টেস্ট ও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে জোড়া শূন্য রান

তালিকাভিত্তিক নিবন্ধ

পেয়ার বা জোড়া শূন্য রান ক্রিকেটীয় পরিভাষাবিশেষ। যখন কোন ব্যাটসম্যান উভয় ইনিংসে শূন্য রানে ডিসমিসাল হন, তখন তিনি পেয়ার বা জোড়া শূন্য লাভ করেছেন বলে গণ্য করা হয়। যখন কোন ব্যাটসম্যান উভয় ইনিংসে প্রথম বলেই আউট হন তখন তিনি কিং পেয়ার পেয়েছেন বলে পরিচিতি পান। চশমার আদলে এ নামের উৎপত্তি ঘটেছে। তবে, দীর্ঘ সময়ের খেলায় খুব কমই এর ব্যবহার হয়ে থাকে।[]

নিউজিল্যান্ডের ফাস্ট বোলার ক্রিস মার্টিন সাত টেস্টের উভয় ইনিংসে সর্বাধিকসংখ্যক শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন। এ সংখ্যাটি নিকটবর্তী খেলোয়াড়ের চেয়ে তিন টেস্ট বেশি। পাঁচজন খেলোয়াড় টেস্ট ক্রিকেটে চারবার জোড়া শূন্য রান করেছেন। ভারতীয় বোলার ভগবত চন্দ্রশেখর, শ্রীলঙ্কার মুত্তিয়া মুরালিধরন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারভিন ডিলনকোর্টনি ওয়ালসের সাথে ব্যাটিংয়ে দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও শ্রীলঙ্কার শীর্ষস্থানীয় ব্যাটসম্যান মারভান আতাপাত্তু এ তালিকায় রয়েছেন। তিনি তার টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতে ছয় ইনিংস মিলিয়ে মাত্র এক রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। দুইবার জোড়া শূন্য রান নিয়ে খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করার পর পরবর্তীকালে আরও দুইবার জোড়া শূন্য লাভের মুখোমুখি হন। ১৪জন খেলোয়াড় তিনবার জোড়া শূন্য রানের সন্ধান পান। তন্মধ্যে, গ্লেন ম্যাকগ্রা, কার্টলি অ্যামব্রোসঅ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের ন্যায় তারকা খেলোয়াড় অন্যতম।[]

টেস্ট অভিষেকে জোড়া শূন্য রান

সম্পাদনা

১৭ জুন, ২০২০ তারিখ পর্যন্ত সর্বমোট ৪৪জন ব্যাটসম্যান তাদের টেস্ট অভিষেকে জোড়া শূন্য রানের সন্ধান পেয়েছেন।[]

টেস্টে ধারাবাহিকভাবে জোড়া শূন্য রান

সম্পাদনা

দূর্ভাগ্যজনকভাবে নিচের ব্যাটসম্যানেরা পরপর দুই টেস্টে জোড়া শূন্য রানের সন্ধান পেয়েছেন।[]

টেস্ট অধিনায়কদের জোড়া শূন্য লাভ

সম্পাদনা

২২জন অধিনায়ক টেস্টে জোড়া শূন্য লাভ করেছেন।[]

টেস্ট ক্রিকেটে কিং পেয়ার লাভ

সম্পাদনা

কোন ব্যাটসম্যান প্রথম বলেই আউট হলে গোল্ডেন ডাক লাভ করেন। অন্যদিক, যদি কোন ব্যাটসম্যান উভয় ইনিংসেই প্রথম বলে আউট হন তখন তিনি কিং পেয়ার বলে আখ্যায়িত করা হয়। এ ধরনের দূর্ভাগ্যের কবলে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ২১জন খেলোয়াড়ের নাম রয়েছে।[]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে উল্লেখযোগ্য জোড়া শূন্য লাভ

সম্পাদনা

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অনেক খেলোয়াড়ই জোড়া শূন্য লাভ করেছেন। নর্দাম্পটনশায়ারের মিক নরম্যান একই দিনে জোড়া শূন্য লাভের অধিকারী হন। জুন, ১৯৬৪ সালে সোয়ানসীর সেন্ট হেলেন্সে গ্ল্যামারগনের বিপক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

জুন, ১৯৪৬ সালে কার্ডিফ আর্মস পার্কে সফররত ভারতীয় একাদশের বিপক্ষে গ্ল্যামারগন ফলো-অনের কবলে পড়ে। চন্দ্র শরতের বলে পিটার জাজ শেষ ব্যক্তি হিসেবে শূন্য রানে আউট হন। ফলো-অনে পড়ে ১০ মিনিটের বিরতিতে গ্ল্যামারগনের অধিনায়ক জনি ক্লে স্ট্রাইকবিহীন অবস্থায় থাকেন ও ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করে জাজকে দ্বিতীয় বলেই বোল্ড করেন। এরফলে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্রুততম সময়ে জোড়া শূন্য লাভের ঘটনা ঘটে।[][]

জিম্বাবুয়ের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হ্যামিল্টন মাসাকাদজা একই দিনে দুইবার টেস্টে শূন্য রানের সন্ধান পান। ২৮ জানুয়ারি, ২০১২ তারিখে তার দলের দুই ইনিংসই একই দিনে শেষ হয়ে যায়।[] ২৭ জুলাই, ১৯৫৬ তারিখে বিখ্যাত ক্রিকেটার নীল হার্ভে জোড়া শূন্য রানের সাথে নিজেকে যুক্ত করেন। জিম লেকারের খেলায় ৯০ রান খরচায় ১৯ উইকেট লাভের কীর্তিতে দ্বিতীয় দিনে ২ ঘণ্টার ব্যবধানে হার্ভে জোড়া শূন্য রান করেন।

টুয়েন্টি২০ ক্রিকেটে অনানুষ্ঠানিক জোড়া শূন্য রান

সম্পাদনা

সীমিত ওভারের খেলা সুপার ওভারের দিকে গড়ালে নিয়মিত ইনিংস ও সুপার ওভারে জোড়া শূন্য রান লাভের সম্ভাবনা থাকে। তবে, সুপার ওভারে সংগৃহীত রান খেলোয়াড়ের পরিসংখ্যানে রাখা হয় না বিধায় এ ঘটনাটিকে কখনোবা অনানুষ্ঠানিক জোড়া শূন্য রানরূপে আখ্যায়িত করা হয়।[১০] ২৫ জুলাই, ২০১৩ তারিখে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স বনাম হাবিব ব্যাংক লিমিটেডের মধ্যকার খেলায় অনানুষ্ঠানিক জোড়া শূন্য রানের সন্ধান পেয়েছিলেন শোয়েব মালিক[১১] অন্যদিকে, ১০ জানুয়ারি, ২০১৪ তারিখে সিডনি সিক্সার্স বনাম পার্থ স্কর্চার্সের মধ্যকার খেলায় মইজেস হেনরিক্স অনানুষ্ঠানিক জোড়া শূন্য রান পান।[১০]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Blofeld, Henry (১৮ আগস্ট ২০০৩)। "CRICKET: Smith has the class and character to revive England"The IndependentFindArticles। ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩Conversely, Graham Gooch made a pair of spectacles in his first Test, against Australia. 
  2. Records – Test matches – Most pairs in career, Cricinfo, Retrieved on 8 December 2016
  3. Records – Test matches – Pair on debut, Cricinfo, Retrieved on 8 December 2016
  4. Players Scoring Ducks in 3 or More Consecutive Innings, Howstat, Retrieved on 20 February 2009
  5. Records – Test matches – Pairs by captain, Cricinfo, Retrieved on 28 December 2018
  6. "HowSTAT! Test Cricket - King Pairs"www.howstat.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৩-২৮ 
  7. The coach who caught Sachin, and a much-travelled man, Cricinfo, Retrieved on 20 February 2009
  8. John Arlott: Basingstoke Boy 1992 Fontana
  9. "Only Test: New Zealand v Zimbabwe at Napier, Jan 26–28, 2012 | Cricket Scorecard"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০১-২৮ 
  10. Malcolm, Alex। "Arafat holds his nerve in One-Over Eliminator"ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০১৪ 
  11. Super Over gives HBL PCB Ramazan T20 Cup