আইসিসি বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
আইসিসি ট্রফি বা আইসিসি বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব (ইংরেজি: ICC World Cup Qualifier) আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের দিক-নির্দেশনায় পরিচালিত একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট প্রতিযোগিতা বিশেষ।আইসিসি'র যে-কোন সদস্য আইসিসি ট্রফির জন্যে যোগ্যতা নির্ধারণী বা বাছাইপর্বে অংশগ্রহণ করতে পারে। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতাগুলোয় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে এ পদ্ধতিতে দলগুলোকে আঞ্চলিক পর্যায়ে উত্তীর্ণ হতে হয়।আগে টেস্টখেলুড়ে দেশগুলো এতে অংশগ্রহণ করতো না।তবে ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ দশদলের হওয়ায় ১২ টি টেস্ট খেলুড়ে দলের মধ্যে শুধুমাত্র ৮ টি দল সরাসরি উত্তীর্ণ হয়। তাই ২০১৮ সাল থেকে কিছু টেস্টখেলুড়ে দলকেও বাছাইপর্বে অংশ নিতে হবে। ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে জিম্বাবুয়ের জাতীয় ক্রিকেট দল সর্বাধিকসংখ্যক তিনবার আইসিসি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
আইসিসি বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব | |
---|---|
ব্যবস্থাপক | আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল |
খেলার ধরন | একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট |
প্রথম টুর্নামেন্ট | ১৯৭৯ |
শেষ টুর্নামেন্ট | ২০২৩ |
প্রতিযোগিতার ধরন | বহুবিধ |
দলের সংখ্যা | ১২ |
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন | শ্রীলঙ্কা (২য় শিরোপা) |
সর্বাধিক সফল | জিম্বাবুয়ে (৩টি শিরোপা) |
সর্বাধিক রান | খুররম খান (১৩৬৯) |
সর্বাধিক উইকেট | রোল্যান্ড ল্যাফেব্রে (৭১) |
২০২৩ পুরুষ ক্রিকেট বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব |
শ্রীলঙ্কা ১৯৭৯ সালে প্রথম পর্যায়ের আইসিসি ট্রফি জয়ের পর ১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
বর্তমানে বাছাইপর্ব থেকে উত্তীর্ণ দলের সংখ্যা দুই। তবে বিভিন্ন সময়ে এই সংখ্যাটা বিভিন্ন ছিল।
প্রত্যেক বিশ্বকাপের পূর্বে আইসিসি তার সহযোগী ও অনুমোদনলাভকারী সদস্যদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য বেশ কয়েকটি স্থান নির্ধারণ করে। টেস্টভূক্ত দলসহ কখনো কখনো অতীতে খেলা একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণকারী দলগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয়। অন্যান্য দলগুলোকে এ যোগ্যতা অর্জনের লক্ষ্যে একগুচ্ছ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রতিযোগিতায় অগ্রসর হতে হয়।[১]
