অ্যালুমিনিয়াম

একটি রাসায়নিক মৌল যা রূপার মত সাদা রঙের ধাতু এবং স্বাভাবিক তাপমাত্রায় পানিতে অদ্রবনীয়

অ্যালুমিনিয়াম একটি মৌলিক পদার্থ যার প্রতীক Al এবং পারমাণবিক সংখ্যা ১৩। এটি বোরন গ্রুপের সদস্য যার রং ধূসর সাদা; গঠনে কোমল, অচৌম্বকীয় এবং যথেষ্ট সংকোচন-প্রসারণক্ষম। ভর অনুপাতে ভূ-পৃষ্ঠের ৮ শতাংশ অ্যালুমিনিয়াম। অক্সিজেনসিলিকনের পর ভূ-পৃষ্ঠের মৌল হিসেবে এর অবস্থান ৩য়, যদিও ভূপৃষ্ঠের গভীরে নগন্য মাত্রায় বিদ্যমান। এর প্রধান আকরিক হল বক্সাইট। রাসায়নিকভাবে অ্যালুমিনিয়াম খুবই সক্রিয় বলে তীব্র বিজারনীয় পরিবেশ ছাড়া একে বিশুদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায় না। একারণে ২৭০ ধরনের ভিন্ন পদার্থে এর উপস্থিতি রয়েছে।[৪]

অ্যালুমিনিয়াম   ১৩Al
Aluminium-4.jpg
Aluminum Spectra.jpg
অ্যালুমিনিয়াম এর বর্ণালী রেখাসমূহ
পরিচয়
নাম, প্রতীকঅ্যালুমিনিয়াম, Al
উচ্চারণইউকে: /ˌælj[অসমর্থিত ইনপুট: 'ʉ']ˈmɪniəm/ (এই শব্দ সম্পর্কেশুনুন)
AL-ew-MIN-ee-əm; or ইউএস: /əˈlm[অসমর্থিত ইনপুট: 'ɨ']nəm/ (এই শব্দ সম্পর্কেশুনুন)
ə-LOO-mi-nəm
উপস্থিতিরূপালি ধূসর ধাতুতুল্য
পর্যায় সারণীতে অ্যালুমিনিয়াম
হাইড্রোজেন (other non-metal)
হিলিয়াম (noble gas)
লিথিয়াম (alkali metal)
বেরিলিয়াম (alkaline earth metal)
বোরন (metalloid)
কার্বন (other non-metal)
নাইট্রোজেন (other non-metal)
অক্সিজেন (other non-metal)
ফ্লোরিন (halogen)
নিয়ন (noble gas)
সোডিয়াম (alkali metal)
ম্যাগনেসিয়াম (alkaline earth metal)
অ্যালুমিনিয়াম (post-transition metal)
সিলিকন (metalloid)
ফসফরাস (other non-metal)
সালফার (other non-metal)
ক্লোরিন (halogen)
আর্গন (noble gas)
পটাশিয়াম (alkali metal)
ক্যালসিয়াম (alkaline earth metal)
স্ক্যানডিয়াম (transition metal)
টাইটানিয়াম (transition metal)
ভ্যানাডিয়াম (transition metal)
ক্রোমিয়াম (transition metal)
ম্যাঙ্গানিজ (transition metal)
লোহা (transition metal)
কোবাল্ট (transition metal)
নিকেল (transition metal)
তামা (transition metal)
দস্তা (transition metal)
গ্যালিয়াম (post-transition metal)
জার্মেনিয়াম (metalloid)
আর্সেনিক (metalloid)
সেলেনিয়াম (other non-metal)
ব্রোমিন (halogen)
ক্রিপ্টন (noble gas)
রুবিডিয়াম (alkali metal)
স্ট্রনসিয়াম (alkaline earth metal)
ইটরিয়াম (transition metal)
জিরকোনিয়াম (transition metal)
নাইওবিয়াম (transition metal)
মলিবডিনাম (transition metal)
টেকনিসিয়াম (transition metal)
রুথেনিয়াম (transition metal)
রোহডিয়াম (transition metal)
প্যালাডিয়াম (transition metal)
রুপা (transition metal)
ক্যাডমিয়াম (transition metal)
ইন্ডিয়াম (post-transition metal)
টিন (post-transition metal)
অ্যান্টিমনি (metalloid)
টেলুরিয়াম (metalloid)
আয়োডিন (halogen)
জেনন (noble gas)
সিজিয়াম (alkali metal)
বেরিয়াম (alkaline earth metal)
ল্যান্থানাম (lanthanoid)
সিরিয়াম (lanthanoid)
প্রাসিওডিমিয়াম (lanthanoid)
নিওডিমিয়াম (lanthanoid)
প্রমিথিয়াম (lanthanoid)
সামারিয়াম (lanthanoid)
ইউরোপিয়াম (lanthanoid)
গ্যাডোলিনিয়াম (lanthanoid)
টারবিয়াম (lanthanoid)
ডিসপ্রোসিয়াম (lanthanoid)
হলমিয়াম (lanthanoid)
এরবিয়াম (lanthanoid)
থুলিয়াম (lanthanoid)
ইটারবিয়াম (lanthanoid)
লুটেসিয়াম (lanthanoid)
হ্যাফনিয়াম (transition metal)
ট্যানটালাম (transition metal)
টাংস্টেন (transition metal)
রিনিয়াম (transition metal)
অসমিয়াম (transition metal)
ইরিডিয়াম (transition metal)
প্লাটিনাম (transition metal)
সোনা (transition metal)
পারদ (transition metal)
থ্যালিয়াম (post-transition metal)
সীসা (post-transition metal)
বিসমাথ (post-transition metal)
পোলোনিয়াম (post-transition metal)
এস্টাটিন (halogen)
রেডন (noble gas)
ফ্রান্সিয়াম (alkali metal)
রেডিয়াম (alkaline earth metal)
অ্যাক্টিনিয়াম (actinoid)
থোরিয়াম (actinoid)
প্রোটেক্টিনিয়াম (actinoid)
ইউরেনিয়াম (actinoid)
নেপচুনিয়াম (actinoid)
প্লুটোনিয়াম (actinoid)
অ্যামেরিসিয়াম (actinoid)
কুরিয়াম (actinoid)
বার্কেলিয়াম (actinoid)
ক্যালিফোর্নিয়াম (actinoid)
আইনস্টাইনিয়াম (actinoid)
ফার্মিয়াম (actinoid)
মেন্ডেলেভিয়াম (actinoid)
নোবেলিয়াম (actinoid)
লরেনসিয়াম (actinoid)
রাদারফোর্ডিয়াম (transition metal)
ডুবনিয়াম (transition metal)
সিবোরজিয়াম (transition metal)
বোহরিয়াম (transition metal)
হ্যাসিয়াম (transition metal)
মিটনেরিয়াম (unknown chemical properties)
ডার্মস্টেটিয়াম (unknown chemical properties)
রন্টজেনিয়াম (unknown chemical properties)
কোপার্নিসিয়াম (transition metal)
ইউনুনট্রিয়াম (unknown chemical properties)
ফেরোভিয়াম (unknown chemical properties)
ইউনুনপেন্টিয়াম (unknown chemical properties)
লিভেরমোরিয়াম (unknown chemical properties)
ইউনুনসেপটিয়াম (unknown chemical properties)
ইউনুনকটিয়াম (unknown chemical properties)
B

Al

Ga
ম্যাগনেসিয়ামঅ্যালুমিনিয়ামসিলিকন
পারমাণবিক সংখ্যা13
আদর্শ পারমাণবিক ভর২৬.৯৮১৫৩৮৬(১৩)
মৌলের শ্রেণীধাতু
শ্রেণী, পর্যায়, ব্লক১৩, পর্যায় ৩, পি-ব্লক
ইলেকট্রন বিন্যাস[Ne] 3s2 3p1
per shell: ২, ৮, ৩
ভৌত বৈশিষ্ট্য
দশাকঠিন
গলনাঙ্ক৯৩৩.৪৭ কে ​(৬৬০.৩২ °সে, ​১২২০.৫৮ °ফা)
স্ফুটনাঙ্ক২৭৯২ K ​(২৫১৯ °সে, ​৪৫৬৬ °ফা)
ঘনত্ব (ক.তা.-র কাছে)২.৭০ g·cm−৩ (০ °সে-এ, ১০১.৩২৫ kPa)
তরলের ঘনত্বm.p.: ২.৩৭৫ g·cm−৩
ফিউশনের এনথালপি১০.৭১ kJ·mol−১
বাষ্পীভবনের এনথালপি২৯৪.০ kJ·mol−১
তাপ ধারকত্ব২৪.২০০ J·mol−১·K−১
বাষ্প চাপ
P (Pa) ১০ ১০০ ১ k ১০ k ১০ k
at T (K) ১৪৮২ ১৬৩২ ১৮১৭ ২০৫৮ ২৩৬৪ ২৭৯০
পারমাণবিক বৈশিষ্ট্য
জারণ অবস্থা, ২[১], 1[২]অ্যাম্ফোটেরিক অক্সাইড
তড়িৎ-চুম্বকত্ব১.৬১ (পলিং স্কেল)
আয়নীকরণ বিভব
(আরও)
পারমাণবিক ব্যাসার্ধempirical: 143 pm
সমযোজী ব্যাসার্ধ121±4 pm
ভ্যান ডার ওয়ালস ব্যাসার্ধ184 pm
বিবিধ
কেলাসের গঠনface-centered cubic (fcc)
Face-centered cubic জন্য কেলাসের গঠন{{{name}}}
শব্দের দ্রুতিপাতলা রডে: (rolled) ৫,০০০ m·s−১ (at r.t.)
তাপীয় প্রসারাঙ্ক২৩.১ µm·m−১·K−১ (২৫ °সে-এ)
তাপীয় পরিবাহিতা২৩৭ W·m−১·K−১
তড়িৎ রোধকত্ব ও পরিবাহিতা২০ °সে-এ: ২৮.২ n Ω·m
চুম্বকত্বউপচুম্বকীয়[৩]
ইয়ংয়ের গুণাঙ্ক৭০ GPa
কৃন্তন গুণাঙ্ক২৬ GPa
আয়তন গুণাঙ্ক৭৬ GPa
পোয়াসোঁর অনুপাত০.৩৫
(মোজ) কাঠিন্য২.৭৫
ভিকার্স কাঠিন্য১৬৭ MPa
ব্রিনেল কাঠিন্য২৪৫ MPa
ক্যাস নিবন্ধন সংখ্যা7429-90-5
সবচেয়ে স্থিতিশীল আইসোটোপ
মূল নিবন্ধ: অ্যালুমিনিয়ামের আইসোটোপ
iso NA অর্ধায়ু DM DE (MeV) DP
২৬Al ট্রেস ৭.১৭×১০ β+ ১.১৭ ২৬Mg
ε - ২৬Mg
γ ১.৮০৮৬ -
২৭Al ১০০% Al ১৪টি নিউট্রন নিয়ে স্থিত হয়
· তথ্যসূত্র

এটি বেশ হালকা ও দীর্ঘদিন ব্যবহারে অক্ষয়িষ্ণু। একারণে এর বহুবিধ ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। মহাকাশীয় যন্ত্রপাতি,[৫] যানবাহন ও নির্মানকাজে (জানালার কাঠামো, আংটা ইত্যাদি) অ্যালুমিনিয়াম ও এর সংকর ধাতুসমূহের বহুল ব্যবহার লক্ষনীয়।[৬] এর অক্সাইড ও সালফেটসমূহ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত যৌগ।[৫] কোন জীবন্ত প্রাণী তাদের জৈবিক কার্যাবলিতে অ্যালুমিনিয়ামের লবণ ব্যবহার না করলেও মাটিতে প্রচুর পরিমাণে থাকায় উদ্ভিদসমূহে তাদের ভূমিকা রয়েছে।[৭] উদ্ভিদে এর ক্রিয়াবলি নিয়ে উপর্যুপরি গবেষণা চলছে।

ভৌত ধর্মসম্পাদনা

শুধুমাত্র ২৭ ভরসংখ্যা বিশিষ্ট আইসোটোপ প্রকৃতিতে স্থায়ীরুপে পাওয়া যায়, বাকিগুলো তেজস্ক্রিয় প্রকৃতির ও অস্থায়ী। শুধুমাত্র এটিই (অ্যালুমিনিয়াম-২৭) কেবল পৃথিবীর জন্মের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত স্থায়ীভাবে প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। এটি নিকটবর্তী অন্যান্য ধাতুসমুহের তুলনায় খুবই হালকা। এর সর্বশেষ কক্ষপথে সর্বমোট তেরটি (১৩) ইলেক্ট্রন বিদ্যমান। এর ইলেক্ট্রন বিন্যাস ২,৮,৩। এটি দৃশ্যমান বর্ণালীর শতকরা ৯২ ভাগ আলোকে প্রতিফলিত করতে পারে। এর ঘনত্ব ২.৭০ গ্রাম/ঘনসেন্টিমিটার। এর প্রতীক হলো Al

ইতিহাসসম্পাদনা

অ্যালুমিনিয়ামের সর্বপ্রথম ব্যবহার পাওয়া যায় খ্রিষ্টপূর্ব ৫ম শতকে। ফিটকিরি হিসেবে প্রাচীন গ্রীসে এর ব্যবহার ছিল এই মর্মে গ্রীক দার্শনিক হিরোডোটাস থেকে উদ্ধৃতি পাওয়া যায়। ক্রুসেডের পর ইউরোপের বস্ত্রশিল্পে ফিটকিরির গুরুত্ব তৈরি হয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও এটি তখন গুরুত্বপূর্ণ পণ্য হিসেবে আবির্ভূত হয়। ১৫৩০ সালের দিকে সুইস চিকিৎসক পারাসেলসাস ভূপৃষ্ঠে এর উপস্থিতি সম্পর্কে আলোচনা করেন। ১৫৯৫ সালে জার্মান রসায়নবিদ আন্দ্রেস লিবাভিয়াস পরীক্ষার মাধ্যমে এর সত্যতা নিরুপণ করেন।

১৭৬০ সালের দিকে অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন নিয়ে প্রথম কাজ শুরু হয়। যদিও এর বেশ পরে ১৮২৪ সালে ওলন্দাজ রসায়নবিদ হান্স ক্রিশ্চিয়ান ওরস্টেড প্রথম একাজে সাফল্য লাভ করেন। ১৮২৭ সালে আরেক জার্মান বিজ্ঞানী ফ্রিডরিক ভোলার ওরস্টেডের পরীক্ষাটি বিশদভাবে আবার পরিচালনা করেন এবং ১৮৪৫ প্রথম অ্যালুমিনিয়ামের ন্যায় ভৌত ধর্ম বিশিষ্ট কিছু টুকরো আবিষ্কারে সক্ষম হন। এর বহুপরে তাকেই অ্যালুমিনিয়ামের আবিষ্কারকের মর্যাদা দেয়া হয়। ভোলারের পদ্ধতিটি বাণিজ্যিকভাবে অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদনে ফলপ্রসূ ছিল না।

১৮৮৬ সালে ফরাসি প্রকৌশলী পল হেরোল্ট এবং আমেরিকান প্রকৌশলী চার্লস মার্টিন হোল আলাদা আলাদাভাবে লাভবান উপায়ে অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ১৮৮৯ সালে অস্ট্রিয়ান বিজ্ঞানী কার্ল জোসেফ বেয়ার বক্সাইট পরিশোধন করে অনুরুপ লাভবান একটি কৌশল আবিষ্কার করেন। আধুনিক পদ্ধতিগুলো ২ দুই ব্যবস্থার উপর ভিত্তিতেই প্রতিষ্ঠিত। বিংশ শতকের মাঝামাঝি গৃহস্থালীর ব্যবহার্য তৈজসপত্র তৈরিতে এর বহুমাত্রিক ব্যবহার জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে।

উৎপাদনসম্পাদনা

অ্যালুমিনিয়াম এর ব্যবহার

পৃথিবীতে বর্তমানে চীন সর্বাধিক পরিমাণ অ্যালুমিনিয়াম ধাতু উৎপাদন করে থাকে। এছাড়া রাশিয়া, কানাডা, ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত উল্লেখযোগ্য হারে এ ধাতুর উৎপাদক। উন্নত দেশসমূহেই এর চাহিদা বেশি। বাণিজ্যিকভাবে লাভবান ২টি পদ্ধতিতেই সাধারণত এ ধাতু উৎপাদন করা হয়ে থাকে। পদ্ধতিদুটি যথাক্রমে বেয়ার প্রণালী ও হল-হেরোল্ট প্রণালী নামে পরিচিত।

বেয়ার প্রণালীসম্পাদনা

এ পদ্ধতিতে বক্সাইটকে অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইডে পরিণত করা হয়। প্রথমে বক্সাইটকে বিগলিত করা হয়। এরপর তাকে সোডিয়াম হাইড্রক্সাইডের গরম দ্রবণে মিশ্রিত করা হয়। তারপর একটি ডাইজেস্টার পাত্রে উচ্চ চাপ প্রয়োগ করলে অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইড পাওয়া যায় এবং অপদ্রব্যগুলো অদ্রবণীয় হয়ে আলাদা হয়ে যায়।

Al(OH)3 + Na+ + OH → Na+ + [Al(OH)4]

এরপর মিশ্রণটি বক্সাইটের স্ফুটনাঙ্কের চেয়েও উচ্চ তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে বাকি অপদ্রব্যগুলোও দূরীভূত হয়। সবশেষে কেলাসন পদ্ধতিতে অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইড পৃথক করলে পুরো মিশ্রণের অর্ধেক পরিমাণ অ্যালুমিনিয়াম অধঃক্ষিপ্ত হয়। প্রয়োজন অনুসারে পরে অধিক পরিমাণ পরিশোধন করা হয়ে থাকে।

হল-হেরোল্ট প্রণালীসম্পাদনা

এটি মূলত তড়িৎ বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে অ্যালুমিনিয়াম ধাতুর পৃথকীকরণ প্রক্রিয়া। অ্যালুমিনাকে ৯৫০-৯৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বিগলিত করা হয়। প্রকৃতপক্ষে অ্যালুমিনার গলনাঙ্ক এর চেয়েও বেশি। ক্রাইওলাইট (Na3AlF6) প্রয়োগে এই তাপমাত্রায় বিগলন কার্য সম্পন্ন হয়। এরপর তড়িৎ বিশ্লেষণ শুরু হলে পাত্রের তলায় গলিত ধাতু তৈরি হতে থাকে। এই ধাতুর প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে বিশাল বিশাল অ্যালুমিনিয়াম দন্ড তৈরি করা হয় যা অ্যালুমিনিয়াম বিলেট নামে পরিচিত। পরবর্তীতে চাইলে হুপ প্রণালী অনুসরণ করে প্রায় ৯৯.৯৯ শতাংশ বিশুদ্ধ অ্যালুমিনিয়াম পাওয়া যায়।

ব্যবহারসম্পাদনা

যৌগ ছাড়াও ধাতু হিসেবে অ্যালুমিনিয়াম ধাতুর প্রচুর ব্যবহার দৈনন্দিন জীবনে দৃশ্যমান। অ্যালুমিনিয়ামের অ্যাসিটেট, ফসফেট ও হাইড্রক্সাইডসমূহের বহুধা ব্যবহার রয়েছে। ধাতু হিসেবে অ্যালুমিনিয়ামের প্রধান ব্যবহার মূলত লক্ষ্য করা যায়-

১) বেশ হালকা ধাতু হওয়ায় যানবাহনের বডি তৈরিতে যেমনঃ বাস, ট্রাক, রেলের বগি, বাইসাইকেল, উড়োজাহাজ, মহাকাশযান ইত্যাদি এর ব্যবহার প্রচুর।

২) প্যাকেজিং এর জন্য ফয়েল পেপার, ক্যান ইত্যাদি তৈরিতে কারণ এটি বিষাক্ত ও আঠালো নয়।

৩) নির্মাণ কাজে দরজা, জানালা, চৌকাঠ প্রভৃতি তৈরিতে কারণ এটি মরিচা প্রতিরোধী গুণসম্পন্ন।

৪) বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিতে যেমনঃ মোটর, ট্রান্সফর্মার, ক্যাপাসিটর (ধারক) প্রভৃতি।

৫) গৃহস্থালীতে ব্যবহৃত তৈজসপত্র তৈরিতে যেমনঃ হাড়ি, পাতিল, কড়াই ইত্যাদি।

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. অ্যালুমিনিয়াম মনোক্সাইড
  2. অ্যালুমিনিয়াম আয়োডাইড
  3. Magnetic susceptibility of the elements and inorganic compounds, in Handbook of Chemistry and Physics 81st edition, CRC press.
  4. Shakhashiri, B.Z. (১৭ মার্চ ২০০৮)। "Chemical of the Week: Aluminum" (পিডিএফ)SciFun.orgUniversity of Wisconsin। ৯ মে ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১২ 
  5. Singh, Bikram Jit (২০১৪)। RSM: A Key to Optimize Machining: Multi-Response Optimization of CNC Turning with Al-7020 Alloy (ইংরেজি ভাষায়)। Anchor Academic Publishing (aap_verlag)। আইএসবিএন 978-3-95489-209-9 
  6. Hihara, Ronald M.; Adler, Ralph P.I.; Latanision (২০১৩)। Environmental Degradation of Advanced and Traditional Engineering Materials (ইংরেজি ভাষায়)। CRC Press। আইএসবিএন 978-1-4398-1927-2 
  7. Frank, W.B. (২০০৯)। "Aluminum"। Ullmann's Encyclopedia of Industrial Chemistry। Wiley-VCH। আইএসবিএন 978-3-527-30673-2ডিওআই:10.1002/14356007.a01_459.pub2