চান্দু সরবটে
চন্দ্রশেখর ত্রিম্বক সরবটে (হিন্দি: चंदू सरवटे; জন্ম: ২২ জুলাই, ১৯২০ - মৃত্যু: ২৩ ডিসেম্বর, ২০০৩) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মধ্যপ্রদেশের সাগর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞ ছিলেন।[১][২] ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫১ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
;ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | চন্দ্রশেখর ত্রিম্বক সরবটে | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | সাগর, মধ্যপ্রদেশ, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে: মধ্যপ্রদেশ, ভারত) | ২২ জুলাই ১৯২০|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২২ ডিসেম্বর ২০০৩ ইন্দোর, মধ্যপ্রদেশ, ভারত | (বয়স ৮৩)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ ব্রেক, লেগ ব্রেক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | অল-রাউন্ডার, প্রশাসক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৩৪) | ২০ জুলাই ১৯৪৬ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১৪ ডিসেম্বর ১৯৫১ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৩৬ | মধ্যপ্রদেশ ও বেরার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৪০ - ১৯৪৩ | মহারাষ্ট্র | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৪১ - ১৯৪৪ | হিন্দু | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৪৩ | বোম্বে | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৪৪ - ১৯৫৮ | হোলকার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৫৫ - ১৯৫৬ | মধ্য ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৫৮ - ১৯৬৮ | মধ্যপ্রদেশ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৬৮ | বিদর্ভ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৫ জানুয়ারি ২০২০ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মধ্যপ্রদেশ ও বেরার, হিন্দু, হোলকার, মধ্য ভারত, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, মুম্বই ও বিদর্ভ দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে অফ ব্রেক কিংবা লেগ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন চান্দু সরবটে।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
সম্পাদনা১৯৩৬-৩৭ মৌসুম থেকে ১৯৬৮-৬৯ মৌসুম পর্যন্ত চান্দু সরবটের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। সুদীর্ঘ ৩২ বছর প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। এ সময়ে তিনি মধ্যপ্রদেশ ও বেরার, মহারাষ্ট্র, হিন্দু, বোম্বে, হোলকার, মধ্যপ্রদেশ ও বিদর্ভ দলের পক্ষে খেলেছেন।
বেশ কয়েকবছর হোলকার দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। ১৬ বছর বয়সে জাতীয় প্রতিযোগিতায় অভিষেক ঘটে তার। তাসত্ত্বেও, ৫০ বছর বয়সেও মাঠে নেমেছিলেন তিনি। ১৯৫০-৫১ মৌসুমে চান্দু সরবটে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে হোলকারের সদস্যরূপে বাংলার বিপক্ষে তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৪৬ রান করেন।
১৯৪৫-৪৬ মৌসুমে হোলকারের সদস্যরূপে মহীশূরের বিপক্ষে ইনিংসে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন ৯/৬১। একই মৌসুমে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ান সার্ভিসেস দলের বিপক্ষে অনানুষ্ঠানিক টেস্টে অংশ নেন। এছাড়াও, ১৯৪৯-৫০ মৌসুমে প্রথমবারের মতো কমনওয়েলথ দলের পক্ষে খেলেন। এছাড়াও, রঞ্জী ট্রফি প্রতিযোগিতায় তিন দশকের অধিক সময় খেলেছেন। ১২ সেঞ্চুরি সহযোগে ৪৩.১৮ গড়ে ৪,৯২৩ রান ও ২৭.৪২ গড়ে ২৮১ উইকেট লাভ করে সেরা অল-রাউন্ডারের মর্যাদা পেয়েছেন।
সামগ্রিকভাবে সবগুলো প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশ নিয়ে ৩২.৭৩ গড়ে রান সংগ্রহ ও ২৩.৫৪ গড়ে উইকেট সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।[৩][৪][৫]
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনাসমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে নয়টিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন চান্দু সরবটে। ২০ জুলাই, ১৯৪৬ তারিখে ম্যানচেস্টারে স্বাগতিক ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৫১ তারিখে মুম্বইয়ে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
১৯৪৬ সালে ভারত দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। এ সফরেই ব্যাট হাতে দূর্দান্ত ইনিংস খেলে স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। মে, ১৯৪৬ সালে ওভালে সারে দলের বিপক্ষে সফররত ভারতীয় একাদশ প্রথমদিনে চা বিরতির অল্প পূর্বে দলটি ২০৫/৯ তুলে। এ অবস্থায় মাঠে নামেন ও শুট ব্যানার্জী’র সাথে জুটি গড়েন। এ জুটি অপরাজিত অবস্থায় দিন শেষ করে ও দ্বিতীয় দিন খেলা শুরু হলে নতুনভাবে রেকর্ড বহিতে স্থান করে নেয়।
শুট ব্যানার্জী ও তিনি শেষ উইকেট জুটিতে ২৪৯ রান তুলেন। এ সংগ্রহটি প্রথম নয় উইকেটে সংগৃহীত রানের চেয়েও বেশি ছিল। উভয় খেলোয়াড়ই শতরানের সন্ধান পেয়েছিলেন। ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে এটিই একমাত্র ঘটনা হিসেবে টিকে আছে বহাল তবিয়তে।[৬][৭] এছাড়াও, তাদের সংগৃহীত ২৪৯ রান প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে দশম ও একাদশ ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রানের জুটি হিসেবে রয়ে গেছে।[৮] শুট ব্যানার্জী ১২১ রান তুলে আউট হলেও তিনি ১২৪ রানে অপরাজিত অবস্থায় মাঠে ছাড়েন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং উদ্বোধনের পূর্বে বল হাতে নিয়ে ৫/৫৪ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েছিলেন। সারে দল অল্পের জন্যে ইনিংস পরাজয় এড়াতে সক্ষম হয়। ঐ খেলায় তার দল নয় উইকেটে জয়লাভ করেছিল।[৯]
১৯৪৮ সালে ভারত দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। মেলবোর্নে বিনু মানকড়ের সাথে প্রথম উইকেটে ১২৪ রান তুলেন। এ পর্যায়ে তাকে রে লিন্ডওয়াল, কিথ মিলার, বিল জনস্টন ও ইয়ান জনসনের বোলিং আক্রমণ প্রতিহত করে অগ্রসর হতে হয়েছিল।
মূল্যায়ন
সম্পাদনাভারতের পক্ষে জাতীয় পর্যায়ে মাঝারিমানের সফলতা লাভ করলেও ভারতীয় ঘরোয়া ক্রিকেটে অন্যতম দীর্ঘতম প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছিলেন। সচরাচর মাঝারিসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। তবে, কালে-ভদ্রে ভারতের পক্ষে ব্যাটিংয়েও নেমেছিলেন তিনি।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে অল-রাউন্ডার হিসেবে নয় টেস্টে অংশগ্রহণ করলেও আশানুরূপ সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারেননি। টেস্টে তার ব্যাটিং গড় ছিল মাত্র ১৩.০০ ও বোলিং গড় ছিল ১২৪.৬৬। ধীরগতিসম্পন্ন লেগ ব্রেক বোলিং করতেন তিনি।
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনা১৯৮০-এর দশকের শুরুরদিকে জাতীয় দল নির্বাচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তিন বছর জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্যরূপে কাজ করেছেন। এ পর্যায়ে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯৮৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের শিরোপা বিজয়ী ভারত দলের অন্যতম দল নির্বাচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি, মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার সম্পাদক ছিলেন। এছাড়াও, বেশ কয়েকবার নির্বাচন কমিটির সভাপতি ছিলেন।
কলা ও আইন বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন।[১০][১১] ২৩ ডিসেম্বর, ২০০৩ তারিখে ৮৩ বছর বয়সে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর এলাকায় চান্দু সরবটের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Memon, Ayaz (২৮ ডিসেম্বর ২০১১)। "Cricketers with a day job"। Livemint। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Did you know?"। The Hindu। ৪ নভেম্বর ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Chandu Sarwate"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১৮।
- ↑ "Holkar v Mysore in 1945/46" । CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১৮।
- ↑ "Bengal v Holkar in 1950/51" । CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১৮।
- ↑ Williamson, Martin (৪ আগস্ট ২০০৭)। "Tale of the tail"। ESPNcricinfo (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১৮।
- ↑ "Sting in the tail"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০১৭।
- ↑ "First-class Matches / Highest Partnerships by Wicket"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Surrey Escapes Innings Defeat Narrowly"। The Indian Express। ১৪ মে ১৯৪৬। পৃষ্ঠা 11।
- ↑ "Chandu Sarvate passes away"। The Telegraph (ইংরেজি ভাষায়)। Kolkata: ABP Group। ২৪ ডিসেম্বর ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১৮।
- ↑ "Chandu Sarwate dies at 83"। ESPNcricinfo (ইংরেজি ভাষায়)। ২৪ ডিসেম্বর ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১৮।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে চান্দু সরবটে (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে চান্দু সরবটে (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- Transcript of interview with Chandu Sarwate