ইন্ডিয়াম

পারমাণবিক সংখ্যা ৪৯ বিশিষ্ট একটি মৌল

ইন্ডিয়াম একটি রাসায়নিক উপাদান, এর সংকেত In এবং পারমাণবিক সংখ্যা ৪৯। সবচেয়ে নরম ধাতু হল ইন্ডিয়াম যা ক্ষার ধাতু নয়। ইহা হল রূপালী-সাদা ধাতু যা টিনের মতো দেখতে। ইহা একটি সন্ধিগত শ্রেণি-পরবর্তী মৌল যা পৃথিবীর ভূত্বকের প্রতি মিলিয়নে ০.২১ ভাগ রয়েছে। ইন্ডিয়ামের গলনাঙ্ক সোডিয়াম এবং গ্যালিয়ামের চেয়ে বেশি কিন্তু লিথিয়াম এবং টিনের চেয়ে কম। রাসায়নিকভাবে ইন্ডিয়ামের অনুরূপ হল গ্যালিয়াম এবং থ্যালিয়াম,এবং এদের অনেক বৈশিষ্ট একইরকম । ১৮৬৩ সালে ফার্দিনান্দ রিচ এবং হিরনিমাস থিওডোর রিকটার স্পেকট্রোস্কোপিক পদ্ধতির দ্বারা ইন্ডিয়াম আবিস্কার করেছিলেন। এর বর্ণালীতে নীলাভ নীল রেখার জন্য তারা এটির নামকরন করেছিলেন।

৪৯ ক্যাডমিয়ামইন্ডিয়ামটিন
Ga

In

Tl
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
নাম, প্রতীক, পারমাণবিক সংখ্যা ইন্ডিয়াম, In, ৪৯
রাসায়নিক শ্রেণী poor metals
গ্রুপ, পর্যায়, ব্লক ১৩, , p
ভৌত রূপ রূপালী ধূসর
পারমাণবিক ভর 114.818(3) g/mol
ইলেক্ট্রন বিন্যাস [Kr] 4d10 5s2 5p1
প্রতি শক্তিস্তরে ইলেকট্রন সংখ্যা ২,৮,১৮,১৮,৩
ভৌত বৈশিষ্ট্য
দশা কঠিন
ঘনত্ব (সাধারণ তাপ ও চাপে) ৭.৩১ g/cm³
গলনাংকে তরল ঘনত্ব ৭.০২ গ্রাম/সেমি³
গলনাঙ্ক ৪২৯.৭৫ K
(১৫৬.৬ °C, ৩১৩.৮৮ °F)
স্ফুটনাঙ্ক ২৩৪৫ K
(২০৭২ °C, ৩৭৬২ °F)
গলনের লীন তাপ ৩.২৮১ kJ/mol
বাষ্পীভবনের লীন তাপ ২৩১.৮ kJ/mol
তাপধারণ ক্ষমতা (২৫ °সে) ২৬.৭৪ জুল/(মোল·কে)
বাষ্প চাপ
P/প্যাসকেল ১০ ১০০ ১ কে ১০ কে ১০০ কে
T/কেলভিন তাপমাত্রায় ১১৯৬ ১৩২৫ ১৪৮৫ ১৬৯০ ১৯৬২ ২৩৪০
পারমাণবিক বৈশিষ্ট্য
কেলাসীয় গঠন tetragonal
জারণ অবস্থা 3
(amphoteric oxide)
তড়িৎ ঋণাত্মকতা ১.৭৮ (পাউলিং স্কেল)
আয়নীকরণ শক্তি
(বিস্তারিত)
প্রথম: ৫৫৮.৪ কিলোজুল/মোল
দ্বিতীয়: 1820.7 কিলোজুল/মোল
তৃতীয়: 2704 কিলোজুল/মোল
পারমাণবিক ব্যাসার্ধ 155 pm
Atomic radius (calc.) 156 pm
Covalent radius 144 pm
Van der Waals radius 193 pm
অন্যান্য বৈশিষ্ট্য
Magnetic ordering no data
Electrical resistivity (20 °C) 83.7 nΩ·m
তাপ পরিবাহিতা (300 K) 81.8 W/(m·K)
Thermal expansion (25 °C) 32.1 µm/(m·K)
Speed of sound (thin rod) (20 °C) 1215 m/s
ইয়ং এর গুণাঙ্ক 11 GPa
Mohs hardness 1.2
Brinell hardness 8.83 MPa
সি এ এস নিবন্ধন সংখ্যা 7440-74-6
কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সমস্থানিক
প্রধান নিবন্ধ: indiumের সমস্থানিক
iso NA half-life DM DE (MeV) DP
113In 4.3% In 64টি নিউট্রন নিয়ে স্থিত হয়
115In 95.7% 4.41×1014y Beta- 0.495 115Sn
References
ইন্ডিয়ামের দৃশ্যমান বর্ণালী

ইন্ডিয়াম

ইন্ডিয়াম জিঙ্ক সালফাইড আকরিকের ক্ষুদ্র উপাদান এবং দস্তা পরিশোধনের উপাদান হিসেবে উৎপাদন করা হয়। ইহা সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় সেমিকন্ডাকটর শিল্পে ,নিম্ন গলনাঙ্ক সংকর ধাতুর মধ্যে যেমন ঝালাই করার রাং,কাচের উপর ইন্ডিয়াম টিন অক্সাইডের স্বচ্ছ আবরণ তৈরি করতে।ইন্ডিয়ামকে প্রযুক্তিগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

ইন্ডিয়ামের কোনো জৈবিক ভূমিকা নেই। রক্তপ্রবাহে ইনজেকশনের জন্য এর যৌগগুলি বিষাক্ত। বেশিরভাগ পেশাগত প্রকাশ আহার যেখানে ইন্ডিয়ামের যৌগগুলি ভালভাবে শোষিত বয় না এবং শ্বসন, যেখানে তারা পরিমিতভাবে শোষিত হয়।

ইন্ডিয়াম হল রূপালি-সাদা ধাতু ,খুব প্রসারণীয় সন্ধিগত শ্রেনী পরবর্তী মৌল সঙ্গে উজ্জ্বল চাকচিক্য। ইহা সোডিযামের মতো নরম, এটি ছুরি দিয়ে কাটা যায়।ইহা পেপারের উপর দৃশ্যমান রেখা ছেড়ে দেয়।এটি পর্যায় সারণীতে ১৩তম গ্রুপের সদস্য এবং এর বৈশিষ্ট্যগুলি বেশিরভাগই উল্লম্বভাবে অবস্হান করা গ্যালিয়াম এবং থ্যালিয়াম মধ্যবর্তী।

শ্রেণি   ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
হাইড্রো­জেন ও
ক্ষার ধাতু
মৃৎক্ষার
ধাতু
বোরন
শ্রেণি
বোরন
শ্রেণি
নিক্টো­জেন চ্যাল­কোজেন হ্যালো­জেন নিষ্ক্রিয়
গ্যাস
পর্যায়

হাইড্রো­জেনH১.০০৮০ হি­লিয়ামHe৪.০০২৬
লি­থিয়ামLi৬.৯৪ বেরি­লিয়ামBe৯.০১২২ বোরনB১০.৮১ কার্বনC১২.০১১ নাইট্রো­জেনN১৪.০০৭ অক্সি­জেনO১৫.৯৯৯ ফ্লোরিনF১৮.৯৯৮ নিয়ন১০Ne২০.১৮০
সো­ডিয়াম১১Na২২.৯৯০ ম্যাগনে­সিয়াম১২Mg২৪.৩০৫ অ্যালুমি­নিয়াম১৩Al২৬.৯৮২ সিলি­কন১৪Si২৮.০৮৫ ফস­ফরাস১৫P৩০.৯৭৪ গন্ধক১৬S৩২.০৬ ক্লোরিন১৭Cl৩৫.৪৫ আর্গন১৮Ar৩৯.৯৫
পটা­শিয়াম১৯K৩৯.০৯৮ ক্যাল­সিয়াম২০Ca৪০.০৭৮ স্ক্যান­ডিয়াম২১Sc৪৪.৯৫৬ টাইটা­নিয়াম২২Ti৪৭.৮৬৭ ভ্যানা­ডিয়াম২৩V৫০.৯৪২ ক্রো­মিয়াম২৪Cr৫১.৯৯৬ ম্যাঙ্গা­নিজ২৫Mn৫৪.৯৩৮ লোহা২৬Fe৫৫.৮৪৫ কোবাল্ট২৭Co৫৮.৯৩৩ নিকেল২৮Ni৫৮.৬৯৩ তামা২৯Cu৬৩.৫৪৬ জিংক৩০Zn৬৫.৩৮ গ্যা­লিয়াম৩১Ga৬৯.৭২৩ জার্মে­নিয়াম৩২Ge৭২.৬৩০ আর্সে­নিক৩৩As৭৪.৯২২ সেলে­নিয়াম৩৪Se৭৮.৯৭১ ব্রোমিন৩৫Br৭৯.৯০৪ ক্রিপ্টন৩৬Kr৮৩.৭৯৮
রুবি­ডিয়াম৩৭Rb৮৫.৪৬৮ স্ট্রন­শিয়াম৩৮Sr৮৭.৬২ ই­ট্রিয়াম৩৯Y৮৮.৯০৬ জিরকো­নিয়াম৪০Zr৯১.২২৪ নাইও­বিয়াম৪১Nb৯২.৯০৬ মলিব­ডেনাম৪২Mo৯৫.৯৫ টেকনে­শিয়াম৪৩Tc​[৯৭] রুথি­নিয়াম৪৪Ru১০১.০৭ রো­ডিয়াম৪৫Rh১০২.৯১ প্যালে­ডিয়াম৪৬Pd১০৬.৪২ রূপা৪৭Ag১০৭.৮৭ ক্যাড­মিয়াম৪৮Cd১১২.৪১ ইন্ডিয়াম৪৯In১১৪.৮২ টিন৫০Sn১১৮.৭১ অ্যান্টিমনি৫১Sb১২১.৭৬ টেলু­রিয়াম৫২Te১২৭.৬০ আয়োডিন৫৩I১২৬.৯০ জেনন৫৪Xe১৩১.২৯
সি­জিয়াম৫৫Cs১৩২.৯১ বেরিয়াম৫৬Ba১৩৭.৩৩ 1 asterisk লুটি­শিয়াম৭১Lu১৭৪.৯৭ হ্যাফ­নিয়াম৭২Hf১৭৮.৪৯ ট্যান­টালাম৭৩Ta১৮০.৯৫ টাংস্টেন৭৪W১৮৩.৮৪ রিনিয়াম৭৫Re১৮৬.২১ অস­মিয়াম৭৬Os১৯০.২৩ ইরি­ডিয়াম৭৭Ir১৯২.২২ প্লাটিনাম৭৮Pt১৯৫.০৮ সোনা৭৯Au১৯৬.৯৭ পারদ৮০Hg২০০.৫৯ থ্যালিয়াম৮১Tl২০৪.৩৮ সীসা৮২Pb২০৭.২ বিসমাথ৮৩Bi২০৮.৯৮ পোলো­নিয়াম৮৪Po​[২০৯] এস্টাটিন৮৫At​[২১০] রেডন৮৬Rn​[২২২]
ফ্র্যান্সি­য়াম৮৭Fr​[২২৩] রেডিয়াম৮৮Ra​[২২৬] 1 asterisk লরেন­সিয়াম১০৩Lr​[২৬৬] রাদার­ফোর্ডিয়াম১০৪Rf​[২৬৭] ডুব­নিয়াম১০৫Db​[২৬৮] সিব­র্গিয়াম১০৬Sg​[২৬৯] বোহ­রিয়াম১০৭Bh​[২৭০] হ্যাসিয়াম১০৮Hs​[২৬৯] মাইট­নেরিয়াম১০৯Mt​[২৭৮] ডার্মস্টা­টিয়াম১১০Ds​[২৮১] রন্টজে­নিয়াম১১১Rg​[২৮২] কোপার্নি­সিয়াম১১২Cn​[২৮৫] নিহো­নিয়াম১১৩Nh​[২৮৬] ফ্লেরো­ভিয়াম১১৪Fl​[২৮৯] মস্কো­ভিয়াম১১৫Mc​[২৯০] লিভার­মোরিয়াম১১৬Lv​[২৯৩] টেনে­সাইন১১৭Ts​[২৯৪] ওগা­নেসন১১৮Og​[২৯৪]
1 asterisk ল্যান্থানাম৫৭La১৩৮.৯১ সিরিয়াম৫৮Ce১৪০.১২ প্রাসিও­ডিমিয়াম৫৯Pr১৪০.৯১ নিও­ডিমিয়াম৬০Nd১৪৪.২৪ প্রমি­থিয়াম৬১Pm​[১৪৫] সামে­রিয়াম৬২Sm১৫০.৩৬ ইউরো­পিয়াম৬৩Eu১৫১.৯৬ গ্যাডালি­নিয়াম৬৪Gd১৫৭.২৫ টারবিয়াম৬৫Tb১৫৮.৯৩ ডিসপ্রো­সিয়াম৬৬Dy১৬২.৫০ হোল­মিয়াম৬৭Ho১৬৪.৯৩ আর­বিয়াম৬৮Er১৬৭.২৬ থুলিয়াম৬৯Tm১৬৮.৯৩ ইটার­বিয়াম৭০Yb১৭৩.০৫  
1 asterisk অ্যাক্টি­নিয়াম৮৯Ac​[২২৭] থোরিয়াম৯০Th২৩২.০৪ প্রোটেক্টি­নিয়াম৯১Pa২৩১.০৪ ইউরে­নিয়াম৯২U২৩৮.০৩ নেপচু­নিয়াম৯৩Np​[২৩৭] প্লুটো­নিয়াম৯৪Pu​[২৪৪] আমেরি­সিয়াম৯৫Am​[২৪৩] কুরিয়াম৯৬Cm​[২৪৭] বার্কি­লিয়াম৯৭Bk​[২৪৭] ক্যালি­ফোর্নিয়াম৯৮Cf​[২৫১] আইনস্টা­ইনিয়াম৯৯Es​[২৫২] ফার্মিয়াম১০০Fm​[২৫৭] মেন্ডেলে­ভিয়াম১০১Md​[২৫৮] নোবে­লিয়াম১০২No​[২৫৯]

আদিম ক্ষয় থেকে সিন্থেটিকসীমানা মৌলটির প্রাকৃতিক উপস্থিতি দেখায়

মানক পারমাণবিক ভর Ar, std(E)[]
  • Ca: ৪০.০৭৮ — সংক্ষিপ্ত মান (অনিশ্চয়তা এখানে বাদ দেওয়া হয়েছে)[]
  • Po: [২০৯] — সবচেয়ে স্থিতিশীল আইসোটোপের ভর সংখ্যা
এস-ব্লক এফ-ব্লক ডি-ব্লক পি-ব্লক



ইতিহাস

সম্পাদনা

১৮৬৩ সালে, জার্মান রসায়নবিদ ফার্দিনান্দ রাইখ এবং হায়ারোনিমাস থিওডোর রিখটার ফ্রেইবার্গ, স্যাক্সনির আশেপাশের খনি থেকে আকরিক পরীক্ষা করছিলেন। তারা পাইরাইট, আর্সেনোপাইরাইট, গ্যালেনা এবং স্ফালিরাইট খনিজগুলিকে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডে দ্রবীভূত করেন এবং জিঙ্ক ক্লোরাইড পাতিত করেন। রাইখ , যিনি বর্ণান্ধ ছিলেন, রঙিন বর্ণালী রেখাগুলি সনাক্ত করার জন্য রিখটারকে সহকারী হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন। ওই অঞ্চলের আকরিকগুলিতে মাঝে মাঝে থ্যালিয়াম পাওয়া যায় জেনে, তারা সবুজ থ্যালিয়াম নির্গমন বর্ণালী রেখার অনুসন্ধান করছিলেন। পরিবর্তে, তারা একটি উজ্জ্বল নীল রেখা খুঁজে পান। নীল রেখাটি কোনো পরিচিত উপাদানের সাথে না মেলায় তারা অনুমান করেন যে তাদের পাওয়া খনিজগুলিতে কোনো নতুন উপাদান উপস্থিত আছে। লাতিন indicum নামানুসারে, এর বর্ণালীতে দেখা নীল রঙ থেকে তারা উপাদানটির নামকরণ করেন ইন্ডিয়াম, যার অর্থ ' ভারতের '। [] [] [] []

রিখটার ১৮৬৪ সালে ধাতুটিকে আলাদাভাবে বিচ্ছিন্ন করতে পেরেছিলেন ।[]

উৎপাদন এবং প্রাপ্যতা

সম্পাদনা
 
বিশ্বে ইন্ডিয়ামের উৎপাদন প্রবণতা

অন্যান্য ধাতুর আকরিক প্রক্রিয়াকরণের সময় ইন্ডিয়াম উপজাত হিসাবে উৎপাদিত হয়। এর প্রধান উৎস হল সালফিডিক দস্তা আকরিক, যেখানে এটি বেশিরভাগ স্ফ্যালেরাইট এতে পাওয়া যায়। [] সালফিডিক কপার আকরিক থেকেও সামান্য পরিমাণ ইন্ডিয়াম পাওয়া যায়। জিংক গলানোর রোস্ট-লিচ-ইলেক্ট্রোভাইনিং প্রক্রিয়া চলাকালীন, ইন্ডিয়াম আয়রন সমৃদ্ধ অবশিষ্টাংশে জমা হয়। এগুলো থেকে বিভিন্ন উপায়ে নিষ্কাশন করা যায়। ইলেক্ট্রোলাইসিস দ্বারা আরও পরিশোধন করা হয়। [] নির্দিষ্ট প্রক্রিয়াটি স্মেল্টারের অপারেশন মোডের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। [১০] []

এটি উপজাত উপাদান হওয়ায় প্রতি বছর যে পরিমাণ সালফিডিক জিঙ্ক (এবং তামা) আকরিক নিষ্কাশন করা হয় তার দ্বারা ইন্ডিয়াম উৎপাদন সীমাবদ্ধ। অতএব, সরবরাহ সম্ভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে এর প্রাপ্যতা নিয়ে আলোচনা করা দরকার। একটি উপ-পণ্যের সরবরাহ সম্ভাবনাকে সেই পরিমাণ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় যা বর্তমান বাজারের অবস্থার (যেমন প্রযুক্তি এবং মূল্য) অধীনে প্রতি বছর তার হোস্ট উপকরণ থেকে অর্থনৈতিকভাবে নিষ্কাশনযোগ্য। [১১] সংস্থানগুলি উপজাত পণ্যর জন্য প্রাসঙ্গিক নয়, কারণ এগুলি প্রধান-পণ্য থেকে স্বাধীনভাবে বের করা যায় না[] সাম্প্রতিক অনুমান সালফিডিক জিংক আকরিক থেকে সর্বনিম্ন ১,৩০০ টন/বছর এবং সালফিডিক কপার আকরিক থেকে ২০ টন/বছর ইন্ডিয়ামের সরবরাহের সম্ভাবনা রাখে৷ []

২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী চীন সর্বাধিক ইন্ডিয়াম উৎপাদনকারী ( ২৯০ টন), তারপরে দক্ষিণ কোরিয়া (১৯৫ টন), জাপান (৭০ টন) এবং কানাডা (৬৫ টন)। [১২] কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ট্রেইলে টেক রিসোর্সেস শোধনাগার হল একটি বৃহৎ একক-উৎস ইন্ডিয়াম উৎপাদক।

বিশ্বব্যাপী ইন্ডিয়ামের প্রাথমিক ব্যবহার হল এলসিডি উৎপাদন। ১৯৯০ এর দশকের শেষ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত এলসিডি কম্পিউটার মনিটর এবং টেলিভিশন সেটের জনপ্রিয়তার সাথে চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পায়, যা এখন ৫০% ইন্ডিয়াম ব্যবহারের জন্য দায়ী। [১৩] বর্ধিত উৎপাদন দক্ষতা এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্যতা (বিশেষ করে জাপানে) চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে। UNEP এর মতে, ইন্ডিয়ামের শেষ-জীবনের-পুনর্ব্যবহারযোগ্য হার ১% এর কম। [১৪]

বাস্তবে প্রয়োগ

সম্পাদনা
 
RGB পিক্সেল দেখানো একটি LCD স্ক্রিনের একটি বিবর্ধিত চিত্র। স্বতন্ত্র ট্রানজিস্টরগুলি নীচের অংশে সাদা বিন্দু হিসাবে দেখা যাচ্ছে।

১৯২৪ সালে, ইন্ডিয়ামে অ লৌহঘটিত ধাতুকে স্থিতিশীল করার একটি মূল্যবান বৈশিষ্ট আছে জানা যায়, এবং এটি উপাদানটির প্রথম উল্লেখযোগ্য বাস্তব ব্যবহার হয়ে ওঠে। [১৫] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালে ইন্ডিয়ামের প্রথম বৃহৎ আকারের ব্যবহার ছিল ক্ষয় থেকে রক্ষা করার জন্য উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন বিমানের ইঞ্জিনে বিয়ারিং লেপন; ইহা বর্তমানে উপাদানটির উল্লেখযোগ্য ব্যবহার নয়। [] ফিউসিবল অ্যালয়, সোল্ডার এবং ইলেকট্রনিক্সে নতুন নতুন ব্যবহার পাওয়া গেছে। ১৯৫০এর দশকে, পিএনপি অ্যালয়-জাংশন ট্রানজিস্টরের নির্গমনকারী এবং সংগ্রাহকের জন্য ইন্ডিয়ামের ক্ষুদ্র পুঁতি ব্যবহার করা হতো। ১৯৮০র দশকের মাঝামাঝি এবং শেষের দিকে, লিকুইড-ক্রিস্টাল ডিসপ্লে (এলসিডি) এর জন্য ইন্ডিয়াম ফসফাইড সেমিকন্ডাক্টর এবং ইন্ডিয়াম টিন অক্সাইড পাতলা ফিল্মগুলির বিকাশ প্রযুক্তিক্ষেত্রে আগ্রহের বিষয় হয়ে ওঠে। ১৯৯২ সাল নাগাদ, থিন-ফিল্ম অ্যাপ্লিকেশন সবচেয়ে বড় অন্তিম ব্যবহারে পরিণত হয়েছিল। [১৬] [১৭]

