হুগলি জেলা

পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলা

হুগলি জেলা বা হুগলী জেলা হলো ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান বিভাগের অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক জেলাচুঁচুড়া শহরে এই জেলার সদর দফতর অবস্থিত। হুগলি জেলা চারটি মহকুমায় বিভক্ত: চুঁচুড়া সদর, চন্দননগর, শ্রীরামপুরআরামবাগ

হুগলি জেলা
পশ্চিমবঙ্গের জেলা
পশ্চিমবঙ্গে হুগলির অবস্থান
পশ্চিমবঙ্গে হুগলির অবস্থান
দেশভারত
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
প্রশাসনিক বিভাগবর্ধমান
সদরদপ্তরহুগলি-চুঁচুড়া
সরকার
 • লোকসভা কেন্দ্রআরামবাগ (১টি বিধানসভা কেন্দ্র পশ্চিম মেদিনীপুরে), হুগলি, শ্রীরামপুর (২টি বিধানসভা কেন্দ্র হাওড়ায়)
 • বিধানসভা আসনহরিপাল, তারকেশ্বর, পুরশুড়া, আরামবাগ (ত.জা.), গোঘাট(ত.জা.), খানাকুল, সিঙ্গুর, চন্দননগর, চুচুঁড়া, বলাগড় (ত.জা.), পান্ডুয়া, সপ্তগ্রাম, ধনেখালি (ত.জা.), উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর, চাঁপদানি, চণ্ডীতলা, জাঙ্গিপাড়া
জনসংখ্যা (২০০১)
 • মোট৫০,৪১,৯৭৬
জনতাত্ত্বিক
 • সাক্ষরতা৭৫.৫৯ শতাংশ
 • লিঙ্গানুপাতপুরুষ ৫১.৩৫ শতাংশ, মহিলা ৪৮.৬৫ শতাংশ
প্রধান মহাসড়কএনএইচ ১৯, এনএইচ ১৬, গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড
গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত১,৫০০ মিমি
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট
শ্রীরামপুর কলেজের উইলিয়াম কেরি যাদুঘর―বাংলার ইতিহাসের সাক্ষী

নামকরণ সম্পাদনা

হুগলি জেলার নামকরণ করা হয়েছে এই জেলার অন্যতম প্রধান শহর হুগলির নামানুসারে। "হুগলি" নামটির প্রকৃত উৎস অজ্ঞাত। ইতিহাসবিদ যদুনাথ সরকারের মতে, ষোড়শ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে পর্তুগিজ বণিকেরা সপ্তগ্রাম থেকে সরে এসে অধুনা হুগলি অঞ্চলে তাদের পণ্য মজুত করার জন্য যে গুদাম বা গোলা তৈরি করেছিল, সেই "গোলা" শব্দ থেকেই "হুগলি" নামের উৎপত্তি। পর্তুগিজ ভাষায় "গোলা" শব্দের অর্থ "দুর্গপ্রাকারের বহিরাংশের উর্ধ্বভাগের উদ্গত অংশ"। সেই সূত্রে "হুগলি" নামটির সঙ্গে কোনও দুর্গের সম্পর্ক থাকলেও থাকতে পারে বলে যদুনাথ সরকার মনে করেন। তার মতে, পর্তুগিজদের ভাষায় "ওগোলিম" বা "ওগোলি" কথাটিই বাঙালিদের উচ্চারণে "হুগলি"-তে পরিণত হয়েছিল। শম্ভুচন্দ্র দে অবশ্য এই মত স্বীকার করেননি। তিনি বলেছেন, এই অঞ্চলে হুগলি নদীর তীরে প্রচুর হোগলা গাছ ছিল। হোগলা গাছ থেকেই নদী ও এলাকার নামকরণ হয় "হুগলি" এবং এই হুগলি নামটিই বিকৃত হয়ে "গোলিন" বা "গোলিম" হয়েছিল। প্রমাণস্বরূপ তিনি বলেন, আবুল ফজলের আইন-ই-আকবরি গ্রন্থে "হুগলি" নামটির সুস্পষ্ট উল্লেখ পাওয়া যায় এবং উক্ত গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, সাতগাঁও (সপ্তগ্রাম) ও হুগলি বন্দর দুটির ব্যবধান ছিল মাত্র আধ ক্রোশ এবং দুই বন্দরই ছিল বিদেশিদের প্রভাবাধীন। আইন-ই-আকবরি-র অল্পকাল পরে লেখা পর্তুগিজ লেখক ফারিয়া সোউজারের গ্রন্থে "গোলিন" নামটি পাওয়া যায়। ১৬২০ সালে হিউগেস ও পার্কারের পত্রাবলিতে হুগলিকে "গোল্লিন" নামে অভিহিত করা হয়েছে। আবার ১৬৬০ সালে ওলন্দাজ লেখক মাথুজ ফান দেন ব্রুক এই অঞ্চলটিকে "Oegli" ও "Hoegli" নামে উল্লেখ করেছেন, যা বাংলা "হুগলি" নামটির প্রায় অনুরূপ। এই জন্য শম্ভুচন্দ্র মনে করতেন, "হুগলি" নামটি কোনও বিদেশির দেওয়া নাম নয়। অন্য মতে, পর্তুগিজেরা হুগলি নদীর পশ্চিম তীরে বর্তমান হুগলি সংশোধনাগার ও বাবুগঞ্জের মধ্যবর্তী অঞ্চলে গোলঘাট (পর্তুগিজ উচ্চারণে "গোলগোট", "গোলগোটা", "গোলগোথা" বা "ঘোলঘাট") এলাকায় দুর্গ নির্মাণ করে এবং গোলঘাট দুর্গের নাম থেকেই "হুগলি" নামটির উৎপত্তি। ডি. জি. ক্রফোর্ড এই মত পোষণ করতেন। কিন্তু নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের মতে, গোলঘাট দুর্গকে কেন্দ্র করে হুগলি শহরের পত্তন অসম্ভব না হলেও "হুগলি" নামটি গোলঘাটের নাম থেকে উদ্ভূত হওয়া সম্ভবপর নয়।[১]

ইতিহাস সম্পাদনা

 
হুগলি জেলার ব্যান্ডেল চার্চ

বর্ধমানের দক্ষিণাংশকে বিচ্ছিন্ন করে ১৭৯৫ সালে ইংরেজরা প্রশাসনিক কারণে হুগলি জেলা তৈরি করে ছিল। হাওড়া তখনও হুগলি জেলার অংশ ছিল। জেলা বলতে কতগুলি থানার সমষ্টি। মহকুমার ধারণা তখনও জন্ম নেয়নি। এই জেলার দক্ষিণাংশ নিয়ে হাওড়া স্বতন্ত্র জেলা হিসাবে দেখা দিয়েছিল ১৮৪৩ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি। ১৮৭২ সালের ১৭ জুন ঘাটাল ও চন্দ্রকোনা থানা মেদিনীপুরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল।

 
হুগলি ইমামবাড়া
 
হুগলির গোঘাট থানার শ্যামবাজার গ্রামের ভুবনেশ্বর শিব মন্দির
 
হুগলির আঁটপুরের মন্দির

প্রাচীনকালে সুহ্ম বা দক্ষিণ রাঢ়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল হুগলি জেলা। নদী, খাল, বিল অধ্যুষিত এই অঞ্চল ছিল কৈবর্ত ও বাগদিদের আবাসস্থল। এদের উল্লেখ রয়েছে রামায়ণ, মহাভারত, মনুসংহিতা এবং পঞ্চম অশোকস্তম্ভ লিপিতে। মৎস্য শিকারই ছিল এদের প্রধান জীবিকা।

১৪৯৫ সালে বিপ্রদাস পিল্লাই রচিত মনসামঙ্গল কাব্যে হুগলি নামের উল্লেখ দেখা যায়। এর থেকে বোঝা যায় জেলার নামকরণ বিদেশীকৃত নয়। কারণ এই রচনা কালের ২২ বছর পর পর্তুগিজরা বাংলায় প্রবেশ করেছিল। ১৫৯৮ সালে রচিত আবুল ফজলের আইন-ই-আকবরি গ্রন্থেও হুগলি নামের স্পষ্ট উল্লেখ আছে। ত্রিবেনীতে অবস্থিত জাফর খাঁর মসজিদ ও তার মাদ্রাসায় উল্লিখিত প্রতিষ্ঠা তারিখ থেকে অনুমান করা যায় ১২৯৮ সালে জেলার উত্তারংশ মুসলমান শাসনভুক্ত হয়েছিল। ত্রিবেনী ও সাতগাঁ(সংস্কৃতে সপ্তগ্রাম)পরে ছিল স্থানীয় মুসলমান শাসকদের সদর কার্যালয়। সাতগাঁয়ে এই সময় কার একটা টাঁকশাল ছিল। ১৫১৭ সালে পর্তুগিজরা ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বঙ্গদেশে প্রবেশ করে। ১৫৩৬ সালে সুলতান মাহমুদ শাহের দেওয়া সনদের বলে পর্তুগিজরা ব্যবসা শুরু করে সপ্তগ্রামে। ষোড়শ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে পলি জমে সরস্বতী নদীর নাব্যতা নষ্ট হয়ে ভাগীরথীর খাতে এই প্রবাহ পরিবর্তিত হলে পর্তুগিজরা ভাগীরথীর তীরে হুগলি বন্দর গড়ে তোলে। ১৮২৫ সালে ওলন্দাজ ও ১৬৩৮ ইংরেজ এই বন্দরে ব্যবসা শুরু করেছিল। ওলন্দাজরা পরে চুঁচুড়ার দখল পায় নবাবদের আনুকূল্যে। ১৮২৫ সালের ৭ মে চুঁচুড়া ইংরেজদের দখলে আসে। চুঁচুড়ার নিকটবর্তী চন্দননগর ছিল ফরাসিদের দখলে। ১৮১৬ সালের পর থেকে চন্দননগর নিরবচ্ছিন্ন ভাবে ফরাসিদের হাতে ছিল। ১৯৫০ সালের ২রা মে এই শহর ভারত সরকারের কর্তৃত্বাধীন আসে। আর শ্রীরামপুর নগরী ছিল ১৭৫৫ থেকে ১৮৪৫ পর্যন্ত দিনেমারদের দখলে।

অর্থনীতি ও শিল্পে উন্নত হলেও জেলার ৫০ শতাংশ মানুষ কৃষির উপর নিরভারশীল। সমগ্র আরামবাগ মহকুমা ও জাঙ্গিপাড়া, পাণ্ডুয়া, ধনিয়াখালি এগুলি কৃষিভিত্তিক। এছাড়াও সপ্তগ্রাম বর্তমানে আদিসপ্তগ্রাম, ব্যান্ডেল ও হুগলি ছিল পোর্তুগিজদের উপনিবেশ।

ভাষা সম্পাদনা

পশ্চিমবঙ্গকে পাঁচটি উপভাষা অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। সমগ্র হুগলি জেলা রাঢ়ী উপভাষা অঞ্চলের মধ্যে অবস্থান করে। বর্ধমান, বীরভূম, হাওড়া, নদিয়া, কলকাতা, মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে রাঢ়ী অঞ্চলের বিস্তার। স্থানভেদে রাঢ়ী উপভাষার রূপভেদ আছে। রাঢ়ীকে মূল দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে – পশ্চিম রাঢ়ী ও পূর্ব রাঢ়ী। হুগলি জেলা পূর্ব রাঢ়ীর অন্তর্গত। পূর্ব রাঢ়ীর উপরেই বাংলা মান্যভাষা প্রতিষ্ঠিত। উপভাষা যেমন জেলা ভেদে ভিন্নতা চোখে পড়ে, তেমনি জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মধ্যে পার্থক্য লক্ষ করা যায়। রাঢ়ীর বিভাষা (Sub-dialect) অঞ্চল হল হুগলি। মৌখিক উপভাষা স্থানভেদে যেমন ভিন্ন হয় তেমনি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থানের কারণে আলাদা হতে পারে। হুগলির সীমানায় বর্ধমান, বাঁকুড়া, নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগণা, মেদিনীপুর ও হাওড়া জেলা অবস্থান করছে, তাই ওই সমস্ত জেলার ভাষার প্রভাব সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলিতে পড়েছে। আদীবাসী অধুষ্যিত অঞ্চলে সাঁওতাল, কোঁড়া, মুণ্ডারি ভাষা প্রচলিত। শহরাঞ্চলে হিন্দিভাষীর বসবাস দেখা যায়।

গ্রীয়ারসন সাহেব প্রথম বাংলা উপভাষা অঞ্চলকে জরিপ করেন। তিনি সমগ্র বাংলাকে দুটি ভাগে ভাগ করেন। Western ও Estern। প্রথমটির কেন্দ্র কলকাতা, দ্বিতীয়টির ঢাকা। হুগলি নদীর তীরবর্তী হুগলি জেলার ভাষাকেই পশ্চিমা উপভাষার আদর্শ রূপ বলে অভিমত জানিয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ-পশ্চিম ভাগে বর্ধমান বিভাগের অন্তর্গত একটি বিস্তৃত সমভূমি অঞ্চলের নাম রাঢ়। এর সীমানা পশ্চিমে ছোটনাগপুর মালভূমির প্রান্তভাগ থেকে পূর্বে গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলের পশ্চিম সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত। এই অঞ্চল ঈষৎ ঢেউ খেলানো ও এর ঢাল পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে।

‘রাঢ়’ শব্দটি এসেছে সাঁওতালি ভাষার ‘রাঢ়ো’ শব্দটি থেকে, যার অর্থ ‘পাথুরে জমি’। অন্যমতে, গঙ্গারিডি রাজ্যের নাম থেকে এই শব্দটি উৎপন্ন। সুপ্রাচীনকাল থেকেই এই অঞ্চল বাংলার সাংস্কৃতিক জগতের অন্যতম প্রধান অবদানকারী।

প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যেও রাঢ়ের উল্লেখ পাওয়া যায়। মহাভারতে সুহ্ম ও তাম্রলিপ্তকে পৃথক করে দেখা হলেও গুপ্ত শাসনে রচিত দণ্ডীর ‘দশকুমারচরিত’-এ বলা হয়েছে ‘সুহ্মেষু দামলিপ্তাহ্বয়স্য নগরস্য’। অর্থাৎ দামলিপ্ত (তাম্রলিপ্ত) সুহ্মেরই একটি নগর ছিল। ধোয়ীর পবনদূত কাব্যে রাঢ় প্রসঙ্গে বলা হয়েছে – গঙ্গাবীচিপ্লুত পরিসরঃ সৌধমালাবতংসো বাস্যতুচ্চৈ স্তুয়ি রসময়ো বিস্ময়ং সুহ্ম দেশঃ। অর্থাৎ, ‘যে-দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল গঙ্গাপ্রবাহের দ্বারা প্লাবিত হয়, যে দেশ সৌধশ্রেণীর দ্বারা অলংকৃত, সেই রহস্যময় সুহ্মদেশ তোমার মনে বিশেষ বিস্ময় এনে দেবে।’ পরবর্তীকালে রচিত ‘দিগ্বিজয়-প্রকাশ’-এ বলা হয়েছে – গৌড়স্য পশ্চিমে ভাবে বীরদেশস্য পূর্বতঃ। দামোদরোত্তরে ভাগে সুহ্মদেশঃ প্রকীর্তিতঃ। অর্থাৎ, গৌড়ের পশ্চিমে, বীরদেশের (বীরভূম) পূর্বে, দামোদরের উত্তরে অবস্থিত প্রদেশই সুহ্ম নামে খ্যাত।

এই সব বর্ণনার প্রেক্ষিতে বর্তমান হুগলি জেলাকেই প্রাচীন রাঢ়ের কেন্দ্রস্থল বলে অনুমান করা হয় এবং এর সীমানা বীরভূম থেকে মেদিনীপুর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল বলে ধারণা।

হুগলি জেলার ভাষায় ক্রিয়ার সাথে 'উনি'বা 'লুম'প্রত্যয় যুক্ত হতে দেখা যায়। যেমন - খাবুনি,যাবুনি,করবুনি,শোবুনি,খেলুম, গেলুম ইত্যাদি। কখনো ক্রিয়ার সংক্ষিপ্ত রূপের প্রয়োগ ঘটে। যেমন - চললাম> চললুম> চননু,বননু,করনু ইত্যা। কিছু শব্দ প্রয়োগ এখানের আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরেছে। যেমন - বাকুল(বাড়ির অন্দরমহল),মোদ্দার (দরজার চৌকা), লাদ (গরু বা মহিষের বিষ্ঠা),পাট-সারা (কাজ শেষ করা) ইত্যাদি।

মহকুমা সম্পাদনা

 
হুগলি জেলার মহকুমা
 
হুগলি জেলার গড় মান্দারন

হুগলি জেলা নিম্নলিখিত প্রশাসনিক মহকুমাগুলিতে বিভক্ত:[২]

মহকুমা সদর
আয়তন
কিমি
জনসংখ্যা
(২০১১)
গ্রামীণ
জনসংখ্যা %
(২০১১)
শহরাঞ্চলীয়
জনসংখ্যা %
(২০১১)
চুঁচুড়া হুগলি-চুঁচুড়া ১,১৪৮.১৫ ১,৬৫৭,৫১৮ ৬৮.৬৩ ৩১.৩৭
চন্দননগর চন্দননগর ৫০৮.০৮ ১,১২৭,১৭৬ ৫৮.৫২ ৪১.৪৮
শ্রীরামপুর শ্রীরামপুর ৪২২.৪৫ ১,৪৬৯,৮৪৯ ২৬.৮৮ ৭৩.১২
আরামবাগ মহকুমা আরামবাগ ১,০৫৮.৮৭ ১,২৬৪,৬০২ ৯৪.৭৭ ৫.২৩
হুগলি জেলা চুঁচুড়া ৩,১৪৯.০০ ৫,৫১৯,১৪৫ ৬১.৪৩ ৩৮.৫৭