আফ্রিকা, আমেরিকাস, এশিয়া, পূর্ব এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও ইউরোপ - আইসিসি’র এ পাঁচটি আঞ্চলিক সংস্থাভূক্ত এলাকায় বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য বাছাইপর্বের প্রতিযোগিতাগুলোর আয়োজন করা হয়। স্ব-স্ব সংস্থা এ প্রতিযোগিতাগুলো পরিচালনা করে। ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বকাপের জন্য প্রথম বাছাইপর্ব প্রতিযোগিতা আইসিসি ট্রফি’র প্রচলন ঘটানো হয়।
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৭৫ সালে ইংল্যান্ডে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় আইসিসি ট্রফির ন্যায় বাছাইপর্ব প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। পরবর্তীতে বাছাইপর্বে অংশগ্রহণের জন্য বাছাইপর্ব প্রতিযোগিতাগুলোর আয়োজনের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়ার পরিবর্ধন করা হয়। বাছাই প্রতিযোগিতাগুলো আইসিসি ট্রফির অংশ ছিল।[২] অনেকগুলো দল সময়ে সময়ে পরিবর্তিত আইসিসি ট্রফিতে অংশ নিয়েছে। ২০০৭ সাল থেকে আইসিসি বিশ্ব ক্রিকেট লীগ এ সকল বিষয়ে স্থলাভিষিক্ত হয়। ২০০৯ সাল থেকে আইসিসি ট্রফি ‘আইসিসি বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব’ নামে পরিচিতি পাচ্ছে।[৩]
পরিসংখ্যান
সম্পাদনাসাল | স্বাগতিক দেশ | চূড়ান্ত খেলার মাঠ | চ্যাম্পিয়ন | রানার-আপ | ফলাফল |
---|---|---|---|---|---|
১৯৭৯ | ইংল্যান্ড | ওরচেস্টার | শ্রীলঙ্কা ৩২৪/৮ (৬০ ওভার) |
কানাডা ২৬৪/৫ (৬০ ওভার) |
শ্রীলঙ্কা ৬০ রানে জয়ী |
১৯৮২ | ইংল্যান্ড | লিচেস্টার | জিম্বাবুয়ে ২৩২/৫ (৫৪.৩ ওভার) |
বারমুডা ২৩১/৮ (৬০ ওভার) |
জিম্বাবুয়ে ৫ উইকেটে জয়ী |
১৯৮৬ | ইংল্যান্ড | লর্ডস, লন্ডন | জিম্বাবুয়ে ২৪৩/৯ (৬০ ওভার) |
নেদারল্যান্ডস ২১৮ (৫৮.৪ ওভার) |
জিম্বাবুয়ে ২৫ রানে জয়ী |
১৯৯০ | নেদারল্যান্ডস | হেগ | জিম্বাবুয়ে ১৯৮/৪ (৫৪.২ ওভার) |
নেদারল্যান্ডস ১৯৭/৯ (৬০ ওভার) |
জিম্বাবুয়ে ৬ উইকেটে জয়ী |
১৯৯৪ | কেনিয়া | নাইরোবি | সংযুক্ত আরব আমিরাত ২৮২/৮ (৪৯.১ ওভার) |
কেনিয়া ২৮১/৬ (৫০ ওভার) |
সংযুক্ত আরব আমিরাত ২ উইকেটে জয়ী |
১৯৯৭ | মালয়েশিয়া | কুয়ালালামপুর | বাংলাদেশ ১৬৬/৮ (২৫ ওভার) |
কেনিয়া ২৪১/৭ (৫০ ওভার) |
বাংলাদেশ ২ উইকেটে জয়ী (ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে) |
২০০১ | কানাডা | টরন্টো | নেদারল্যান্ডস ১৯৬/৮ (৫০ ওভার) |
নামিবিয়া ১৯৫/৯ (৫০ ওভার) |
নেদারল্যান্ড ২ উইকেটে জয়ী |
২০০৫ | আয়ারল্যান্ড | ক্লোনটার্ফ | স্কটল্যান্ড ৩২৪/৮ (৫০ ওভার) |
আয়ারল্যান্ড ২৭৭/৯ (৫০ ওভার) |
স্কটল্যান্ড ৪৭ রানে জয়ী |
২০০৯ | দক্ষিণ আফ্রিকা | সুপারস্পোর্ট পার্ক, সেঞ্চুরিয়ন | আয়ারল্যান্ড ১৮৮/১ (৪২.৩ ওভার) |
কানাডা ১৮৫ (৪৮ ওভার) |
আয়ারল্যান্ড ৯ উইকেটে জয়ী |
২০১৪ | নিউজিল্যান্ড | লিঙ্কন | স্কটল্যান্ড ২৮৫/৫ (৫০ ওভার) |
সংযুক্ত আরব আমিরাত ২৪৪/৯ (৫০ ওভার |
স্কটল্যান্ড ৪১ রানে জয়ী |
২০১৮ | জিম্বাবুয়ে | হারারে | আফগানিস্তান ২০৬-৩ (৪০.১ ওভার) |
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০৪ (৪৬.৫ ওভার) |
আফগানিস্তান ৭ উইকেট জয়ী স্কোরকার্ড |
২০২৩ | জিম্বাবুয়ে | হারারে | শ্রীলঙ্কা ২৩৩ (৪৭.৫ ওভার) |
নেদারল্যান্ডস ১০৫ (২৩.৩ ওভার) |
শ্রীলঙ্কা ১২৮ রানে জয়ী স্কোরকার্ড |
চ্যাম্পিয়ন
সম্পাদনাদল | চ্যাম্পিয়ন | রানার-আপ | মন্তব্য |
---|---|---|---|
জিম্বাবুয়ে | ৩ | ০ | ১৯৯২ সাল থেকে আইসিসি'র পূর্ণ সদস্য |
শ্রীলঙ্কা | ২ | ০ | ১৯৮১ সাল থেকে আইসিসি'র পূর্ণ সদস্য |
স্কটল্যান্ড | ২ | ০ | |
নেদারল্যান্ডস | ১ | ২ | |
আয়ারল্যান্ড | ১ | ১ | ২০১৭ সাল থেকে আইসিসি'র পূর্ণ সদস্য |
বাংলাদেশ | ১ | ০ | ২০০০ সাল থেকে আইসিসি'র পূর্ণ সদস্য |
আফগানিস্তান | ১ | ০ | ২০১৭ সাল থেকে আইসিসি'র পূর্ণ সদস্য |
সংযুক্ত আরব আমিরাত | ১ | ১ | |
কেনিয়া | ০ | ২ | |
কানাডা | ০ | ২ | |
বারমুডা | ০ | ১ | |
নামিবিয়া | ০ | ১ | |
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ০ | ১ | ১৯২৬ সাল থেকে আইসিসি'র পূর্ণ সদস্য |
রেকর্ডসমূহ
সম্পাদনা- দলীয়
- সর্বোচ্চ রান: ৪৫৫/৯; পাপুয়া নিউগিনি বনাম জিব্রাল্টার, ক্যানক, ১৯৮৬
- সর্বনিম্ন রান: ২৬; পূর্ব ও মধ্য আফ্রিকা বনাম নেদারল্যান্ডস, কুয়ালালামপুর, ১৯৯৭
- ব্যক্তিগত
- ইনিংসে সর্বোচ্চ রান: ১৭২; সায়মন মাইলেজ, হংকং বনাম জিব্রাল্টার, ব্রিজনর্থ, ১৯৮৬
- সর্বমোট রান: ১,১৭৩; মরিস ওদুম্বে, কেনিয়া
- সেরা বোলিং: ৭/৯; আসীম খান (নেদারল্যান্ডস) বনাম পূর্ব ও মধ্য আফ্রিকা, কুয়ালালামপুর, ১৯৯৭
- সর্বমোট উইকেট: ৭১; রোল্যান্ড লেফেবভ্রে, নেদারল্যান্ডস
- আউটফিল্ডার হিসেবে সর্বাধিক ক্যাচ: ২৬; রোল্যান্ড লেফেবভ্রে (নেদারল্যান্ডস)
- উইকেটকিপার হিসেবে আউট: ৩৮ অ্যালান ডগলাস, (বারমুডা)
- সর্বাধিক খেলায় অংশগ্রহণ: ৪৩; রোল্যান্ড লেফেবভ্রে, নেদারল্যান্ডস
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "What the next four years hold", Beyond the Test World, এপ্রিল ১৮, ২০০৯, এপ্রিল ২২, ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ জুলাই ৭, ২০২৩
- ↑ Cricinfo - 2005 ICC Trophy in Ireland
- ↑ World Cricket League ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ জানুয়ারি ২০০৭ তারিখে World Cricket League Overview