ইন্ডিয়াম(III)অক্সাইড এবং ইন্ডিয়াম টিন অক্সাইড (ITO) ইলেক্ট্রোলুমিনেসেন্ট প্যানেলে কাচের স্তরে স্বচ্ছ পরিবাহী আবরণ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। [১৮] ইন্ডিয়াম টিন অক্সাইড নিম্নচাপের সোডিয়াম-বাষ্প ল্যাম্পে আলোর ফিল্টার হিসাবে ব্যবহার হয় অবলোহিত বিকিরণ ল্যাম্পের মধ্যে প্রতিফলিত হয় যা এর ভিতরে তাপমাত্রা বাড়ায় এবং বাতির কর্মক্ষমতা উন্নত করে। [১৭]

ইন্ডিয়ামের অনেক সেমিকন্ডাক্টর -সম্পর্কিত প্রয়োগ রয়েছে। কিছু ইন্ডিয়াম যৌগ, যেমন ইন্ডিয়াম অ্যান্টিমোনাইড এবং ইন্ডিয়াম ফসফাইড, [১৯] হলো উপকারী বৈশিষ্ট্য সহ অর্ধপরিবাহী : একটি অগ্রদূত হল সাধারণত ট্রাইমেথিলিন্ডিয়াম (TMI), যা II-VI যৌগিক অর্ধপরিবাহীতে সেমিকন্ডাক্টর ডোপ্যান্ট হিসাবেও ব্যবহৃত হয়। [২০] কম-তাপমাত্রার ট্রানজিস্টরের জন্য InAs ও InSb এবং উচ্চ-তাপমাত্রার ট্রানজিস্টরের জন্য InP ব্যবহার করা হয়। [] যৌগিক অর্ধপরিবাহী InGaN এবং InGaP আলোক নিঃসারী ডায়োড (LED) এবং লেজার ডায়োডে ব্যবহৃত হয়। [২১] ফোটোভোলটাইক্সে ইন্ডিয়াম ব্যবহৃত হয় সেমিকন্ডাক্টর কপার ইন্ডিয়াম গ্যালিয়াম সেলেনাইড (সিআইজিএস) হিসেবে যাকে সিআইজিএস সোলার সেলও বলা হয়, এক ধরনের দ্বিতীয় প্রজন্মের পাতলা-ফিল্ম সোলার সেল । [২২] জার্মেনিয়ামের সাথে PNP বাইপোলার জংশন ট্রানজিস্টরে ইন্ডিয়াম ব্যবহার করা হয়: কম তাপমাত্রায় সোল্ডার করা হলে, ইন্ডিয়াম জার্মেনিয়ামকে চাপ দেয় না। []

 
নমনীয় ইন্ডিয়াম তার
ইন্ডিয়াম ফুসফুসের বিষয়ে একটি ভিডিও

ইন্ডিয়াম ভ্যাকুয়াম সীল এবং তাপ পরিবাহী হিসাবে ক্রায়োজেনিক্স এবং অতি-উচ্চ-ভ্যাকুয়াম অ্যাপ্লিকেশনে, গ্যাসকেটের মতো উৎপাদন অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে ব্যবহৃত হয়। [২৩] এর নমনীয়তা এবং একাধিক এবং ধাতুর সাথে আনুগত্যের কারণে কখনও কখনও মাইক্রোওয়েভ সার্কিট এবং ওয়েভগাইড জয়েন্টগুলিতে কোল্ড-সোল্ডারিংয়ের জন্য ইন্ডিয়াম শীট ব্যবহার করা হয়, যেখানে সরাসরি সোল্ডারিং সমস্যবহুল। ইন্ডিয়াম হল গ্যালিয়াম-ইন্ডিয়াম-টিন অ্যালয় গ্যালিনস্টানের একটি উপাদান, যা ঘরের তাপমাত্রায় তরল এবং কিছু থার্মোমিটারে পারদের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়। [২৪] বিসমাথ, ক্যাডমিয়াম, সীসা, এবং টিনের সাথে ইন্ডিয়ামের অন্যান্য সংকর, যার গলনাঙ্ক উচ্চতর কিন্তু তুলনামূলক ভাবে কম (৫০ থেকে ১০০ °C এর মধ্যে), ফায়ার স্প্রিংকলার সিস্টেম এবং তাপ নিয়ন্ত্রকগুলিতে ব্যবহৃত হয়। []

ক্ষারীয় ব্যাটারিতে পারদের অনেকগুলি বিকল্পের মধ্যে ইন্ডিয়াম অন্যতম , এটি জিঙ্ককে ক্ষয় ও হাইড্রোজেন গ্যাস নির্গত করা থেকে রোধ করার জন্য গুরুত্বপুর্ণ। [২৫] পারদের উপরিভাগের টান কমাতে এবং সহজে একত্রিতকরণের জন্য কিছু ডেন্টাল অ্যামালগাম অ্যালয়তে ইন্ডিয়াম যোগ করা হয়। [২৬]

তাপীয় নিউট্রনগুলির জন্য ইন্ডিয়ামের উচ্চ নিউট্রন-ক্যাপচার ক্রস-সেকশন একে পারমাণবিক চুল্লিগুলির জন্য নিয়ন্ত্রণ রডগুলিতে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত করে তোলে, সাধারণত ৮০% রূপা, ১৫% ইন্ডিয়াম এবং ৫% ক্যাডমিয়ামের সংকর ধাতুতে। [২৭] পারমাণবিক প্রকৌশলে, ১১৩ In এবং ১১৫ In এর (n,n') বিক্রিয়াগুলি নিউট্রন প্রবাহের মাত্রা নির্ণয় করতে ব্যবহৃত হয়। [২৮]

২০০৯ সালে, ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মাস সুব্রাহ্মণিয়ান এবং প্রাক্তন স্নাতক ছাত্র অ্যান্ড্রু স্মিথ আবিষ্কার করেন যে ইট্রিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজের সাথে ইন্ডিয়ামকে একত্রিত করে একটি তীব্র নীল, অ-বিষাক্ত, নিষ্ক্রিয়, বিবর্ণ-প্রতিরোধী রঙ্গক তৈরি করা যেতে পারে, যার নাম YInMn নীল । এটি গত ২০০ বছরে আবিষ্কৃত প্রথম অজৈব নীল রঙ্গক। [২৯]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. মেইজা, জুরিস; ও অন্যান্য (২০১৬)। "Atomic weights of the elements 2013 (IUPAC Technical Report)" [মৌলের পারমাণবিক ওজন ২০১৩ (আইইউপিএসি প্রযুক্তিগত প্রতিবেদন)]। পিওর অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি (ইংরেজি ভাষায়)। ৮৮ (৩): ২৬৫–৯১। ডিওআই:10.1515/pac-2015-0305  
  2. Prohaska, Thomas; Irrgeher, Johanna; Benefield, Jacqueline; Böhlke, John K.; Chesson, Lesley A.; Coplen, Tyler B.; Ding, Tiping; Dunn, Philip J. H.; Gröning, Manfred; Holden, Norman E.; Meijer, Harro A. J. (২০২২-০৫-০৪)। "Standard atomic weights of the elements 2021 (IUPAC Technical Report)"Pure and Applied Chemistry (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 1365-3075ডিওআই:10.1515/pac-2019-0603 
  3. Reich, F.; Richter, T. (১৮৬৩)। "Ueber das Indium" (জার্মান ভাষায়): 172–176। ডিওআই:10.1002/prac.18630900122। ২০২০-০২-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-৩০ 
  4. Venetskii, S. (১৯৭১)। "Indium": 148–150। ডিওআই:10.1007/BF01088126 
  5. Greenwood and Earnshaw, p. 244
  6. Weeks, Mary Elvira (১৯৩২)। "The Discovery of the Elements: XIII. Some Spectroscopic Studies": 1413–1434। ডিওআই:10.1021/ed009p1413 
  7. Reich, F.; Richter, T. (১৮৬৪)। "Ueber das Indium" (জার্মান ভাষায়): 480–485। ডিওআই:10.1002/prac.18640920180 
  8. Frenzel, Max; Mikolajczak, Claire (জুন ২০১৭)। "Quantifying the relative availability of high-tech by-product metals – The cases of gallium, germanium and indium": 327–335। ডিওআই:10.1016/j.resourpol.2017.04.008  
  9. Greenwood and Earnshaw, p. 247
  10. Alfantazi, A. M.; Moskalyk, R. R. (২০০৩)। "Processing of indium: a review": 687–694। ডিওআই:10.1016/S0892-6875(03)00168-7 
  11. Frenzel, Max; Tolosana-Delgado, Raimon (ডিসেম্বর ২০১৫)। "Assessing the supply potential of high-tech metals – A general method": 45–58। ডিওআই:10.1016/j.resourpol.2015.08.002 
  12. Indium - in: USGS Mineral Commodity Summaries (পিডিএফ)। United States Geological Survey। ২০১৭। ২০১৯-০১-১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৬-০২ 
  13. "Indium Price Supported by LCD Demand and New Uses for the Metal"Geology.com। ২০০৭-১২-২১ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-২৬ 
  14. "USGS Mineral Commodity Summaries 2011" (পিডিএফ)। USGS and USDI। জানুয়ারি ১১, ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ২, ২০১১ 
  15. French, Sidney J. (১৯৩৪)। "A story of indium": 270। ডিওআই:10.1021/ed011p270 
  16. Tolcin, Amy C.। "Mineral Yearbook 2007: Indium" (পিডিএফ)। United States Geological Survey। ২০১৬-১২-৩১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১২-০৩ 
  17. Downs, Anthony John (১৯৯৩)। Chemistry of Aluminium, Gallium, Indium, and Thallium। Springer। পৃষ্ঠা 89 and 106। আইএসবিএন 978-0-7514-0103-5 
  18. "The Electroluminescent Light Sabre"Nanotechnology News Archive। Azonano। জুন ২, ২০০৫। অক্টোবর ১২, ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-২৯ 
  19. Bachmann, K. J. (১৯৮১)। "Properties, Preparation, and Device Applications of Indium Phosphide": 441–484। ডিওআই:10.1146/annurev.ms.11.080181.002301 
  20. Shenai, Deodatta V.; Timmons, Michael L. (২০০৪)। "Correlation of film properties and reduced impurity concentrations in sources for III/V-MOVPE using high-purity trimethylindium and tertiarybutylphosphine": 603–608। ডিওআই:10.1016/j.jcrysgro.2004.09.006 
  21. Schubert, E. Fred (২০০৩)। Light-Emitting Diodes। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 16। আইএসবিএন 978-0-521-53351-5 
  22. Powalla, M.; Dimmler, B. (২০০০)। "Scaling up issues of CIGS solar cells": 540–546। ডিওআই:10.1016/S0040-6090(99)00849-4 
  23. Vacuum physics and technology। Acad. Press। ১৯৯০। পৃষ্ঠা 296। আইএসবিএন 978-0-12-475914-5 
  24. Surmann, P; Zeyat, H (নভে ২০০৫)। "Voltammetric analysis using a self-renewable non-mercury electrode": 1009–13। ডিওআই:10.1007/s00216-005-0069-7পিএমআইডি 16228199 
  25. Geological Survey (U.S.) (২০১০)। Minerals Yearbook, 2008, V. 1, Metals and Minerals। Government Printing Office। পৃষ্ঠা 35–2। আইএসবিএন 978-1-4113-3015-3 
  26. Powell L. V.; Johnson G. H. (১৯৮৯)। "Effect of Admixed Indium on Mercury Vapor Release from Dental Amalgam": 1231–3। ডিওআই:10.1177/00220345890680080301পিএমআইডি 2632609সাইট সিয়ারX 10.1.1.576.2654  
  27. Scoullos, Michael J. (২০০১-১২-৩১)। "Other types of cadmium alloys"Mercury, cadmium, lead: handbook for sustainable heavy metals policy and regulation। Springer। পৃষ্ঠা 222। আইএসবিএন 978-1-4020-0224-3 
  28. Berger, Harold; National Bureau Of Standards, United States (১৯৭৬)। "Image Detectors for Other Neutron Energies"Practical applications of neutron radiography and gaging: a symposium। পৃষ্ঠা 50–51। 
  29. Kupferschmidt, Kai (২০১৯-০৫-০২)। "In search of blue"। American Association for the Advancement of Science (AAAS): 424–429। আইএসএসএন 0036-8075ডিওআই:10.1126/science.364.6439.424পিএমআইডি 31048474