গিডিওন হেই

অস্ট্রেলীয় ক্রীড়া সাংবাদিক

গিডিওন ক্লিফোর্ড জেফ্রি ডেভিডসন হেই (ইংরেজি: Gideon Haigh; জন্ম: ২৯ ডিসেম্বর, ১৯৬৫) লন্ডনে জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ বংশোদ্ভূত বিশিষ্ট অস্ট্রেলীয় সাংবাদিক। ক্রীড়া বিষয়ে বিশেষ করে ক্রিকেটের উপর অগণিত লেখা প্রকাশ করেন ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড নিয়ে সংবাদপত্রে লিখে থাকেন। লন্ডনে জন্মগ্রহণ করলেও জিলংয়ে বড় হন ও বর্তমানে মেলবোর্নে বসবাস করছেন গিডিওন হেই[]

গিডিওন হেই
জন্ম (1965-12-29) ২৯ ডিসেম্বর ১৯৬৫ (বয়স ৫৮)
জাতীয়তাঅস্ট্রেলীয়
মাতৃশিক্ষায়তন
  • ট্রিনিটি কলেজ (মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়)
পেশাক্রীড়া সাংবাদিক
কর্মজীবন১৯৮৪-বর্তমান
পরিচিতির কারণ
  • উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাক অস্ট্রেলিয়ার সম্পাদক

প্রারম্ভিক জীবন

সম্পাদনা

সাংবাদিক হিসেবে হেই তার কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৮৪ থেকে ১৯৯২ সময়কালে ‘দি এজ’ সংবাদপত্রে ব্যবসায়িক বিষয়ে লিখতে শুরু করেন। এরপর ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৫ সময়কালে ‘দি অস্ট্রেলিয়ানে’ লিখতে থাকেন। এরপর থেকে ৭০-এর অধিক সংবাদপত্র ও সাময়িকীতে তার লেখা প্রকাশিত হয়েছে।[] ব্যবসায়িক বিষয়াবলী ও ক্রীড়া বিশেষতঃ ক্রিকেট নিয়েই তার লেখার জগতে মনোনিবেশ ঘটান। ২০০৬-০৭ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজের বিষয়ে দ্য গার্ডিয়ানে নিয়মিতভাবে লিখেন। এছাড়াও দ্য টাইমসদ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে প্রবন্ধ লিখতে থাকেন।

রচনাসমগ্র

সম্পাদনা

১৯টি গ্রন্থের লেখক তিনি ও সাতটিতে সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন। সবগুলোই ক্রিকেটকে ঘিরে রচিত হয়েছে। তন্মধ্যে, তার ঐতিহাসিক গ্রন্থ ‘দ্য ক্রিকেট ওয়ার’ ও ‘সামার গেম’ অন্যতম। তার জীবনীমূলক গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ওয়ারউইক আর্মস্ট্রংকে ঘিরে ‘দ্য বিগ শিপ’ ও জ্যাক ইভারসনকে ঘিরে ‘মিস্ট্রি স্পিনার’। শেষ গ্রন্থটি দ্য ক্রিকেট সোসাইটির বর্ষসেরা গ্রন্থের মর্যাদা পায়, উইলিয়াম হিল স্পোর্টসে বর্ষসেরা বইয়ের সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয় এবং দ্য সানডে টাইমসে ‘এ ক্লাসিক’ নামে প্রকাশিত হতে থাকে।[] ২০০৫ সালের অ্যাশেজ সিরিজ নিয়ে প্রবন্ধগুচ্ছ নিয়ে গ্রন্থ প্রকাশ করেন। এছাড়াও, ব্যবসায় সম্পর্কিত বিষয়াবলী বিশেষ করে দ্য ব্যাটল ফর বিএইচপি, অ্যাবেসটস হাউস ও ব্যাড কোম্পানি প্রকাশ করেন। অধিকাংশ গ্রন্থই অরাম প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়েছিল।

১৯৯৯ থেকে ২০০০ এবং ২০০০-০১ মৌসুমে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাক অস্ট্রেলিয়ার সম্পাদক মনোনীত হন। মার্চ, ২০০৬ সাল থেকে এবিসি টেলিভিশন স্পোর্টস প্যানেল শো অফসাইডার্সের নিয়মিত বিচারকমণ্ডলীর দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৬ সালের পূর্ব-পর্যন্ত ৭৭৪ এবিসি মেলবোর্নে জন ফেইনের সাথে দ্য কনভার্সেসন আওয়ারে নিয়মিতভাবে সহ-উপস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন।

বিতর্ক

সম্পাদনা

হেই স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানকে অবমূল্যায়ণে প্রবলভাবে সমালোচনা করেছেন ও তার নামকে গড়পড়তা ও লোভী আকারে বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা চালান।[] সেপ্টেম্বর, ১৯৯৮ সালে উইজডেন ক্রিকেট মান্থলীতে ‘স্যার ডোনাল্ড ব্র্যান্ডনেম’ শিরোনামে নিবন্ধ প্রকাশ করেন। হেই ব্র্যাডম্যানের জীবনীকার রোল্যান্ড পেরি’র সমালোচনা করেছেন। দি অস্ট্রেলিয়ানে পেরির জীবনীতে ব্র্যাডম্যানের ভুল বিষয়গুলোকে চাকচিক্য করে তোলা বা এড়িয়ে যাওয়ার দোষে দুষ্ট করার অভিযোগ আনেন।[]

সম্মাননা

সম্পাদনা

২০০৬ সালে সাংবাদিকতাকে ঘিরে জন কার্টিন পুরস্কার লাভ করেন। একই সালে ‘ইনফরমেশন আইডল: হাউ গুগল ইজ মেকিং আজ স্টুপিড’[] শিরোনামের নিবন্ধের জন্য ভিক্টোরিয়ান প্রিমিয়ার্স সাহিত্য পুরস্কার পান।[] দ্য মান্থলী সাময়িকীতে এ নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছিল।

দি উইজডেন ক্রিকেটারে ২০০৯ সালের অ্যাশেজ সিরিজকে ঘিরে হেই ব্লগ পরিচালনা করেন।[] ২৪ অক্টোবর, ২০১২ তারিখে মেলবোর্নে ব্র্যাডম্যানের দশম মৃত্যুবার্ষিকীতে হেই ভাষণ দেন। ২০১৫ সালে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের উদ্বোধনী জ্যাক মার্শ ইতিহাস বক্তৃতায় ‘কীভাবে ভিক্টর ট্রাম্পার ক্রিকেটকে চিরতরে বদলে দিয়েছেন’ শিরোনামে ভাষন প্রচার করেন।[]

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

১৯৮৪ সাল থেকে মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ট্রিনিটি কলেজের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।[] বর্তমানে তিনি মেলবোর্নে বসবাস করছেন। জানুয়ারি, ২০০৯ সালে শার্লত নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। তাদের সংসারে সেসিলিয়া নাম্নী এক কন্যা ও ট্রাম্পার নামের এক বিড়াল রয়েছে।[১০][১১] ২০০২ থেকে ২০০৫ সময়কালে তার সঙ্গীনি ছিলেন সালি ওয়াহাফ্ট। এপ্রিল, ২০০৯ সাল পর্যন্ত ওয়াহাফ্ট দ্য মান্থলী সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন। তবে, ওয়াহাফ্টের বিতর্কিত প্রত্যাগমনের পর থেকে দ্য মান্থলীতে কোন নিবন্ধ লিখছেন না বলে হেই দাবী করেন।[১২][১৩]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Haigh's official website.
  2. "Biography" on Haigh's official website.
  3. Quoted in Haigh 2004, p. i.
  4. Easom, p. 184.
  5. ""Information Idol: How Google is making us stupid", The Monthly, February 2006"। ৪ জুন ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৭ 
  6. "Winner 2006: John Curtin Prize for Journalism, State Library of Victoria"। ৯ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৭ 
  7. "The Ashes Test Series 2009 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ জুলাই ২০০৯ তারিখে."
  8. ইউটিউবে The Inaugural Jack Marsh History Lecture 2015
  9. Trinity E-News ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে, Feb. 2011. Accessed 14 Dec. 2015.
  10. "Cricinfo – Columnist – Gideon Haigh"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-৩০ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  11. Craven, Peter (২৮ জানুয়ারি ২০০৯)। "Vivaldi has nothing on Melbourne's weather"Spectator। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-৩০ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  12. Coslovich, Gabriella (৩০ এপ্রিল ২০০৯)। "Magazine meltdown: editor fired, deputy walks, writers quit"The Sydney Morning HeraldFairfax Media। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-৩০ 
  13. Haigh, Gideon (২ মে ২০০৯)। "When the media is the story"The AgeFairfax Media। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-০৩ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা