নাটোর জেলা
নাটোর জেলা বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত একটি জেলা। জেলার উত্তরে নওগাঁ জেলা ও বগুড়া জেলা, দক্ষিণে পাবনা জেলা ও কুষ্টিয়া জেলা, পূর্বে পাবনা জেলা ও সিরাজগঞ্জ জেলা এবং পশ্চিমে রাজশাহী জেলা অবস্থিত। জেলাটির আয়তন ১৯০৫.০৫ বর্গ কিলোমিটার। এই জেলাটি মূলত বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমের আটটি জেলার মধ্য একটি জেলা। আয়তনের দিক দিয়ে নাটোর বাংলাদেশের ৩৫ তম জেলা। নাটোর জেলা দূর্যোগপ্রবণ এলাকা না হলেও সিংড়া উপজেলা ও লালপুর উপজেলায় আত্রাই নদী এবং পদ্মা নদীতে মাঝে মাঝে বন্যা দেখা দেয়। সদর ও নাটোরের সকল উপজেলার আবহাওয়া একই হলেও লালপুরে গড় তাপমাত্রা তুলনামূলক বেশি।
নাটোর | |
---|---|
জেলা | |
ঘড়ির কাটা অনুসারে: উত্তরা গণভবন, চলন বিল, জেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সংবলিত স্মৃতিস্তম্ভ, গোসাই আখড়া, হালতি বিল, নাটোর রাজবাড়ী, | |
![]() বাংলাদেশে নাটোর জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°২৪′৩৬″ উত্তর ৮৮°৫৫′৪৮″ পূর্ব / ২৪.৪১০০০° উত্তর ৮৮.৯৩০০০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | রাজশাহী বিভাগ |
প্রতিষ্ঠা | ১৯৮৪ |
সরকার | |
• জেলা প্রশাসক | মোঃ শামীম আহমেদ |
আয়তন | |
• মোট | ১,৯০৫.০৫ বর্গকিমি (৭৩৫.৫৪ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১৯)[১] | |
• মোট | ১৮,৫৯,৯২১ |
• জনঘনত্ব | ৯৮০/বর্গকিমি (২,৫০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৭১.৪৩% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৬৪০০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৫০ ৬৯ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
ইতিহাসসম্পাদনা
অষ্টাদশ শতকের শুরুতে নাটোর রাজবংশের উৎপত্তি হয়। ১৭০৬ সালে পরগণা বানগাছির জমিদার গণেশ রায় ও ভবানী চরণ চৌধুরী রাজস্ব প্রদানে ব্যর্থ হয়ে চাকরিচ্যুত হন। দেওয়ান রঘুনন্দন জমিদারিটি তার ভাই রামজীবনের নামে বন্দোবস্ত নেন । এভাবে নাটোর রাজবংশের পত্তন হয়। রাজা রামজীবন নাটোর রাজবংশের প্রথম রাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন ১৭০৬ সালে মতান্তরে ১৭১০ সালে । ১৭৩৪ সালে তিনি মারা যান । ১৭৩০ সালে রাণী ভবানীর সাথে রাজা রাম জীবনের দত্তক পুত্র রামকান্তের বিয়ে হয় । রাজা রাম জীবনের মৃত্যুর পরে রামকান্ত নাটোরের রাজা হন। ১৭৪৮ সালে রাজা রামকান্তের মৃত্যুর পরে নবাব আলীবর্দী খাঁ রাণী ভবানীর ওপর জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেন । রাণী ভবানীর রাজত্বকালে তার জমিদারি বর্তমান রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, কুষ্টিয়া, যশোর, রংপুর, পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, মালদহ জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
নাটোরে নীল বিদ্রোহ ১৮৫৯-১৮৬০ তে সংঘটিত হয়। [২] ১৮৯৭ সালের জুনে নাটোরে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের অধিবেশন হয় । সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর সভাপতি, মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি ও প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মহারাজা জগদিন্দ্রনাথের চেষ্টায় সেবারই প্রথম রাজনৈতিক সভায় বাংলা ভাষার প্রচলন করা হয়। ১৯০১ সালে মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ কলকাতা কংগ্রেসের অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি হন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৮৪৫ সালে রাজশাহী জেলার অধীনে নাটোর মহকুমার সৃষ্টি। আর অন্যান্য মহকুমার মতো জেলায় উন্নীত হয় ১৯৮৪ সালে।
১৯৭১ সালের ৫ মে গোপালপুরের চিনিকলের এম.ডি. মো. আজিম সহ প্রায় ২০০ মানুষকে নৃশংসভাবে পাকবাহিনী হত্যা করে। এই বধ্যভূমিতে নির্মাণ করা হয়েছে শহীদ মিনার এবং রেলস্টেশনের নামকরণ হয়েছে আজিমনগর।[৩] ১৭৬৯-১৮২৫ সাল পর্যন্ত নাটোর রাজশাহীর জেলার সদর দফতর ছিল। প্রতিস্থাপনের প্রাক্কালে নাটোরকে মহকুমা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল; সে কারণেই নাটোর বাংলাদেশের প্রথম মহকুমা। নাটোর ১৯৮৪ সালে একটি জেলা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
ইতিহাসসম্পাদনা
নাটোর মুঘল শাসনামলের শেষ সময় থেকে বাংলার ক্ষমতার অন্যতম প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়। বিশেষ করে নবাবী আমলে নাটোরের ব্যাপক ব্যাপ্তি ঘটে। বাংলার সুবেদার মুর্শিদ কুলী খানের (১৭০১-১৭২৭ শাসনকাল) প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বরেন্দ্রী ব্রাহ্মণ রঘুনন্দন তার ছোটভাই রামজীবনের নামে এতদ অঞ্চলে জমিদারী প্রতিষ্ঠা করেন। রাজা রামজীবন রায় নাটোর রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। কথিত আছে লস্কর খাঁতার সৈন্য-সামন্তদের জন্য যে স্থান হতে রসদ সংগ্রহ করতেন, কালক্রমে তার নাম হয় লস্করপুর পরগনা। এই পরগনার একটি নিচু চলাভূমির নাম ছিল ছাইভাংগা বিল। ১৭১০ সনে রাজা রামজীবন রায় এই স্থানে মাটি ভরাট করে তার রাজধানী স্থাপন করেন। কালক্রমে মন্দির, প্রাসাদ, দীঘি, উদ্যান ও মনোরম অট্টালিকা দ্বারা সুসজ্জিত নাটোর রাজবাড়ী প্রস্তুত হয়। পরে আস্তে আস্তে পাশের এলাকায় ঊন্নয়নের ধারাবাহিকতায় একসময় নগরী পরিণত হয়। সুবেদার মুর্শিদ কুলী খানের সুপারিশে মুঘল সম্রাট আলমগীরের নিকট হতে রামজীবন ২২ খানা খেলাত এবং রাজা বাহাদুর উপাধি লাভ করেন। নাটোর রাজ্য উন্নতির চরম শিখরে পৌছে রাজা রামজীবনের দত্তক পুত্র রামকান্তের স্ত্রী রাণী ভবানীর রাজত্বকালে । ১৭৮২ সালে ক্যাপ্টেন রেনেল এর ম্যাপ অনুযায়ী রাণী ভবানীর জমিদারীর পরিমাণ ছিল ১২৯৯৯ বর্গমাইল । শাসন ব্যবস্থার সুবিধার জন্য সুবেদার মুর্শিদ কুলী খান বাংলাকে ১৩ টি চাকলায় বিভক্ত করেন। এর মধ্যে রাণী ভবানীর জমিদারী ছিল ৮ চাকলা বিস্তৃত। এই বিশাল জমিদারীর বাৎসরিক আয় ছিল দেড় কোটি টাকার অধিক। বর্তমান বাংলাদেশের রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, যশোর এবং পশ্চিমবঙ্গের মালদা, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলাব্যাপী বিস্তৃত ছিল তার রাজত্ব। এছাড়া ময়মনসিংহ জেলার পুখুরিয়া পরগণা এবং ঢাকা জেলার রাণীবাড়ী অঞ্চলটিও তার জমিদারীর অন্তর্গত ছিল। এ বিশাল জমিদারীর অধিশ্বরী হওয়ার জন্যই তাকে মহারাণী উপাধী দেয়া হয় এবং তাকে অর্ধ-বঙ্গেশ্বরী হিসাবে অভিহিত করা হতো।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] একে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিল এ অঞ্চলের সর্ববৃহৎ সামন্তরাজ এবং এক মহিয়ষী নারীর রাজ্যশাসন ও জনকল্যাণ ব্যবস্থা।
নাটোরের রাজারা এই বিশাল জমিদারী পরিচালনা করতো নিজস্ব প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় । নবাবী আমলে তাদের নিজস্ব দেওয়ানী ও ফৌজদারী বিচারের ক্ষমতা ছিল। শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তাদের নিজস্ব পুলিশবাহিনী এবং জেলখানা ছিল। ১৮৭৩ সালে ইংরেজ সরকারের এক ঘোষণাবলে রাণী ভবানীর দত্তকপুত্র রামকৃষ্ণ এর হাত থেকে কোম্পানী পুলিশ ও জেলখানা নিজ হাতে তুলে নেয়। কোম্পানী নিজহাতে জেলখানার দায়িত্ব নিয়ে প্রতি জেলায় জেলখানা স্থাপন করে। ইংরেজদের কর্তৃক পরিচালিত প্রথম জেলখানা নাটোরে প্রতিষ্ঠিত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
রাণী ভবানীর শাসনামল পর্যন্ত নাটোর শহরের দক্ষিণ পাশ দিয়ে প্রবাহিত হতো স্রোতস্বিনী নারদ নদ । পরবর্তীকালে নদের গতিমুখ বন্ধ হয়ে গেলে সমগ্র শহর এক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে নিপতিত হয়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা, বদ্ধজল এবং পয়ঃনিষ্কাশনের একমাত্র সংযোগস্থল ছিল নারদ নদ। সেই নদ অচল হয়ে পড়ায় শহরের পরিবেশ ক্রমাগত দূষিত হয়ে পড়ে। ইংরেজ শাসকরা সেজন্য জেলাসদর নাটোর হতে অন্যত্র স্থানান্তরের উদ্যোগ গ্রহণ করে। মি. প্রিংগল ১৮২২ সালে ২৩ শে এপ্রিল জেলাসদর হিসাবে পদ্মানদীর তীরবর্তী রামপুর-বোয়ালিয়ার নাম ঊল্লেখ করে প্রস্তাবনা পেশ করেন। ১৮২৫ সালে নাটোর থেকে জেলা সদর রামপুর-বোয়ালিয়াতে স্থানান্তরিত হয়। জেলা সদর স্থানান্তরের পর ইংরেজ সরকার মহকুমা প্রশাসনের পরিকাঠামো তৈরি করে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী মহকুমা হিসাবে নাটোরের পদাবনতি ঘটে। তারপর দীর্ঘ ১৬৫ বছর অর্থাৎ ইংরেজ, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের চৌদ্দ বছরের প্রশাসনিক ইতিহাসে নাটোর মহকুমা সদর হিসাবে পরিচিত ছিল। ১৯৮৪ সালে বৃহত্তর রাজশাহী জেলা ভেঙ্গে নাটোর পুনরায় জেলাসদরের মর্যাদা লাভ করে।
দিঘাপতিয়ার জমিদার বাড়ি (বর্তমানে উত্তরা গণভবন)
রাজা রামজীবন রায় ১৭৩০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পূর্বে তিনি রাজা রামকান্ত রায় কে রাজা এবং দেওয়ান দয়ারাম রায়কে তার অভিভাবক নিযুক্ত করেন। রামকান্ত রাজা হলেও প্রকৃত পক্ষে সম্পূর্ণ রাজকার্যাদি পরিচালনা করতেন দয়ারাম রায়। তার দক্ষতার কারণে নাটোর রাজবংশের ঊত্তোরত্তর সমবৃদ্ধি ঘটে। ১৭৪৮ সালে রামকান্ত পরলোক গমন করেন। স্বামীর মৃত্যুর পর রাণী ভবানীকে নবাব আলীবর্দী খাঁ বিস্তৃত জমিদারী পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেন। নাটোরের ইতিহাসে জনহিতৈষী রাণী ভবানী হিসেবে অভিহিত এবং আজও তার স্মৃতি অম্লান। বাংলার স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলার সাথে রাণী ভবানীর আন্তরিক সুসম্পর্ক ছিল। পলাশীর যুদ্ধে রাণী ভবানী নবাবের পক্ষ অবলম্বন করেন।
পরবর্তীতে রাণী ভবানীর নায়েব দয়ারামের উপরে সন্তুষ্ট হয়ে তিনি দিঘাপতিয়া পরগনা তাকে উপহার দেন। দিঘাপতিয়ায় প্রতিষ্ঠিত বর্তমান উত্তরা গণভবনটি দয়ারামের পরবর্তী বংশধর রাজা প্রমদানাথের সময় গ্রিক স্থাপত্য কলার অনুসরনে রূপকথার রাজ প্রাসাদে উন্নীত হয়। কালক্রমে এই রাজপ্রাসাদটি প্রথমত গভর্নর হাউস, পরবর্তীতে বাংলাদেশ অভ্যূদয়ের পরে উত্তরা গণভবনে পরিণত হয়।[৪]
ভৌগোলিক সীমানাসম্পাদনা
নাটোর জেলার উত্তরে নওগাঁ জেলা ও বগুড়া জেলা, দক্ষিণে পাবনা জেলা ও কুষ্টিয়া জেলা, পূর্বে পাবনা জেলা ও সিরাজগঞ্জ জেলা এবং পশ্চিমে রাজশাহী জেলা অবস্থিত। আয়তন ১৯০৫.০৫ বর্গ কিলোমিটার। গ্রিনেজ আন্তজার্তিক সময় হতে নাটোরের সময় ৬ঘন্টা ৬মিনিট অগ্রবর্তী।ঢাকা থেকে ৬ মিনিট অগ্রবর্তী।নাটোর শহরটি পদ্মা-যমুনা মিলনস্থল হতে ১০৭ কি.মি উত্তর-পশ্চিম বরাবর। নাটোরসহ এর পার্শ্ববর্তী বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে অবস্থিত চলন বিল হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিল।নাটোরে অবস্থিত আরো দুইটি বিলের নাম হালতি বিল এবং হেলেনচা বিল। বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে কমবৃষ্টিপাত হয় নাটোরের লালপুর উপজেলায়।
প্রশাসনিক এলাকাসমূহসম্পাদনা
নাটোর জেলা ৭ টি উপজেলা, ৭টি থানা এবং ৮টি পৌরসভা রয়েছে।নাটোরে সংসদীয় আসন ৪টি। নাটোর জেলার উপজেলাগুলো হলঃ
- নাটোর সদর উপজেলা
- বাগাতিপাড়া উপজেলা
- বড়াইগ্রাম উপজেলা
- গুরুদাসপুর উপজেলা
- লালপুর উপজেলা
- সিংড়া উপজেলা
- নলডাঙ্গা উপজেলা
নাটোর জেলার পৌরসভা হলোঃ
- নাটোর পৌরসভা (ক শ্রেনী)
- সিংড়া পৌরসভা (ক শ্রেনী)
- গুরুদাসপুর পৌরসভা (ক শ্রেনী)
- বড়াইগ্রাম পৌরসভা (খ শ্রেনী)
- গোপালপুর পৌরসভা (খ শ্রেনী)
- বাগাতিপাড়া পৌরসভা (গ শ্রেনী)
- বনপাড়া পৌরসভা (ক শ্রেনী)
- নলডাঙ্গা পৌরসভা (খ শ্রেনী)
সংসদীয় আসনঃ
- (৫৮) নাটোর-১ লালপুর, বাগাতিপাড়া
- (৫৯) নাটোর-২ সদর, নলডাঙ্গা
- (৬০) নাটোর-৩ সিংড়া
- (৬১) নাটোর-৪ গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম।
হাইওয়ে থানাঃ
পুলিশ ফাঁড়ি:
- নিচাবাজার পুলিশ ফাঁড়ি
- উপরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি
- কালীগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি
- বামিহাল পুলিশ ফাঁড়ি
- ওয়ালিয়া পুলিশ ফাঁড়ি
- জামনগর পুলিশ ফাঁড়ি
- পালপাড়া পুলিশ ফাঁড়ি (অস্থায়ী)
জনসংখ্যাসম্পাদনা
(২০২২ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী) নাটোরের নিম্নলিখিত জনসংখ্যা।
বিবরণ | মোট সংখ্যা | শতকরা |
---|---|---|
জনসংখ্যা | ১৮৫৯৯২১ জন | (বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ১.১২৬%) |
পুরুষ | ৯১৯৬৯৬ জন | (৪৯.৪৫%) |
মহিলা | ৯৩৯৬৬৩ জন | (৫০.৫২%) |
হিজরা | ১১৬ জন | (০.০০৬১%) |
মুসলিম | ১৭৪৩৮৬১ জন | (৯৩.৭৬%) |
হিন্দু | ১০৬৯৪৭ জন | (৫.৭৫%) |
খ্রিস্টান | ৭৮১২ জন | (০.৪২%) |
বৌদ্ধ | নেই | (০%) |
অন্যান্য | ১১১৫ জন | (০.০৫৯৯৪%) |
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী | ১১১৮৯ জন | (০.৬০%) |
শহর ও গ্রামে বসবাসকারী সংখ্যা
বিবরণ | মোট সংখ্যা | শতকরা |
---|---|---|
শহর | ৩৫৬৫২৮ জন | (১৯.১৭%) |
গ্রাম | ১৫০২৯১৭ জন | (৮০.৮০%) |
জেলায় শহর ভিত্তিক জনসংখ্যা এবং শতকরা শহুরে জনসংখ্যার হিসাব
বিবরণ | মোট সংখ্যা | শতকরা শহুরে জনসংখ্যার হিসাব |
---|---|---|
নাটোর ও শহরতলী | ১৪৭১৯৮ জন | (৫২.৫০%) |
সিংড়া | ৫৪৯৮৬ জন | (১৫.৪২%) |
গুরুদাসপুর | ৪৫২১২ জন | (১২.৬৮%) |
লালপুর | ২৬৬৫৩ জন | (৭.৪৮%) |
বনপাড়া | ৩৩০২১ জন | (১০%) |
বড়াইগ্রাম | ১৮৩৮৮ জন | (৫.১৬%) |
বাগাতিপাড়া | ১৯৯৫৬ জন | (৫.৬০%) |
নলডাঙ্গা | ১৬০৩৮ জন | (৪.৫০%) |
অন্যান্য শহর | ৩৯২৮৮ জন | (১১.০২%) |
অন্যান্য তথ্য
বিবরণ | মোট সংখ্যা |
---|---|
সাক্ষরতার হার | ১৩২৪৫৪০ জন (৭১.৪৩%) জন |
গৃহ প্রতি বসবাসকারী সংখ্যা | ৪ জন (প্রায়) |
গড় উপজেলায় জনসংখ্যা | ২৬৫৭০৩ জন |
প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বসবাসকারী জনসংখ্যা | ৯৭৮ জন |
লিঙ্গ অনুপাত(পুরুষ:মহিলা) | ৯৮:১০২ |
স্বাধীনতা পরবর্তী জনসংখ্যার ইতিহাস
সন | জনসংখ্যা | জনসংখ্যা বৃদ্ধি |
---|---|---|
১৯৭৪ | ৮৫৮৬১৯ জন | |
১৯৮১ | ১০৬৭০৫৮ জন | ২০৮৪৩৯ জন |
১৯৯১ | ১৩৮৭৭৬১ জন | ৩২০৭০৩ জন |
২০০১ | ১৫২১৩৩৬ জন | ১৩৩৫৭৫ জন |
২০১১ | ১৭০৬৬৭৩ জন | ১৮৫৩৩৭ জন |
২০২২ | ১৮৫৯৯২১ জন | ১৫৩২৪৮ জন |
তথ্যসূত্র http://www.bbs.gov.bd/
প্রধান নদীসম্পাদনা
উল্লেখযোগ্য নদীগুলোর মধ্যে রয়েছে
যোগাযোগ ব্যবস্থাসম্পাদনা
নাটোর জেলায় চার ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান রয়েছে।
সড়কপথসম্পাদনা
রাজধানী ঢাকা সহ প্রত্যক বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরগুলোর সাথে নাটোর জেলার উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। এই জেলার অধিনে ৪টি মহাসড়ক যথা-নাটোর-রাজশাহী মহাসড়ক, নাটোর-বগুড়া-রংপুর মহাসড়ক, নাটোর-সিরাজগঞ্জ-ঢাকা মহাসড়ক, নাটোর-পাবনা-কুষ্টিয়া-যশোর মহাসড়ক এবং ১টি আঞ্চলিক মহাসড়ক নাটোর-নওগাঁ মহাসড়ক রয়েছে এছাড়া ১৪ টি জেলা সড়ক সহ ছোট বড় অনেক রাস্তা রয়েছে এই জেলায়।
রেলপথসম্পাদনা
নাটোর জেলায় প্রায় ৭৫ কিলোমিটার রেললাইন রয়েছে। সারা দেশের সাথে এই জেলার উন্নত রেল যোগাযোগ রয়েছে। এই জেলায় ১২টি রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে যথা-.
স্টেসনের নাম | অবস্থান | ক্লাস | রেলপথ সংখ্যা | স্টেসন কোড |
---|---|---|---|---|
নাটোর রেলওয়ে স্টেশন | বড়গাছা,নাটোর | B | ৫ | NTE |
ঈশ্বরদী বাইপাস রেলওয়ে স্টেশন | অর্জুনপুর বরমহাটী,লালপুর | C | ২ | ISDB |
আব্দুলপুর জংশন রেলওয়ে স্টেশন | চংধুপইল,লালপুর | C | ৫ | ALD |
মাঝগ্রাম জংশন রেলওয়ে স্টেশন | দুয়ারিয়া,লালপুর | D | ৪ | MZRA |
মাধনগর রেলওয়ে স্টেশন | মাধনগর,নলডাঙ্গা | D | ৩ | MGA |
আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশন | গোপালপুর,লালপুর | D | ৩ | AZGR |
নলডাঙ্গার হাট রেলওয়ে স্টেশন | নলডাঙ্গা | D | ১ | NGQ |
বাসুদেবপুর রেলওয়ে স্টেশন | বৈদ্যবেলঘড়িয়া,নলডাঙ্গা | D | ৩ | VVP |
ইয়াছিনপুর রেলওয়ে স্টেশন | ইয়াছিনপুর,নাটোর | D | ২ | YSP |
মালঞ্চি রেলওয়ে স্টেশন | বাগাতিপাড়া | D | ২ | MI |
লোকমানপুর রেলওয়ে স্টেশন। | পাকা ইউনিয়ন,বাগাতিপাড়া | D | ১ | LMX |
বীরকুটশা রেলওয়ে স্টেশন | দুর্লভপুর,নলডাঙ্গা | D | ১ | BKTA |
তথ্যসূত্র https://indiarailinfo.com/station/map/naldanga-hat-ngq/11072
নদীপথসম্পাদনা
সারা দেশের সাথে নাটোর জেলা সদরের নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত হলেও নাটোর জেলার লালপুর, সিংড়া, গুরুদাসপুর উপজেলার উন্নত নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে।
বিমানপথসম্পাদনা
নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার ঈশ্বরদী ইউনিয়নে ঈশ্বরদী বিমানবন্দর নামে একটি বিমানবন্দর রয়েছে। এছাড়াও নাটোর সদর উপজেলায় ১টি ও বাগাতিপাড়া উপজেলার কাদিরাবাদ সেনানিবাস ১টি হেলিপোর্ট রয়েছে।
চিকিৎসাসম্পাদনা
- আধুনিক সদর হাসপাতাল নাটোর ২৫০ শয্যা
- ব্যাপিস্ট মিড মিশন হাসপাতাল
- নাটোর
- সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল
- পুলিশ হাসপাতাল নাটোর
- আমজাদ খান চৌধুরী মেমোরিয়াল হসপিটাল নাটোর
- আমেনা হাসপাতাল বনপাড়া
- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সিংড়া
- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স লালপুর
- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
- বড়াইগ্রাম
- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
- গুরুদাসপুর
- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
- বাগাতিপাড়া
- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নলডাঙ্গা
- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নাটোর সদর
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসম্পাদনা
- নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ
- আব্দুলপুর সরকারি কলেজ লালপুর
- শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মহিলা কলেজ
- বিলচলন শহীদ সামসুজ্জোহা সরকারি কলেজ
- রাণী ভবানী সরকারি মহিলা কলেজ
- দিঘাপতিয়া এম. কে. অনার্স কলেজ
- নাটোর সিটি কলেজ
- নাটোর মহিলা কলেজ
- সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়
- সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- নাটোর সুগারমিল উচ্চ বিদ্যালয়
- গ্রীন একাডেমী উচ্চ বিদ্যালয়
- মহারাজা জে, এন উচ্চ বিদ্যালয়
- নব বিধান গার্লস স্কুল
- শের ই বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়
- পারভীন পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়
- তেবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়
- বড়গাছা উচ্চ বিদ্যালয়
- কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ
- করিমপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় আব্দুলপুর
- নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাই স্কুল
- মহারাজা জে.এন উচ্চ বিদ্যালয়
- গুরুদাসপুর পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
- বাগাতিপাড়া পাইলট স্কুল
- কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল, দয়ারামপুর, নাটোর
- দিয়াড় গাড়ফা খৈরাশ (ডি.কে) উচ্চ বিদ্যালয়, বড়াইগ্রাম, নাটোর
- রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়
- সেন্ট যোসেফস্ স্কুল এন্ড কলেজ
- রাজাপুর ডিগ্রি কলেজ বড়াইগ্রাম নাটোর
- গোল-ই-আফরোজ কলেজ
- চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ
- মহিষমারী উচ্চ বিদ্যালয়
- কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট স্যাপার কলেজ
- কাছিকাটা স্কুল এন্ড কলেজ
- সিংড়া চলনবিল মহিলা ডিগ্রি কলেজ
- সিংড়া দমদমা পাইলট স্কুল ও কলেজ
- নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়
- মহিষমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- চামারী বি.এন. উচ্চ বিদ্যালয়
- কাছিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- তিরাইল উচ্চ বিদ্যালয়
- ইয়াছিনপুুুর উচ্চ বিদ্যালয়
- পীরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়
- মৌখাড়া উচ্চ বিদ্যালয়
- হয়বতপুর গোলাম ইয়াছিনিয়া ফাযিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা
শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানসম্পাদনা
- নাটোর টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট
- নাটোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
- নাটোর নার্সিং ইনিস্টিউটিউট
- প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনিস্টিউটিউট
- টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট রামাইগাছি, নাটোর সদর
- টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট লালপুর
- যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র লালপুর
- নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নলডাঙ্গা
- মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সিংড়া
- কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাগাতিপাড়া (প্রস্তাবিত)
- কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র লালপুর
- যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র লালপুর
জেলার বিশ্ববিদ্যালয়সম্পাদনা
জাদুঘরসম্পাদনা
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসম্পাদনা
- জেলা শিল্পকলা একাডেমী
- মনোবীণা সংঘ
- সাকাম সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান
- নাটোর সংগীত বিদ্যালয়
- উষা খেলাঘর আসর
- ভোলামন বাউল সংগঠন
- ইছলাবাড়ী বাউল সংগঠন
- নৃত্যাঙ্গন
- তরুণ নাট্য সম্প্রদায়
- ডিং ডং ড্যান্স ক্লাব
- দিব্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান
- সারেগামা, সুরের ছোঁয়া
- ঝংকার নৃত্য গোষ্ঠি
- বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ
- ইঙ্গিত থিয়েটার ইত্যাদি।
অর্থনীতিসম্পাদনা
জেলার প্রধান উৎপাদিত ফসল হলো ধান । এছাড়াও এখানে রসুন, ইক্ষু, গম, ভুট্টা, আখ, পান ইত্যাদি উৎপাদিত হয়। এখানকার বিলুপ্তপ্রায় ফসল নীল, বোনা আমন ও আউশ ধান। এখানে বেশ কয়েকটি ভারি শিল্প রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দুইটি চিনিকল, ডিস্টিলারি, প্রান জুসের কারখানা, দত্তপাড়া বিসিক এলাকা, রাজলংকা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, চামড়া সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (চামড়াপ্পট্টি), জুট মিল (প্রস্তাবিত), পদ্মা অয়েল সংরক্ষণ এলাকা রয়েছে, যা নাটোর রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিম পাশে।এইখানে ওয়ানগনবাহী ট্রেন থেকে তেল উত্তোলন করা হয়। দেশের ১৬টি চিনিকলের মধ্যে ২টি এই জেলায় অবস্থিত। এছাড়াও মূলতঃ এই জেলায় উৎপাদিত আখের উপর নির্ভর করে পার্শ্ববর্তী রাজশাহী ও পাবনা জেলায় গড়ে উঠেছে আরও দুইটি চিনিকল।
এছাড়া বাংলাদেশের বৃহত্তম প্রাণ কোম্পানীর বেশিরভাগ কাঁচামাল ( আম, লিচু, বাদাম, মুগ ডাল, সুগন্ধি চাল ইত্যাদি) নাটোর জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসে।সম্প্রতি এখানে আপেল কুল, বাউ কুল, থাই কুলের ব্যাপক চাষ হচ্ছে ।
উল্লেখযোগ্য শিল্প প্রতিষ্ঠানসম্পাদনা
- নাটোর বিসিক শিল্প এলাকা
- রাজলংকা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র
- প্রাণ এগ্রো লিমিটেড
- পারটেক্স এগ্রো লিমিটেড
- কিশোয়ান এগ্রো লিমিটেড
- নাটোর চিনি কল লিমিটেড নাটোর সদর
- নর্থ বেঙ্গল চিনি কল লিমিটেড লালপুর
- যমুনা ডিস্টিলারি লিমিটেড
- চামড়া শিল্প
- পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড
- নাটোর এগ্রো লিমিটেড
- নাটোর অর্থনৈতিক অঞ্চল -১ লালপুর, নাটোর
- নাটোর অর্থনৈতিক অঞ্চল-২নাটোর সদর, নাটোর
- নবতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড
- নাটোর জুট মিল লিমিটেড
- ফ্ল্যাসি ফ্ল্যাস জুট মিল লিমিটেড
এছাড়া অনেক মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প রয়েছে।
চিত্তাকর্ষক স্থানসম্পাদনা
- উত্তরা গণভবন (দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি)
- নাটোর রাজবাড়ী
- ঈশ্বরদী বিমানবন্দর ঈশ্বরদী ইউনিয়ন, লালপুর, নাটোর
- পদ্মার তীরও পদ্মার চর লালপুর
- গ্রীন ভ্যালি পার্ক, লালপুর
- শহীদ সাগর, লালপুর
- বুধপাড়া কালীমন্দির, লালপুর
- ভেল্লাবাড়ি মসজিদ, লালপুর
- গোসাই আশ্রম, লালপুর
- বঙ্গজ্বল রাজবাড়ী বা রানীভবানীর রাজবাড়ী
- চৌগ্রাম জমিদার বাড়ি
- চলনবিল
- তিসিখালি মাজার
- দয়ারামপুর জমিদার বাড়ি
- হালতির বিল
- ধরাইল জমিদার বাড়ি
- আত্রাই নদী
- চলনবিল জাদুঘর
- লুর্দের রানী মা মারিয়ার ধর্মপল্লী, বনপাড়া, নাটোর
- বোনী মারিয়াবাদ ধর্মপল্লী জোনাইল, বড়াইগ্রাম, নাটোর
- ঈশ্বরদী বাইপাস রেলওয়ে স্টেশন
- খাজুরা সাত রাজকন্যার বাড়ী
- নাটোর রেলওয়ে স্টেশন
- মিনি কক্সবাজার, পাটুল নাটোর
- নর্থ বেঙ্গল চিনি কল লিমিটেড
- বিলসা, মা জননী সেতু গুরুদাসপুর
- ইউ এন ও পার্ক বাগাতিপাড়া
- বড় বাঘা মসজিদ ও মাজার বাগাতিপাড়া
- চাপিলা শাহী মসজিদ গুরুদাসপুর
- কলম গ্রাম, [ [সিংড়া]]
- হুলহুলিয়া গ্রাম , সিংড়া
- জয়কালী বাড়ি মন্দির নাটোর
- মাধনগর রথ বাড়ি
- মাঝগ্রাম জংশন রেলওয়ে স্টেশন
সংস্কৃতিসম্পাদনা
মাদার গানসম্পাদনা
মাদার গান বাংলার লোকসংস্কৃতির এক অমূল্য সৃষ্টি। মাদার গানের মূল উপজীব্য হল শাহ মাদার নামক পীরের গুণগান। মাদার অনুসারীদের ধারণা, মাদার পীর একজন মারেফতি পীর। কথিত আছে, বেহেস্ত থেকে হারুত-মারুত নামক দুজন ফেরেস্তা পৃথিবীতে এসে এক সুন্দরী নারীর প্রেমে পতিত হন ও তাদের প্রেমের ফলেই জন্ম হয় মাদার পীরের; তবে বাস্তবে এ কাহিনীর ঐতিহাসিক অস্তিত্ব পাওয়া যায় নি।[৫] গ্রামাঞ্চলের মানুষেরা রোগ-শোক ও সকল প্রকার অমঙ্গল থেকে রক্ষা পাবার জন্য মাদার পীরের কাছে মাণ্যত করার জন্য যে অনুষ্ঠানের প্রচলন করে তা মাদার গান নামে পরিচিত হয়।[৬]
অন্যদিকে গবেষকরা মাদার পীরকে ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে অভিহিত করেন। ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, মাদার পীরের প্রকৃত নাম বদিউদ্দিন শাহ মাদার। তার অনুসারীদের মাদারিয়া বলা হয়। অঞ্চলভেদে মাদার পীর ‘শাহ মাদার’ বা ‘দম মাদার’ নামে অবিহিত হন।[৭]
মাদার গানের জারিতে মাদার পীরের প্রতীক হিসেবে একটি বাঁশ ব্যবহার করা হয়। প্রধান বয়াতি গান গাইতে গাইতে বাঁশঝাড়ে গিয়ে একটি ধারালো ছুড়ি দিয়ে এক কোপে একটি বাঁশ কাটেন। এরপর বাঁশটিকে নদীতে স্নান করিয়ে লাল কাঁপড় দিয়ে বেঁধে গৃহস্থ বাড়ীর নির্দিষ্ট আসনে উচু স্থানে স্থাপন করেন। বাঁশটিকে ভূমি স্পর্শ করতে দেয়া হয়না। লোকজন তাদের মনবাসনা পূরনের জন্য আসনে বসে প্রার্থনা করতে থাকেন। প্রার্থনা শেষে একটি খোলা স্থানে পাটি বিছিয়ে মাদার পীরের বন্দনা করে পালাগান শুরু করেন বয়াতি। গানের প্রধান চরিত্র মাদার পীর ও তার শিষ্য জুমল শাহ। এছাড়া থাকেন কয়েকজন দোহার-বায়েন। সবাই গোল হয়ে একটি পাটিতে বসেন যাদের চারপাশে ঘুরে ঘুরে মাদার পীর ও জুমল শাহ গান গাইতে থাকেন।[৮]
মেয়েরা চোখ ঝলসানো সাজগোজ করে। চুমকী বসানো শাড়ী, জরির ওড়না, মুখে-হাতে রং মেখে এরা নাচে অংশ নেয়। মাদারের পোশাক থাকে দরবেশের মতো। মাথায় তাজ, পরনে লম্বা আলখাল্লা, গলায় তসবি, আর হাতে থাকে একটি লাঠি। পা থাকে পাদুকাহীন, কখনও বা বেড়ি পড়ানো। জুমল শাহ ও অন্যান্য দোহার-বায়েনরা সাধারণ পোশাক ধুতিবস্ত্র পরিধান করে। হারমোনিয়াম, ঢোল, কাসর, মন্দিরা বাজিয়ে এরা গান ও অভিনয়ে অংশ নেয়।
মাদার গানের বেশ কয়েকটি পালাগান রয়েছে। এর মধ্যে মাদারের জন্ম খন্ড, কুলসুম বিবির পালা, মাদারের ওরসনামা, বড় পীরের পালা, জুমলের জন্মকাহিনী, হাশর-নাশর, খাকপত্তন পালা, মাদারের শেষ ফকিরি, বিবি গঞ্জরার পালা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। অনুষ্ঠানের শুরুতে মাদার পীরের বন্দনার পর দর্শকদের কিংবা বায়োজোষ্ঠ্যদের ইচ্চানুযায়ী যেকোন একটি পালা গাওয়া হয়, রাতভর চলতে থাকে অনুষ্ঠান।
বাংলা নাট্যসাহিত্যের ইতিহাসে মাদার গানের বিশেষ অবস্থান রয়েছে। বাংলা নাটকের যে নিজস্ব ধারা, মাদার গানের মধ্যে তা লক্ষ্য করা যায়। বাংলা নাটকের আঙ্গিক ও পরিবেশন রীতির সকল বৈশিষ্ট্য মাদার গানের ভেতর রয়েছে। মৌলিক আচার, কাহিনী, পোশাক ও মঞ্চব্যবস্থাপনার এক বিশেষ নিদর্শন এই মাদার গান।
- পদ্মপুরাণ বা মনসার গান ও ভাসান যাত্রা
- বিয়ের গীত
- বারোসা গান
- মুর্শিদী গান
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিসম্পাদনা
- এ এইচ এম কামারুজ্জামান
- আশরাফুল ইসলাম
- জুনাইদ আহমেদ পলক - রাজনীতিবিদ।
- ফরিদা পারভিন - লালন শিল্পী[৯]
- লতিফুল ইসলাম শিবলী - গীতিকার, সুরকার, সংগীত শিল্পী, নাট্যকার, কবি, লেখক
- আমজাদ খান চৌধুরী - ব্যবসায়ী, প্রধান নির্বাহী- প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ
- আবু হেনা রনি - একজন স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান , অভিনেতা, উপস্থাপক ও মডেল।[১০]
- সুলতানা ইয়াসমিন লায়লা - সঙ্গীত শিল্পী, ক্লোজআপ ওয়ান-২০১২ প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন [১১]
- মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ রায় - রাজনীতিবিদ ও সমাজ সংস্কারক; ব্রিটিশ ভারতে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনে তার অবদান ছিল।
- রাণী ভবাণী
- শংকর গোবিন্দ চৌধুরী(রাজনীতিবিদ)
- স্যার যদুনাথ সরকার - সাহিত্যিক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এর উপাচার্য ছিলেন।
- শরৎ কুমার রায়- বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর এর প্রতিষ্ঠাতা[১২][১৩][১৪][১৫]
- মাদার বখশ - রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এর স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্রষ্টা
- মোঃ মাকসুদুর রহমান - জিন রহস্য আবিষ্কারক;
- রাধাচরন চক্র্যবর্তী -সাহিত্যিক
- এয়ার ভাইস মার্শাল খাদেমুল বাশার, বীর উত্তম
- শফিউদ্দিন সরদার(ঐতিহাসিক ঔপন্যাসিক)। নাটোর সদর।
- প্রমথনাথ বিশী(১১ জুন ১৯০১-১০ মে ১৯৮৫) একজন লেখক, শিক্ষাবিদ ও অধ্যাপক।
- প্রফেসর আব্দুস ছাত্তার, ডিপার্টমেন্ট অব ওরিয়েন্টাল আর্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
- কার্তিক উদাস, বাউল(বাংলাদেশ বেতার), লেখক, শিক্ষক।
- অধ্যক্ষ এম. এ. হামিদ।
- তাইজুল ইসলাম (ক্রিকেটার, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল)।
- আলমগীর মহিউদ্দিন, সম্পাদক দৈনিক নয়া দিগন্ত।
- হানিফ উদ্দীন মিয়া (পরমানুবিদ), উপমহাদেশের প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার।
- প্রফেসর ড.সরকার সুজিত কুমার, অধ্যাপক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
- প্রফেসর এম আবদুস সোবহান, উপাচার্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
- এ্যাড. এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সাবেক উপমন্ত্রী
- মমতাজ উদ্দিন
- শেফালী মমতাজ
- নওশের আলী সরকার
- ফজলুর রহমান পটল
- সাইফুল ইসলাম (নাটোরের রাজনীতিবিদ)
- জাকির তালুকদার, বাংলা একাডেমী পুরস্কার প্রাপ্ত লেখক ও ঔপন্যাসিক।
বিনোদন খাতসম্পাদনা
- বিটিভি নাটোর সম্প্রচার উপকেন্দ্র (প্রতিষ্ঠা ১৯৭২), (সম্প্রচার শুরু ১৯৭৪)
পত্র পত্রিকাসম্পাদনা
- সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা
- দৈনিক প্রান্তজন
- দৈনিক জনদেশ
- দৈনিক উত্তর বঙ্গবার্তা
- নারদ বার্তা
চিত্রশালাসম্পাদনা
- Chalon Bil , Natore.jpg
চলনবিলে সূর্যোদয়
আরো দেখুনসম্পাদনা
- নাটোর সদর উপজেলা
- নাটোর সদর থানা
- রাণী ভবানী
- রাণী ভবানীর প্রাসাদ ও অন্যান্য স্মৃতিসৌধ
- উত্তরা গণভবন
- নাটোর সদর উপজেলা
- নাটোর-১
- নাটোর-২
- নাটোর-৩
- নাটোর-৪
- রাজাপুর বাজার
- সিংড়া নাটোর পরিবার
- দিঘাপতিয়া রাজ পরিবার
- দয়ারামপুর রাজ পরিবার
- নাটোরের কাঁচাগোল্লা
- চলন বিল
- নাটোর চিনি কল লিমিটেড
- শহীদ সাগর
- দিঘাপতিয়া এম. কে. কলেজ
- নাটোর সিটি কলেজ
- নাটোর মহিলা কলেজ
- মাদার গান
- সিংড়া চলনবিল মহিলা ডিগ্রি কলেজ
- রাণী ভবানী সরকারি মহিলা কলেজ
- নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরকারি কলেজ
- নাটোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে নাটোর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৪ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুন ২০১৪।
- ↑ নাটোর জেলার ওয়েবসাইটে "জেলার পটভূমি" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে শীর্ষক নিবন্ধ
- ↑ দৈনিক প্রথম আলো শহীদ সাগরের তীরে নিবন্ধ
- ↑ "জেলার পটভূমি"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ৫, ২০১৮।
- ↑ মাদার পীরের পাঁচালি[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "নাটোরের লোকজ-সংস্কৃতি"। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "মাদারের গান"। ২২ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ মাদার পীরের গান[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে নাটোরের শিল্পীরা[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], www.natore.gov.bd
- ↑ রংবেরং প্রতিবেদক। "মডেল হলেন আবু হেনা রনি"। দৈনিক কালের কণ্ঠ। ঢাকা। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ২৫, ২০১৫।
- ↑ "কেমন আছেন ক্লোজআপ ওয়ান তারকারা? | বিনোদন"। jugantor.com। ১২ জুলাই ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "কালের সাক্ষী রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘর"। ১৭ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর"। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ নাটোর জেলার কৃতি সন্তান ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ মে ২০১৩ তারিখে - শরৎকুমার রায়
- ↑ "শতবর্ষে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর"। prothom-alo.com। ২০১৭-০৭-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ অক্টোবর ২০১০।