কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়া জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। কুষ্টিয়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পৌরসভা, যার আয়তন ৬৬.০০ বর্গকিলোমিটার। কুষ্টিয়া মহানগর ১২০.২৩ বর্গকিমি (৪৬.৪২ বর্গমাইল) যা কুষ্টিয়াকে বাংলাদেশের এগারো-তম বৃহত্তম ও খুলনা বিভাগের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মর্যাদা দিয়েছে। কুষ্টিয়া (মুজিবনগর) বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাজধানী। ১৮৬৯ সালে কুষ্টিয়ায় একটি পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। হ্যামিলটন'স গেজেট প্রথম কুষ্টিয়া শহরের উল্লেখ পাওয়া যায়। লালনের মাজার ছাড়াও এ জেলার শিলাইদহে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি ও মীর মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটা। এ জেলাতে রয়েছে ইসলাম বিষয়ক বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। কুষ্টিয়া জেলাকে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী বলা হয়। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্পকলা একাডেমি কুষ্টিয়াতে অবস্থিত। শিল্প প্রতিষ্ঠানের দিক দিয়ে এ-জেলা দেশের খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কুষ্টিয়া শহর ছাড়াও এ জেলায় কুমারখালি ও ভেড়ামারা পৌরসভায় বিসিক শিল্প গড়ে ওঠেছে৷ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহত্তম তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র অবস্থিত। কুষ্টিয়া শহর হলো এ জেলার প্রশাসনিক সদর এবং প্রধান শহর। মুক্তিযুদ্ধের সূচনা এ জেলা থেকেই। নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার প্রথম জীবন ও কবিতার স্বর্নযুগ কুষ্টিয়ার শিলাইদহে কাটিয়েছিলেন। এ জেলার মানুষের কথ্য ভাষাকে বাংলাদেশের সবচেয়ে শুদ্ধ ভাষা অর্থাৎ বাংলাদেশে বাংলা ভাষার সবচেয়ে প্রমিত রূপ বলা হয়ে থাকে। [১]
কুষ্টিয়া | |
---|---|
মহানগর | |
ঘড়ির কাঁটার ক্রম অনুযায়ী: কুষ্টিয়া শহরের দিগন্তরেখা, পরিমল টাওয়ার, রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, লাভলি টাওয়ার, লালন শাহের মাজার | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | খুলনা বিভাগ |
জেলা | কুষ্টিয়া জেলা |
উপজেলা | কুষ্টিয়া সদর উপজেলা |
সরকার | |
• ধরন | পৌরসভা |
• শাসক | কুষ্টিয়া পৌরসভা |
আয়তন | |
• পৌর এলাকা | ৬৬.০০ বর্গকিমি (২৫.৪৮ বর্গমাইল) |
• মহানগর | ১২০.২৩ বর্গকিমি (৪৬.৪২ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১৮) | |
• পৌর এলাকা | ৫,৭৬,০০০ |
• পৌর এলাকার জনঘনত্ব | ৮,৭০০/বর্গকিমি (২৩,০০০/বর্গমাইল) |
• মহানগর | ৬,০০,০০০ |
• মহানগর জনঘনত্ব | ৫,০০০/বর্গকিমি (১৩,০০০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | বাংলাদেশ সময় (ইউটিসি+৬) |
Postal code | ৭০০০ |
ইতিহাসসম্পাদনা
১৮৬৯ সালে কুষ্টিয়ায় একটি পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। হ্যামিলটন'স গেজেট প্রথম কুষ্টিয়া শহরের কথা উল্লেখ করে। সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকালে এখানে একটি নদীবন্দর স্থাপিত হয়। যদিও ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এ বন্দর বেশি ব্যবহার করত, তবুও নীলচাষী ও নীলকরদের আগমনের পরেই নগরায়ন শুরু হয়। ১৮৬০ সালে কলকাতার (তৎকালীন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর রাজধানী)সাথে সরাসরি রেললাইন স্থাপিত হয়। একারণে এ অঞ্চল শিল্প-কারখানার জন্য আদর্শ স্থান বলে তখন বিবেচিত হয়েছিল। তৎকালীন সময়ে যজ্ঞেশ্বর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস(১৮৯৬), রেণউইক, যজ্ঞেশ্বর এণ্ড কোং (১৯০৪) এবং মোহিনী মিলস (১৯১৯) প্রতিষ্ঠিত হয়।
ভূগোলসম্পাদনা
কুষ্টিয়া রাজধানী ঢাকা থেকে পশ্চিমে, খূলনা থেকে উত্তরে এবং রাজশাহী থেকে দক্ষিণ-পূর্বে, ২৩º৪২΄ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২৩º৫৯΄ উত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত এবং ৮৮º৫৫΄ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ থেকে ৮৯º০৪΄ দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। এর মোট আয়তন ১৪.৪৯ বর্গকিলোমিটার।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
জনসংখ্যাসম্পাদনা
২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী কুষ্টিয়া নগরের মোট জনসংখ্যা সারে পাঁচ লক্ষাধিক।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
যোগাযোগসম্পাদনা
রাজধানী ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ার দুরত্ব ১৮০ কিলোমিটার, খুলনা থেকে ১৪৫ কিলোমিটার এবং রাজশাহী থেকে ১৩৭ কিলোমিটার।[২]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ "কুষ্টিয়া জেলা"। http (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-০৯।
- ↑ "কুষ্টিয়া থেকে সড়ক পথে অন্যান্য জেলার দুরত্ব"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-২৬।