মুর্শিদাবাদ
মুর্শিদাবাদ একটি বাংলা,বিহার, উড়িষ্যার প্রাক্তন রাজধানী। যার প্রতিষ্ঠাতা মুর্শিদকুলি খাঁ।এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলার একটি শহর ও পৌরসভা এলাকা।
মুর্শিদাবাদ | |
---|---|
শহর | |
মুর্শিদাবাদ | |
পশ্চিম বঙ্গে অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°১১′ উত্তর ৮৮°১৬′ পূর্ব / ২৪.১৮° উত্তর ৮৮.২৭° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিম বঙ্গ |
জেলা | মুর্শিদাবাদ |
প্রতিষ্ঠাতা | মুর্শিদকুলি খাঁ |
সরকার | |
• সংসদ সদস্য | আবু তাহের খান |
জনসংখ্যা (২০০১) | |
• মোট | ৫৮,৬৬,৫৬৯ |
ভাষা | |
• সরকারি | বাংলা[১][২] |
• অতিরিক্ত সরকারি ভাষা | ইংরেজি |
সময় অঞ্চল | IST (ইউটিসি+5:30) |
PIN | ৭৪২১৪৯ |
টেলিফোন কোড | 91-3482-2xxxxx |
যানবাহন নিবন্ধন | WB-58 |
অষ্টাদশ শতাব্দীর সময় মুর্শিদাবাদ একটি সমৃদ্ধ শহর ছিল।[৩][৪] সত্তর বছর ধরে এটি মুঘল সাম্রাজ্যের বঙ্গ সুবাহের রাজধানী ছিল, আধুনিক-আধুনিক বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও উড়িষ্যার রাজ্যগুলির আওতাধীন এই অঞ্চলটি ছিল। এটি ছিল বাংলার বংশগত নবাব এবং রাজ্যের কোষাগার, রাজস্ব অফিস এবং বিচার বিভাগের আসন। বাংলা ছিল সবচেয়ে ধনী মুঘল প্রদেশ। মুর্শিদাবাদ ছিল একটি বৈশ্বিক শহর। ১৭৫০ এর দশকে এর জনসংখ্যা ৭ লাখে পৌঁছেছে। এটি ছিল জগৎ শেঠ এবং আর্মেনীয়দের সহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল এবং বিস্তৃত ইউরেশিয়ার ধনী ব্যাংকিং এবং বণিক পরিবারগুলির বাড়ি।
ইতিহাস
সম্পাদনাএলাকাটি প্রাচীন বাংলায় গৌড় রাজ্য এবং বঙ্গ রাজ্যের অংশ ছিল ।
মুর্শিদাবাদের আগের নাম ছিল মুখসুসাবাদ, লোকে বলতো মুখসুদাবাদ। তারও আগে নাম ছিল সৈদাবাদ। আইন-ই-আকবরি-তে উল্লেখ আছে - মখসুস খাঁ নামে একজন ওমরাহ ছিলেন দিল্লীর বাদশা আকবরের অধীনে রাজমহলের ফৌজদার।[৫] তার ভাই সৈয়দ খাঁ ছিলেন আকবরের অধীনে বাংলার সুবাদার (১৫৮৭ - ১৫৯৫ সাল)। সুবাদার সৈয়দ খাঁর নাম থেকে সৈদাবাদ হয়েছিল। সয়েরউল-মুতাক্ষরীণ এ উল্লেখ আছে তারও আগে নাম ছিল কুলাডিয়া।
মখসুস খাঁ পর্তুগীজদের বাংলা থেকে তাড়ানোর জন্য সৈন্য নিয়ে আসেন। ষোলো শতকের শেষ দশকসমূহে বাংলা এবং বিহারে দায়িত্ব পালন করেন মখসুস খাঁ। তিনি একটি বিশ্রামাগার নির্মাণ করেন এবং দোকান দ্বারা একে ঘিরে রাখেন। স্থানটি তার নামানুসারে মুখসুসাবাদ বা মুখসুদাবাদ নামে পরিচিত হয়।
১৭০৪ সালে নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ রাজস্ব আদায় কেন্দ্র ঢাকা থেকে স্থানান্তরিত করেন মুখসুদাবাদে। তারপর দিল্লীর সম্রাট ঔরঙ্গজেবের অনুমতি পেয়ে নিজের নামে মুখসুদাবাদের নাম পরিবর্তন করে রাখেন মুর্শিদাবাদ।মুর্শিদাবাদ বাংলা,বিহার ও ওড়িষার রাজধানী ছিল। [৬]
ভৌগোলিক উপাত্ত
সম্পাদনাশহরটির অবস্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হল ২৪°১১′ উত্তর ৮৮°১৬′ পূর্ব / ২৪.১৮° উত্তর ৮৮.২৭° পূর্ব।[৭] সমুদ্র সমতল হতে এর গড় উচ্চতা হল ১২মিটার (৩৯ফুট)।
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনাভারতের ২০০১ সালের আদম শুমারি অনুসারে মুর্শিদাবাদ জেলার জনসংখ্যা হল ৫৮,৬৬,৫৬৯ জন।[৮] এর মধ্যে পুরুষ ৫১% এবং নারী ৪৯%।
এখানে সাক্ষরতার হার ৬৬%। পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৭১% এবং নারীদের মধ্যে এই হার ৬১%। সারা ভারতের সাক্ষরতার হার ৫৯.৫%, তার চাইতে মুর্শিদাবাদ এর সাক্ষরতার হার বেশি। এই শহরের জনসংখ্যার ১২% হল ৬ বছর বা তার কম বয়সী। হিন্দু ৩৮% মুসলিম ৬১% অন্যান্য ১%
যোগাযোগ
সম্পাদনাএই শহর ছুঁয়ে জাতীয় সড়ক ৩১২ গিয়েছে। শহরের মধ্যভাগ দিয়ে সিরাজ উদ দৌলা রোড জিয়াগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত।
মুর্শিদাবাদ রেলওয়ে স্টেশন-টি পূর্ব রেলওয়ের শিয়ালদাহ বিভাগের অন্তর্গত।
এখানে নিকটবর্তী কোনো বিমানবন্দর নেই।
আগ্রহের স্থান
সম্পাদনা- জাহানকোষা - আনুমানিক ১৭০৪-০৫ সালে নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ ঢাকা থেকে রাজধানী মুর্শিদাবাদে স্থানান্তরিত করবার সময় ওই কামানটি এখানে নিয়ে আসেন।
- কাটরা মসজিদ - এটি ১৭২৩ এবং ১৭২৪ সালের মধ্যে নির্মিত হয়। এখানে নওয়াব মুর্শিদকুলি খাঁ-এর সমাধি রয়েছে। এটি ভারতীয় উপমহাদেশের বৃহত্তম কাফেলা কেন্দ্রের একটি।
- নিজামত ইমামবাড়া - এটি 1740 খ্রিস্টাব্দে নবাব সিরাজউদ্দৌলা দ্বারা নির্মিত এবং 1842 এবং 1846 সালের অগ্নিকাণ্ডে এটি ধ্বংস হওয়ার পরে নবাব মনসুর আলী খান 1847 সালে পুনর্নির্মাণ করেন। এটি প্রায়শই এ পৃথিবীতে বৃহত্তম ইমামবাড়া হিসাবে উল্লেখ করা হয়।
- বাচ্চাওয়ালি তোপ - ১৮৪৬ সালে নিজামত ইমামবাড়ার অগ্নিকাণ্ডের পর ইমামবাড়াটি পুনর্নির্মাণ করা হয়, তারপর নতুন ইমামবাড়ার সমাপ্তির পর কামানটিকে বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত করা হয় তখন মুর্শিদাবাদে গভর্নর জেনারেলের এজেন্ট স্যার হেনরি টরেন্সের পরামর্শে পবিত্র নিজামত ইমামবাড়ার স্থপতি সাদেক আলী খান দ্বারা ।
- হাজার দুয়ারী রাজপ্রাসাদ - এটি ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলা , বিহার ও উড়িষ্যার নবাব দ্বিতীয় মুবারাক আলী খান (1824-1838) এর অধীনে স্থপতি ডানকান ম্যাক্লিওড দ্বারা নির্মিত হয়েছিল ।
- মুর্শিদাবাদের ক্লক টাওয়ার
- মদিনা মসজিদ (বঙ্গ)
- কাঠগোলা
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
সম্পাদনা- মুর্শিদকুলি খাঁ, মুর্শিদাবাদের নবাব ও প্রতিষ্ঠাতা।
- সিরাজদ্দৌলা,(১৭৩২-১৭৫৭) বাংলার নবাব
- রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(১৮২২-১৮৪৪) কাশিম বাজার রাজ
- রামদাস সেন (১৮৪৫-১৮৮৭) পুরাতত্ত্ব বিষয়ক রচনার লেখক।
- শরচ্চন্দ্র পণ্ডিত (১৮৮১-১৯৬৮) কথাশিল্পী ও সাংবাদিক।
- ক্ষিতীন্দ্রনাথ মজুমদার (১৮৯১-১৯৭৫) চিত্রশিল্পী।
- সরোজকুমার রায়চৌধুরী (১৯০১-১৯৭২) কথাসাহিত্যিক
- আব্দুল আলীম (সঙ্গীতশিল্পী) (১৯৩১-১৯৭৪) (গায়ক)
- অধীর রঞ্জন চৌধুরী (লোকসভার সদস্য, প্রাক্তন রেলওয়ে প্রতিমন্ত্রী, এবং বর্তমান লোকসভার প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা)
- আব্দুস সাত্তার (প্রাক্তন মন্ত্রী)
- মীর আফসার আলী (মীরাক্কেল খ্যাত অভিনেতা,সঞ্চালক, রেডিও জকি)
- শ্রেয়া ঘোষাল (গায়িকা )
- অরিজিৎ সিং (গায়ক)
- সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ (লেখক)
- আবুল বাশার (লেখক)
- মহাশ্বেতা দেবী (উপন্যাসিক)
- সৌমেন্দু লাহিড়ী (কবি ও গিটারিস্ট)
- বাবর আলী (পৃথিবীর সর্বকনিষ্ঠ প্রধান শিক্ষক)
- মোঃ আবু তাহের খান (মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের বর্তমান সাংসদ)
- হাসান আলী মির্জা (মুর্শিদাবাদের প্রথম নবাব বাহাদুর)
- ওয়াসিফ আলী মির্জা (মুর্শিদাবাদের দ্বিতীয় নবাব বাহাদুর)
- রাজা মনিন্দ্র চন্দ্র নন্দী (কাশিমবাজার রাজ)
. আল আমিন বিনন, (বর্তমান বাংলাদেশে অবস্থান)
চিত্রশালা
সম্পাদনা-
মতিঝিল প্রাসাদ
-
দরবারে নবাব আলীবর্দী খান
-
নদীতে নবাবদের নৌকা
-
ইমামবাড়া]]
-
মুর্শিদাবাদ ইমামবাড়া
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Fact and Figures"। Wb.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৯।
- ↑ "52nd REPORT OF THE COMMISSIONER FOR LINGUISTIC MINORITIES IN INDIA" (পিডিএফ)। Nclm.nic.in। Ministry of Minority Affairs। পৃষ্ঠা 85। ২৫ মে ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৯।
- ↑ Dalrymple, William (২০১৯-০৯-১০)। The Anarchy: The East India Company, Corporate Violence, and the Pillage of an Empire (ইংরেজি ভাষায়)। Bloomsbury USA। আইএসবিএন 978-1-63557-395-4।
- ↑ "Which India is claiming to have been colonised?"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৫-০৭-৩১। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-১৩।
- ↑ কে.এম মোহসীন (২০১২)। "মুর্শিদাবাদ"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ "মুর্শিদাবাদ নামকরণ"। ৪ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০২০।
- ↑ "Murshidabad"। Falling Rain Genomics, Inc। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ১৬, ২০১২।
- ↑ "ভারতের ২০০১ সালের আদম শুমারি"। Archived from the original on ১৬ জুন ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ১৬, ২০১২।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাপশ্চিমবঙ্গের অবস্থান বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |