১৯১২ ত্রি-দেশীয় প্রতিযোগিতা
১৯১২ ত্রি-দেশীয় প্রতিযোগিতা তিনটি টেস্টখেলুড়ে দেশের মধ্যকার অনুষ্ঠিত ক্রিকেট প্রতিযোগিতা। ঐ সময়ের টেস্টখেলুড়ে দল - অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে এ প্রতিযোগিতাটি ২৭ মে থেকে ২২ আগস্ট, ১৯১২ তারিখ পর্যন্ত ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অবশ্যম্ভাবী বিজয়ী হিসেবে ইংল্যান্ড ছয় খেলার চারটিতে জয়ী হয়ে শিরোপা জয় করে। দৃশ্যতঃ প্রতিযোগিতাটি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছিল। দর্শকদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা, প্রতিদ্বন্দ্বিতাবিহীন ক্রিকেট ও দূর্বলতম অস্ট্রেলিয়া দলের অংশগ্রহণের ফলে এর গুরুত্ব হারায়।
১৯১২ ত্রি-দেশীয় প্রতিযোগিতা | |||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
তারিখ | ২৭ মে - ২২ আগস্ট, ১৯১২ | ||||||||||||||||||||||||||||
স্থান | ইংল্যান্ড | ||||||||||||||||||||||||||||
ফলাফল | ইংল্যান্ড নয়-খেলার প্রতিযোগিতায় ৪-২-০ ব্যবধানে জয়ী | ||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এ প্রতিযোগিতাটি তিনটি প্রতিযোগিতার অন্যতম যাতে দুইয়ের অধিক দল অংশ নিয়েছে। বাকী দুটি টেস্ট প্রতিযোগিতা হলো - ১৯৯৮-৯৯ ও ২০০১-০২ মৌসুমের এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ।
পটভূমি
সম্পাদনাএ প্রতিযোগিতার রূপরেখায় তৎকালীন তিনটি টেস্টভূক্ত দেশ অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে আয়োজনের কথা জুলাই, ১৯০৯ সালে ইম্পেরিয়াল ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রথম সভায় প্রস্তাবনা আকারে পেশ করা হয়। মূল প্রস্তাবনায় প্রতি চার বছর অন্তর প্রতিযোগিতা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল যা ১৯১২ সালে ইংল্যান্ডে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়।
বিভিন্ন কারণে প্রতিযোগিতাটি সফলতার মুখ দেখেনি। ১৭৬৬ সালের গ্রীষ্মের পর স্মরণকালের ভেজা মৌসুম ছিল: বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের তুলনায় জুন, জুলাই ও আগস্ট - এ তিনমাস দ্বিগুণেরও বেশি বৃষ্টিপাত হয়। আগস্ট, ১৯১২ সালে ২০শ শতাব্দীর অন্যতম ঠাণ্ডা ও ভেজা মৌসুম ছিল। ঐ সময়ে বৃষ্টি থেকে রক্ষা করার জন্য পিচ ঢেকে রাখার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। ফলে ব্যাটসম্যানেরা পোতানো উইকেটে সুবিধা পায়নি। এ সমস্যাগুলোর সাথে বর্তমানের পাঁচদিনের টেস্টের পরিবর্তে ঐ সময় তিনদিন খেলা হতো। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার দুইটি টেস্টে খারাপ আবহাওয়ার কারণে ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল। চূড়ান্ত খেলাটিও এমন ধরনের পিচে অনুষ্ঠিত হয়েছিল যা অনেকটা ওয়াটার পোলোর উপযোগী ছিল।[১]
এছাড়াও, খেলোয়াড় ও ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িতদের মধ্যে অসন্তোষের প্রেক্ষিতে ছয়জন শীর্ষসারির অস্ট্রেলীয় এ সফরে যেতে অস্বীকৃতি জানান। তন্মধ্যে, অধিনায়ক ক্লেম হিল ও ভিক্টর ট্রাম্পার পরবর্তীকালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আর খেলেননি। ফলে সাম্প্রতিক অ্যাশেজ সিরিজে সমানে-সমান থাকা স্বত্ত্বেও দূর্বলতম দল প্রেরণ করে। লেগ স্পিন ও গুগলি বোলারেরা দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাটিং পিচে বেশ কার্যকরী হলেও ইংল্যান্ডে ঘাসের পিচে খুব কমই প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছিল। ফলশ্রুতিতে ইংল্যান্ড দল প্রতিযোগিতায় একাধিপত্য বিস্তার করে। ছয় খেলার চারটিতে জয় পায় ও দুইটিতে ড্র করে।
অবশেষে, ব্রিটিশ দর্শকেরা এ প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছুটা আগ্রহ প্রকাশ করে। দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফের ভাষায়, নয়টি টেস্টে কিছুটা দর্শকের সন্ধান মেললেও অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকার খেলাগুলোয় কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি ব্রিটিশ জনগণ।[১]
প্রতিযোগিতাটি বেশ অসফল হয় যা আর পুণরাবৃত্তি ঘটেনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলায় এ ধরনের প্রতিযোগিতার বিষয়ে দুইয়ের বেশি কোন দেশ আগ্রহ দেখায়নি। এর বাইরে পূর্ব আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও ১৯৭৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়। ইতিহাসে কেবলমাত্র আর একটি টেস্ট ক্রিকেট প্রতিযোগিতা হিসেবে এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ ১৯৯৮-৯৯ ও ২০০১-০২ মৌসুমে অনুষ্ঠিত হয়। তবে, এ প্রতিযোগিতাও তেমন সফলতা পায়নি।
দলীয় সদস্য
সম্পাদনাঅংশগ্রহণকারী দলগুলোর সদস্যদের তালিকা নিম্নরূপ:[২]
উল্লেখযোগ্য ঘটনা
সম্পাদনাএ প্রতিযোগিতার সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার জিমি ম্যাথুজের একই টেস্টে দুইবার হ্যাট্রিক লাভ করা। তিনি উদ্বোধনী খেলার প্রত্যেক ইনিংসে এ বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেন। এ কৃতিত্বটি অদ্যাবধি টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের একমাত্র ঘটনারূপে স্বীকৃত।
খেলার বিবরণ
সম্পাদনা১ম খেলা: অস্ট্রেলিয়া ব দক্ষিণ আফ্রিকা, ওল্ড ট্রাফোর্ড, ২৭-২৮ মে, ১৯১২
সম্পাদনাদুই দিনেই অস্ট্রেলিয়া ইনিংস ও ৮৮ রানে জয়লাভ করে। প্রথমদিনেই প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া দল ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৪৮ রান তুলে। চার্লস কেলেওয়ে ও ওয়ারেন বার্ডসলি উভয়েই সেঞ্চুরি করেন। সিড পেগলার ১০৫ রান ৬ উইকেট দখল করেন। দিনশেষে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৬/১। দ্বিতীয় দিনে দক্ষিণ আফ্রিকা ২৬৫ রানে বোল্ড হয়। অব্রে ফকনার সেঞ্চুরি করেন ও বিল হুইটি ৫/৫৫ পান। ফলো-অনে থাকা অবস্থায় একই দিন দলটি ৯৫ রানে গুড়িয়ে যায়। কেলেওয়ে ৫/৩৩ লাভ করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ম্যাথুজ দ্বিতীয় হ্যাট্রিক করেন। ম্যাথুজ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রত্যেক ইনিংসে হ্যাট্রিক করেন ও তা ২৮ মে, ১৯১২ তারিখে একই দিনে ছিল। খেলায় ম্যাথুজ আর কোন উইকেট পাননি। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে অভিষিক্ত উইকেট-রক্ষক টমি ওয়ার্ড উভয় ইনিংসে ম্যাথুজের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন। এরফলে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে একমাত্র কিং পেয়ার লাভকারী তিনি।
২য় খেলা: ইংল্যান্ড ব দক্ষিণ আফ্রিকা, লর্ডস, ১০-১২ জুন, ১৯১২
সম্পাদনাইংল্যান্ড ইনিংস ও ৬২ রানে বিজয়ী। খেলা শুরুর এক সপ্তাহ পূর্ব থেকেই ভারী বৃষ্টিপাত হয়। প্রথম দিন বেলা ৩টার পর খেলা শুরু করা সম্ভব হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের প্রথম ইনিংসে ৯০ মিনিটের মধ্যেই ৫৮ রানে গুটিয়ে যায়। ফ্রাঙ্ক ফস্টার ও সিডনি বার্নস নিরবিচ্ছিন্নভাবে ২৬.১ ওভার বোলিং করে প্রত্যেকই ৫ উইকেট লাভ করেন। ইংল্যান্ডের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদ্বয় জ্যাক হবস ও উইল্ফ রোডস অনুকূল পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে দিনশেষে দলকে ১২২/১-এ নিয়ে যান। দ্বিতীয় দিনের রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ায় রেজি স্পুনার ১১৯ ও ফ্রাঙ্ক ওলি ৭৩ রান সংগ্রহ করেন। পেগলার ৭/৬৩ লাভ করেন। ইংল্যান্ড ৩৩৭ রানে অল আউট হলে ২৭৯ রানে পিছিয়ে থেকে দিনশেষে দক্ষিণ আফ্রিকা ১১৪/৪ তুলে। তৃতীয় দিন দক্ষিণ আফ্রিকা ২১৭ রানে অল আউট হয়। দলের পক্ষে চার্লি লিউইলিন ৭৫ করেন ও বার্নস আবারো ৬ উইকেট পান।
৩য় খেলা: ইংল্যান্ড ব অস্ট্রেলিয়া, লর্ডস, ২৪-২৬ জুন, ১৯১২
সম্পাদনাখেলা ড্র। আবহাওয়ার কারণে খেলাটি পুরোপুরি আক্রান্ত হয়। প্রথম দিন দুইবার বৃষ্টি নামে। কেবলমাত্র ৩ ঘণ্টা খেলা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। ভেজা পিচ হলেও শুকনো পিচের ন্যায় আচরণ করতে থাকে। দিন শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২১১/৪। দ্বিতীয় দিন ২০ মিনিটে আরও ৩০ রান যুক্ত করে। তৃতীয় দিনের রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করছিল। ইংল্যান্ড ৩১০/৭ করে ইনিংস ঘোষণা করে। হবস করেন ১০৭ রান। জবাবে বৃষ্টিতে খেলা শেষ হবার পূর্বে রক্ষণাত্মক ভঙ্গীমায় খেলে অস্ট্রেলিয়া ২৮২/৭ তুলে। দলের পক্ষে চার্লি ম্যাককার্টনি সর্বোচ্চ রান তুলেন। ৯৯ রানে কট আউটে বিদায় নেন তিনি। এরফলে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে এক রানের জন্য সেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হন।[৩]
৪র্থ খেলা: ইংল্যান্ড ব দক্ষিণ আফ্রিকা, হেডিংলি, ৮-১০ জুলাই, ১৯১২
সম্পাদনাইংল্যান্ড ১৭৪ রানে বিজয়ী। প্রথম ইনিংসে ওলি’র ৫৭ এবং ডেভ নোর্সের ৪/৫২ বোলিং পরিসংখ্যান করলে ইংল্যান্ড ২৪২ রান তুলে। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা দিনশেষে ১৪১/৮ তুলে। দ্বিতীয় দিন দক্ষিণ আফ্রিকা ১৪৭ রানে গুটিয়ে যায়। সিড পেগলার ৩৫ রান তুলেন; সিডনি বার্নস ৬/৫২ লাভ করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড ২৩৮ করে। স্পুনার ৮২ রান তুলেন; অব্রে ফকনার ৪/৫০ লাভ করেন। ৩৩৪ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় দ্বিতীয় দিনশেষে ১০৫/৭ করে। তৃতীয় দিন ১৫৯ রানে অল আউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। লুইস ট্যানক্রেড ৩৯ রান করেন। সিডনি বার্নস ৪/৬৩ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান।
৫ম খেলা: অস্ট্রেলিয়া ব দক্ষিণ আফ্রিকা, লর্ডস, ১৫-১৭ জুলাই, ১৯১২
সম্পাদনাঅস্ট্রেলিয়া ১০ উইকেটে জয়লাভ করে। প্রথম দিনেই ২৬৩ রানে অল-আউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। হার্বি টেলর করেন ৯৩ রান ও বিল হুইটি ৪/৬৮ লাভ করেন। দিনশেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮৮/২। দ্বিতীয় দিন ৩৯০ রানে অল-আউট হয়ে ১২৭ রানে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। কেলেওয়ে ও ওয়ারেন বার্ডসলি উভয়েই সেঞ্চুরি করেন। তন্মধ্যে, বার্ডসলি প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ ১৬৪ রান করেন। পেগলার চার উইকেট লাভ করেন। দিনশেষে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ১৪৬/৮ হয়। তৃতীয় দিন লিওয়েলিন ৫৯ রান তুললে দক্ষিণ আফ্রিকা ১৭৩ রানে ইনিংস শেষ করে। ম্যাথুজ ৪/২৯ পান। ৪৭ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় ক্লদ জেনিংস ও অভিষিক্ত হওয়া আর্নি মেন আধা-ঘণ্টার মধ্যেই নিরবিচ্ছিন্নভাবে ৪৮ রান তুলে দলকে জয় এনে দেন।
৬ষ্ঠ খেলা: ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া, ওল্ড ট্রাফোর্ড, ২৯-৩১ জুলাই, ১৯১২
সম্পাদনাখেলা ড্র। বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলাটির প্রথম দিন শুরু হয় প্রায় ৩টার দিকে ও দ্বিতীয় দিন প্রায় ৫টায়। তিনদিনে ১১০ ওভারেরও কম খেলা সম্ভবপর হয়। প্রথম দিনশেষে ইংল্যান্ড ১৮৫/৬ তুলে দিন পার করে। উইল্ফ রোডসের ৯২ রানের কল্যাণে দলটি ২০৩ রানে অল-আউট হয়। গ্যারি হাজলিট ৪/৭৭ ও বিল হুইটি ৪/৪৩ লাভ করেন। দ্বিতীয় দিনের বাদ-বাকী সময়ে অস্ট্রেলিয়া বিনা উইকেটে ১৪ রান তুলে। তৃতীয় দিনে আর খেলা হয়নি।
৭ম খেলা: অস্ট্রেলিয়া ব দক্ষিণ আফ্রিকা, ট্রেন্ট ব্রিজ, ৫-৭ আগস্ট, ১৯১২
সম্পাদনাখেলা ড্র। ভেজা পিচ, মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া স্বত্ত্বেও প্রথম দিনশেষে দক্ষিণ আফ্রিকা ২৬৬/৮ তুলে। নোর্সের ৬৪ রানের সুবাদে দলটি ৩২৯ রানে প্রথম ইনিংস শেষ করে। দ্বিতীয় দিনে বার্ডসলি ৫৬ তুললে অস্ট্রেলিয়া ২১৯ রানে অল-আউট হয়। পেগলার ৪/৮০ লাভ করেন। তৃতীয় দিনে খেলা অনুষ্ঠিত হয়নি।
৮ম খেলা: ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, ওভাল, ১২-১৩ আগস্ট, ১৯১২
সম্পাদনাইংল্যান্ড ১০ উইকেটে বিজয়ী। নিম্নমূখী রানের খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকা দল ৯৫ রানে অল-আউট হয়ে যায়। বার্নস ও ওলি - উভয়েই পাঁচ উইকেট দখলে করে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শেষ করে দেন। ইংল্যান্ড দল ১৭৬ রান তুলতে সক্ষম হয়। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা দল ৯৩ রানে তাদের ইনিংস শেষ করে। বার্নস একাধারে বোলিং করে ৮/২৯ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। মাত্র ১৩ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় নেমে ইংল্যান্ড দল জ্যাক হবস ও ইয়ং জ্যাক হার্নের উদ্বোধনী জুটি ২৭ বলে ১৪ রান তুলে দ্বিতীয় দিনের মধ্যাহ্ন বিরতির পূর্বেই খেলা শেষ করে দেয়।
৯ম খেলা: ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া, ওভাল, ১৯-২২ আগস্ট, ১৯১২
সম্পাদনাইংল্যান্ড ২৪৪ রানে বিজয়ী। প্রতিযোগিতার নিয়ম-কানুনে দুই দলের সমানসংখ্যক জয়ের বিষয়ে কোন পূর্ব অনুমান করা যায়নি। এছাড়াও, কোন টাই-ব্রেকের শর্তাবলী রাখায় হয়নি। ফলে সামগ্রিকভাবে বিজয়ী নির্ধারণের জন্য খেলাটি অসীম সময়ের টেস্টরূপে ঘোষণা করা হয়। ৩-দিনের সময়সীমা বাতিল করা হয়। তবে, খেলাটি চতুর্থ দিন পর্যন্ত গড়ায়।
খেলা শুরুর পূর্ব-দিন প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয়। প্রথম দিনে ইংল্যান্ড দল ২২৩/৮ তুলে। দ্বিতীয় দিন মাত্র দেড় ঘণ্টা খেলা আয়োজন করা সম্ভবপর হয়েছিল। ইংল্যান্ড তাদের ইনিংস ২৪৫ রানে শেষ করে। জ্যাক হবস ও ফ্রাঙ্ক ওলি - উভয়েই অর্ধ-শতকের ইনিংস খেলেন। বিল হুইটি ও রয় মিনেট চারটি করে উইকেট পান। দ্বিতীয় দিনের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করার পূর্বে অস্ট্রেলিয়া দল ৫১/২ তুলে।
তৃতীয় দিনে অস্ট্রেলিয়া ১১১ রানে অল-আউট হয়। বার্নস ও ওলি পাঁচ উইকেট করে পান। কেবলমাত্র কেলেওয়ে ও বার্ডসলি দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে সক্ষম হন। তাদের শেষ ৭ উইকেট মাত্র ২১ রানের মধ্যে পতন হয়। ইংল্যান্ডও দ্রুতলয়ে দুই উইকেট হারায়। কিন্তু, মধ্যাহ্ন বিরতির পর দেরি করে বৃষ্টি নামলে ব্যাটিং সহজ হয় ও দিন শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬৪/৪। তখন দলটি ১৯৮ রানে এগিয়ে ছিল।
চতুর্থ দিন ১৭৫ রান তুলে ইংল্যান্ড দল দ্বিতীয় ইনিংস শেষ করে। সিবি ফ্রাই ৭৯ রান তুলেন ও জেরি হ্যাজলিট ৭/২৫ পান। ফলে ইংল্যান্ড তিন শতাধিক রানে এগিয়ে যায়। জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় নেমে অস্ট্রেলিয়া দল মাত্র ৬৫ রানে গুটিয়ে যায়। কেবলমাত্র উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ক্লদ জেনিংস ও তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা চার্লস ম্যাককার্টনি দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করেছিলেন। ওলি ৫/২০ ও হ্যারি ডিন ৪/১৯ পান।
পয়েন্ট তালিকা
সম্পাদনাদল | খেলা | জয় | পরাজয় | ড্র |
---|---|---|---|---|
ইংল্যান্ড | ৬ | ৪ | ০ | ২ |
অস্ট্রেলিয়া | ৬ | ২ | ১ | ৩ |
দক্ষিণ আফ্রিকা | ৬ | ০ | ৫ | ১ |
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ [১][স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Triangular Tournament (Aus Eng RSA) May/Aug 1912 - Averages
- ↑ "without century"। ১০ জানুয়ারি ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
আরও দেখুন
সম্পাদনাআরও পড়ুন
সম্পাদনা- H S Altham, A History of Cricket, Volume 1 (to 1914), George Allen & Unwin, 1962
- Derek Birley, A Social History of English Cricket, Aurum, 1999
- Rowland Bowen, Cricket: A History of its Growth and Development, Eyre & Spottiswoode, 1970
- Bill Frindall, The Wisden Book of Test Cricket 1877-1978, Wisden, 1979
- David Frith, The Golden Age of Cricket 1890-1914, Lutterworth, 1978
- Chris Harte, A History of Australian Cricket, Andre Deutsch, 1993
- various writers, A Century of South Africa in Test & International Cricket 1889-1989, Ball, 1989
- Roy Webber, The Playfair Book of Cricket Records, Playfair Books, 1951
- Wisden Cricketers' Almanack 1913
- Patrick Ferriday Before the Lights Went Out - The 1912 Triangular Tournament Von Krumm Publishing 2011