ফ্রাঙ্ক মিচেল

ইংরেজ ক্রিকেটার|দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার

ফ্রাঙ্ক মিচেল (ইংরেজি: Frank Mitchell; জন্ম: ১৩ আগস্ট, ১৮৭২ - মৃত্যু: ১১ অক্টোবর, ১৯৩৫) ইয়র্কশায়ারের মার্কেট উইটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ও রাগবি ইউনিয়ন খেলোয়াড় ছিলেন।[১] ইংল্যান্ডদক্ষিণ আফ্রিকা - উভয় দলের পক্ষেই টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। তন্মধ্যে, দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন।[২]

ফ্রাঙ্ক মিচেল
১৮৯৬ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ফ্রাঙ্ক মিচেল
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামফ্রাঙ্ক মিচেল
জন্ম(১৮৭২-০৮-১৩)১৩ আগস্ট ১৮৭২
মার্কেট উইটন, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১১ অক্টোবর ১৯৩৫(1935-10-11) (বয়স ৬৩)
ব্ল্যাকহিদ, লন্ডন, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম ফাস্ট
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার, অধিনায়ক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১১৫/৭৬)
১৪ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৯ 
ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট১৭ জুলাই ১৯১২ 
দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৯৪ - ১৮৯৭কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
১৮৯৪ - ১৯০৪ইয়র্কশায়ার
এমসিসি
লন্ডন কাউন্টি
১৯০২/০৩ - ১৯০৩/০৪ট্রান্সভাল
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৯৯
রানের সংখ্যা ৮৮ ৯,১৭৬
ব্যাটিং গড় ১১.৬০ ৩১.৯৭
১০০/৫০ ০/০ ১৭/৩৯
সর্বোচ্চ রান ৪১ ১৯৪
বল করেছে ১,৬১৬
উইকেট ৩৬
বোলিং গড় ২৩.১৬
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৫/৫৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২/- ১৪৯/২
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩০ আগস্ট ২০১৭

এছাড়াও, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, ইয়র্কশায়ার, এমসিসি,[৩] লন্ডন কাউন্টি ও ট্রান্সভালের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার ছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম ফাস্ট বোলিং করতেন। ক্রিকেটের পাশাপাশি রাগবি ইউনিয়নের খেলোয়াড় ছিলেন তিনি।

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

ইয়র্কের সেন্ট পিটার্স স্কুলে অধ্যয়ন করেন তিনি। দুই বছর বিদ্যালয় দলের অধিনায়কত্ব করেন। এরপর ব্রাইটনে চলে যান ও পরবর্তী দুই বছরের জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কায়াস কলেজে ভর্তি হন। সতীর্থদের অনেকের তুলনায় বয়সে বড় ছিলেন ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ছিলেন তিনি। ফলশ্রুতিতে নির্বিঘ্নে বিশ্ববিদ্যালয় দলে অন্তর্ভুক্ত হন ও ১৮৯৪ থেকে ১৮৯৭ সময়কালীন অধ্যয়ন করেন।[৪] ১৮৯৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় দলের অধিনায়কের দায়িত্বে থাকাকালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে খেলা চলাকালীন বোলারদেরকে রান দেয়ার আদেশ দেন। ফলশ্রুতিতে ফলো-অনের প্রয়োজন পড়বে না। ঐ সময় প্রথম ইনিংসে ৮০ রানের পার্থক্যে ফলো-অন প্রয়োগ করা হতো। তার এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্যাভিলিয়ন থেকে ও সংবাদপত্র থেকে প্রতিবাদ আসে। তবে, ঐ কৌশলটি কেমব্রিজকে জয়ে সহায়তা করেনি। উল্টো তারা চার উইকেটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল।

খেলোয়াড়ী জীবন সম্পাদনা

১৮৯৪ সালে প্রথমবারের মতো ইয়র্কশায়ারের পক্ষে খেলেন। ১৮৯৮-৯৯ মৌসুমে লর্ড হকের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য মনোনীত হন। এ সফরে প্রতিনিধিত্বসূচক খেলায় ইংল্যান্ডের পক্ষে অংশ নেন যা পরবর্তীকালে আনুষ্ঠানিক টেস্ট খেলারূপে স্বীকৃতি লাভ করেছিল। ঐ সফরে তার ক্রীড়াশৈলী আশাপ্রদ হওয়ায় পরবর্তী মৌসুমে ইয়র্কশায়ার দলে থাকতে সহায়তা করে।

দ্বিতীয় বোয়েরের যুদ্ধে কুইন্স অওন ইয়র্কশায়ার ড্রাগন্সের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকায় যান ও যুদ্ধে অংশ নেন। এরফলে, ১৯০০ সালের পুরো ইংরেজ ক্রিকেট মৌসুম থেকে দূরে থাকতে হয় তাকে। ১৯০১ সালে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে পুনরায় খেলতে নামেন। ঐ মৌসুমে তিনি সাতটি সেঞ্চুরি হাঁকান যার ফলে ১৯০২ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন।[৫]

১৯০১-০২ মৌসুমে বার্নার্ড বোসানকুয়েতের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্যরূপে আমেরিকা সফরে যান। কিন্তু শুরুর দিকেই এ সফর থেকে নাম প্রত্যাহার করে জোহেন্সবার্গে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে তিনি ট্রান্সভালের পক্ষে খেলতে থাকেন।

অধিনায়কত্ব লাভ সম্পাদনা

১৯০২-০৩ ও ১৯০৩-০৪ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর প্রতিযোগিতা কারি কাপের শিরোপা জয়ী দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি।

১৯০৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হিসেবে ইংল্যান্ড সফরে যান। এরফলে চৌদ্দজন খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে একাধিক দলের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণের সৌভাগ্য ঘটে তার। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে দীর্ঘ বিরতির পর ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯১২ সালের ত্রি-দেশীয় প্রতিযোগিতায় দলের অধিনায়ক হিসেবে বিপর্যয়কর ফলাফলের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন। আঘাতের কারণে মাঠের বাইরে থাকলে তিন টেস্টে দলের অধিনায়কের দায়িত্বভার লুইস ট্যানক্রেডের কাছে অর্পণ করা হয়। কিন্তু তিন টেস্টের সবগুলোতেই পরাজিত হয় তার দল।

অবসর সম্পাদনা

ইংল্যান্ডে প্রত্যাবর্তন করে ১৯১৪ সালে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব বনাম কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যকার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে আরও একবার অংশ নেন তিনি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যোগ দেন ও দায়িত্ব থেকে অবসর গ্রহণকালীন লেফট্যানেন্ট কর্নেল পদবী ধারণ করেন। কেন্টের সদস্য স্বীয় সন্তানের খেলা দর্শন করেন।

১১ অক্টোবর, ১৯৩৫ তারিখে লন্ডনের ব্ল্যাকহিথ এলাকায় আকস্মিকভাবে ৬৩ বছর বয়সে ফ্রাঙ্ক মিচেলের দেহাবসান ঘটে। এরপূর্বে দ্য ক্রিকেটারের সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেন।[১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Warner, David (২০১২)। The Yorkshire County Cricket Club: 2012 Yearbook (114th সংস্করণ)। Ilkley, Yorkshire: Great Northern Books। পৃষ্ঠা 74–76। আইএসবিএন 978-1-905080-06-9 
  2. "List of captains: South Africa – Tests"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ 
  3. "Marylebone Cricket Club Players". CricketArchive. Retrieved 28 May, 2017.
  4. "Mitchell, Frank (MTCL893F)"A Cambridge Alumni Databaseকেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় 
  5. "Wisden Cricketers of the Year" (ইংরেজি ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-২১ 

আরও পড়ুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

আরও পড়ুন সম্পাদনা

ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
আর্নেস্ট উইলিয়াম টেলর
ইংরেজ জাতীয় রাগবি ইউনিয়ন অধিনায়ক
মার্চ, ১৮৯৬
উত্তরসূরী
আর্নেস্ট উইলিয়াম টেলর