ছিল।[৪৯] কিন্তু ইংল্যান্ড কোয়ার্টার-ফাইনাল খেলতে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশ দল ঐ স্থান দখল করে।[৫০][৫১] বি-গ্রুপের দলগুলো এ-গ্রুপের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। খেলার ধারাটি হচ্ছে: এ১ ব বি৪, এ২ ব বি৩, এ৩ ব বি২, এ৪ ব বি১।[৪৯]
অস্ট্রেলিয়া সেমি-ফাইনালে খেলার সুযোগ লাভ করায় সিডনিতে ২৬ মার্চ খেলে। নিউজিল্যান্ড সেমি-ফাইনাল খেলার সুযোগ পাওয়ায় ২৪ মার্চ অকল্যান্ডে খেলে। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড সেমি-ফাইনালে মুখোমুখি হলে এ-গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় দল হিসেবে নিউজিল্যান্ড খেলা আয়োজনের সুযোগ পাবে।[৪৮][৫২]
গ্রুপ-পর্বে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মধ্যকার খেলায় জেমস অ্যান্ডারসনকে রান আউটের সিদ্ধান্ত পরপরই খেলার সমাপ্তি ঘটে। এরপূর্বে জেমস টেলরকেএলবিডব্লিউ দেয়া হলে সিদ্ধান্ত তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে চলে যায় ও ব্যাটসম্যানের অনুকূলে আসে। ফলে টেলর অপরাজিত থাকেন। আইসিসি পরবর্তীতে দুঃখপ্রকাশ করে জানায় যে, সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা পদ্ধতির ধারা ৩.৬এ এর পরিশিষ্ট ৬-এর নিয়ম অনুযায়ী বলটি ডেড বল ছিল। ফলে অ্যান্ডারসনকে ভুলবশতঃ রান-আউট দেয়া হয়েছে।[৫৫]
গ্রুপ পর্বে আয়ারল্যান্ড-জিম্বাবুয়ের মধ্যকার খেলায় শন উইলিয়ামস বাউন্ডারি হাঁকাতে গেলে জন মুনি'র হাতে ধরা পড়েন ও আউট হন। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায় যে মুনি'র বাম পা বাউন্ডারির সীমানা স্পর্শ করে। ফলে, জিম্বাবুয়ের কোচডেভ হোয়াটমোর এ সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করেন।[৫৭]
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে রুবেল হোসেনেরফুল টস বলে রোহিত শর্মা স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন। কিন্তু আম্পায়ারের ধারণা ছিল যে, বলটি বেশ উঁচুতে উঠেছিল; ফলে নো বল সঙ্কেত দেয়ার ব্যাটসম্যান অপরাজিত থাকেন। রিপ্লেতে দেখা যায় যে বলটি কোমর উচ্চতায় ছিল ও বৈধ বল হিসেবে বিবেচিত ছিল।[৫৮] আইসিসিতে বাংলাদেশী সভাপতিআ হ ম মোস্তফা কামাল খেলার ফলাফলে আম্পায়ারের মানের বিষয়ে পদত্যাগের হুমকি দেন।[৫৯][৬০][৬১] এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীশেখ হাসিনা বলেছেন যে, ভারতীয় দল খেলায় জয়লাভ করেছে কেননা আম্পায়ারিংয়ে ত্রুটি ছিল।[৬২] এর পরপরই আইসিসি কর্তৃপক্ষ দ্রুত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এবং মোস্তফা কামালের মন্তব্যটি ভিত্তিহীন বলে জানায় ও ব্যক্তিগত আবেগ-অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে মন্তব্য করে। আইসিসি’র প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন মনে করেন যে, অভিযোগটি ভিত্তিহীন ও আম্পায়ারদের ভুলের বিষয়টি অপ্রত্যাশিত ঘটনা।[৬৩] ৫০% - ৫০% অনুপাতে থাকায় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়।[৬৩][৬৪]
অবসরনামা
বিশ্বকাপ শেষে নিম্নবর্ণিত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারগণ একদিনের আন্তর্জাতিক থেকে তাদের অবসরের কথা ঘোষণা করেন।