জিমি অ্যাডামস

ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার

জেমস ক্লাইভ জিমি অ্যাডামস (ইংরেজি: Jimmy Adams; জন্ম: ৯ জানুয়ারি, ১৯৬৮) সেন্ট মেরির পোর্ট মারিয়া এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার, অধিনায়ক, কোচ ও ধারাভাষ্যকার। এছাড়াও কোচের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন।

জিমি অ্যাডামস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
জেমস ক্লাইভ অ্যাডামস
জন্ম (1968-01-09) ৯ জানুয়ারি ১৯৬৮ (বয়স ৫৬)
পোর্ট মারিয়া, সেন্ট মেরি, জ্যামাইকা
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স
ভূমিকাব্যাটসম্যান, অধিনায়ক, কোচ, ধারাভাষ্যকার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৯৯)
১৮ এপ্রিল ১৯৯২ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট৬ জানুয়ারি ২০০১ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৬৪)
১৭ ডিসেম্বর ১৯৯২ বনাম পাকিস্তান
শেষ ওডিআই৯ ফেব্রুয়ারি ২০০১ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৮৪ – ২০০১জ্যামাইকা
১৯৯৪নটিংহ্যামশায়ার
২০০১ – ২০০৩অরেঞ্জ ফ্রি স্টেট
২০০৩বার্কশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৫৪ ১২৭ ২০২ ২২৮
রানের সংখ্যা ৩০১২ ২২০৪ ১১২৩৪ ৫৩১৯
ব্যাটিং গড় ৪১.২৬ ২৮.৬২ ৩৯.৬৯ ৩৪.৫৩
১০০/৫০ ৬/১৪ ০/১৪ ২৫/৫৪ ১/৩৪
সর্বোচ্চ রান ২০৮* ৮২ ২০৮* ১১২
বল করেছে ২৮৫৩ ১৮৫৬ ৯৭৮৯ ৩৫৩২
উইকেট ২৭ ৪৩ ১০৩ ৮৩
বোলিং গড় ৪৯.৪৮ ৩৪.৮৬ ৪০.৩৯ ৩২.৮৯
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ৫/১৭ ৫/৩৭ ৫/১৭ ৫/৩৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৪৮/০ ৬৮/৫ ১৭৭/০ ১১৭/৭
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে জ্যামাইকার প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। এছাড়াও, নটিংহ্যামশায়ার, বার্কশায়ার ও অরেঞ্জ ফ্রি স্টেটের পক্ষে খেলেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন। এছাড়াও স্লো লেফট আর্ম বোলিংসহ গালি অঞ্চলে দক্ষ ফিল্ডিংয়ে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন জিমি অ্যাডামস। দলের প্রয়োজনে মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষকেরও দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার পর ২০১২ থেকে অক্টোবর, ২০১৬ সময়কালে কেন্টের প্রধান কোচের দায়িত্বে ছিলেন।[]

খেলোয়াড়ী জীবন

সম্পাদনা

কিশোর অবস্থাতেই ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে জ্যামাইকা দলে খেলার জন্য আমন্ত্রিত হন জিমি অ্যাডামস। তবে, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের শুরুটা তেমন দর্শনীয় ছিল না। তাস্বত্ত্বেও ১৯৯১-৯২ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট দলে খেলার জন্য অন্তর্ভুক্ত হন।

১৮ এপ্রিল, ১৯৯২ তারিখে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বার্বাডোসের ব্রিজটাউনে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। প্রথম বারো খেলায় প্রায় ৮৭ গড়ে ১,১৩২ রান তুলেন। কেবলমাত্র অস্ট্রেলীয় স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান টেস্টের ইতিহাসে তার তুলনায় এগিয়ে ছিলেন। টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনের মাঝামাঝি সময়কালে এ গড় এসে দাঁড়ায় ৬১.৩৪। কিন্তু শেষের দিকে ২৫.৫৮ গড়ে রান তুলেন যা টেস্টের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ পার্থক্যরূপে পরিগণিত হয়ে আসছে।

১৯৯২-৯৩ মৌসুমের ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৯২ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওডিআই অভিষেক হয় তার। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে অ্যাডিলেডে একই দলের বিপক্ষে ৫/৩৭ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে পোর্ট অব স্পেনে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওডিআইয়ে নিজস্ব সর্বোচ্চ ৮২ রান তুলেন। ১৯৯৫ সালে সেন্ট জোন্সে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ২০৮ রান তুলেন যা তার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ ছিল। একই দলের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৫/১৭ দাঁড় করান।

১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তার খেলার মান বেশ দূর্বলতর হতে থাকে। ইংল্যান্ড সফরে সমারসেটের বিপক্ষে খেলা চলাকালীন আন্দ্রে ফন ট্রুস্টের বলে চোয়ালে আঘাতপ্রাপ্ত হন।

ক্রিকেট বিশ্বকাপ

সম্পাদনা

১৯৯৬ ও ১৯৯৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেন। তন্মধ্যে, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় যৌথভাবে অনুষ্ঠিত ১৯৯৬ সালের প্রতিযোগিতায় রিচি রিচার্ডসনের নেতৃত্বাধীন ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল সেমি-ফাইনাল পর্যন্ত অগ্রসর হতে পেরেছিল ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজিত হয়।

অধিনায়কত্ব লাভ

সম্পাদনা

২০০০ সালে ব্রায়ান লারার পরিবর্তে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। তবে, ২০০০-০১ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে ৫-০ ব্যবধানে পরাজিত হবার পর অধিনায়কত্ব কেড়ে নিয়ে কার্ল হুপারকে দেয়া হয় ও তাকে দল থেকে বাদ দেয়া হয়। এ ঘটনার পর আরও কয়েকবছর ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যান। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রাদেশিক দল ফ্রি স্টেটের অধিনায়কের দায়িত্ব পান। ইংল্যান্ডে ল্যাশিংস বিশ্ব একাদশের পক্ষে আমন্ত্রিত খেলোয়াড় হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

সর্বমোট ৫৪ টেস্টে অংশগ্রহণের সৌভাগ্য হয় তার। তন্মধ্যে, ১৫ খেলায় দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ৪টিতে জয়, ৮টিতে পরাজয় ও ৩টি টেস্টে ড্র করতে সক্ষম হয় তার দল। ৪১.২৬ গড়ে টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবন শেষ করেন। সর্বমোট ২৬টি একদিনের আন্তর্জাতিকে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ১০টিতে জয় ও ১৪টি পরাজিত হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। বাদ-বাকী দুই খেলায় ফলাফল আসেনি।

২০০৪ সালে দীর্ঘ বাইশ বছরের খেলোয়াড়ী জীবন শেষে সকল স্তরের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। ২০০৫ ও ২০০৬ সালে ডার্বিশায়ার লীগে ডানস্টল সিসির পক্ষে খেলেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্কাই স্পোর্টসের পক্ষে ক্রিকেটে ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করছেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Jimmy Adams: Kent head coach leaves after five seasons in charge, BBC Sport, 2016-10-17. Retrieved 2016-10-17.

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা