রেডন

একটি গ্যাসীয় মৌলিক পদার্থ

রেডন (radon, Rn) পর্যায় সারণীর ৮৬তম মৌল। নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মধ্যে এটিই সবচেয়ে ভারী। এটি অত্যন্ত তেজস্ক্রিয় এবং প্রকৃতিতে এর প্রাচুর্য খুবই কম। আমরা রেডন বলতে যা বুঝি তা প্রকৃতপক্ষে ৮৬তম রাসায়নিক মৌলের তিনটি সমস্থানিক মিশ্রণের নাম। এই মিশ্রণগুলোর একটির পর আরেকটি আবিষ্কৃত হয় এবং প্রত্যেককেই প্রসর্গ বলা হয়।

রেডন   ৮৬Rn
রেডন
উচ্চারণ/ˈrdɒn/ (RAY-don)
নাম, প্রতীকরেডন, Rn
উপস্থিতিবর্ণহীন
পর্যায় সারণিতে রেডন
Hydrogen Helium
Lithium Beryllium Boron Carbon Nitrogen Oxygen Fluorine Neon
Sodium Magnesium Aluminium Silicon Phosphorus Sulfur Chlorine Argon
Potassium Calcium Scandium Titanium Vanadium Chromium Manganese Iron Cobalt Nickel Copper Zinc Gallium Germanium Arsenic Selenium Bromine Krypton
Rubidium Strontium Yttrium Zirconium Niobium Molybdenum Technetium Ruthenium Rhodium Palladium Silver Cadmium Indium Tin Antimony Tellurium Iodine Xenon
Caesium Barium Lanthanum Cerium Praseodymium Neodymium Promethium Samarium Europium Gadolinium Terbium Dysprosium Holmium Erbium Thulium Ytterbium Lutetium Hafnium Tantalum Tungsten Rhenium Osmium Iridium Platinum Gold Mercury (element) Thallium Lead Bismuth Polonium Astatine Radon
Francium Radium Actinium Thorium Protactinium Uranium Neptunium Plutonium Americium Curium Berkelium Californium Einsteinium Fermium Mendelevium Nobelium Lawrencium Rutherfordium Dubnium Seaborgium Bohrium Hassium Meitnerium Darmstadtium Roentgenium Copernicium Nihonium Flerovium Moscovium Livermorium Tennessine Oganesson
Xe

Rn

Uuo
অ্যাস্টাটিনরেডনফ্রান্সিয়াম
পারমাণবিক সংখ্যা৮৬
আদর্শ পারমাণবিক ভর (২২২)
গ্রুপগ্রুপ  ১৮;18 (noble gases)
পর্যায়পর্যায় ৬
ব্লক  p-block
ইলেকট্রন বিন্যাস[Xe] 4f14 5d10 6s2 6p6
ভৌত বৈশিষ্ট্য
দশাগ্যাস
গলনাঙ্ক২০২ কে ​(−৭১.১৫ °সে, ​−৯৬ °ফা)
স্ফুটনাঙ্ক২১১.৩ K ​(−৬১.৮৫ °সে, ​−৭৯.১ °ফা)
ঘনত্ব৯.৭৩ গ্রা/লি (০ °সে-এ, ১০১.৩২৫ kPa)
পরম বিন্দু৩৭৭ কে, ৬.২৮ MPa
ফিউশনের এনথালপি৩.২৪৭ kJ·mol−১
বাষ্পীভবনের এনথালপি১৮.১০ kJ·mol−১
তাপ ধারকত্ব২০.৭৮৬ J·mol−১·K−১
বাষ্প চাপ
P (Pa) ১০ ১০০ ১ k ১০ k ১০ k
at T (K) ১১০ ১২১ ১৩৪ ১৫২ ১৭৬ ২১১
পারমাণবিক বৈশিষ্ট্য
জারণ অবস্থা
তড়িৎ-চুম্বকত্বউপাত্ত নেই (পলিং স্কেল)
পারমাণবিক ব্যাসার্ধempirical: ১২০ pm
সমযোজী ব্যাসার্ধ১৪৫ pm
বিবিধ
কেলাসের গঠন ​কিউবিক ফেস সেন্ট্রেড
[[File:কিউবিক ফেস সেন্ট্রেড|50px|alt=কিউবিক ফেস সেন্ট্রেড জন্য কেলাসের গঠনরেডন|কিউবিক ফেস সেন্ট্রেড জন্য কেলাসের গঠনরেডন]]
তাপীয় পরিবাহিতা৩.৬১ মি W·m−১·K−১
চুম্বকত্বঅচৌম্বক
ক্যাস নিবন্ধন সংখ্যা১০০৪৩-৯২-২
সবচেয়ে স্থিতিশীল আইসোটোপ
মূল নিবন্ধ: রেডনের আইসোটোপ
iso NA অর্ধায়ু DM DE (MeV) DP
২২২Rn সিন ৫৫.৬ সে আলফা ৬.৪০৪ ২১৬Po -->
২১১Rn সিন ১৪.৬ ঘ এপসাইলন ২.৮৯২ ২১১At
আলফা ৫.৯৬৫ ২০৭Po
২২২Rn ১০০% ৩.৮২৪ দি আলফা ৫.৫৯০ ২১৮Po
· তথ্যসূত্র
রেডনের বৈদ্যুতিন শেল
রেডনের বর্ণালী রেখা

নামকরণ সম্পাদনা

রেডিয়ামের প্রসর্গ হিসেবে রেডন নামটির উদ্ভব হয়। এই নামটি প্রস্তাব করেছিলেন বিজ্ঞানী রামজেলাতিন ভাষায় এর অর্থ প্রদীপ্ত।

আবিষ্কারের ইতিহাস সম্পাদনা

 
একটি রেডন টেস্ট কিট

প্রাকৃতিক প্রাচুর্য কম হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন রেডন মৌলটিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ডব্লিউ রামজে এবং এম ট্রাভার্স এটি ছাড়া অন্যান্য নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলো আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন। রেডন আবিষ্কারের জন্য যথারীতি তেজস্ক্রিয়ামিতি পদ্ধতির আশ্রয় নিতে হয়েছিল। রেডন আবিষ্কার করতে গিয়ে যে প্রসর্গগুলো আবিষ্কৃত হয় সেগুলো ছিল প্রথম গ্যাসীয় তেজস্ক্রিয় পদার্থ। তাই এর মাধ্যমে তেজস্ক্রিয়তা গবেষণার ইতিহাসে নতুন দিগন্তের সূত্রপাত ঘটে।

১৮৯৯ সালের শুরুর দিকে রসায়নবিদ আর্নেস্ট রাদারফোর্ড তার সহগবেষক আর ওয়েন্‌স-এর সাথে মিলে থোরিয়াম যৌগের তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে গবেষণা করছিলেন। একদিন ওয়েন্‌স গবেনাগারে প্রবেশের সময়ে দরজাটি বেশ জোরে খোলেন। দরজার কাছাকাছিই থোরিয়াম যৌগের বিক্রিয়া সংক্রান্ত গবেষণাটি চলছিল। গবেষকগণ লক্ষ্য করলেন, দরজা খোলার কারণে কক্ষে যে বাতাস প্রবেশ করেছে তার প্রভাবে থোরিয়াম প্রস্তুতকরণের সময়কার বিকিরণের তীব্রতা কমে গেছে। প্রথমে এই ঘটনাটিকে তারা খুব একটা গুরুত্ব দেননি। কিন্তু অচিরেই বুঝতে পারেন হালকা বাতাস প্রবাহিত হলেও থোরিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা অনেক কমে যায়। এ থেকে রাদারফোর্ড ও ওয়েন্‌স বুঝতে পারেন থোরিয়াম থেকে অবিরাম ধারায় তেজস্ক্রিয় গ্যাস নির্গত হয়। তারা একে থোরিয়ামের প্রসর্গ বলেন এবং নাম দেন থোরন। লাতিন ভাষায় থোরন শব্দের অর্থ প্রবাহিত হওয়া।

এরপর ধারণা করা হয়েছিল, অন্যান্য সব তেজস্ক্রিয় পদার্থই প্রসর্গ নির্গত করতে পারে। ১৯০০ সালে জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী ই ডর্ন রেডিয়মের প্রসর্গটি আবিষ্কার করেন এবং এর নাম দেয়া হয় রেডন। এর তিন বছর পর দ্যবিয়েন অ্যাক্টিনিয়ামের প্রসর্গ আবিষ্কার করেন। এভাবে দুটি নতুন গ্যাসীয় তেজস্ক্রিয় পদার্থ তথা প্রসর্গ পাওয়া যায় যাদের নাম রেডন এবং অ্যাক্টিনন। থোরন, রেডন এবং অ্যাক্টিননের মধ্যে কেবলমাত্র অর্ধায়ুর পার্থক্য ছিল। তাদের অর্ধায়ু যথাক্রমে ৫১.৫ সেকেন্ড, ৩.৮ দিন এবং ৩.০২ সেকেন্ড। রেডনের অর্ধায়ু সবচেয়ে বেশি হওয়ায় পরবর্তীতে প্রসর্গ সংক্রান্ত গবেষণায় একে ব্যবহার করা হতো। অর্ধায়ু ছাড়া এদের ধর্মে অন্য কোন পার্থক্য ছিল না। এদের কেউই রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশ নিত না, অর্থাৎ এরা সবাই নিষ্ক্রিয় গ্যাস ছিল। পরে অবশ্য দেখা যায় এদের পারমাণবিক ভর ভিন্ন ভিন্ন। রেডনকে নয় পর্যায় সারণীতে স্থান দেয়া গেল। কিন্তু অন্য দুটি গ্যাসীয় মৌলের জন্য জেননের পরে মাত্র একটি ঘর খালি ছিল। অবশেষে কেবল রেডনই টিকে যায় এবং একে পর্যায় সারণীতে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া হয়। অন্যতম কারণ একমাত্র এরই অর্ধায়ু যথেষ্ট ছিল।

আরও দেখুন সম্পাদনা