স্যামি উডস

ইংরেজ ক্রিকেটার

স্যামুয়েল মোজেস জেমস স্যামি উডস (ইংরেজি: Sammy Woods; জন্ম: ১৩ এপ্রিল, ১৮৬৭ - মৃত্যু: ৩০ এপ্রিল, ১৯৩১) সিডনির অ্যাশফিল্ডে জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলীয় ক্রীড়াবিদ ছিলেন। অস্ট্রেলিয়াইংল্যান্ড উভয় দলের পক্ষেই টেস্ট ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন তিনি। রাগবি ইউনিয়নে ইংল্যান্ডের পক্ষে তেরোবার খেলেছেন। তন্মধ্যে দলের অধিনায়কত্ব করেন পাঁচটিতে। এছাড়াও ইংল্যান্ডে কাউন্টি পর্যায়ের ফুটবল ও হকিতে অংশ নিয়েছেন। তবে ক্রিকেটকেই প্রধান খেলা হিসেবে বেছে নেন।

স্যামি উডস
১৮৮৮ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে স্যামি উডস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
স্যামুয়েল মোজেস জেমস উডস
জন্ম(১৮৬৭-০৪-১৩)১৩ এপ্রিল ১৮৬৭
অ্যাশফিল্ড, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া
মৃত্যু৩০ এপ্রিল ১৯৩১(1931-04-30) (বয়স ৬৪)
টানটন, সমারসেট, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট মিডিয়াম
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫৪/১০০)
১৬ জুলাই ১৮৮৮ 
অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট২১ মার্চ ১৮৯৬ 
ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৯১ - ১৯১০সমারসেট
১৮৮৯-১৯০২মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব
১৮৮৮ - ১৮৯১কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা [ক] ৪০১
রানের সংখ্যা ১৫৪ ১৫৩৪৫
ব্যাটিং গড় ১৫.৪০ ২৩.৪২
১০০/৫০ ০/১ ১৯/৬২
সর্বোচ্চ রান ৫৩ ২১৫
বল করেছে ৪১২ ৪১১৯৫
উইকেট ১০ ১০৪০
বোলিং গড় ২৫.০০ ২০.৮২
ইনিংসে ৫ উইকেট ৭৭
ম্যাচে ১০ উইকেট ২১
সেরা বোলিং ৩/২৮ ১০/৬৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৫/– ২৭৯/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৭ মার্চ ২০১৭

চব্বিশ বছরের খেলোয়াড়ী জীবনে চার শতাধিক প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছেন। অধিকাংশ খেলাই নিজ কাউন্টি সমারসেটের পক্ষে খেলেন। ১৮৯৪ থেকে ১৯০৬ সময়কালে দলের অধিনায়কত্ব করেন স্যামি উডস

খেলোয়াড়ী জীবন

সম্পাদনা

১৮৮৮ সালে ষষ্ঠবারের মতো অস্ট্রেলীয় দল গঠিত হয় এবং ৩ টেস্ট ও ৩০-এর অধিক প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশগ্রহণের জন্য ইংল্যান্ড সফরে যায়।[] তুলনামূলকভাবে দলটি দূর্বলমানের ছিল। বিশেষ করে ব্যাটিংয়েও কেবলমাত্র চারজন খেলোয়াড়ের ইংরেজ পরিবেশে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল। সিডনি থেকে আগত অল-রাউন্ডার স্যামি জোন্স সফরের পূর্বে গুটি বসন্তে আক্রান্ত হন।[] মাত্র তেরোজন খেলোয়াড়কে একত্রিত করায় সফরকারী দলের সদস্য হবার জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।[]

১৮৯৬ সালে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন টেস্টের সিরিজ খেলার জন্য ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলেন।[] ক্রিকেট ইতিহাসে অসামান্য নজির স্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়ার বিলি মিডউইন্টার, বিলি মারডক, জন ফেরিস, স্যামি উডস ও আলবার্ট ট্রট। তারা প্রত্যেকেই ইংল্যান্ডের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ১৮৯৭ ও ১৮৯৯ সালে সমারসেটের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন।[][]

কাউন্টি ক্রিকেট

সম্পাদনা

পূর্বেকার মৌসুমে সমারসেটের সাফল্যের প্রেক্ষিতে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলার মর্যাদা পায় ও ১৮৯১ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপ খেলায় অংশগ্রহণ করে।[] এরফলে পূর্বেকার মৌসুমের তুলনায় উডস আরও বেশি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলার সুযোগ পান।[] পুরো মৌসুম জুড়েই বেশ ভালো বোলিং করেন ও ১৮৯১ মৌসুমে সমারসেটের শীর্ষস্থানীয় উইকেট সংগ্রাহক হন। কাউন্টি দলের পক্ষে ১৩৪ উইকেটের ৭২টি দখল করেন।[][১০]

১৮৯৪ সালে হার্বি হিউয়েটের পদত্যাগ করলে তিনি অধিনায়ক মনোনীত হন।[১১] ১৯০৬ সালে পর্যন্ত এ দায়িত্বে ছিলেন। এরফলে তিনি দীর্ঘসময় অধিনায়কত্ব করার সুযোগ পান।[১১]

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ

সম্পাদনা

শুরুতে সাময়িকভাবে রয়্যাল ওয়ারউইকশায়ার ফাসিলিয়ার্সে লেফটেন্যান্ট হিসেবে কাজ করেন। ১৯১৬ সালে ডেভন রেজিমেন্টে স্থানান্তরিত হন। ১৯১৭ সালে লেবার কোরে চলে যান। ১৪ মার্চ, ১৯১৯ তারিখে তাকে কমিশন দেয়া হলেও দূর্বল স্বাস্থ্যের কারণে জোরপূর্বক পদত্যাগ করেন। ফলে তাকে ক্যাপ্টেন পদবী দেয়া হয়।

 
১৮৯৫ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে স্যামি উডস

মূল্যায়ন

সম্পাদনা

সমারসেটের পক্ষে ক্রিকেট খেলার দীর্ঘদিন পরও তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন। মৃত্যুর পর তাকে টানটনে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।[১২] তার স্মরণে আর. সি. রবার্টসন-গ্লাসগো মন্তব্য করেন যে, টানটনকে জানতে চাইলে খেলা শুরুর পূর্বে গ্রীষ্মের সকালে আপনাকে অবশ্যই স্যাম উডসের কাছে যেতেই হবে। তিনি সমারসেটের মহামানব ছিলেন।[১৩]

এ.এ. থমসন তার সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন যে, স্যামি হার্ড হিটিং, ফাস্ট বোলিং ও ক্ষিপ্রগতি সম্পন্ন ছিলেন যা তাকে স্যার লিয়ারি কনস্ট্যান্টাইনের সাথে তুলনা করা যেতে পারে।[১৪]

পাদটীকা

সম্পাদনা
ক. ^ Woods played three Tests for Australia and three for England. His best batting and bowling figures were both for England.
খ. ^ For individual match scorecards of Woods' appearances for Somerset in August 1889 see [১৫][১৬][১৭][১৮]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Australia in England 1888"। CricketArchive। ২০১২-১১-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-১৩ 
  2. Altham, H.S.; Swanton, E.W. (১৯৩৮) [1926]। "England v Australia: 1882–1890"। A History of Cricket (Second সংস্করণ)। London: George Allen & Unwin Ltd.। পৃষ্ঠা 174। 
  3. Jiggens (1997), p34.
  4. "Test Matches played by Sammy Woods (6)"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১২-১০ 
  5. "Batting and Fielding for Somerset: County Championship 1897"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  6. "Batting and Fielding for Somerset: County Championship 1899"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  7. Foot (1986), p28.
  8. "First-class Batting and Fielding in Each Season by Sammy Woods"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-২০ 
  9. "First-class Bowling in Each Season by Sammy Woods"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-১৩ 
  10. "Bowling for Somerset: County Championship 1891"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১২-০৫ 
  11. Walsh, Richard (সম্পাদক), "Somerset Captains 1882–2010", Somerset County Cricket Club Yearbook 2009/10, Somerset County Cricket Club, পৃষ্ঠা 3 
  12. "Sammy became a legend with cider county"[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  13. R.C. Robertson-Glasgow, 46 Not Out, first published by Hollis & Carter, 1948, p129 of the Sportsman's Book Club edition.
  14. A.A. Thomson, Cricketers of My Time, 1967, p160.
  15. "Essex v Somerset"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-১৩ 
  16. "Marylebone Cricket Club v Somerset"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-১৩ 
  17. "Somerset v Warwickshire"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-১৩ 
  18. "Somerset v Hampshire"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-১৩ 

আরও দেখুন

সম্পাদনা

গ্রন্থপঞ্জী

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা

চিত্রমালা

সম্পাদনা
ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
হার্বি হিউয়েট
সমারসেট কাউন্টি ক্রিকেট অধিনায়ক
১৮৯৪-১৯০৬
উত্তরসূরী
লিওনেল প্যালেরিট