১৯৭৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ

১৯৭৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ বা প্রুডেন্সিয়াল বিশ্বকাপ '৭৯ আইসিসি আয়োজিত ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার ২য় আসর। ৯-২৩ জুন, ১৯৭৯ তারিখে প্রতিযোগিতাটি ২য়বারের মতো ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়। পূর্বেকার বিশ্বকাপের ন্যায় এ প্রতিযোগিতার ধরন ও নিয়মাবলী অপরিবর্তিত রাখা হয়। প্রতিটি দল ৬০ ওভারব্যাপী ইনিংসে অংশ নেয়। সনাতনী ধাঁচের সাদা পোষাক এবং লাল বল ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি খেলায়ই দিনের বেলায় এবং খুব সকালে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রুডেন্সিয়াল বিশ্বকাপ '৭৯
তারিখ৯ জুন – ২৩ জুন
তত্ত্বাবধায়কআন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল
ক্রিকেটের ধরনএকদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
প্রতিযোগিতার ধরনরাউন্ড-রবিননক-আউট
আয়োজক ইংল্যান্ড
বিজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ (২য় শিরোপা)
রানার-আপ ইংল্যান্ড
অংশগ্রহণকারী দলসংখ্যা
খেলার সংখ্যা১৫
দর্শক সংখ্যা১,৩২,০০০ জন (ম্যাচ প্রতি ৮,৮০০ জন)
সর্বাধিক রান সংগ্রহকারীক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ গর্ডন গ্রীনিজ (২৫৩)
সর্বাধিক উইকেটধারীইংল্যান্ড মাইক হেনড্রিক (১০)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড এবারো প্রুডেন্সিয়াল ট্রফি হাতে নেবার অধিকার লাভ করেন। দলটি বিশ্বের অন্যতম সেরা দল হিসেবেই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল। ১৯৭৯ সালের বিশ্বকাপে কোন ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা হয় নি।

প্রতিযোগিতার ধরন

সম্পাদনা

বিশ্বকাপে ৮টি দেশের জাতীয় ক্রিকেট দল অংশগ্রহণ করে। প্রাথমিক খেলাগুলো দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে চারটি দল একে-অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়। প্রতি গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় দু'টি দল সেমি-ফাইনালে পৌঁছে যাবে। সেমি-ফাইনালের বিজয়ী দলগুলো ফাইনালে লড়বে।

অংশগ্রহণকারী দল

সম্পাদনা

নিম্নবর্ণিত ৮টি দল এবারের বিশ্বকাপের মূল খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করে। তন্মধ্যে শ্রীলঙ্কা এবং কানাডা - এ দু'টি দল টেস্ট মর্যাদাবিহীন দল। আফ্রিকা মহাদেশ থেকে কোন দল খেলায় যোগ্যতা লাভ করেনি।

মাঠসমূহ

সম্পাদনা
লন্ডন লন্ডন
লর্ড’স ক্রিকেট গ্রাউন্ড দি ওভাল
ধারণ সক্ষমতা: ৩০,০০০ ধারণ সক্ষমতা: ২৩,৫০০
   
বার্মিংহাম ম্যানচেস্টার
এজবাস্টন ক্রিকেট গ্রাউন্ড ওল্ড ট্রাফোর্ড ক্রিকেট গ্রাউন্ড
ধারণ সক্ষমতা: ২১,০০০ ধারণ সক্ষমতা: ১৯,০০০
   
নটিংহাম লিডস
ট্রেন্ট ব্রিজ হেডিংলি স্টেডিয়াম
ধারণ সক্ষমতা: ১৫,৩৫০ ধারণ সক্ষমতা: ১৪,০০০
   

দলসমূহ

সম্পাদনা

গ্রুপ পর্ব

সম্পাদনা

গ্রুপ এ

সম্পাদনা
দল পয়েন্ট খেলা জয় পরাজয় ফলাফল হয়নি রান রেট
  ইংল্যান্ড ১২ ৩.০৭
  পাকিস্তান ৩.৬০
  অস্ট্রেলিয়া ৩.১৬
  কানাডা ১.৬০
৯ জুন, ১৯৭৯
স্কোরকার্ড
অস্ট্রেলিয়া  
১৫৯/৯ (৬০ ওভার)
  ইংল্যান্ড
১৬০/৪ (৪৭.১ ওভার)
৯ জুন, ১৯৭৯
স্কোরকার্ড
কানাডা  
১৩৯/৯ (৬০ ওভার)
  পাকিস্তান
১৪০/২ (৪০.১ ওভার)
১৪ জুন, ১৯৭৯
স্কোরকার্ড
পাকিস্তান  
২৮৬/৭ (৬০ ওভার)
  অস্ট্রেলিয়া
১৯৭ (৫৭.১ ওভার)
১৬ জুন, ১৯৭৯
স্কোরকার্ড
কানাডা  
১০৫ (৩৩.২ ওভার)
  অস্ট্রেলিয়া
১০৬/৩ (২৬ ওভার)
১৬ জুন, ১৯৭৯
স্কোরকার্ড
ইংল্যান্ড  
১৬৫/৯ (৬০ ওভার)
  পাকিস্তান
১৫১ (৫৬ ওভার)

গ্রুপ বি

সম্পাদনা
দল পয়েন্ট খেলা জয় পরাজয় ফলাফল হয়নি রান রেট
  ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০ ৩.৯৩
  নিউজিল্যান্ড ৩.৫৫
  শ্রীলঙ্কা ৩.৫৬
  ভারত ৩.১৩
৯ জুন, ১৯৭৯
স্কোরকার্ড
ভারত  
১৯০ (৫৩.১ ওভার)
  ওয়েস্ট ইন্ডিজ
১৯৪/১ (৫১.৩ ওভার)
৯ জুন, ১৯৭৯
স্কোরকার্ড
শ্রীলঙ্কা  
১৮৯ (৫৬.৫ ওভার)
  নিউজিল্যান্ড
১৯০/১ (৪৭.৪ ওভার)
১৩ জুন, ১৯৭৯
স্কোরকার্ড
ভারত  
১৮২ (৫৫.৫ ওভার)
  নিউজিল্যান্ড
১৮৩/২ (৫৭ ওভার)
১৮ জুন, ১৯৭৯
স্কোরকার্ড
শ্রীলঙ্কা  
২৩৮/৫ (৬০ ওভার)
  ভারত
১৯১ (৫৪.১ ওভার)
১৬ জুন, ১৯৭৯
স্কোরকার্ড
ওয়েস্ট ইন্ডিজ  
২৪৪/৭ (৬০ ওভার)
  নিউজিল্যান্ড
২১২/৯ (৬০ ওভার)

নক-আউট পর্ব

সম্পাদনা
 
সেমি-ফাইনালফাইনাল
 
      
 
২০ জুন, ১৯৭৯ - ওল্ড ট্রাফোর্ড, ম্যানচেস্টার
 
 
  ইংল্যান্ড২২১/৮
 
২৩ জুন, ১৯৭৯ - লর্ডস, লন্ডন
 
  নিউজিল্যান্ড২১২/৯
 
  ইংল্যান্ড১৯৪
 
২০ জুন, ১৯৭৯ - দি ওভাল, লন্ডন
 
  ওয়েস্ট ইন্ডিজ২৮৬/৯
 
  ওয়েস্ট ইন্ডিজ২৯৩/৬
 
 
  পাকিস্তান২৫০
 

সেমি-ফাইনাল

সম্পাদনা
২০ জুন, ১৯৭৯
স্কোরকার্ড
ওয়েস্ট ইন্ডিজ  
২৯৩/৬ (৬০ ওভার)
  পাকিস্তান
২৫০ (৫৬.২ ওভার)
২০ জুন, ১৯৭৯
স্কোরকার্ড
ইংল্যান্ড  
২২১/৮ (৬০ ওভার)
  নিউজিল্যান্ড
২১২/৯ (৬০ ওভার)

ফাইনাল

সম্পাদনা

এ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে গতবারের ন্যায় আবারো ওয়েস্ট ইন্ডিজ অংশগ্রহণ করে। প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড টসে জয়ী হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ের জন্যে আমন্ত্রণ জানায়। ৩/৫৫ থেকে ৪/৯৯ হবার পর ভিভ রিচার্ডসকলিস কিং জুটি ১৩৯ রান তুলে। এতে কিং ৮৬ রান করেছিলেন।[] রিচার্ডস একপ্রান্তে আগলে রেখে দলের রান সংখ্যা বৃদ্ধি করতে থাকেন। অন্যদিকে নিচের সারির ব্যাটসম্যানেরা সকলেই শূন্য রানে আউট হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত রিচার্ডস ১৩৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৮/২৮৬-তে পৌঁছিয়ে দেন।

পরবর্তীতে রিচার্ডসের মিতব্যয়ী ০/৩৫ বোলিংয়ে ইংল্যান্ডের শুরুটা ধীরলয়ে ঘটে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের রানকে ধাবিত করে। কিন্তু ২/১৮৩ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে ১৯৪ রানে অল-আউট হয়ে যায় তারা। এতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ধারাবাহিকভাবে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ ক্রিকেটের চ্যাম্পিয়ন হয়।[] ব্যাটিংয়ে অসামান্য অবদান রাখায় ভিভ রিচার্ডস ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. England v West Indies ১৯৭৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনাল

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা