তুর্কমেনিস্তান জাতীয় ফুটবল দল

জাতীয় ফুটবল দল
(Turkmenistan national football team থেকে পুনর্নির্দেশিত)

তুর্কমেনিস্তান জাতীয় ফুটবল দল (তুর্কমেনীয়: Türkmenistanyň milli futbol ýygyndysy, ইংরেজি: Turkmenistan national football team) হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফুটবলে তুর্কমেনিস্তানের প্রতিনিধিত্বকারী পুরুষদের জাতীয় দল, যার সকল কার্যক্রম তুর্কমেনিস্তানের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা তুর্কমেনিস্তান ফুটবল ফেডারেশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই দলটি ১৯৯৪ সাল হতে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার এবং একই বছর হতে তাদের আঞ্চলিক সংস্থা এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের সদস্য হিসেবে রয়েছে। ১৯৯২ সালের ১লা জুন তারিখে, তুর্কমেনিস্তান প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করেছে; কাজাখস্তানের আলমাটিতে অনুষ্ঠিত উক্ত ম্যাচে তুর্কমেনিস্তান কাজাখস্তানের কাছে ১–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে।

তুর্কমেনিস্তান
দলের লোগো
ডাকনামকুরাকুম যোদ্ধা
অ্যাসোসিয়েশনতুর্কমেনিস্তান ফুটবল ফেডারেশন
কনফেডারেশনএএফসি (এশিয়া)
প্রধান কোচখালি[১][২][৩]
অধিনায়কআর্সলানমিরাত আমানু
সর্বাধিক ম্যাচআর্সলানমিরাত আমানু (৪৪)[৪]
শীর্ষ গোলদাতাভ্লাদিমির বায়রামভ (১৬)[৫]
মাঠকোপেতদাগ স্টেডিয়াম
ফিফা কোডTKM
ওয়েবসাইটtff.com.tm/ru
প্রথম জার্সি
দ্বিতীয় জার্সি
ফিফা র‌্যাঙ্কিং
বর্তমান ১৪১ অপরিবর্তিত (২১ ডিসেম্বর ২০২৩)[৬]
সর্বোচ্চ৮৬ (এপ্রিল ২০০৪)
সর্বনিম্ন১৭৪ (সেপ্টেম্বর ২০০৭)
এলো র‌্যাঙ্কিং
বর্তমান ১৫৯ হ্রাস ১১ (১২ জানুয়ারি ২০২৪)[৭]
সর্বোচ্চ৮৩ (মার্চ ২০০৪)
সর্বনিম্ন১৫৪ (মার্চ ২০১৮)
প্রথম আন্তর্জাতিক খেলা
কাজাখ সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কাজাখস্তান ১–০ তুর্কমেনিস্তান 
(আলমাটি, কাজাখস্তান; ১ জুন ১৯৯২)[৮]
বৃহত্তম জয়
 তুর্কমেনিস্তান ১১–০ আফগানিস্তান 
(আশখাবাদ, তুর্কমেনিস্তান; ১৯ নভেম্বর ২০০৩)
বৃহত্তম পরাজয়
 তুর্কমেনিস্তান ১–৬ কুয়েত 
(কুয়েত সিটি, কুয়েত; ১০ ফেব্রুয়ারি ২০০০)
 কাতার ৫–০ তুর্কমেনিস্তান 
(দোহা, কাতার; ৩১ মে ২০০৪)
এএফসি এশিয়ান কাপ
অংশগ্রহণ২ (২০০৪-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যগ্রুপ পর্ব (২০০৪, ২০১৯)
এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ
অংশগ্রহণ৪ (২০০৮-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যরানার-আপ (২০১০, ২০১২)

২৬,০০০ ধারণক্ষমতাবিশিষ্ট কোপেতদাগ স্টেডিয়ামে কুরাকুম যোদ্ধা নামে পরিচিত এই দলটি তাদের সকল হোম ম্যাচ আয়োজন করে থাকে। এই দলের প্রধান কার্যালয় তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশখাবাদে অবস্থিত। বর্তমানে এই দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন এজিএমকের মধ্যমাঠের খেলোয়াড় আর্সলানমিরাত আমানু

তুর্কমেনিস্তান এপর্যন্ত একবারও ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। অন্যদিকে, এএফসি এশিয়ান কাপে তুর্কমেনিস্তান এপর্যন্ত ২ বার অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে প্রত্যেকবার তারা শুধুমাত্র গ্রুপ পর্বে অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়াও, ২০১০ এবং ২০১২ এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে তুর্কমেনিস্তান রানার-আপ হয়েছে।

আর্সলানমুরাদ আমানভ, বেগেঞ্চমুখাম্মদ কুলিয়েভ, সর্দার আনাওরাজভ, আর্সলানমিরাত আমানু এবং ভ্লাদিমির বায়রামভের মতো খেলোয়াড়গণ তুর্কমেনিস্তানের জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন।

ইতিহাস সম্পাদনা

স্বাধীনতা অর্জনের পর তুর্কমেনিস্তান ১৯৯২ সালের ১লা জুন তারিখে কাজাখস্তান দলের বিপক্ষে তাদের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে।

২০০০-এর দশক সম্পাদনা

 
২০০৮ সালের জুন মাসে উত্তর কোরিয়া বনাম তুর্কমেনিস্তানের ম্যাচ

তুর্কমেনিস্তান ২০০৪ সালে এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে বিজয়ী হওয়ার মাধ্যমে এএফসি এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। বাছাইপর্বে তারা সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিরিয়াশ্রীলঙ্কার সাথে গ্রুপ জি-এ ছিল।

২০০৩ সালে তারা ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রথম লেগে আশখাবাদে আফগানিস্তানকে ১১–০ গোলে পরাজিত করে। বেগেনচ কুলিয়েভ এবং রেজেপমিরাত আগাবায়েউ একটি করে হ্যাট্রিক এবং গুভানচমুহমতে ওভেকভ দুটি গোল করেন। অন্যদিকে নাজার বায়রামভ, ওমর বেরদিয়েভ এবং ডদিদার্ক্লাইচ উরাজভ একটি করে গোল করেন। দ্বিতীয় লেগে বেগেনচ কুলিয়েভের জোড়া গোলে ২–০ ব্যবধানে ম্যাচ জয়লাভ করেছিল তুর্কমেনিস্তান। ২০০৩ সালের ডিসেম্বর মাসে, তুর্কমেনিস্তানের জাতীয় দলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ১০০-এ প্রবেশ করেছিল। ২০০৪ এএফসি এশিয়ান কাপ এবং ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে সাফল্যের জন্য র‌্যাঙ্কিংয়ের ৯৯তম অবস্থানে পৌঁছে যায় দলটি। চীনে আয়োজিত ২০০৪ এএফসি এশিয়ান কাপে তুর্কমেনিস্তান তাদের প্রতিবেশী উজবেকিস্তান, সৌদি আরব এবং ইরাকের সাথে গ্রুপ সি-এ অবস্থান করেছে। দুটি হার এবং সৌদি আরবের বিপক্ষে ড্রয়ের পর গ্রুপ পর্ব থেকেই তারা ছিটকে যায়।

২০১০-এর দশক সম্পাদনা

২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, তুর্কমেনিস্তান জাতীয় ফুটবল দল পরিচালনার দায়িত্ব নেন ইয়াজগুলো হোজাগেলদিয়েও, যিনি পূর্বে এইচটিটিইউ আগাবাতে কাজ করতেন।[৯] তার নেতৃত্বেই দলটি ২০১০ এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে অংশ নিয়েছিল। উক্ত আসরে তারা প্রথমবারের মতো ফাইনালে পৌঁছেছিল, কিন্তু পেনাল্টি শুট-আউটে উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে পরাজিত হয়। উক্ত বছরেই তুর্কমেনিস্তান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন স্থানীয় কোচ এবং রুবিন কাজানের তৎকালীন প্রধান কোচ কুর্বান বারদিয়েভকে দলের দায়িত্ব নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।[১০][১১]

২০১১ সালের মার্চ মাসে কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের বাছাইপর্বে পাকিস্তান, তাইওয়ানকে হারিয়ে এবং ভারতের সাথে ড্র করে তুর্কমেনিস্তান ২০১২ এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। ২০১১ সালের গ্রীষ্মে, ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপের মূল পর্বে উত্তীর্ণ হওয়ার লড়াইয়ে তারা দ্বিতীয় পর্বে ইন্দোনেশিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল। আশখাবাদে প্রথম লেগে ১–১ গোলে ড্র করার পর, শেষ পর্যন্ত তারা দ্বিতীয় লেগে ৪–৩ গোলে পরাজিত হয়েছিল। সামগ্রিকভাবে ৫–৪ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হওয়ার কারণে তারা বাছাইপর্ব থেকেই ছিটকে গিয়েছিল।

২০১২ এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের প্রস্তুতির জন্য ২০১২ সালের শীতকালে দলটি তুরস্কে একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প করতে গিয়েছিল। সেখানে রোমানিয়ার সাথে একটি প্রীতি ম্যাচে তারা ৪–০ ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল। ২০১২ সালের মার্চ মাসে তুর্কমেনিস্তান এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিতে কাঠমান্ডুতে গিয়েছিল। সেখানে তারা স্বাগতিক নেপালকে ৩–০ এবং মালদ্বীপকে ৩–১ গোলে পরাজিত করেছিল এবং ফিলিস্তিনের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। সেমিফাইনালে তুর্কমেনিস্তান ফিলিপাইনকে ২–১ গোলে পরাজিত করেছিল। কিন্তু পূর্ববর্তী আসরের মতো এই ফাইনালেও তারা উত্তর কোরিয়ার কাছে ১–২ গোলে পরাজিত হয়েছিল। ২০১২ সালের অক্টোবর মাসে, তুর্কমেনিস্তান ২০১২ ভিএফএফ কাপে অংশগ্রহণ করে, যেখানে তারা ভিয়েতনাম এবং লাওসকে পরাজিত করেছিল। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত দলের বিপক্ষে ফাইনালে ২–০ গোলে পরাজিত হয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে।

২০১৩ সালের ২৩শে মার্চ তারিখে ২০১৪ এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের বাছাইপর্বে তুর্কমেনিস্তান কম্বোডিয়াকে ৭–০ গোলে পরাজিত করেছিল। দ্বিতীয় পর্বে তুর্কমেনিস্তানের সাথে ব্রুনাইয়ের খেলা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দলটি আসরে উপস্থিত না হওয়ার কারণে তুর্কমেনিস্তান ওয়াক ওভার পায় এবং নিয়মানুযায়ী তাদের ৩–০ ব্যবধানে জয়ী ঘোষণা করা হয়।[১২] শেষ পর্বে তুর্কমেনিস্তান ফিলিপাইনকে কাছে ১–০ গোলে পরাজিত হয়েছিল। তবুও লাওসের পাশাপাশি দ্বিতীয় স্থান অধিকারী দল হিসেবে ২০১৪ এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের মূল পর্বে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়।

২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে, রাহিম কুর্বানমামেদো পুনরায় জাতীয় দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তারা মে মাসে তিনটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের আয়োজন করে এবং এরপর ২০১৪ এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে অংশ নেয়। কিন্তু সেখানে তারা গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় এবং এর ফলে তারা ২০১৫ এএফসি এশিয়ান কাপে অংশগ্রহণ করার সুযোগ হারায়।[১৩][১৪][১৫] ২০১৪ এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে তাদের খারাপ ফলাফলের ফলস্বরূপ প্রধান কোচসহ কোচিংয়ের সকল কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।[১৬]

 
তেহরানে ২০১৮ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ইরানের বিরুদ্ধে ম্যাচে তুর্কমেনিস্তান

২০১৫ সালের বসন্তে, ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে অংশ নেওয়ার জন্য দলটিকে প্রস্তুত করার জন্য আমাঙ্গেলি কোউমোকে জাতীয় দলের নতুন প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দলটি উক্ত আসর শুরু করেছিল বেশ খারাপভাবে, এশিয়ার অন্যতম দুর্বল দল গুয়ামের কাছে তারা ১–০ গোলে পরাজিত হয়েছিল। ২০১৫ সালের ১৬ই জুন তারিখে, তুর্কমেনিস্তান জাতীয় দলের ম্যাচ প্রথমবারের মতো আশখাবাদের বাইরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং তা হয়েছিল দাশোগুজের স্পট টোপলুমি স্টেডিয়ামে। ১০,০০০ দর্শকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত উক্ত খেলায় তুর্কমেনিস্তান ইরানের সাথে ১–১ গোলে ড্র করেছিল। তারপর দলটি ওমানকে ৩–১ গোলে পরাজিত করেছিল। ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে, কোপেটড্যাগ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে তুর্কমেনিস্তান ভারতকে ২–১ গোলে এবং গুয়ামকে ১–০ গোলে পরাজিত করেছিল। নভেম্বর মাসে, তুর্কমেনিস্তান সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে একটি প্রীতি ম্যাচে তারা ১–৫ গোলে পরাজিত হয়েছিল। অন্যদিকে, ইরানের সাথে আনুষ্ঠানিক ম্যাচে দলটি ১–৩ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল। ২০১৬ সালের ১৭ই নভেম্বর মাসে, ঘরের মাঠে খেলায় তুর্কমেনিস্তান ওমানকে ২–১ গোলে পরাজিত করেছিল। মূল পর্বে তুর্কমেনিস্তান ভারতকে ২–১ গোলে পরাজিত করেছিল। তুর্কমেনিস্তান গ্রুপ ডি-এ তৃতীয় স্থান অর্জন করেছিল, যা তাদেরকে ২০১৮ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের পরবর্তী পর্বে উত্তীর্ণ হতে সাহায্য না করলেও ২০১৮ এএফসি এশিয়ান কাপে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়েছিল। তুর্কমেনিস্তান শেষ পর্যন্ত ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো ২০১৯ এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব থেকে উত্তীর্ণ হয়েছিল।

২০১৯ সালের মার্চে তুর্কমেনিস্তানের ফুটবল ফেডারেশন এক বছরের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে আন্তে মিশেকে তুর্কমেনিস্তান জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান কোচ হিসেবে ঘোষণা করে।[১৭] ক্রোয়েশীয় বিশেষজ্ঞ সান্দ্রো টমিক তুর্কমেনিস্তানের জাতীয় দলকে প্রশিক্ষণ দিতে সহায়তা করেছিল। ক্রোয়েশীয় কোচদের শুধুমাত্র জাতীয় দল নয়, বরং তুর্কমেনিস্তানে সামগ্রিক ফুটবলের উন্নয়নের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ৩ মাস পর নতুন কোচের অধীনে প্রথম ম্যাচে দলটি উগান্ডার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে গোল শূন্য ড্র করেছিল।[১৮]

প্রতিদ্বন্দ্বী সম্পাদনা

 
আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত ২০১৯ এশিয়ান কাপে উজবেকিস্তান বনাম তুর্কমেনিস্তান ম্যাচ

তুর্কমেনিস্তানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হল মধ্য এশিয়ার দেশগুলো: কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান এবং কিরগিজস্তান। তুর্কমেনিস্তানের প্রধান এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিপক্ষ হল উজবেকিস্তান এবং তাজিকিস্তান।

পোশাক সরবরাহকারী সম্পাদনা

সাল প্রতিষ্ঠান
????–২০০৭   নাইকি
২০০৭–২০১০   জ্যাকো
২০১০–২০১১   আডিডাস
২০১২–২০১৬   আমব্রো
২০১৬–২০১৮   জোমা
২০১৯–বর্তমান   জ্যাকো[১৯]

স্টেডিয়াম সম্পাদনা

 
আশখাবাদ অলিম্পিক স্টেডিয়াম

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত তুর্কমেনিস্তান জাতীয় ফুটবল দলের নিজস্ব স্টেডিয়াম হচ্ছে আশখাবাদের কোপেতদাগ স্টেডিয়াম, যা ১৯৯৭ সালে নির্মাণ ও উদ্বোধন করা হয়েছিল। এই স্টেডিয়ামটি কোপেতদাগের নিজস্ব মাঠ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। ২০১৫ সালে পুনঃনির্মানের পর বর্তমানে স্টেডিয়ামটিতে একসাথে ২৬,৫০৩ জন দর্শক খেলা উপভোগ করতে পারে।

২০১৩ সাল থেকে ২০১২ সালের শেষ পর্যন্ত তুর্কমেনিস্তান জাতীয় দলের নিজস্ব স্টেডিয়ামটি ছিল আশখাবাদ অলিম্পিক স্টেডিয়াম (সাপারামুরাত তুর্কমেনবাশি দ্য গ্রেটের নামানুসারে ২০১৭ সালে এই স্টেডিয়ামের নাম সাপারামুরাত তুর্কমেনবাশি অলিম্পিক স্টেডিয়াম রাখা হয়েছে)। ২০১৩ সাল হতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই স্টেডিয়ামটি পুনঃসংস্কার করা হয়েছে এবং বর্তমানে স্টেডিয়ামটি ৪৫,০০০ জন দর্শক ধারণ করতে পারে। বর্তমানে স্টেডিয়ামটি জাতীয় দলের ম্যাচের জন্য ব্যবহৃত হয় না। বিভিন্ন বছরে তুর্কমেনিস্তান তাদের হোম ম্যাচগুলো তুর্কমেনিস্তানের অন্যান্য শহর এবং স্টেডিয়ামগুলোতে আয়োজন করেছিল। ১৯৯৭ সালের চীনের বিরুদ্ধে ম্যাচটি আশখাবাদের নুসাই স্টেডিয়ামে, ২০১৫ সালে ইরানের বিপক্ষে ম্যাচটি ও ২০১৭ সালে বাহরাইনের বিপক্ষে ম্যাচটি দাশোগুজের স্পোর্ট টপলুমিতে[২০] এবং ২০১৭ সালে তাইপেইর বিপক্ষে ম্যাচটি বলকানাবাতের স্পোর্ট টপলুমিতে আয়োজন করা হয়েছে।[২১][২২]

কোচ সম্পাদনা

 
ইয়াজগুলো বারদিমোহাম্মদোভিচ হোজাগেলদিয়েভ
নাম শুরু শেষ
  বারাম ডুরডিয়াউ জুন ১৯৯২ ১৯৯৬
  গুজা গুগুশভিলি ১৯৯৬ ১৯৯৭
  তাকমিরাত আগামিরাদৌ ১৯৯৭ ১৯৯৮
  ভিক্টর পোজেচেভস্কি ১৯৯৮ ১৯৯৯
    গুরবান বেরদিউ ১৯৯৯ ১৯৯৯
  রোসেন মুহাদো ১৯৯৯ ২০০০
  তাকমিরাত আগামিরাদৌ ২০০০ ২০০১
  ভোলোদাইমার বেজসনভ অক্টোবর ২০০২ ২০০৩
  রহিম গুরবানমাম্মিদো ২০০৩ নভেম্বর ২০০৪
  বরিস গ্রিগোরানচ ২০০৫ ২০০৫
  আমানগ্যালি গুমোমো ২০০৫ ২০০৬
  রহিম গুরবান মাম্মিদো ২০০৭ মার্চ ২০০৯
  বরিস গ্রিগোরানচ এপ্রিল ২০০৯ জানুয়ারি ২০১০
  ইয়াজগুলো হোজাগেল্ডিউউ ফেব্রুয়ারি ২০১০ জানুয়ারি ২০১৪
  রহিম গুরবানমাম্মিদো ফেব্রুয়ারি ২০১৪ জুন ২০১৪
  অ্যামাঙ্গিলিক কোকুমও মে ২০১৫ ডিসেম্বর ২০১৬
  ইয়াজগুলো হোজাগেল্ডিউউ জানুয়ারি ২০১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
  অ্যান্তে মিসে মার্চ ২০১৯ মার্চ ২০২০[১][২][৩]
  •   ভিক্টর পোজেচেভস্কি[২৩] থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯৯৮ এশিয়ান গেমসে দলকে পরিচালনা করে। সে এমন কয়েকজনকে দলে অন্তর্ভুক্ত করে যারা ইতোমধ্যে ইউক্রেনের জাতীয় দলের হয়ে খেলেছে।

র‌্যাঙ্কিং সম্পাদনা

ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে, ২০০৪ সালের এপ্রিল মাসে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে তুর্কমেনিস্তান তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অবস্থান (৮৬তম) অর্জন করে এবং ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে তারা ১৭৪তম স্থান অধিকার করে, যা তাদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে, বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে তুর্কমেনিস্তানের সর্বোচ্চ অবস্থান হচ্ছে ৮৩তম (যা তারা ২০০৪ সালে অর্জন করেছিল) এবং সর্বনিম্ন অবস্থান হচ্ছে ১৫৪। নিম্নে বর্তমানে ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং এবং বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে অবস্থান উল্লেখ করা হলো:

প্রতিযোগিতামূলক তথ্য সম্পাদনা

ফিফা বিশ্বকাপ সম্পাদনা

ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
সাল পর্ব অবস্থান ম্যাচ জয় ড্র হার স্বগো বিগো ম্যাচ জয় ড্র হার স্বগো বিগো
  ১৯৩০ সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল
  ১৯৩৪
  ১৯৩৮
  ১৯৫০
  ১৯৫৪
  ১৯৫৮
  ১৯৬২
  ১৯৬৬
  ১৯৭০
  ১৯৭৪
  ১৯৭৮
  ১৯৮২
  ১৯৮৬
  ১৯৯০
  ১৯৯৪ অংশগ্রহণ করেনি অংশগ্রহণ করেনি
  ১৯৯৮ উত্তীর্ণ হয়নি ১৩
    ২০০২ ১২
  ২০০৬ ২১ ১০
  ২০১০ ১০ ১৩
  ২০১৪
  ২০১৮ ১০ ১১
  ২০২২ অনির্ধারিত অনির্ধারিত
মোট ০/২১ ৪০ ১৭ ২০ ৬৪ ৫৬

এএফসি এশিয়ান কাপ সম্পাদনা

এএফসি এশিয়ান কাপ মূল পর্ব বাছাইপর্ব
স্বাগতিক/ সাল ফলাফল অবস্থান খেলা জয় ড্র হার গোল প্রদান গোল হজম খেলা জয় ড্র হার গোল প্রদান গোল হজম
  ১৯৫৬ থেকে   ১৯৮৮   সোভিয়েত ইউনিয়ন এর অংশ ছিল
  ১৯৯২ অংশ নেয়নি
  ১৯৯৬ কোয়ালিফাই করেনি
  ২০০০ ১৫
  ২০০৪ ১ম পর্ব ১২ তম ১০
        ২০০৭ কোয়ালিফাই করেনি
  ২০১১
  ২০১৫
  ২০১৯ গ্রুপ পর্ব ২১ তম ১০ ১৪ ১৯ ২১
মোট সেরা: গ্রুপ পর্ব ২/১৭ ১৬ ২৮ ১৪ ৪৭ ৩৭

২০১০ এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ এর ফলাফল অনুযায়ী ২০১১ এএফসি এশিয়ান কাপে দল বাছাই করা হয়েছে।

এশিয়ান গেমস সম্পাদনা

এশিয়ান গেমস পরিসংখ্যান
স্বাগতিক/ সাল ফলাফল খেলা জয় ড্র হার গোল প্রদান গোল হজম
জাতীয় দল
  ১৯৯৪ কোয়ার্টার ফাইনাল
  ১৯৯৮ কোয়ার্টার ফাইনাল ১০
মোট সেরা: কোয়ার্টার ফাইনাল ১১ ১৭ ১৮

উল্লেখ্য: ২০০২ সাল থেকে অনূর্ধ্ব–২৩ দলগুলো এশিয়ান গেমস ফুটবল খেলে।

এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ সম্পাদনা

এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ মূল পর্ব
সাল ফলাফল খেলা জয় ড্র হার গোল প্রদান গোল হজম
  ২০০৬ অংশ নেয়নি
  ২০০৮ গ্রুপ পর্ব
  ২০১০ রানার-আপ
  ২০১২ রানার-আপ
  ২০১৪ গ্রুপ পর্ব
মোট সেরা: রানার-আপ ১৬ ২৭ ১৪

মধ্য এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপ সম্পাদনা

স্বাগতিক/ সাল পর্ব খেলা জয় ড্র হার গোল প্রদান গোল হজম পার্থক্য পয়েন্ট
  ২০১৮
মোট

আরসিডি কাপ/ইসিও কাপ সম্পাদনা

সাল পর্ব খেলা জয় ড্র হার গোল প্রদান গোল হজম
  ১৯৬৫ থেকে   ১৯৭৪ কোনো আন্তর্জাতিক দল ছিল না
  ১৯৯৩ রানার-আপ
মোট সেরা: রানার-আপ

অর্জন সম্পাদনা

  • এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ ২০১০ ও ২০১২: রানার-আপ
  • ইসিও কাপ ১৯৯৩: রানার-আপ
  • তুর্কমেনিস্তান প্রেসিডেন্ট'স কাপ ১৯৯৭: চ্যাম্পিয়ন
  • তুর্কমেনিস্তান প্রেসিডেন্ট'স কাপ ২০০২: রানার-আপ
  • এইচসিএম সিটি কাপ (ভিয়েতনাম) ২০০৮: চ্যাম্পিয়ন

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Хорватские специалисты Анте Мише и Сандро Томич покинули сборную Туркменистана по футболу | Спорт"Туркменистан, интернет портал о культурной, деловой и развлекательной жизни в Туркменистане 
  2. "Nema utakmica, nema ni posla: Ante Miše nije više izbornik Turkmenistana"Sportnet। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০২১ 
  3. "HRVATSKI TRENER KAO IZBORNIK NAPRAVIO SJAJAN POSAO, DOGOVORIO NOVI UGOVOR, A ONDA JE SVE STALO 'Umiješala se viša sila...' - Sportske Novosti"sportske.jutarnji.hr 
  4. Strack-Zimmermann, Benjamin। "Arslanmyrat Amanow"www.national-football-teams.com। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০১৯ 
  5. "Players with 100+ Caps and 30+ International Goals"www.rsssf.com। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০১৯ 
  6. "ফিফা/কোকা-কোলা বিশ্ব র‍্যাঙ্কিং"ফিফা। ২১ ডিসেম্বর ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  7. গত এক বছরে এলো রেটিং পরিবর্তন "বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং"eloratings.net। ১২ জানুয়ারি ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০২৪ 
  8. [১][স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  9. "Главным тренером сборной Туркменистана по футболу назначен Язкули Ходжагельдыев - Интернет-газета Turkmenistan.Ru"www.turkmenistan.ru। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৭ 
  10. "Курбан Бердыев проконсультирует туркменскую сборную"www.tatcenter.ru। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৭ 
  11. "Бердыев проконсультирует сборную Туркменистана"www.championat.com। ১৩ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৭ 
  12. "Государственное информационное агентство Туркменистана - TDH"tdh.gov.tm। ৩ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৭ 
  13. "AFC Challenge Cup: Philippines 2-0 Turkmenistan - AFC"www.the-afc.com। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৭ 
  14. "AFC Challenge Cup: Afghanistan 3-1 Turkmenistan - AFC"www.the-afc.com। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৭ 
  15. "AFC Challenge Cup: Turkmenistan 5-1 Laos - AFC"www.the-afc.com। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৭ 
  16. ihyzmatlary.com। "Не имеющая 8 месяцев главного тренера сборная Туркменистана скоро узнает соперников в квалификации ЧМ-2018 - Спорт"turkmenportal.com। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৭ 
  17. Анте Мише: «Я не Гарри Поттер, чтобы сборная Туркменистана сразу заиграла на высоком уровне» at turkmenportal.com, 28 March 2019
  18. Сборные Туркменистана и Уганды сыграли вничью в товарищеском матче
  19. [২]
  20. Туркменские футболисты проиграли команде Бахрейна в домашнем отборочном матче Кубка Азии-2019
  21. Гари Уайт: «Футболисты Тайваня приехали в Туркменистан за победой»
  22. Футболисты сборной Тайваня опробовали поле стадиона в Балканабате
  23. New Turkmenistani (ইউক্রেনীয়)

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা