চুয়াডাঙ্গা

বাংলাদেশের একটি শহর

চুয়াডাঙ্গা বাংলাদেশের পশ্চিমে অবস্থিত খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রধান শহর। এটি চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রশাসনিক এবং সবচেয়ে বড় শহর ও জনবহুল স্থান। ১৮৫৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম রেলওয়ে স্টেশন চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন এবং ১৭৭২ সালে বৃটিশ ভারতের ও বাংলাদেশের প্রথম ডাকঘর চুয়াডাঙ্গা ডাকঘর চুয়াডাঙ্গা শহরে স্থাপিত হয়। চুয়াডাঙ্গা শহরের সাথে সারা দেশের রেলপথে ও সড়ক পথে যোগাযোগ রয়েছে। চুয়াডাঙ্গা শহরের মোট আয়তন ৩৮ বর্গ কিলোমিটার এবং মোট জনসংখ্যা ৩,১০,০০০ জন, জনসংখ্যার ভিত্তিতে যা বাংলাদেশের ১৭ তম বৃহত্তম শহর[]

চুয়াডাঙ্গা
শহর
চুয়াডাঙ্গা
ঘড়ির কাঁটার ক্রম অনুযায়ী: চৌরাস্তার মোড়, চুয়াডাঙ্গা স্টেডিয়াম, হোটেল শাহীদ প্যালেস, চুয়াডাঙ্গা সদর থানা, চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন
চুয়াডাঙ্গা বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
চুয়াডাঙ্গা
চুয়াডাঙ্গা
বাংলাদেশে চুয়াডাঙ্গা শহরের অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৩°৩৮′৩৮″ উত্তর ৮৮°৫১′২০″ পূর্ব / ২৩.৬৪৩৯৯৯° উত্তর ৮৮.৮৫৫৬৩৭° পূর্ব / 23.643999; 88.855637
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগখুলনা বিভাগ
জেলাচুয়াডাঙ্গা জেলা
উপজেলাচুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা
সরকার
 • ধরনপৌরসভা
 • শাসকচুয়াডাঙ্গা পৌরসভা
 • পৌর মেয়রজাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন
আয়তন
 • পৌর এলাকা৩৮ বর্গকিমি (১৫ বর্গমাইল)
 • মহানগর৬৭ বর্গকিমি (২৬ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা
 • পৌর এলাকা৩,১০,০০০
 • মহানগর৩,৬৭,০০০
সময় অঞ্চলবাংলাদেশ সময় (ইউটিসি+৬)
ডাকঘর কোড৭২০০

ইতিহাস

সম্পাদনা

গ্রিক ঐতিহাসিকদের মতে এ এলাকাতেই বিখ্যাত গঙ্গারিডাই রাজ্য অবস্থিত ছিল। গাঙ্গেয় নামক একটি শহরও এ চুয়াডাঙ্গায় অবস্থিত ছিল বলে শোনা যায়। চুয়াডাঙ্গার নামকরণ সম্পর্কে কথিত আছে যে, এখানকার মল্লিক বংশের আদিপুরুষ চুঙ্গো মল্লিকের (ওরফে চুয়া মালিক) নামে এ জায়গার নাম চুয়াডাঙ্গা হয়েছে। ১৭৪০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে চুঙ্গো মল্লিক তার স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ভারতের নদীয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলার সীমানার ইটেবাড়ি-মহারাজপুর গ্রাম থেকে মাথাভাঙ্গা নদীপথে এখানে এসে প্রথম বসতি গড়েন। ১৭৯৭ সালের এক রেকর্ডে এ জায়গার নাম চুঙ্গোডাঙ্গা উল্লেখ রয়েছে। ফারসি থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করার সময় উচ্চারণের বিকৃতির কারণে বর্তমান চুয়াডাঙ্গা নামটা এসেছে। চুয়াডাঙ্গা নামকরণের আরও দুটি সম্ভাব্য কারণ প্রচলিত আছে। চুয়া < চয়া চুয়াডাঙ্গা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার নামকরণ সম্পর্কে আরেক জায়গায় কথিত আছে যে, এই অঞ্চল খুবই পরিষ্কার ছিল এক সময়ে। এই অঞ্চলের লোক পরিষ্কারকে বলতেন চুয়া এবং স্থানকে বলত ডাঙ্গা । অতএব, পরিষ্কারস্থান >চুয়াডাঙ্গা। তবে উপরের দুটি কারণ ই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য।

১৯৬০ সালে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা গঠিত হলে এর কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৭২ সালে।[]

প্রশাসন

সম্পাদনা

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা একজন মেয়র এবং ১২ জন কাউন্সিলর এবং ৩ জন মহিলা কাউন্সিলর দ্বারা গঠিত। প্রতিটি কাউন্সিলর শহরের একটি করে ওয়ার্ডের প্রতিনিধিত্ব করেন। তারা সবাই জনগণের ভোটে সরাসরি নির্বাচিত।

জনসংখ্যা

সম্পাদনা

২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গা শহরের মোট জনসংখ্যা ২২৮,৮৬৫ জন।[] যার মধ্যে ১১৪,৪২১ জন পুরুষ এবং ১১৪,৪৪৪ জন মহিলা। এ বিপুল পরিমাণ জনসংখ্যা ৩০,৯২৭টি খানায় বাস করে। ২০০১ সালের এর জনসংখ্যা ছিল ১১৩,৯২৮জন।[] জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১৮৬৭ জন লোক বসবাস করে। লিঙ্গ অনুপাত প্রতি ১০০০ জন পুরুষের বিপরীতে ১০০০ জন নারী রয়েছে এবং সাক্ষরতার হার ১০০% (৭ বছরের ঊর্ধ্বে)।[]যার কারণে এটি বাংলাদেশে প্রথম নিরক্ষরমুক্ত শহর ।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "23: Area, Household, Population and Literacy Rate of the Cities, 2011"। Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ৩: Urban Area Rport, 2011। ঢাকা: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। পৃষ্ঠা XI। ১১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  2. রাজীব আহমেদ (২০১২)। "চুয়াডাঙ্গা জেলা"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  3. "4.1.6 Chuadanga"। Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ৩: Urban Area Rport, 2011। ঢাকা: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। পৃষ্ঠা ৬৬। ১১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  4. "Bangladesh: Divisions and Urban Areas - Population Statistics, Maps, Charts, Weather and Web Information"www.citypopulation.de। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১৮