কেনিয়া জাতীয় ক্রিকেট দল

কেনিয়া জাতীয় ক্রিকেট দল (ইংরেজি: Kenya national cricket team) আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলায় কেনিয়ার জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রতিনিধিত্ব করছে। দলটি আইসিসির সহযোগী সদস্যভূক্ত দেশসমূহের মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী দলরূপে পরিচিত। ২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় টেস্টখেলুড়ে দেশের বাইরে অবস্থান করে কেনিয়া সেমি-ফাইনালে পদার্পণ করে সমগ্র ক্রিকেট বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। দলটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল কর্তৃক একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মর্যাদা লাভের অধিকারী যা ২০১৩ সাল পর্যন্ত বলবৎ ছিল। জানুয়ারি ,২০১৪ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ফলাফলের প্রেক্ষিতে কেনিয়া দল একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মর্যাদা হারায়।

কেনিয়া জাতীয় ক্রিকেট দল
ক্রিকেট কেনিয়া'র নতুন লোগো.jpeg
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল
আইসিসি মর্যাদাএকদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটসহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সহযোগী সদস্যপদ (১৯৮১)
আইসিসি অঞ্চলআফ্রিকা
বিশ্ব ক্রিকেট লিগওয়ান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
প্রথম আন্তর্জাতিক১ ডিসেম্বর, ১৯৫১ বনাম তাঞ্জানিয়া, নাইরোবি
Kit left arm redborder.png
Kit right arm redborder.png

লিস্ট এ ও টি২০আই জার্সি

৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ অনুযায়ী

ইতিহাসসম্পাদনা

তৎকালীন ব্রিটিশ উপনিবেশ হিসেবে বসবাসকারীদের মাধ্যমে কেনিয়ায় ক্রিকেটের প্রচলন ঘটে। ১৮৯৯ সালে মোম্বাসায় প্রথম খেলা শুরু হয় ও পরবর্তীকালে সমগ্র দেশে ছড়িয়ে পড়ে। প্রথম ক্রিকেট খেলায় কেনিয়ার জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যসহ উইকেট-রক্ষক গাছের বাকল পরিধান করে মাঠে নামতো। তন্মধ্যে হেনরি গুয়াম্বে নামীয় উইকেটরক্ষক দুটি স্ট্যাম্পের সাথে কলা গাছের বাকল সহযোগে মাঠে নেমেছিলেন বলে জানা যায়। ১৯১০ সালে খেলা পরিচালনাকারী দল ও ব্রিটিশ বসবাসকারীদের মধ্যে খেলার প্রচলন হয় যা ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হতো। এছাড়াও, ১৯৩৩ সালে ইউরোপীয় বনাম এশীয়দের মধ্যেও খেলা শুরু হয়েছিল।

১৯৫১ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে কেনিয়ার যাত্রা শুরু হয়। তখন তারা তানজানিয়া (তৎকালীন টাঙ্গানিকা) এবং উগান্ডার মধ্যে নিয়মিতভাবে খেলতো।

১৯৫৩ সালে কেনিয়ান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন গঠিত হয়। এ সময়কালের মধ্যে সফরকারী দলের মানদণ্ডে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। ১৯৫৮ সালে ব্যাসিল ডি’অলিভেইরা নামীয় একজন অ-ইউরোপীয় দক্ষিণ আফ্রিকান দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।[১] দক্ষিণ আফ্রিকা কেনিয়া সফরে এসে দু'টি খেলায় জয়লাভ করেছিল; তন্মধ্যে পূর্ব আফ্রিকা ক্রিকেট দলের বিপক্ষের জয়ও এর অন্তর্ভুক্ত ছিল।[২]

আইসিসি সদস্যসম্পাদনা

কেনিয়া, তাঞ্জানিয়া এবং উগান্ডা দলের সমন্বয়ে পূর্ব আফ্রিকা ক্রিকেট দল গঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালে আইসিসি'র সহযোগী সদস্য দেশ হিসেবে তালিকাভূক্ত হয়।[২] পূর্ব আফ্রিকা দলের অন্যতম শক্তিশালী অংশরূপে দীর্ঘদিন ধরেই কেনিয়ার সুনাম রয়েছে।[৩] ১৯৮০/৮১ মৌসুমে তারা জিম্বাবুয়ে সফরে যায়, কিন্তু খেলাগুলোয় পরাজিত হয়।[৪] এরপরই ১৯৮১ সালে কেনিয়া পূর্ব আফ্রিকা ক্রিকেট দলের বাইরে চলে যায়। তারা নিজস্ব অধিকার বলে আইসিসি'র সহযোগী সদস্যরূপে আসীন হয়। আইসিসি ট্রফিতে তারা নিজেদের দল নিয়ে ১৯৮২,[৫] ১৯৮৬[৬]১৯৯০[৭] সালে খেলে। এছাড়াও দলটি পাকিস্তান বি দলের বিপক্ষে সেপ্টেম্বর, ১৯৮৬ সালে প্রথমবারের মতো প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলে।[৮]

বিশ্বকাপ ক্রিকেটসম্পাদনা

১৯৯৪ সালে নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত আইসিসি ট্রফি প্রতিযোগিতায় কেনিয়া স্বাগতিক দেশের মর্যাদা পায়। এতে তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের পরের স্থান দখল করে রানার্স-আপ হয়। এরফলে দলটি ১৯৯৬ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা লাভ করে।[৯] অস্ট্রেলিয়া, ভারত, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং জিম্বাবুয়ের সাথে একই গ্রুপে খেলে কেনিয়া।[১০] বিশ্বকাপের ইতিহাসে ঐ সময়ে তারা সর্বাপেক্ষা বড় ধরনের অঘটনের জন্ম দেয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তারা অত্যন্ত নাটকীয়ভাবে মাত্র ৯৩ রানে অল-আউট করে ৭৩ রানের সহজ বিজয় অর্জন করে।[১১]

দলীয় সদস্যবৃন্দসম্পাদনা

ক্রিকেট কেনিয়া ৩০ জুন, ২০১১ তারিখে ২০১১-১২ মৌসুমে খেলোয়াড়দের নাম ঘোষণা করে।[১২]

নাম বয়স ব্যাটিং বোলিং ওডিআই প্রথম-শ্রেণী পোশাক নং মন্তব্য
অধিনায়ক ও অল-রাউন্ডার
কলিন্স ওবুয়া ৪১ ডানহাতি লেব্রে ৯৪ ৪৭ ১৮ সাবেক কেনীয় ক্রিকেটার ডেভিড ওবুয়ার ভাই
উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান
রানিশ গুধকা ৩৩ ডানহাতি ডাঅব্রে
অ্যালেক্স ওবান্দা ৩৫ ডানহাতি ডামিফা ৪০ ১৫ ১০ সাউদার্ন রক ও আফ্রিকা একাদশে খেলেছেন
সেরেন ওয়াটার্স ৩২ ডানহাতি লেব্রে ২০ ১৪ ডারহাম এমসিসিইউ, সারে দলে খেলেছেন
মধ্যমসারির ব্যাটসম্যান
তন্ময় মিশ্র ৩৬ ডানহাতি ডাফামি ৩৬ ১৩ গুজরাত ও আফ্রিকা একাদশে খেলেছেন
রাকেপ প্যাটেল ৩৩ ডানহাতি অবে ২৯ ২০ মাঝে মাঝে উইকেট-রক্ষক
অল-রাউন্ডার
ডানকান অ্যালান ৩১ ডানহাতি ডামিফা
রাজেশ ভুদিয়া ৩৮ ডানহাতি ডামি ১৫
উইকেট-কিপার
ইরফান করিম ৩০ বামহাতি ডাঅব্রে ১৬ কেনিয়ার ক্রিকেটার ও অধিনায়ক আসিফ করিমের পুত্র
বোলার
রাগিব আগা ৩৮ ডানহাতি ডামিফা ২০ সাসেক্সে খেলেছেন
আলফ্রেড লুজিনো ৪১ ডানহাতি ডামি ১০ ১২
শেম এগোচি ৩৩ ডানহাতি এসএলএ
লামেক ওনিয়াঙ্গো ৪৯ ডানহাতি ডামি ২৮ ২৩
ইমানুয়েল বুন্ডি ২৯ ডানহাতি ডামিফা
হিরেন বরাইয়া ৩৮ ডানহাতি এসএলও ৫৩ ২০
নেলসন ওধিয়াম্বো ৩৪ ডানহাতি ডামিফা ১১
লুকাস ওলুচ ৩১ ডানহাতি বাফামি ১২
এলিজা ওটিয়েনো ৩৫ ডানহাতি ডামিফা ২২ ১০ ১৩
জেমস এগোচি ৩৫ ডানহাতি ডাঅব্রে ১২ ১৭
ডোমিনিক উইসঙ্গা ৩৪ ডানহাতি ডাফামি ১৯

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "A history of Kenyan cricket"। ২৪ জুলাই ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১২ 
  2. East Africa at Cricket Archive
  3. Kenya at Cricket Archive
  4. "Kenya in Zimbabwe, 1980/81 at Cricket Archive"। ১ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১২ 
  5. "1982 ICC Trophy at Cricket Archive"। ১ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১২ 
  6. "1986 ICC Trophy at Cricket Archive"। ১ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১২ 
  7. "1990 ICC Trophy at Cricket Archive"। ১ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১২ 
  8. Scorecard of Kenya v Pakistan B match, 12 September 1986 at Cricket Archive
  9. 1994 ICC Trophy at Cricket Archive
  10. 1996 World Cup at Cricinfo
  11. Article on Kenya's win over the West Indies
  12. Kenya's new contracts cut ties with the past ESPNCricinfo. Retrieved 21 December 2011