জনপরিসংখ্যান সম্পাদনা

হুগলি জেলায় ধর্ম (২০১১)[৩]
হিন্দুধর্ম
  
৮২.৮৯%
ইসলাম
  
১৫.৭৭%
খ্রিস্টধর্ম
  
০.১৩%
শিখধর্ম
  
০.০৫%
বৌদ্ধধর্ম
  
০.০৩%
জৈনধর্ম
  
০.০৪%
অন্যান্য
  
১.১০%

হুগলি জেলার ভাষা (২০১১)[৪][৫]

  বাংলা (৮৭.৪৯%)
  হিন্দি (৭.৭৭%)
  সাঁওতালি (২.৩৭%)
  উর্দু (১.৭২%)
  অন্যান্য (০.৬৫%)

২০১১ সালের জনগণনার তথ্য অনুযায়ী, হুগলি জেলার মোট জনসংখ্যা ৫,৫১৯,১৪৫,[৩] যা ডেনমার্ক রাষ্ট্রের[৬] বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় সমান।[৭] জনসংখ্যার নিরিখে ভারতের ৬৪০টি জেলার মধ্যে হুগলি জেলা ষোড়শ স্থানাধিকারী।[৩] এই জেলার জনঘনত্ব ১,৭৫৩ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (৪,৫৪০ জন/বর্গমাইল).[৩]

২০০১-২০১১ দশকে হুগলি জেলার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ৯.৪৯ শতাংশ।[৩] এই জেলার লিঙ্গানুপাতের হার প্রতি ১০০০ পুরুষে ৯৫৮ জন মহিলা[৩] এবং সাক্ষরতার হার ৮২.৫৫ শতাংশ।[৩]

বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সম্পাদনা

এই তালিকাটি সেই সকল বিশিষ্ট ব্যক্তিদের যাঁরা অথবা যাঁদের পূর্বপুরুষ হুগলি জেলার মানুষ:

  • মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিকি- বিশিষ্ট ইসলামি পীর (সুফি বা সাধক) ও সমাজ সংস্কারক, দাদাহুজুর নামেই তিনি বেশি পরিচিত । জাঙ্গিপাড়া সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অন্তর্গত ফুরফুরা গ্রামে তার মাজার বা সমাধি রয়েছে।
  • হাজী মুহাম্মদ মহসীন-জন্ম ১৭৩২ মৃত্যু ১৮১২। বাংলার একজন জনহিতৈষী, দানবীর ও একজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি।
  • আব্বাস সিদ্দিকী- বিশিষ্ট ধর্ম গুরু বিখ্যাত রাজনীতিবিদ ও একজন সমাজ সেবক এবং শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি।
  • রামগতি ন্যায়রত্ন - ঊনবিংশ শতাব্দীর সাহিত্যাকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্র বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজ সচেতক তথা প্রখ্যাত গ্রন্থকার।
  • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়- জন্ম দেবানন্দপুর গ্রামে৷ তিনি ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রখ্যাত একজন বাঙালী লেখক, ঔপন্যাসিক, ও গল্পকার।
  • অক্ষয়চন্দ্র সরকার- জন্মস্থান চুঁচুড়া৷ তিনি ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট বাঙালি কবি, প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য সমালোচক।
  • রাজা দিগম্বর মিত্র- জন্মস্থান কোন্নগর৷ তিনি ছিলেন ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, দেশহিতৈষী ও লেখক। তিনি কলকাতার প্রথম বাঙালী শেরিফ৷
  • কানাইলাল দত্ত- জন্মস্থান চন্দননগর৷ তিনি ভারতের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী ছিলেন।
  • রামগোপাল ঘোষ- তার পূর্বপুরুষের আদিবাস ছিল মগরার নিকট বাগাটিতে ৷ তিনি ছিলেন ইয়ং বেঙ্গল গ্রুপের একজন নেতা, একজন সফল ব্যবসায়ী, বাগ্মী ও একজন সমাজ সংস্কারক। তাঁকে "ভারতের ডেমোস্থেনেস" বলা হয়। রামজীবন ঘোষ জন এলিয়ট ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুনকে মেয়েদের স্কুল প্রতিষ্ঠায় সাহায্যকারী অন্যতম ব্যক্তি ছিলেন।
  • আশাপূর্ণা দেবী- তার পূর্বপুরুষের আদিবাস বেগমপুর৷ তিনি ছিলেন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার ও শিশুসাহিত্যিক।
  • ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়- জন্মস্থান খন্যান৷ তিনি একজন বাঙালি ধর্মপ্রচারক, তিনি বেশ কয়েকটি পত্রিকা প্রকাশ ও পরিচালনা করেছিলেন। তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ছিলেন।
  • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়- তার পূর্বপুরুষরা হুগলি জেলার দেশমুখো গ্রামের মানুষ ছিলেন৷ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন উনিশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালি ঔপন্যাসিক। বাংলা গদ্য ও উপন্যাসের বিকাশে তার অসীম অবদানের জন্যে তিনি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অমরত্ব লাভ করেছেন। তাঁকে সাধারণত প্রথম আধুনিক বাংলা ঔপন্যাসিক হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে গীতার ব্যাখ্যাদাতা হিসাবে, সাহিত্য সমালোচক হিসাবেও তিনি বিশেষ খ্যাতিমান। তিনি বাংলা ভাষার আদি সাহিত্যপত্র বঙ্গদর্শনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছদ্মনাম হিসেবে "কমলাকান্ত" নামটি বেছে নিয়েছিলেন। তাঁকে "বাংলা উপন‍্যাসের জনক" বলা হয়। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে তার অতুলনীয় অবদানের জন্য তাঁকে 'সাহিত্যসম্রাট' উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে।
  • রামনিধি গুপ্ত- জন্ম ত্রিবেণীর নিকটে চাঁপতায়৷ তিনি সাধারণত নিধু বাবু নামে পরিচিত, বাংলা টপ্পা সঙ্গীতের একজন মহান সংস্কারক। তার পূর্ব পর্যন্ত টপ্পা এক ধরনের অরুচিকর গান হিসেবে বিবেচিত হতো। তার গানের ভক্তরা অধিকাংশই সেকালের ধনাঢ্য সম্ভ্রান্ত ছিলেন। পরবর্তীকালে, ভগিনী নিবেদিতা তার লেখা গানের প্রভূত প্রশংসা করেছিলেন। এদেশে তিনিই প্রথম ইংরেজি অভিজ্ঞ কবিয়াল এবং প্রথম স্বাদেশিক সঙ্গীতের রচয়িতা।
  • রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়- হুগলি জেলার বাকুলিয়াতে জন্ম৷ পৈতৃক নিবাস গুপ্তিপাড়ার নিকট রামেশ্বরপুরে৷ তিনি একজন কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক এবং প্রবন্ধকার।
  • মতিলাল রায়- জন্মস্থান চন্দননগর৷ তিনি একজন বাঙালি বিপ্লবী এবং "প্রবর্তক সংঘ"-এর প্রতিষ্ঠাতা৷
  • সাগরলাল দত্ত, বাঙালী জনহৈতেষী ব্যবসায়ী, দানবীর। তিনি চুঁচুড়ার বিখ্যাত দত্ত পরিবারের সন্তান
  • দ্বারকানাথ মিত্র- জনাইয়ের বিখ্যাত মিত্র পরিবারের সন্তান৷ তিনি কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী ও বিচারপতি ছিলেন৷
  • কিশোরীচাঁদ মিত্র- তার পূর্বপুরুষের আদিবাস ছিল হুগলি জেলায়৷ তিনি লেখক, সরকারি কর্মকর্তা, সমাজসেবক। তার ভাই প্যারীচাঁদ মিত্র৷
  • প্যারীচাঁদ মিত্র- তার পূর্বপুরুষের আদিনিবাস ছিল হুগলি জেলায়৷ তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রথম ঔপন্যাসিক৷ তার ছদ্মনাম "টেকচাঁদ ঠাকুর"৷
  • নবগোপাল মিত্র- কোন্নগর এর বিখ্যাত মিত্র বংশের সন্তান৷ তিনি ছিলেন একাধারে একজন ভারতীয় নাট্যকার, কবি, প্রাবন্ধিক, দেশপ্রেমিক এবং অন্যদিকে হিন্দু জাতীয়তাবাদের প্রতিষ্ঠাকর্তাদের মধ্যে অন্যতম। হিন্দু জাতীয়তাবাদ সৃষ্টির পটভূমিকায় যে অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান রাজনারায়ণ বসু উদ্বোধন করেছিলেন, সেই হিন্দু মেলা তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এছাড়া তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ন্যাশনাল প্রেস, ন্যাশনাল পেপার, ন্যাশনাল সোসাইটি, ন্যাশনাল স্কুল, ন্যাশনাল থিয়েটার, ন্যাশনাল স্টোর, ন্যাশনাল জিমন্যাসিয়াম এবং ন্যাশনাল সার্কাস; এগুলোর জন্যে তার ডাকনাম দেওয়া হয়েছিল 'ন্যাশনাল মিত্র'।
  • ভূদেব মুখোপাধ্যায় - আদিবাস খানাকুল থানার অন্তর্গত নতিবপুর৷ তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট লেখক এবং শিক্ষাবিদ।
  • ব্রজেন্দ্রনাথ শীল- জন্মস্থান হরিপাল৷ তিনি ছিলেন একজন বাঙালি দার্শনিক ও বহুবিদ্যাবিশারদ পণ্ডিত৷
  • রাজা রামমোহন রায়- পৈতৃক নিবাস হুগলি জেলার রাধানগর৷ তিনি ছিলেন ব্রাহ্মসভার প্রতিষ্ঠাতা এবং বাঙালী দার্শনিক। তৎকালীন রাজনীতি, জনপ্রশাসন, ধর্মীয় এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তিনি উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখতে পেরেছিলেন। তিনি সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত হয়েছেন, সতীদাহ প্রথা বিলুপ্ত করার প্রচেষ্টার জন্য। তাঁকে "ভারতীয় নবজাগরণের জনক" 'ভারতের জাতীয়তাবাদের জনক','ভারতের প্রমিথিউস' ইত্যাদি বলা হয়৷
  • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর- তার পূর্বপুরুষের আদিবাস হুগলি জেলার অন্তঃপাতী বনমালীপুর গ্রাম৷ তিনি উনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার।
  • নিবারণচন্দ্র মুখোপাধ্যায়- হুগলি জেলায় জন্ম৷ ব্রাহ্ম সমাজ সংস্কারক৷
  • সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়- হুগলির জেলার বাণীপুরে জন্মগ্রহণ করেন৷ ভারতে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পথিকৃৎ ছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন শ্রী অরবিন্দ। তার পুত্র এয়ার মার্শাল সুব্রত মুখার্জী৷
  • এয়ার মার্শাল সুব্রত মুখার্জী- তার আদিবাস হুগলি জেলায়৷ তিনি ছিলেন ভারতীয় হিসাবে দেশের বিমান বাহিনীর প্রথম চীফ অব দ্যা এয়ার স্টাফ বা বিমান বাহিনীর প্রধান কর্মকর্তা; তার পূর্বের প্রধানগণ সবাই ব্রিটিশ ছিলেন। তিনি সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় এর পুত্র৷
  • স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়- তার পূর্বপুরুষের গ্রাম জিরাট৷ তিনি "বাংলার বাঘ" নামে খ্যাত৷ তিনি ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এর ভাইস-চ্যান্সেলর৷
  • গঙ্গাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়- জন্মস্থান জিরাট৷ পেশায় একজন চিকিৎসক৷ তিনি ছিলেন স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় এর পিতা৷
  • ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়- তার পূর্বপুরুষের গ্রাম জিরাট৷ তিনি ছিলেন একজন ভারতীয় পণ্ডিত ও নেতা। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী প্রথম হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল ভারতীয় জন সংঘ গঠন করেন। ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী হিন্দু মহাসভার সভাপতি ছিলেন। তিনি স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়এর পুত্র৷
  • শিবচন্দ্র দেব- জন্মস্থান কোন্নগর৷ তিনি নব্যবঙ্গ দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন৷ তিনি কোন্নগরের প্রভূত উন্নতি করেন৷ তার প্রচেষ্টায় কোন্নগরে রেলওয়ে স্টেশন, পোস্ট অফিস, বাঙলা বিদ্যালয়, ইংরেজি বিদ্যালয়, ডিসপেন্সারি, ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়৷
  • অক্ষয়কুমার বড়াল- আদিবাস চন্দননগর৷ তিনি হলেন উনিশ শতকের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি৷
  • জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন - জন্মস্থান ত্রিবেণী৷ তিনি একজন বাঙালি শ্রুতিধর ও সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত।
 
হুগলির কামারপুকুরে রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের কুটির
  • রামকৃষ্ণ পরমহংস - জন্মস্থান কামারপুকুর৷ পূর্বাশ্রমের নাম গদাধর চট্টোপাধ্যায়৷ তিনি ঊনবিংশ শতকের এক প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি যোগসাধক৷
  • নীলমণি দাশ- আদিনিবাস হুগলি জেলায়৷ তিনি ছিলেন একজন খ্যাতনামা বাঙালি ব্যায়ামবিদ। হিন্দু মহাসভার একটি অনুষ্ঠানে তিনি দেহসৌষ্ঠব প্রদর্শন, লোহা বাঁকানো, বিম ব্যালেন্সিং প্রভৃতি খেলা দেখান এবং "আয়রন-ম্যান" (লৌহমানব) উপাধি লাভ করেন৷ তিনি শারীরশিক্ষক হিসাবে ক্যালকাটা অ্যাকাডেমি, ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট, অল ইন্ডিয়া রেডিও সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি বেশ কিছু বই এবং চার্ট লিখেছিলেন। তার প্রতিষ্ঠিত সংস্থা "আইরনম্যান হেলথ হোম"৷
  • নগেন্দ্রনাথ বসু- জন্মস্থান মাহেশ , শ্রীরামপুর৷ তিনি বাংলা বিশ্বকোষের সংকলক, বাংলা ভাষায় প্রথম বিশ্বকোষ এবং হিন্দিতে প্রথম বিশ্বকোষের লেখক, পাশাপাশি প্রত্নতাত্ত্বিক ও ইতিহাসবিদও ছিলেন।
  • বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় - তৎকালীন বিহারে জন্মগ্রহণ করলেও তার আদিবাস হুগলি জেলার শিয়াখালা৷ তিনি একজন বাঙালি কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ও কবি। তিনি "বনফুল" ছদ্মনামেই অধিক পরিচিত।
  • অমিয় চক্রবর্তী - জন্মস্থান শ্রীরামপুর৷ তিনি ছিলেন একজন বাঙালী সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ , শীর্ষস্থানীয় আধুনিক কবি এবং সৃজনশীল গদ্যশিল্পী৷ তিনি শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
  • গণপতি চক্রবর্তী- জন্মস্থান শ্রীরামপুর৷ তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত জাদুকর। তাঁকে "বাংলার আধুনিক জাদুবিদ্যার পথিকৃৎ" বলে গণ্য করা হয়। তিনি পি সি সরকার এবং কে লালের পরামর্শদাতা ছিলেন।
  • বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়- তৎকালীন বিহারে জন্মগ্রহণ করা এই ব্যক্তির আদিনিবাস চাতরা, শ্রীরামপুর৷ তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক ও ছোট গল্পকার।
  • গোবিন্দ অধিকারী - জন্মস্থান হুগলি জেলার জাঙ্গিপাড়া৷ তিনি ছিলেন উনিশ শতকের একজন যাত্রার অভিনেতা এবং গীতিকার।
  • কালী মির্জা- জন্মস্থান গুপ্তিপাড়া৷ তিনি ছিলেন একজন টপ্পা রচয়িতা ও গায়ক। তার প্রকৃত নাম কালীদাস মুখোপাধ্যায়৷
  • স্বামী শ্রী যুক্তেশ্বর গিরি- জন্মস্থান শ্রীরামপুর৷ তিনি ছিলেন একজন যোগসাধক এবং পরমহংস যোগানন্দস্বামী সত্যানন্দ গিরির গুরু৷
  • বিনোদ বিহারী মুখোপাধ্যায়- আদিবাস হুগলি জেলার গরলগাছা৷ তিনি একজন ভারতীয় শিল্পী। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন।
  • প্যারীমোহন সেনগুপ্ত- জন্মস্থান হুগলি জেলার গোপীনাথপুর৷ তিনি ছিলেন বিশিষ্ট কবি, প্রবন্ধকার ও শিশুসাহিত্যিক।
  • হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়- জন্মস্থান হুগলি জেলার রাজবলহাট এর নিকট গুলিটা গ্রাম৷ পৈতৃক নিবাস হুগলি জেলার উত্তরপাড়া৷ মধুসূদনের পরবর্তী কাব্য রচয়িতাদের মধ্যে ইনি সে সময় সবচেয়ে খ্যাতিমান ছিলেন। বাংলা মহাকাব্যের ধারায় হেমচন্দ্রের বিশেষ দান হচ্ছে স্বদেশ প্রেমের উত্তেজনা সঞ্চার৷
  • নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়- জন্মস্থান আরামবাগ এর নিকট সালেপুর গ্রাম৷ তিনি ছিলেন একজন সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত ও বৈয়াকরণিক৷
  • মুরারী মোহন মুখোপাধ্যায়- পৈতৃক নিবাস চুঁচুড়া৷ তিনি ছিলেন একজন প্লাস্টিক সার্জন৷
  • কৃষ্ণচন্দ্র ভট্টাচার্য- জন্মস্থান শ্রীরামপুর৷ কৃষ্ণচন্দ্র ভট্টাচার্য কে কে ভট্টাচার্য নামেও পরিচিত ছিলেন৷ তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন দার্শনিক ছিলেন৷
  • অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় - আদিনিবাস শিয়াখালা৷ তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার। বাংলার খ্যাতনামা সাহিত্যিক বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় অর্থাৎ বনফুল তার অগ্রজ ছিলেন।
  • শিশির কুমার মিত্র- জন্মস্থান কোন্নগর৷ তিনি ছিলেন একজন পদার্থবিদ। অবিভক্ত ভারতে বেতার যোগাযোগ সম্পর্কিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাদান শুরু হয় ডক্টর শিশির কুমার মিত্রের হাত ধরে।
  • পণ্ডিত মধুসূদন গুপ্ত- জন্মস্থান বৈদ্যবাটি৷ তিনি ছিলেন একজন অনুবাদক এবং আয়ুর্বেদাচার্য। তিনি ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে সুশ্রুতের পর প্রথম ভারতীয় হিসাবে পাশ্চাত্যরীতিতে শব ব্যবচ্ছেদ করেন।
  • প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়- পৈতৃক নিবাস ছিল হুগলি জেলার গুরাপ৷ তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের অপ্রতিদ্বন্দ্বী কথাসাহিত্যিক, ছোটগল্পকার ও ঔপন্যাসিক৷
  • অরবিন্দ ঘোষ- ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করা এই বিপ্লবী-সাধকের পৈতৃক বাসস্থান কোন্নগর৷ তিনি ছিলেন কোন্নগর এর বিখ্যাত ঘোষ বংশের সন্তান৷ তিনি ছিলেন একজন রাজনৈতিক নেতা, বিপ্লবী , আধ্যাত্মসাধক এবং দার্শনিক।
  • বারীন্দ্রকুমার ঘোষ- কোন্নগর এর বিখ্যাত ঘোষ পরিবারের সন্তান৷ তিনি ছিলেন অবিভক্ত ভারতের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে যুক্ত একজন অগ্নিযুগের বিপ্লবী। তিনি অরবিন্দ ঘোষ এর অনুজ৷
  • ডাঃ কৃষ্ণধন ঘোষ- তৎকালীন বিহারে জন্মগ্রহণ করা এই ব্যক্তি কোন্নগর এর বিখ্যাত ঘোষ বংশের সন্তান৷ তিনি কেডি ঘোষ নামেও পরিচিত৷ তিনি ছিলেন একজন বাঙালি ডাক্তার এবং বাঙালি হিসেবে তিনিই প্রথম এমডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি শ্রীঅরবিন্দ, বারীন্দ্রকুমার ঘোষ এবং মনমোহন ঘোষ এর পিতা৷
  • মনমোহন ঘোষ- তিনি কোন্নগর এর প্রাচীন ঘোষবংশের সন্তান , শ্রীঅরবিন্দবারীন্দ্রকুমার ঘোষ-এর ভ্রাতা এবং ডাঃ কৃষ্ণধন ঘোষ-এর পুত্র৷ তিনি একজন কবি ছিলেন এবং প্রথম যুগের ইংরেজি কবিতা রচনাকারী ভারতীয়দের মধ্যে একজন৷
  • মোহিতলাল মজুমদার- পৈতৃক বাসস্থান হুগলি জেলার বলাগড়৷ তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর একজন বিখ্যাত বাঙালি কবি এবং সাহিত্য সমালোচক। এছাড়াও তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রবন্ধকার ছিলেন।

প্রসিদ্ধ স্থান সম্পাদনা

  • "' ফুরফুরা শরীফ"'
  • কামারপুকুর
  • তারকেশ্বর  : তারকেশ্বর হুগলি জেলার তথা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রধান তীর্থক্ষেত্র। বাবা তারকনাথের মন্দির এর জন্য তারকেশ্বর সারা ভারতজুড়ে সমাদৃত। শ্রাবণ মাসে সমগ্র ভারত থেকে প্রচুর মানুষ তারকেশ্বর আসেন বাবা তারকনাথের মন্দিরে পুজো দিতে।
  • বৃন্দাবন চন্দ্রের মন্দির : সর্বাপেক্ষা প্রসিদ্ধ এই মন্দির গুপ্তিপাড়ার মঠ বলে খ্যাত। শেওড়াফুলি রাজা হরিশচন্দ্র রায় কর্তৃক অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ এই অপূর্ব মন্দিরটি নির্মিত হয়। টেরাকোটা সমৃদ্ধ এই আটচালা মন্দিরটি বহু দেবদেবীর মূর্তি,রামায়ণ ও মহাভারতের ঘটনাবলী এবং শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনের ঘটনাবলী সমৃদ্ধ।

শিক্ষাব্যবস্থা সম্পাদনা

২০১১ সালের জনগণনার তথ্য অনুযায়ী, হুগলি জেলার সাক্ষরতার হার ৮১.৮০ শতাংশ। চুঁচুড়া মহকুমার সাক্ষরতার হার ৭৯.১৭ শতাংশ, চন্দননগর মহকুমার ৮৩.০১ শতাংশ, শ্রীরামপুর মহকুমার ৮৬.১৩ শতাংশ এবং আরামবাগ মহকুমার সাক্ষরতার হার ৭৯.০৫ শতাংশ।[৮]

২০১৩-১৪ সালের হিসেব অনুযায়ী হুগলি জেলার শিক্ষাব্যবস্থার একটি সমন্বিত চিত্র তুলে ধরা হল (সকল তথ্য সংখ্যায়):[৮]

মহকুমা প্রাথমিক
বিদ্যালয়
মধ্য
বিদ্যালয়
উচ্চ
বিদ্যালয়
উচ্চ মাধ্যমিক
বিদ্যালয়
সাধারণ
কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়
প্রযুক্তিগত /
পেশাভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
অ-প্রাতিষ্ঠানিক
শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান ছাত্রসংখ্যা প্রতিষ্ঠান ছাত্রসংখ্যা প্রতিষ্ঠান ছাত্রসংখ্যা প্রতিষ্ঠান ছাত্রসংখ্যা প্রতিষ্ঠান ছাত্রসংখ্যা
প্রতিষ্ঠান ছাত্রসংখ্যা প্রতিষ্ঠান ছাত্রসংখ্যা
চুঁচুড়া ৮৯৯ ৮৫,২১৩ ৪৬ ৩,৮৮৫ ৯৮ ৪৮,৭২২ ১০৯ ১২৪,০৬৮ ১৬,৩৪২ ২৬ ১০,৫৬৪ ২,৪১৩ ৪৫,২৮৯
চন্দননগর ৬০৬ ৫৩,৩৮২ ৩২ ৩,৩১২ ৪৬ ২২,০০০ ৭৭ ৮৯,১৩২ ২০,৪৫০ ৭৭৮ ১,২৯৭ ২৯,১২৭
শ্রীরামপুর ৫৭৭ ৬৪,২০৭ ২৫ ৩,৬১১ ৬৫ ৩৭,৯৯৭ ৯৭ ১০৮,১৯৯ ১৬,৬৩১ ৭৯৩ ১,৩৩৭ ৩৩,০৬০
আরামবাগ ৯৩৫ ৮০,৭০৫ ৪৯ ৫,৪৬২ ৮৩ ৪৮,৫১৩ ৭৬ ৯১,৯১১ ১৬,৯৫০ ২২৮ ১,৮৩৮ ৫৭,৩৮৩
হুগলি জেলা ৩,০১৩ ২৮৩,৪০৭ ১৫২ ১৬,২৭০ ২৯২ ১৫৭,২৩২ ৩৫৯ ৪১৩,৩১০ ২৮ ৭০,৩৭৩ ৩৮ ১২,৩৬৩ ৬,৮৮৫ ১৬৪,৮৫৯

টীকা: জুনিয়র বেসিক স্কুলগুলি প্রাথমিক বিদ্যালয় তালিকার অন্তর্গত; মাদ্রাসাগুলি মধ্য বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয় ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় তালিকার অন্তর্গত; জুনিয়র টেকনিক্যাল স্কুল, জুনিয়র গভর্নমেন্ট পলিটেকনিক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং সেন্টার, নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ইত্যাদি প্রযুক্তিগত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তালিকার অন্তর্গত; ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ, প্যারা-মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট, ম্যানেজমেন্ট কলেজ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও নার্সিং প্রশিক্ষণ কলেজ, আইন কলেজ, আর্ট কলেজ, সংগীত কলেজ ইত্যাদি প্রযুক্তিগত ও পেশাভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তালিকার অন্তর্গত। শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র, রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ের কেন্দ্রগুলি, স্বীকৃত সংস্কৃত টোল, দৃষ্টিহীন ও অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, সংশোধনমূলক বিদ্যালয় ইত্যাদি বিশেষ ও অ-প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকেন্দ্রগুলির অন্তর্গত।[৮]

উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পাদনা

 
শ্রীরামপুর কলেজ

নিম্নে হুগলি জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান পরিসংখ্যান দেওয়া গেল।শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংখ্যা মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ০৩ মহাবিদ্যালয় ২৭ মুক্ত মহাবিদ্যালয় ০৬ প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩০২৭ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৬৫ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৮০

স্বাস্থ্য পরিষেবা সম্পাদনা

নিচের সারণিতে (সকল তথ্য সংখ্যায়) ২০১৪ সালের হিসেব অনুযায়ী হুগলি জেলার হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও উপকেন্দ্রগুলিতে প্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা ও রোগীর সংখ্যা দেওয়া হল:[১০]

মহকুমা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার অন্যান্য
রাজ্য
সরকারি
বিভাগসমূহ
স্থানীয়
সংস্থা
কেন্দ্রীয়
সরকারি
বিভাগ /
পিএসইউ
এনজিও /
নেসরকারি
নার্সিং
হোম
মোট মোট
শয্যাসংখ্যা
মোট
চিকিৎসকের
সংখ্যা*
অন্তর্বিভাগীয়
রোগী
বহির্বিভাগীয়
রোগী
হাসপাতাল
গ্রামীণ
হাসপাতাল
ব্লক
প্রাথমিক
স্বাস্থ্যকেন্দ্র
প্রাথমিক
স্বাস্থ্যকেন্দ্র
চুঁচুড়া ২৪ - - - ৩১ ৬১ ১,০৯১ ১০৮ ৯৪,২১৩ ১,৮৩০,৩৫৮
চন্দননগর - - - - ৪১ ৫৩ ৮২৮ ৫৬ ৭০,৭২৪ ১,১০৫,০৬০
শ্রীরামপুর ১২ - - - ৮০ ৯৯ ১,৮৯৪ ৮৫ ৬৩,৬১৯ ১,২৫২,৯৪১
আরামবাগ ১৬ - - - ৩৫ ৫৮ ৯১৯ ৫৭ ৮৩,৪৬৯ ১,৭৪৩,৭১৯
হুগলি জেলা ১০ ৬০ - - - ১৮৭ ২৭১ ৪,৭৩২ ৩০৬ ৩১২,০২৫ ৫,৯৩২,০৭৮

.* নার্সিং হোম বাদে

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "হুগলী: নাম প্রসঙ্গ", নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, হুগলি জেলার পুরাকীর্তি, প্রত্নতত্ত্ব অধিকার, পশ্চিমবঙ্গ সরকার, কলকাতা, ১৯৯৩ সংস্করণ, পৃ. ৪
  2. "District Statistical Handbook 2014 Hooghly"Table 2.2, 2.4(a)। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৮ 
  3. "District Census 2011"। Census2011.co.in। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১১ 
  4. http://www.censusindia.gov.in/2011census/C-16.html
  5. "DISTRIBUTION OF THE 22 SCHEDULED LANGUAGES-INDIA/STATES/UNION TERRITORIES – 2011 CENSUS" (পিডিএফ) 
  6. US Directorate of Intelligence। "Country Comparison:Population"। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১১Denmark 5,529,888, July 2011 est. 
  7. "2010 Resident Population Data"। U. S. Census Bureau। ১৯ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১১Wisconsin 5,686,986 
  8. "District Statistical Handbook 2014 Hooghly"Basic data: Table 4.4, 4.5, Clarifications: other related tables। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৮ 
  9. সীতাপুর এন্ডাওমেন্ট,TwoCircles.net ।
  10. "District Statistical Handbook 2014 Hooghly"Table 3.1, 3.3। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৮ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা