ওয়ারউইক আর্মস্ট্রং

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ও অস্ট্রেলীয় রুলস ফুটবলার

ওয়ারউইক উইনড্রিজ আর্মস্ট্রং (ইংরেজি: Warwick Armstrong; জন্ম: ২২ মে, ১৮৭৯ - মৃত্যু: ১৩ জুলাই, ১৯৪৭) ভিক্টোরিয়ার কাইনটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ১৯০২ থেকে ১৯২১ মেয়াদকালে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। এছাড়াও, দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ‘বিগ শীপ’ ডাকনামে পরিচিত ওয়ারউইক আর্মস্ট্রং ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

ওয়ারউইক আর্মস্ট্রং
১৯০২ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ওয়ারউইক আর্মস্ট্রং
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামওয়ারউইক উইনড্রিজ আর্মস্ট্রং
জন্ম(১৮৭৯-০৫-২২)২২ মে ১৮৭৯
কাইনটন, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া
মৃত্যু১৩ জুলাই ১৯৪৭(1947-07-13) (বয়স ৬৮)
ডার্লিং পয়েন্ট, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামদ্য বিগ শিপ
উচ্চতা৬ ফুট ৩ ইঞ্চি (১.৯১ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি লেগ স্পিন
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৮০)
১ জানুয়ারি ১৯০২ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১৬ আগস্ট ১৯২১ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৯৮/৯৯-১৯২১/২২ভিক্টোরিয়ান বুশর‌্যাঞ্জার্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৫০ ২৬৯
রানের সংখ্যা ২৮৬৩ ১৬১৫৮
ব্যাটিং গড় ৩৮.৬৮ ৪৬.৮৩
১০০/৫০ ৬/৮ ৪৫/৫৭
সর্বোচ্চ রান ১৫৯* ৩০৩*
বল করেছে ৮০২২ ৪৩৩১৩
উইকেট ৮৭ ৮৩২
বোলিং গড় ৩৩.৫৯ ১৯.৭১
ইনিংসে ৫ উইকেট ৫০
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৬/৩৫ ৮/৪৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৪৪/– ২৭৫/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৯ অক্টোবর ২০১৫

খেলোয়াড়ী জীবন সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৫০ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন। ১৯০২ সালে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। ১৯০১-০২ মৌসুমে আর্চি ম্যাকলারেনের অধিনায়কত্বে ইংল্যান্ড দল অ্যাশেজ সফরে অস্ট্রেলিয়ায় আসে। দৃশ্যতঃ দূর্বল দল হওয়া স্বত্ত্বেও সিডনিতে তারা স্বাগতিক দলকে ইনিংস ও ১২৪ রানে পরাজিত করে। দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর পূর্বে নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে ভিক্টর ট্রাম্পারসিড গ্রিগরি’র ন্যায় টেস্ট খেলোয়াড়দেরকে আউট করেন আর্মস্ট্রং এবং ব্যাটিংয়ে ১৩৭ রান তুলেন তিনি।[১] ফলশ্রুতিতে মেলবোর্ন টেস্টের জন্য রেজি ডাফসহ তার টেস্ট অভিষেক হয়।[২] ঐ বছরের শেষদিকে ইংল্যান্ড সফরে যান ও ব্যক্তিগত সফলতা লাভ করেন। সর্বমোট চারবার ইংল্যান্ড সফরে দলের সদস্য ছিলেন।

অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট প্রশাসনের সাথে বেশ কয়েকবার দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। ‘বিগ সিক্স’ নামে পরিচিত শীর্ষস্থানীয় ছয় ক্রিকেটারের একজনরূপে ১৯১২ সালের ত্রি-দেশীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন নিজেকে। ১৯২১ সালে সফলভাবে ইংল্যান্ড সফর শেষ করার পর টেস্টসহ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর নেন।

১৯২০ থেকে ১৯২১ সময়ে দশ টেস্টে অধিনায়কত্ব করেন। তন্মধ্যে তার দল আট টেস্টে জয় পায় ও বাকী দুই টেস্ট ড্র করে। ১৯২০-২১ মৌসুমে সফরকারী ইংল্যান্ড দলকে ৫-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছিল তার দল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে তার টেস্ট জীবনে ছেদ ঘটে। এ সময় ৬ সেঞ্চুরি সহযোগে ৩৮.৬৮ রান গড়ে ২,৮৬৩ রান করেন। এছাড়াও ৮৭ উইকেট দখল করেন তিনি।

অর্জনসমূহ সম্পাদনা

সি. বি. ফ্রাইয়ের পর দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে একই খেলায় দ্বি-শতক ও শতক হাঁকান।[৩]

২০০০ সালে তাকে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ইংল্যান্ড সফরে চমৎকার ক্রীড়াশৈলীর দরুণ ১৯০২ সালে উইজডেন কর্তৃপক্ষ তাকে বর্ষসেরা ক্রিকেটাররূপে ঘোষণা করে।[৪]

বিতর্কিত ভূমিকা সম্পাদনা

দুইজন বোলারের একজন হিসেবে এক টেস্টের উভয় ইনিংসে একাধারে বোলিং করার কীর্তিগাঁথা রচনা করেছেন। ১৯২১ সালে ক্রিকেটের আইনভঙ্গ করে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন।[৫] অপর ঘটনাটি ২৮ মার্চ, ১৯৫১ তারিখে অ্যালেক্স মইর ওয়েলিংটন টেস্টের চতুর্থ দিন চাবিরতির আগে-পাছে এ ঘটনার সাথে জড়িত হয়ে পড়েন।

 
১৯২১ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ওয়ারউইক আর্মস্ট্রং

খেলার ধরন সম্পাদনা

দীর্ঘ ৬ ফুট ৩ ইঞ্চির অধিকারী আর্মস্ট্রং ব্যাটিংশৈলী তেমন দর্শনীয় না হলেও তার স্ট্রোকপ্লে বেশ কার্যকরী ছিল। শান্ত ভঙ্গীমায় লেগ স্পিনে বল বড় ধরনের বাঁক খেতো না। কিন্তু, নিখুঁত বোলিংয়ে প্রতিপক্ষীয় খেলোয়াড়দেরকে ডিসমিস করতে সক্ষমতা দেখান।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণের পূর্বে অস্ট্রেলীয় রুলস ফুটবলে ভিক্টোরিয়ান ফুটবল লীগে সংক্ষিপ্তকালের জন্য সাউথ মেলবোর্নের সদস্য ছিলেন। মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবে প্যাভিলিয়ন ক্লার্করূপে ক্রিকেট জীবনের অধিকাংশ সময় কাজ করেন যা তাকে ক্রিকেট খেলতে সহায়তা করে। খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর নেয়ার পর স্কচ হুইস্কির পরিবেশক হন। এছাড়াও সিডনি ইভনিং নিউজে ক্রিকেট বিষয়ে লেখেন।

১৩ জুলাই, ১৯৪৭ তারিখে ৬৮ বছর বয়সে নিউ সাউথ ওয়েলসের ডার্লিং পয়েন্ট এলাকায় ওয়ারউইক আর্মস্ট্রংয়ের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "New South Wales v Victoria: Sheffield Shield 1899/00"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০০৭ 
  2. Haigh, p. 43.
  3. Wally Hardinge: Kent Cricket legend, Newcastle United and Arsenal forward, Kent County Cricket Club, 2016-02-25. Retrieved 2016-02-25.
  4. "Wisden Cricketers of the Year"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-২১ 
  5. Martin-Jenkins, C. (1983) The Cricketer Book of Cricket Disasters and Bizarre Records, Century Publishing: London. আইএসবিএন ০৭১২৬ ০১৯১ ০.

আরও দেখুন সম্পাদনা

গ্রন্থপঞ্জী সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

পূর্বসূরী
সিড গ্রিগরি
অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯২০/২১-১৯২১
উত্তরসূরী
হার্বি কলিন্স