বিলি মিডউইন্টার

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

উইলিয়াম (বিলি) ইভান্স মিডউইন্টার (ইংরেজি: Billy Midwinter; জন্ম: ১৯ জুন, ১৮৫১ - মৃত্যু: ৩ ডিসেম্বর, ১৮৯০) গ্লুচেস্টারশায়ারের সেন্ট ব্রাইভেলসে জন্মগ্রহণকারী বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের পক্ষে চার টেস্টঅস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আট টেস্টে অংশ নিয়েছেন বিলি মিডউইন্টার[১] দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলেছেন। তবে ডানহাতে ব্যাটিংয়ের তুলনায় রাউন্ড আর্ম ডানহাতি মিডিয়াম বোলিংয়ে সফলতা পেয়েছেন তিনি।

বিলি মিডউইন্টার
আনুমানিক ১৮৮৪ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে বিলি মিডউইন্টার
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম(১৮৫১-০৬-১৯)১৯ জুন ১৮৫১
সেন্ট ব্রায়াভেলস, গ্লুচেস্টারশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু৩ ডিসেম্বর ১৮৯০(1890-12-03) (বয়স ৩৯)
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনরাউন্ড আর্ম ডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১০/৩১)
১৫ মার্চ ১৮৭৭ 
অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১ মার্চ ১৮৮৭ 
অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১২ ১৬০
রানের সংখ্যা ২৬৯ ৪৫৩৪
ব্যাটিং গড় ১৩.৪৫ ১৯.১৩
১০০/৫০ ০/০ ৩/১২
সর্বোচ্চ রান ৩৭ ১৩৭*
বল করেছে ১৮৩ ২৩৪৪০
উইকেট ২৪ ৪১৯
বোলিং গড় ২৫.২০ ১৭.৪১
ইনিংসে ৫ উইকেট ২৭
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৫/৭৮ ৭/২৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১০/০ ১২২/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৪ মার্চ ২০১৭

ক্রিকেট ইতিহাসে অসামান্য নজির স্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়ার বিলি মিডউইন্টার, বিলি মারডক, জন ফেরিস, স্যামি উডসআলবার্ট ট্রট। তারা প্রত্যেকেই ইংল্যান্ডের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের পক্ষ নিয়ে উভয় দেশের বিরুদ্ধেই খেলেছেন তিনি।

খেলোয়াড়ী জীবন সম্পাদনা

মার্চ, ১৮৭৭ সালে সর্বপ্রথম অনুষ্ঠিত টেস্টের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার সদস্যরূপে অভিষেক ঘটে তার। নয় বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসিত হন ও নিজ জন্মভূমি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অংশগ্রহণ করেন তিনি। মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত টেস্টে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে তিনি পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন।[২] ঐ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৭৮ রানে ৫ উইকেট দখল করেন তিনি। একই টেস্টে অন্য দুই খেলোয়াড় ইংল্যান্ডের আলফ্রেড শ ৩৮/৫ এবং অস্ট্রেলীয় টম কেন্ডল ৭/৫৫ লাভ করেছিলেন। মিডউইন্টার ও কেন্ডলের অনবদ্য নৈপুণ্যে অস্ট্রেলিয়া ৪৫ রানে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পায়।

১৮৭৬-৭৭ মৌসুমের দ্বিতীয় টেস্টে বিলি অংশ নেন। ৩১ মার্চ, ১৮৭৭ তারিখে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে তিনি ৬ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন। তিনি যখন নামেন তখন অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ৬০/৪। অভিষিক্ত হওয়া টমাস কেলি, ফ্রেড স্পফোর্থবিলি মারডক - এ তিনজনের সাথেই ব্যাটিং করেন তিনি। তিনি ৩১ রান তোলেন ও ঐ সময়ের শীর্ষ রান সংগ্রহকারী হন। তৃতীয় টেস্ট খেলোয়াড় হিসেবে খেলোয়াড়ী জীবনে ৫৩ রান করেন।

ঐ বছর শেষে তিনি ইংল্যান্ডে ফিরে যান ও ডব্লিউ. জি. গ্রেসের গ্লুচেস্টারশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে খেলেন। ১৮৭৮ সালে ইংল্যান্ড সফরে আসা অস্ট্রেলিয়া দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। দলের পক্ষে কয়েকটি খেলায়ও অংশ নেন। লর্ডসে ফিল্ডিংয়ের জন্য প্রস্তুতিকালীন গ্রেস তাকে ওভালে নিয়ে যান ও সারের বিপক্ষে মাঠে নামান। তিনি আর ঐ সফরে ফিরে যাননি। ১৮৮২ সাল পর্যন্ত স্বেচ্ছায় গ্লুচেস্টারশায়ারের পক্ষে খেলেন।

১৮৮১-৮২ মৌসুমে ইংল্যান্ড দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য মনোনীত হন। সেখানে তিনি চার টেস্টে অংশ নেন। এরপর ১৮৮২-৮৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসিত হন ও ভিক্টোরিয়ায় যোগদান করেন। ১৮৮৩-৮৪ মৌসুমে ইংল্যান্ডের প্রথম অ্যাশেজ সিরিজ জয়ের পর একমাত্র টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলার সুযোগ পান। ১৮৮৪ সালে ইংল্যান্ড সফরে অস্ট্রেলিয়ার সদস্য হন। ফলশ্রুতিতে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে একটি আন্তর্জাতিক দলে খেলার পর আরেকটি এবং তারপর পুনরায় মূল দলে খেলার সুযোগ লাভের অধিকারী হন।

টেস্ট পর্যায়ে তার ব্যাটিং তেমন আশাপ্রদ না হলেও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়া[৩] ও গ্লুচেস্টারশায়ারের পক্ষে বেশ অনুপ্রেরণাদায়ক ছিল। তার সময়কালে সেরা অল-রাউন্ডারদের অন্যতম ছিলেন তিনি।

একাধিক দলে অংশগ্রহণ সম্পাদনা

 
আনুমানিক ১৮৭৭ সালে ভিক্টোরিয়ার দলীয় সঙ্গী টম হোরান (শীর্ষে), ফ্রাঙ্ক অ্যালেন (বায়ে) ও জ্যাক ব্ল্যাকহামের সাথে মিডউইন্টারের (ডানে) স্থিরচিত্র

প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে দুইটি দেশের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন। ১৮৭৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে দুই টেস্টে অংশগ্রহণ করার পর ১৮৮১-৮২ মৌসুমে ইংল্যান্ডের পক্ষে চার টেস্ট খেলেন। এক বছরের মধ্যেই তিনি অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে পুনরায় টেস্টে অংশ নেন। ’দ্য বুলেটিন’ মন্তব্য করে যে, ‘অস্ট্রেলিয়ায় তিনি ইংরেজ; ইংল্যান্ডে অস্ট্রেলীয় এবং তিনি সর্বদাই নিজেকে ধন্যবাদ জানাতেন ও তাঁর দেশ ... যাই হোক না কেন’![৪]

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

১৮৮৯ সালের মধ্যে বিলি মিডউইন্টারের স্ত্রী ও দুই পুত্রের মৃত্যু ঘটে। এরপর তার ব্যবসায়ও ক্ষতিগ্রস্ত হয় অথবা ধ্বসের মুখোমুখি হয়। এরফলে তিনি হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন ও ১৮৯০ সালে বেন্দিগো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তাকে কিউ মানসিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় ও ঐ বছরই তার দেহাবসান ঘটে। মেলবোর্ন জেনারেল সিমট্রিতে তাকে সমাহিত করা হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Brenkley, Stephen (২২ মার্চ ২০০৯)। "On the Front Foot: Aussies in the shires? Now is the Billy Midwinter of our discontent"The Independent। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুন ২০১৩ 
  2. "1st Test: Australia v England at Melbourne, Mar 15–19, 1877"espncricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১২-১৮ 
  3. CricketArchive Player Oracle, Retrieved 4 March, 2017
  4. Huxley, John (২ জানুয়ারি ২০০৩)। "Beating the English at their own game"Sydney Morning Herald। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুন ২০১৩ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা